উত্তরাধিকার ১
আমার প্রথম সন্তান ঋক । মানসিক ভাবে নিজের ভিতর মাতৃত্ব বোধ টা প্রোথিত হবার বেশ খানিকটা সময় পূর্বে ই আমি সন্তান এর হাসি দেখেছি। প্রাথমিক ভাবে সন্তান ঋক আমাকে যতটা অভিভূত করে রাখতো, তার চেয়ে বেশি রাখতো একটা মানব শিশু। অদ্ভুত একটা অনুভব। সময়ের সাথে সাথে আমি ও আমার সন্তান কে দেখতে শিখলাম, বুঝতে শিখলাম, নিজের মাঝের মা বিষয় টা ধরা দিতে লাগলো। আমার খুব বেশি দায়িত্বশীল আচরণের জন্য অনেকে ই আমাকে দিদি বা আম্মা বলে ডাকতো। অথচ এই আমির নিজের স্বজাতকের "মা" এই বিষয় টা বুঝতে ও বেশ খানিটা সময় পার করতে হয়েছে। জীবনের টানা পোড়নে ছেলে কে আমি ঠিক সময় ও দিতে পারিনি। দেড় বছর ব্যস থেকে সে তার বাবার সাথে এক দেশে, আমি অন্য দেশে। আমাদের যোগাযোগ ফোন আর নেট এ।। বছরে একবার কি দুইবার মাস খানেকের জন্য দেখা যার অধিকাংশ সময় ই চলে যেত বিভিন্ন সামাজিকতা রক্ষা করতে করতে।
আমরা একসাথে থাকা শুরু করলাম, তখন সে পাঁচ। চেষ্টা করে যাচ্ছি আগের না দেয়া সময় গুলো পুষিয়ে দিতে। সময় সময় ই, যে সময় যায় তা ফিরিয়ে দেয়া যায় না কোন দিন, শত চেষ্টায়।। এটা আরও বেশি মনে হয় যখন আমি ঋক এর সেই বয়সের ঋত কে দেখি। প্রায় তাকিয়ে দেখি আর ভাবি ঋক ও এমন ই ছিল হয়তো।। প্রতিটা বয়সের নিজস্ব কিছু বৈশিস্ট আছে। যদিও এখনকার ঋক কে আমি যত দেখি তত আমার নিজের কথা মনে হয়।
ছেলেটা র স্বভাব অনেকটা ই আমার মতো।। নিজের মতো থাকতে ই বেশি পছন্দ করে।। কোন কিছু ভাল না লাগ্লে ও সমস্যা নেই, খুব দ্রুত নিজের চারপাশে একটা দেয়াল দিয়ে সবার মাঝে বাস করে যায়।। নিজের ভিতর একটা জগত তৈরি করছে, প্রতিদিন একটু একটু করে।। কারো প্রবেশাধিকার নেই। একদিন বিশাল এক পৃথিবী হবে তার নিজের।। মাঝে মাঝে তার জগতের কিছু কিছু সে বলে ফেলে নিজের অজান্তে।। কোন পার্টিসিপেশ্ন আশা করে না।। সেখানে সে স্বাধীন।। নিজের মতো।অনেকটা বেখেয়ালি, কিছুটা careless , মাঝে মাঝে সাবধানী, প্রায় ই অসাবধানী; ইচ্ছে হলে পড়ছে, না হলে বই সামনে নিয়ে বসে আছে। বা দাঁড়িয়ে একা একা আকাশ দেখছে। তার উপর প্রচণ্ড অভিমানী, চাপা স্বভাবের। খাওয়া দাওয়া ও আমার মতো। খাবার না দিলে ও কিছু ব্লবে না। এটা পৃথিবির সর্ব শেষ প্রয়োজনীয় কাজ। ওরে নিয়ে আমি আছি বিপদে। তার সাথে না চাইলে ও চিৎকার করতে হয়। এই চিৎকার ও তার কানে পৌঁছানো টা ও তার মর্জির উপর নির্ভর করে। পরে নিজের কাছে ী খারাপ লাগে। ভাবি আমার মা আমাকে কিভাবে বড় করেছে, কোন দিন কোন জোরে শব্দ না কর্রে।এই নির্লিপ্ত active বাচ্চা মানুষ করা আরও বেশি কষ্টের।
পড়লাম। সিরিজ চলুক, সাথেই আছি।
মাঝে মাঝে একটা দুইটা ইংরেজি শব্দ একটু চোখে লাগলো। আর এরকম কথকতার তুলনায় একটু অগোছালো লাগলো।
লিখতে থাকুন, ভালো থাকুন।
অগোছালো তার কারন, এই টুকুন একটা লিখা লিখতে ও আমার দুই দিন লেগেছে।
ধন্যবাদ
নাম দুটো বেশ মিষটি
অনেক অনেক আদর ঋকের জন্যে!
ভালো থাকেন আপু, কষ্ট করে হলেও লিখেন!
ছেলেটাকে খুব ভালো লেগে গেছে। পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
মন্তব্য করুন