ঈদের দুই দিন আগেই কোরবানী
পোলা আর পোলার মায়ে কৈলো এইবারের ঈদ করবো নারায়ণগঞ্জ। একজনের নানার বাড়ি, একজনের বাপের বাড়ি আর আমার শ্বশুর বাড়ি। আমি কৈলাম ঠিকাছে। পোলায় আরেকখান আব্দার করলো। এইবার য্যান গরু না দিয়া ছাগল কোরবানী দেই। এইবারও আমি কৈলাম ঠিকাছে।
ঈদের ২ দিন আগে পোলা আর তার মায়ে ঈদবাড়িতে যাওয়ার জইন্য বায়না ধরলো। আমি আবারও কৈলাম ঠিকাছে। একটা বড় ব্যাগ, ২ টা ছোট ছোট ব্যাগ লইয়া পোলা আর তার মায়ে রওয়ানা দিলো। বাসে যাইতে পোলার মঞ্চায় না। কৈলো, বাবা, আমরা সিএনজি টেক্সি কৈরা যামু। কৈলাম ঠিকাছে। ৫/৭ টা টেক্সিরে জিগানোর পর একটা যাইতে রাজী হৈলো। ওরা খুশি হৈয়া টেক্সিতে উঠলো। আমি ছোটো ২ টা ব্যাগ পিছনে আর বড়
ব্যাগটা ড্রাইভারের পাশে রাখলাম। দাম ঠিক হৈলো ২৮০ টেকা...। দাম লৈয়া পোলা বা তার মায়ের কোনো টেনশন নাই। আমার বুকের বামদিকে চিনচিন কৈরা ব্যথা শুরু হৈলো। ওরা রওয়ানা হৈলো। জার্নি বাই সিএনজি, ফার্মগেট টু নারায়ণগঞ্জ...
ঈদের আগের দিন আমি বাসা থেইকা বাইরৈলাম সন্ধ্যা ৬ টায়। গুলিস্তান পোঁছলাম ৭.৩৫ মিনিটে। আসিয়ান বাসের টিকিট কাটলাম ৭.৪০ মিনিটে। বাস আইলো ৮.৩৫ মিনিটে। ৮.৪০ এ ছাড়লো। জার্নি বাই বাস, গুলিস্তান টু নারায়ণগঞ্জ... বাসে ঠান্ডা বাতাস। ভালোই লাগতেছিলো। কখন যে ঘুমাইয়া পড়ছি টের পাই নাই। যখোন টের পাইলাম তখোন রাইত ১১.০৭ মিনিট। সব্বোনাশ ! পাশের যাত্রিরে জিগাইলাম, ভাই কোন জাগায় আছি ? হেয় কৈলো শনির আখড়া...। ব্যাটা কয় কী ? তাইলে কি বাস নারায়ণগঞ্জ যাইয়া আবার ঘুইরা ঢাকায় আইতাছে ? বেকুবের মতন আবার জিগাইলাম,
ভাই আপনে কি ঢাকা থেইকা নারায়ণগঞ্জ যাইতাছেন ? নাকী, নারায়ণগঞ্জ থেইকা ঢাকা যাইতেছেন ? ব্যাটা আমার দিকে এমনভাবে তাকাইলো... মনে মনে সিওর কৈছে হালায় মফিজ !!!
যাই হোক, দুঃখের কাহিনী শুইন্যা লাভ নাই। রাইত দেড়টার সামান্য আগে
শ্বশুরবাড়িত যাইয়া পোঁছলাম। সবাই টেনশনে জাইগা আছিলো। আমারে অন্তত ২০ বার ফোন করছে... আমি রাগে ধরি নাই। ক্যান ধরি নাই সেইডা কৈ। আমার পোলার মায়ে আমারে কসম দিছে, আমি য্যান মোটর সাইকেল লৈয়া না যাই... নাইলে এতোক্ষণে বৌয়েরে জড়াইয়া ধৈরা কম্বলের নিচে ঘুমাইয়া থাকনের কতা আমার । আমার মেজাজ দেইখা বৌয়ে কিছু কয় নাই। পোলায় আমার লগে আইয়া শুইলো। কৈলো, বাবা জানো আমাদের বড় ব্যাগটা সিএনজিতে রেখে আমরা নেমে গেছি। আমার, নানু আর মায়ের সব নতুন জামা কাপড় ওই ব্যাগে ছিলো। মা বলছে, তোমাকে না লতে...। এবার আমি নতুন জামা ছাড়া ঈদ করবো...। ছেলের কাঁদো কাঁদো গলা...। ওকে শান্তনা দিয়ে বল্লাম, ঈদের পর মার্কেট খুললে নতুন জামা কিনে দেবো, বাবা...
বড় ব্যাগটায় যা যা ছিলো:
সাদা কালো থেকে কিনা বৌয়ের একসেট জামা আর একটা শাড়ি, শ্বাশুড়ির একটা শাড়ি, ছেলের ৩ টা নতুন গেঞ্জি, ২ টা জিন্সের পেন্ট আর পাজামা পাঞ্জাবী, আমার ১ টা লুঙ্গি, ১টা ফতুয়া আর নিত্য উপহার থেকে কিনা ২টা শাল... হায়রে কপাল...!!!
কেউ মাইন্ড খাইবেন্না, এই লেখাটি এক যোগে সামু ব্লগে প্রকাশিত হইয়াছে...
হা হা আপনে বাসে এত্তো লম্বা ঘুম দিলেন ক্যাম্নে? সরি মাইনষের দুক্কে হাসা উচিত না :|
সমবেদনা...
হাসেন, হাসেন। কিছু মনে করি নাই। অধিক শোকে পাথর হৈয়া গেছি...
কষ্ট পাইলাম আপনার কষ্ট দেখে। তয় ভাল্লাগলো এইটা জেনে যে ভাবি আমার দেশি।
যাক, অন্যের দুখে দুখী হবার জন্যে মোবারকবাদ ! অাপনে লগে তাইলে অামার শালা বা শম্মন্দি জাতীয় সম্মন্ধ... বাহ. কী মজা ............
পোষ্ট পড়ে হাসতে হাসতে শেষ।তবে আপনার দু:খে গভীর সমবেদনা।
হাসতে হাসতে এক্কেবারে শেষ নাকী ক্ষাণিক অবশিষ্ট অাছে ?
অবশিষ্ট অাছি। ঈদের জেফত ত দিলেন না!মইরা গেলে ত আফসুস খাকবো।
সত্যি কৈরা কন, কবে মরবেন ? আফসুস....
কাহিনী করুন তাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু লেখার গুনে পড়ে ব্যাপক মজা পেলাম।
থ্যাংকু অাপনেরে...
সমবেদনা সমবেদনা। তয় লেখার গুনে কাহিনী উমদা হৈছে
ইয়ে কাজী সােহব, উমদা-র বাংলা জানি কী ???
সামনে ঈদ আইতাছে, চ্রম টেনশনে আছি...
(
মন্তব্য করুন