প্রসঙ্গ : নির্মল সেনের চিকিৎসা (আপডেট : ৭ এপ্রিল, ২০১০)
শুরুটা অনেক আগেই। আমি ল্যাবএইডের সাথে জড়িয়েছি ২০০৪ সালের শেষের দিকে। ২০০৭ সাল থেকে ল্যাবএইডের তরফ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় বিনামূল্যে চিকিৎস সেবা দেয়া শুরু হয়। প্রায় বললাম এজন্য যে, হার্টের বাইপাস সার্জারি করার প্যাকেজ হচ্ছে- ২ লাখ টাকার সামান্য বেশি। এর মধ্যে শুধু ওষুধ খরচই লাগে ৫০ হাজার টাকার উপরে। অনেক ক’জন মুক্তিযোদ্ধার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছে এখানে, যারা সাকুল্যে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিতে পেরেছেন। ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় তারা সবাই বর্তমানে ভালো আছেন।
বাংলাদেশের প্রথম সোনাজয়ী মহিলা অ্যাথলেট শামীম আরা টলি। যুগান্তরে প্রথম তাঁর সংবাদ ছাপা হয়। অকেজো দুটো কিডনি নিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন আমাদের এ কৃতি অ্যাথলেট। ২/৩ দিনের মাথায় চ্যানেল আই টলির উপর একটা ফিচার করে। ম্যানেজমেন্টের কাছে টলির চিকিৎসার জন্য প্রস্তাবনা পেশ করলে তা পাশ হয় এবং ১দিনের মধ্যে শামীম আরা টলিকে ল্যাবএইডে কিডনি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এমএ সামাদের (যাঁর বাগান বাড়িতে এবির পিকনিক হয়েছিল) অধীনে ভর্তি করা হয়। ২০ দিনের মত টলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সম্পূর্ণ বিনা খরচে এ ২০ দিন তার চিকিৎসা করা হয়। এরপর গত আড়াই বছর থেকে সপ্তাহে ৩ দিন টলি নিয়মিতভাবে কিডনি ডায়ালাইসিস করে যাচ্ছেন, ল্যাবএইডে। প্রতি ডায়ালাইসিসে তিনি শুধুমাত্র ওষুধ নিজে কিনেন।
এ রকম অনেক উদাহরন আছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ কাজগুলো আমি সমন্বয় করি। সত্যি করে একটি কথা বলি আজ, শুধুমাত্র টাকা নেই বলে চিকিৎসা নিতে এসে কোন রোগী ফিরে গেছেন, এমন নজির নেই। অন্তত: প্রতি মাসে লাখ খানেক টাকার ডিসকাউন্ট আমার হাত দিয়েই হয়। মাফ করবেন প্রিয় পাঠক, নিজের বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে গুনগান করা বা কাউকে হেয়/ছোট করার জন্য এ প্রসঙ্গের অবতারনা করছি না। গতকাল বন্ধু নজরুল এবিতে নির্মল সেনকে নিয়ে একটি অভিমান/ক্ষোভ মিশ্রিত পোস্ট লেখেন। তার প্রেক্ষিতে সাহাদাৎ উদরাজী একটা মন্তব্যে জানিয়ে দেন যে, ল্যাবএইড থেকে বিপ্লবী শ্রদ্ধেয় নির্মল সেনের চিকিৎসার দায়িত্ব নিচ্ছে। এরপরই নজরুল ফোন করে জানতে চান। জানাই। নজরুলের অনুরোধ বা আব্দারের কারনে এ লেখার অবতারনা...। নইলে লিখতাম না। যাই হোক, এবার নির্মল সেন প্রসঙ্গে আসি।
অর্থাভাবে নির্মল সেন চিকিৎসা নিতে পারছেন না- এরকম একটি সংবাদ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ মার্চ ২০১০, শুক্রবার। রোববার আমাদের অফিসে ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাপ্তাহিক মিটিং হয়। সে মিটিংয়ে নির্মল সেনের প্রসঙ্গটি আনি। ক্ষাণিকটা বাগ বিতন্ডার পর শেষতক প্রস্তাবের পক্ষে রায় হয়। এরপর থেকে গোপালগঞ্জের পরিচিত সাংবাদিক ছোটভাই বাপীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করি। বাপী নির্মল সেন এবং তাঁর ভাইয়ের ছেলে কংকনের সাথে যোগাযোগ করে। চিকিৎসার সব কাগজপত্র পাঠানোর কথা আমাকে। সে তরফ থেকে তা পাঠাতে দেরি হয়। এদিকে আমি বাপীকে নিয়মিত জ্বালাতে থাকি। অবশেষে, ২ এপ্রিল নির্মল সেনের ভাইয়ের ছোট ছেলে চন্দন আমার সাথে দেখা করে। আমি অফিসে ডাক্তার, কেবিন, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদির ব্যবস্থা করে অবশেষে ৪ তারিখ যাবার ব্যাপারে ফাইনাল হয়। কংকনকে ফোন করি। তিনি আধা ঘন্টার সময় চেয়ে নেন। অবশেষে জানালেন, তার কাকা নির্মল সেন দুটো দিন পরে আসতে চাচ্ছেন। নো প্রব্লেম ! জানিয়ে দিলাম, ৪ তারিখে নয়। ৭ এপ্রিল নির্মল সেনকে আনতে গোপালগঞ্জ যাবো আমি, একজন ডাক্তার, একজন নার্স। এদিকে সকল প্রস্তুতি শেষ। তাঁকে ভর্তি করা হবে- নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সিরাজুল হক এবং ইউরোলজিস্ট প্রফেসর জাহাঙ্গীর কবীরের অধীনে।
তো আপাতত এই হচ্ছে কাহিনী... বাকীটা দেখা যাক।
আপডেট : ৭ এপ্রিল, ২০১০
গতকাল নির্মল কাকুকে নিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করি বিকেল ৩.২৫ মিনিটে। সাথে ছিলেন তাঁর ভাইপো কঙ্কন। রাত ৯ টার সামান্য পরে আমরা ল্যাবএইডে এসে পৌঁছাই। প্রফেসর সিরাজুল হক এবং প্রফেসর আমজাদ হোসেন কাকুকে দেখে বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা করানোর জন্য পরামর্শ দেন। রাত ১০ টা নাগাদ তাঁকে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৫৫৫ নং কেবিনে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়। আজ বাকী সব পরীক্ষা এবং সেসব রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তাদের পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারন করেবেন।
হ্যাট্স অফ টু মেসবাহ ভাই!!
স্যালুট বস
নিয়ামিত আপডেট জানাইয়েন
স্যালুট বস
মেজবাহ ভাই, আপনার মত লোক যদি দেশে আরও জন্মাতো তাহলে এটি অভাগাদের দেশ হতোনা।
মেজবাহ ভাই, আপনাকে সালাম!
স্যালুট বস
ভীষন ভালো লাগছে ব্যাপারটি জেনে ... নজরুল ভাই, মেসবাহ ভাই, ল্যাব এইড কর্ত্ৃপক্ষ, সবাইকে প্রণাম
কাজের কাজ হৈছে একটা। মেসবাহ ভাইরে ধৈন্যা, সাথে নজরুল ভাইরেও।
স্যালুট মেসবাহ ভাই। কালকে খুব প্রিয় একজনকে বলছিলাম, মেসবাহ ভাই কে কেন ভালো লাগে। সব মানুষ এমন ভালো হোক।ভালো মানুষ হোক।
আপনাদের মত মানুষ আছেন বলেই এখনও স্বপ্ন দেখি দেশকে নিয়ে। হ্যাটস অফ। ল্যাবএইডের এই ব্যাপারটা কখনোই জানতাম না।
নির্মল সেন এবং নাম না জানা আরো অনেক নির্মল সেনের জন্য শুভকামনা।
হ্যাটস অফ বস... আর কিছুই বলার নাই
স্যালুট বস
স্যালুট মেসবাহ ভাই।
এটুকুই বলি ,এ উদ্যোগ যাতে কখনো থেমে না যায় ।
আপনাদের মত মানুষ আছেন বলেই এখনও স্বপ্ন দেখি দেশকে নিয়ে। হ্যাটস অফ। ল্যাবএইডের এই ব্যাপারটা কখনোই জানতাম না।
নির্মল সেন এবং নাম না জানা আরো অনেক নির্মল সেনের জন্য শুভকামনা।
আমাদের দেশের চিকিতসা পদ্ধতির প্রতি চরম বিরক্ত আমি বিভিন্ন কারণে। ল্যাবএইডের ব্যপারটা জানাছিলনা।
সামাজিক দায়বদ্ধতা সবাই যদি একটু অনুভব করতাম!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
"কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে " মেজবাহ ভাই এটা প্রমান করলেন। ধন্যবাদ জানালে ব্যপারটা কেমন জানি হয়ে যায়, এর চাইতে বেশী প্রাপ্য।
নজরুল ভাইয়ের পোষ্টটা পড়ে নিজেকে কেন জানি অপরাধী মনে হচ্ছিল, কেমন অসহায় একটা অবস্থার মধ্যে ছিলাম। প্রাণপনে চাইছিলাম মাথা থেকে এই ব্যাপারটা তাড়াতে চরম স্বার্থপরের মত। নিজের চাওয়ার তালিকাটা এত বড় আর সেগুলো পুরনের জন্য এতটাই ব্যাস্ত আমি অন্য কারও ব্যাপারে কেন ভাববো! কিন্তু ভিতরে ভিতরে কি যেন একটা খুঁচিয়ে যাচ্ছিল মনটাকে। সেই খচখচে ভাব থেকে মেজবাহ ভাই যেন প্রচন্ড গরমের মধ্যে এক পশলা হিমেল হাওয়া দিয়ে গেলেন।
মেজবাহ ভাই, ল্যাব এইড কতৃপক্ষ, নজরুল ভাই সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আশাকরি এই উদ্যোগ সফল হোক।
মেজবাহ = মেসবাহ (
)
হ্যাট্স অফ টু মেসবাহ ভাই!!
অসংখ্য ধন্যবাদ
মেসবাহ ভাই এখন নির্মল সেনের বাসা কোটালি পাড়াতে... রাত ৮/৯টার মধ্যে নির্মল সেন কে নিয়ে ঢাকায় পৌছবে... মেডিকেল বোর্ডের মতামত জেনে আমাদের আপডেট জানাবে।
আবারো ধন্যবাদ মেজবাহ ভাইরে।
মেসবাহ য়াজাদ,
আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা জানা নেই। নীরবে স্যালুট জানিয়ে গেলাম।
নির্মল সেনের সুস্থতা কামনা করছি
আপডেট কী মেসবাহ ভাই। নাকে তো কাল ল্যাবএইডে নিয়া আহা হয়েছে।
খালী আমি লেখা পড়িনা, না ? শিরোনামেইতো আপডেট লেখা আছে...! যত্তোসব !!
স্যরি আপডেট টা কহেয়াল করি নাই। কাল এনটিভির টেলপে খবর টা ডেখছিলাম । পরে রাত জাইগা বইসা ছিলাম । কিন্তু খবরে দেখায় নাই।
তুমারে চুম্মা।
জনসম্মুখে এইগুলা কি
পুলিশ ধরপে কৈলাম
কৈতে শরম পাইতেছি, আইজকা (সম্ভবত) ইটিভি আর দেশ টিভিতে আমার ছোট্ট একটা সাক্ষাৎকার প্রচার হৈতে পারে.... খবরের সময়
তাইলে তো বিশাল খানা পাওনা রইল।
আপনার ছবি আবারো ব্লগে বান্ধাইয়া রাখার জোর দাবী জানাইতাছি।
আবারো মাসুম ভাইয়ের মন্তব্যে সহমত জানাইতেছি
মডুরা ছবি চায়নাতো ! নিজে নিজের ছবি কেমতে দেই ? আমার বুঝি শরম করে না ?
মডুদের গদিতে
আগুন লাগাও একসাথে
মডুদের গাদিতে
আগুন লাগাও একসাথে
ছবি বাণ্দাইয়া রাখলে গাবতলী থেইক্যা মালা কিন্যা আইনা তার গলায় ঝুলাইয়া রাথার অর্থ স্পন্সর করতেও আমি রাজী আছি।
বাংলাদেশে করপোরেট এনটিটিগুলোর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বাড়ছে। তবে ট্যাক্স দেয়াটাও সেভাবে বাড়লে আরো ভালো হতো।
য়াযাদ ভাইরে ভালু পাই।
য়াজাদ ভাই তো দেখি ফাডায়ালাইছেন। হিপ হিপ হুররে
মন্তব্য করুন