ইউজার লগইন

অবরুদ্ধ কণ্ঠ- ১

৬ বছরের বাংলা ব্লগ এখনও অপূর্ণাঙ্গ এবং পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। কমিউনিটি ব্লগিং (মতামত, দর্শন, পর্যবেক্ষণ, সাহিত্য) বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বিটিআরসি পরিসংখ্যান মতে জনসংখ্যার ৭.১% মানুষের ইন্টারনেট সুবিধা আছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর খুব ছোট অংশ ব্লগিং এ অংশগ্রহণ করে। বিশেষ করে যাদের লিখার এবং পড়ার অভ্যাস আছে শুধুমাত্র তারা ই ব্লগ সাইট গুলতে ঢুকে।অনলাইন এবং অফলাইন এ যোগাযোগের একটা মডেল দাড় করিয়েছেন শরত চৌধুরী। সেই মডেলটি নিচে দেয়া হল।

দেখা যায় যে যতক্ষণ না কোন লিখা বা ব্লগার ভারচুয়াল জগত থেকে পোস্ট-ভারচুয়াল জগতে প্রবেশ করছে (তার লিখা প্রকাশনার মাধ্যমে বা পাব্লিক ডিসকাশন এর মাধ্যমে) ততক্ষণ পর্যন্ত লিখা ব্লগটি ব্লগার কমিউনিটি তে ই ঘুরা ঘুরি করছে। যদিও বলা হয় “blog with no moderation” কিন্তু কোন ব্লগার বা কয়েজন ব্লগার যদি মডারেটর কে কোন লিখার বিষয়ে আপত্তি জানায় তাহলে মডারেটর লিখা প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দিতে পারে বা একেবারে মুছে ফেলতে পারে।একটা কমিউনিটি হিসাবে বাংলাদেশের ব্লগাররা আনেক মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ব্লগারদের তার ভার্চুয়াল জগত ছেড়ে প্রকৃত জগতে ফিরে আসতে হয়েছে। সাম্প্রতিক শাহবাগ আন্দোলন ও প্রমান করে ব্লগের লিখা বা মত প্রকাশ এর মাধ্যমে যোগাযোগ তখন ই শক্তিশালী, যখন এর মত ব্লগ থেকে বাইরে এসে হুঙ্কার তুলে। ব্লগ ফেসবুকে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরব ছিল ব্লগের শুরু থেকেই, কিন্তু তেমন কোন প্রভাব সমজে পড়েনি। জামাত-শিবির বিষয়ে আলচনার এক পর্যায়ে ব্লগ সমাজের আলচনায় কিছু অন্যান্য বিষয় ও চলে আসেঃ জাতীয়তাবাদ, ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মে রাজনীতি, পরিচয়; এবং সমস্ত কিছু একটি নির্দিষ্ট ব্লগ সাইট অধিকার করে রাখে।যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সামাজিক সচেতনতার জায়গাটা দখল করে রেখেছে ইলেকট্রনিক আর প্রিন্ট মিডিয়া।ব্লগার রা যখন বাস্তব জগতে ফিরে আসলো এই ইস্যু নিয়ে, সমাজের অন্য সচেতন নাগরিক রা ও এদের পাশে এসে দাঁড়াল।আর তখন থেকে ই ব্লগারদের নতুন ভাবে দেখতে শিখল প্রকৃত সমাজের মানুষ।রাজনীতিবিদদের সামনে এসে দাঁড়াল আরেকটা শ্রেণী, যাদের অধিকাংশের কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি আনতি নেই, তারা সাদা কে সাদা, কালো কে কালো বলে। রাজনৈতিক বিশ্বাস তাদের হয়তো আছে, কিন্তু অন্ধ বিশ্বাস তাদের নেই। ব্লগ যেহেতু আধুনিক মানুষের নিজের খেরো খাতা, তাই সেখানে চালাকি নেই, রাখ ঢাক নেই। এর মাঝে ও অনেকে আছেন যারা এটাকে লিখা লিখির বাইরে মত বিনিময়ের এবং প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ও ব্যবহার করেছেন।রাসেল (........) বাংলা ব্লগ যুগের শুরু থেকে ই Some Where in Blog এ তার খেরোখাতা খুলে বসেছিলেন, বিদায় জানিয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত ডাইরিকে।
আবার ও পড়ছি রাসেল এর ব্লগ গুলো। বিশেষ করে Some Where in Blog এর লিখা গুলো। প্রথম দিকের লিখা গুলো পড়তে পড়তে বেশ সৃতি কাতর ই হয়ে গিয়েছিলাম। তখন আমি ও টুক টাক লিখতাম যদিও তার চেয়ে বেশি পড়তাম। সবার ব্লগ ই পড়া হতো। ব্লগার ও কম ছিল তখন।সব রাজনৈতিক মতের ব্লগার ই ছিল। এমন কি জামাতে ই ইসলাম এর সাপোর্ট করা বেশ কিছু ব্লগার ও ছিল। কেউ তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ব্লগিং করতে আসত না, কিন্তু জাতিয় কোন ইস্যুতে কেউ ব্লগ পোস্ট করলে সবাই তার মতামত জানাতে আসতো। কিছু দিন অনুসরন করলে ই ঠিক বুঝে যাওয়া যেত সে কোন মতের বিশ্বাসী। সে বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক না হলে ও, ঐ ইস্যুতে যার যার অবস্থান কে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করত। এ ছাড়া ও কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাসের পাতা, ভ্রমণ কাহিনী এবং ব্যক্তিগত চিন্তা, ভাব ভালবাসার কথা ও লিখা হতো। রাসেল যে কত জনের কবিতার ব্যঙ্গ করে আবার কবিতা ই লিখে ফেলেছে!। মৌলিক কবিতা লিখতে লজ্জা ই পেত সে। ব্লগ টা আমাদের মতো প্রবাসী মানুষের জন্য একটুকরো বাংলাদেশ। আরও বিশেষ ভাবে বললে, ব্লগ ছিল একটা জাহাঙ্গীর ভাইয়ের চায়ের দোকান, মধুর/মিলনের ক্যান্টিন, কার্জন হলের পুকুর পাড় বা টি এস সি র সেই দেয়াল, যেখানে পা ঝুলিয়ে বসে দিনের পর দিন আড্ডা দিয়েছি, দেশ উদ্ধার করেছি, সাহিত্য করেছি, ঝগড়া ও করেছি। আবার দিন শেষে ঘরে ফিরে প্রতিক্ষা করেছি আবার কখন দেখা হবে বন্ধুদের সাথে।
রাসেল এর দৈনন্দিন জীবনযাপন আর কবিতার প্যাড়ডি দিয়ে শরু হলে ও, তা আর ঐ খানে থেমে থাকেনি। নিজের লজ্জা কাটিয়ে উঠে নিজের লিখা দু’ চারটা কবিতা ও ব্লগে লিখে ফেলেছিলেন।কবি আর কবিতা নিয়ে তার ব্যক্তি মত ছিল এমন টা ই “খুব বেশি কবিতা পড়তে হয় না তাহলে কবিতায় অন্য মানুষের ছাপ পড়ে,এবং একটা সময় এসে নতুন কোনো ভাবনা মাথায় আসে না, সব কথারই পুনারাবৃতি ঘটছে মনে হয়” ।
আমরা সবাই মিলে একটা কণ্ঠস্বর হতে পারতাম
যদি সবাই মিলে 'রব' হয়ে যেতে পারতাম
যদি আপন আঁধারে স্বপ্ন হাতড়ে বিষন্নতার দাস না হয়ে
যদি জ্বালতে পারতাম অবিনাশি আলো - অড টু সক্রেটিস/রাসেল(……..)
কবিতার পাশাপাশি কিছু গল্প ও উপন্যাস এর সুচনা ও দেখা যায় প্রথমদিকের কিছু লিখায়। যদিও পরে এই উপন্যাস গুলো আর শেষ করতে পারেননি।“আন্দালিফের দুর্বল গল্প” এমণই একটি লিখা।সেই সময়ে ও মত প্রকাশ নিয়ে ঝামেলা হয়েছে ব্লগে। কিন্তু সেই ঝামেলা ব্লগে ই মিমাংসা হয়েছে। সেই সময়ের ব্লগ ইস্যু নিয়ে ও লিখা লিখি হয়েছে, ব্লগ এর নিতিমালা কেমন হওয়া উচিৎ, ব্লগ মডারেটর বা সরকার এর ঠিক কতটা হস্তক্ষেপ করা উচিৎ এই লিখা লিখিতে।অধিকাংশ লেখক ই শেষ পর্যন্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ই কাঙ্খিত মনে করেছেন।
দিন বদল হয়, রাসেল ফিরে আসে দেশে। সাথে তার ১৬ মাসের ছেলে। বউ তখন ও দেশের বাইরে। তার পড়াশুনা শেষ হয়নি তায় আসতে ও পারে নি।এটা নিয়ে ও তার কোন সমস্যা ছিল না।সে কখনো ছেলে মেয়ে আলাদা করে দেখেনি। সে তার এই ছেলে কে নিয়ে কাধে করে ঘুরে বেড়িয়েছে,বাংলাদেশ চিনিয়েছে, বর্ণমালা শিখিয়েছে। বাবা ও মা দুই জনের ভালবাসা ই তাকে দিয়েছে। এই ছেলে বাবাকে ছেড়ে দুই রাত কাটায়নি। এই ছেলে এখন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়, মুখে কিছু বলে না। মাঝে মাঝে মা কে এসে প্রশ্ন করে, বাবা কি এখন ও পাজল টা সল্ভ করতে পারেনি? তুমি কেন facebook থেকে ক্লু দিচ্ছ না?তাই বাবা বাসায় আসতে পারছে না। বাবা ব্লগার এটা ও তার সমস্যা। ব্লগার শব্দের পিছনের নেতিবাচক দিকটা ও সমাজ তাকে বুঝিয়ে ফেলেছে, যদিও এই সমাজের অধিকাংশ মানুষ নিজেই জানে না ব্লগ কি? ওকে বুঝানো যায় না, আর কি ই বা বুঝাব, তার বাবা কোন অপরাধ করেনি। তার বাবা শুধুই লিখা লিখি করত।এখানে সেখানে দাঁড়িয়ে একা একা কাঁদে এই বাচ্চা।এই বাচ্চা কে আমরা কি সুমির মতো করে বলব “এখন থেকে বাচ্চাদের এটা শেখাবো, বাবা আর যাই কর না কেন কোন ভাবনা চিন্তা কোর না। কোন বই পড় না, শুধু video game খেলো। কারণ এই পৃথিবীটা আরশোলাদের। মানুষ বলে একটা speices খুব অল্প সময়ের জন্য এসেছিল। কিন্তু নিজের অজান্তেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে তারা, বলে আরশোলারা সব হাসাহাসি করছে।“
দেশীয় নিয়ম মেনে ই সরকারের শেষ বছর দেশ থাকবে অস্থির। আর সেই অস্থিরতার সাথে রাসেল এর লিখা বদলেছে।দেশ আর তৎকালীন রাজনীতি উঠে এসেছে তার লিখায়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর অবস্থার খুঁটিনাটি নির্মোহ বিশ্লেষণ করেছেন তার লিখায়।তার কোন রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। দেশটা ই ছিল তার রাজনীতি দর্শন। দেশের ভাল হবে বা খারাপ হবে এমন যে কোন ইস্যুতেই নিজের মতামত অসম্ভব সাহসের সাথে উপস্থাপন করেছেন। তার কোন দল ছিল না, সে কোন গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তার আদর্শ আর সততা ই ছিল তার খুঁটি। তার বিশ্বাস আর যুক্তি পরিবর্তন হয় না এমন নয়। যে কোন ধরনের যৌক্তিক আলোচনা ই তার ব্লগে সাদরে গ্রহন করা হতো।এই বিষয়ে পাঠকের ব্যক্তিগত আদর্শ কখনও বড় হয়ে উঠত না। তাকে যুক্তি দিয়ে বুঝাতে পারলে, তার নিজস্ব মত বদলাতে ও দ্বিধা করত না। দিনযাপনের কিছু কথা রাসেল এর হাতে হয়ে উঠত দৃশ্য চিত্র।এই দৃশ্যচিত্রের শেষে এসে ঠিক বুঝে যেত, আমাদের দিনযাপন রাজনীতির বাইরে কিছু নয়। আমরা রাজনিতিবিদ নই, কিন্তু কিভাবে আমরা রাজনীতির সাথে জড়িয়ে যাই। কোন বিশেষ দলের বিশেষ কিছু না হয়েও আমরা এই রাজনিতিতে জড়িয়ে যাই, রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করে ফেলি।দিনযাপনের “অগভীর ভাবনা্” প্রকাশ হয়ে উঠে রাজনৈতিক ব্লগ।
ব্যক্তিগত জীবন যাপন পদ্ধতির জন্য ই অনেকটা সময় তাকে তার ছেলে সামলাতে হয়েছে। বিষয়টাকে সে অন্য ভাবে নেয় নি। ব্যক্তি জীবনে কখন ও নারীবাদী ছিল না। কিন্তু নারী পুরুষ সবাইকে সে মানুষ হিসেবে ই চিন্তা করে। তাই এই বাচ্চা পালনে সে খুশি ই হয়েছে। কিছু কিছু মানুষের বয়স কৈশোর এ আটকে থাকে। রাসেল তাদের মাঝে একজন। বাচ্চাদের সাথে তার বেশ সময় কাটে। তাই হয়তো মানুষের সাথে কোন রকম পূর্বানুমান ব্যতিরেকে ই মিশে। তার বাচ্চা পালন কালীন সময়ে বাচ্চা পালন ও তাদের শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে রীতিমত গবেষনা করে ফেলেছে। এই গবেষণা লব্ধ জ্ঞান আবার লিখে রেখেছে তার ব্লগে “শিশু শিক্ষা” সিরিজে। তার মতে, “আমাদের একটা অহেতুক শিক্ষাসচেতনতা আছে। বয়েস যতই হোক, একটা ছড়া অবিকল বলতে শেখা কিংবা গড়গড় করে বর্ণমালা বলতে পারা একটা বাড়তি যোগ্যতা বিবেচিত হয় এখানে, যেখানে নাটকেও শিক্ষামূলক কিছুর খোঁজ থাকে, যেখানে অনেক সংগীতই অচ্ছুত কারণ সেখানে শিক্ষামূলক উপকরণ নেই- এই ছেঁদো কথাটার সারবস্তু নিয়েও প্রশ্ন চলতে পারে। সুতরাং শিশুদের জন্য যত ইন্টার্যাাক্টিভ সিডি ভিসিডি, ডিভিডি সবই মূলত বর্ণমালা পরিচয়, নামাজ শিক্ষা, ধর্মশিক্ষা, ইংরেজী বর্ণমালা, এইসব হাবিজাবিতে পূর্ণ।““ আপাতত ছেলের কল্যানে জানলাম আমাদের পরিচিত জগতের অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষার সময়ে আমাদের দ্বিধান্বিত করে।“

এতো দিনের লিখায় ধর্ম নিয়ে লিখা ও ছিল, সংখ্যা অনুপাতে নগণ্য। ধর্ম নিয়ে লিখা গুলোর শিরনাম যাই থাক,প্রকাশটা যৌক্তিক।তার ধর্ম বিষয়ক লিখা গুলো ও পরিবর্তন হয়েছে সময়ের সাথে। প্রকাশভঙ্গি, তত্ব ও তথ্যের যোগাযোগ, ও উপস্থাপন এ এসেছে ভিন্নতা। ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছু লিখা আছে।মানবিক মানুষ রাসেল। মানুষ এর জন্য ই এই পৃথিবী, তার লেখায় এটা ই প্রকট।“ ভেবে দেখলাম কোনো ধর্মের প্রতিই আমার কোনো বিদ্বেষ নেই, ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং সকল ধর্মমতের মানুষের ধর্ম পালন এবং ধর্ম পালন না করার সমান অধিকার আমি চাই। যে মানুষটা ধর্ম পালন করতে চায় সে মানুষটার নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করার সাথে সাথে আমি চাই যে মানুষটা ধর্ম পালন করতে চাইছে না তারও যেনো এই অধিকারটুকু নিশ্চিত হয়। কেউ যদি ধর্মের সপক্ষে কোনো বক্তব্য দেয় সেটা যেমন প্রচারিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে একই সাথে কেউ যদি সে ধর্মের যৌক্তিক সমালোচনা করে সেটাও একই মঞ্চে আলোচিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে। এভাবে আলোচনার পথটা খোলা থাকলে স্বমত কিংবা বিরুদ্ধমতের সহাবস্থানে এক ধরণের মননশীল সমাজ নির্মাণ করা সম্ভব।“
ধর্মের মানবীয় দিকটা ই রাসেল এর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারে ধর্ম কে অমানবিক ভাবে প্রকাশের বিরুধী ছিল সবসময়।
শিক্ষকতা আর বিজ্ঞানের প্রতি রাসেল-এর অনুযোগ প্রচন্ড। পরবর্তী শক্তির উৎস হিসাবে কৃষ্ণ্বিবর নিয়ে তার ভাবনার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল এখানে। "কৌশলী মিথ্যা, কৃষ্ণগহ্বর আমাদের পরবর্তী শক্তির উৎস"
ব্যক্তি জীবনে রাসেল ছিল তার মতোই।facebook এ blogger rasel pervez সাইট এ ঢুকলে রাসেল এর ব্যক্তি জীবন সম্পরকে ধারনা পাওয়া যায়।ওখানে ব্লগার, নন-ব্লগার সবার মতামতে রাসেল এর সহজ সরল মানবিয় ব্যক্তিত্ব ই প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে। তার ব্যক্তি গত আদর্শ আর জীবন যাপন নিয়ে ব্লগে আর অনলাইন পত্রিকায় লিখেছেন, আরিফ জেবতিক [১], কৌশিক আহমেদ [২], আলি মাহমেদ [৩], টুটুল [৪], মাসুম [৫] আর ও অনেকে। যে চারজন ব্লগার কে সরকার তাদের মত প্রকাশের জন্য আটক করে রেখেছেন রাসেল তাদের মাঝে একজন। সবার একটা ই প্রশ্ন, “রাসেল কেন?” অভিজিত রায়ের সাম্প্রতিক এক লিখায় রাসেলকে নিয়ে মন্তব্যে লিখেছেন [৬] “Russell Pervez is another arrested blogger who was famous for his unique, hyper-article writing style in various Bangla blogs. His writings always reminded me of the style of the late Christopher Hitchens, because both writers used their immense knowledge in history, politics, science, literature, and religion to produce quality works. “
শামিম এন্তায রবি রাসেল এর কারগারে যাপিত জন্মদিন এ লিখেছেন
“এই অন্ধের শহরে, একজন মানুষ ছিল, যে সবকিছু ঠিকঠাক দেখতো।
এই বোবার শহরে, একজন সবাক ছিল, যে সবকিছু স্পষ্ট করে বলতো।
এই ভীতুর শহরে, একজন সাহসী ছিল, যে সাহস করে এগিয়ে যেত।

এই লোকটাকে আমি চিনতাম।
... আজ তার জন্মদিন।

প্রিয় রাসেল, প্রিয় সুহৃদ, প্রিয় সহ ব্লগার, প্রিয় স্পষ্টভাষী, শুভ জন্মদিন।“

সাম্প্রদায়িকতা এমন একটা মানসিক অবস্থা যে অবস্থায় মানুষ এক ধরণের বর্ণান্ধতায় ভুগে, সাম্প্রদায়িকতা মানুষের ভাবনায় এমন একটা বিকৃতি তৈরি করে তখন তারা চোখের সামনে মানুষ খুঁজে পায় না, কোনো না কোনো গোত্র, বর্ণ, ধর্ম খুঁজে পায়। মানুষের ভেতর থেকে মনুষ্যত্বের বোধটুকু সরিয়ে নিলে মানুষ আর একটা পশুর ভেতরে তেমন তফাত থাকে না। পশু জবাই করা আর মানুষ জবাই করার ভেতরে তেমন প্রভেদ তখন আর সাম্প্রদায়িক মানুষ দেখে না। এমন টা ই লিখেছেন রাসেল। কখন ও কি তিনি ভেবেছিলেন তাকে ও এর শিকার হতে হবে?রাসেল, যে নিজেকে মানবতা বাদী হিসাবে ই দেখে, তার লিখা ও চিন্তায় সে মানুষ আর মনবিকতার ই জয়গান করেছে, মানুষ ভালবাসার করনে কোন মানুষ তার বিচার চাইতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়। যারা বিচার চাইছে তারা তো সবাই ধার্মিক মানুষ। তারা দেখাক যে ধর্মের কোথায় আছে মানবিকতার জন্য কারো শাস্তি হতে পারে। কোরআন হাদিসের কোন জায়গায় লিখা আছে কিভাবে লিখা আছে যে মানুষ কে ভালবাসলে শাস্তি হবে। সরকার যদি সত্যি ধার্মিক হন, ধর্মের প্রতি যদি তার বিন্দু মাত্র শ্রদ্ধা থাকে, সত্যিকার ভাবে যাচাই করবেন কে আসলে ধর্ম কে ছোট বা হেয় করছেন? কে ধর্মের নামে মিথ্যা বলছেন। আর সেই মিথ্যা ব্যবহার করছেন কিছু নিরপরাধ মানুষের উপর। শাস্তির আওতায় কাদের আনা উচিত, যারা ধরমের নামে মিথ্যা বলছে, অপকর্ম করছে তাদের নাকি যারা ধর্ম নিয়ে এই মিথ্যাচার আর অরাজকতার প্রতিবাদ করছে তাদের?

পোস্টটি ১২ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

রায়েহাত শুভ's picture


রাসেল ভাইয়ের কবিতা সংক্রান্ত কথাটার সাথে আমি নিজেও একমত...
আর রাসেল ভাইয়ের ভিতরে যে একটা কিশোর বসবাস করে, সেইটা উনাকে দেখলেই বুঝা যায়...

কিন্তু কথা হ'লো যে, এই চারজন ব্লগারের বিরুদ্ধে যেই মামলা দেয়া হয়েছে তার এভিডেন্স হিসাবে ব্লগ পোস্টগুলোর কনটেন্ট কি দেয়া হয়েছে?

স্বরহীন's picture


http://www.somewhereinblog.net/blog/jontronablog/29687505
এটা একটা, আরেক টা হল "আমি যদি ধর্ম ত্যাগ করি"
http://www.somewhereinblog.net/blog/jontronablog/29705580

টুটুল's picture


খুব অস্থির লাগছে Sad Sad Sad

তানবীরা's picture


কোন বিচার নেই Puzzled

অতিথি's picture


আপনার লেখা টা পরে খুব ভাল লাগল।AND HAPPY BIRTH DAY RASEL VAII ........WISH U ALL DA BEST......

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.