ফানুস
এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের সমাজ খুব করে অনুভব করছে ব্যক্তি কেন্দ্রিক জীবন যাপনের সবচেয়ে খারাপ দিকটি। আমাদের এই এককেন্দ্রিক জীবন যাপনের আনন্দ ভুলিয়ে দিচ্ছে একক ব্যক্তি সত্তা বলে কিছু নেই। প্রযুক্তি বা ব্যক্তি প্রতিভা কখন ও ই একক সত্তা কে ্টিকিয়ে রাখতে পারে না। । আর এই না পারা টা ই আমাদেরকে সমাজবদ্ধ জীবন যাপন করতে বাধ্য করে।। কিছু নিয়ম, কিছু জীবনাচরণ, আর কিছু আইন করে নেই প্রয়োজন মাফিক। যাতে সবার ই স্বার্থ রক্ষা হয় এবং পাশাপাশি থাকতে পারি।।
কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যক্তি কেন্দ্রিক জীবন যাপন আমাদের সমাজে অন্যকে নিজের অংশ ভাবতে ভুলে যাচ্ছে। ধিরে ধীরে। আমরা ভুলে যাচ্ছি আমার কর্ম অন্যের স্বার্থে আঘাত হানতে পারে। আমরা সেটা ও ভুলে যাচ্ছি, অন্য বলতে এমন একজন মানুষ সে আমার মা হতে পারে, বাবা হতে পারে, ভাই বা বোন।, হতে পারে নিজ ঔরস জাত। যে খাদ্য ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় খাবার বিষ মেশান, সে খাবার সবাই খায়। এমন কি সে নিজে ও।। যে মানুষ কাজ করে দেবার জন্য ঘুষ নিচ্ছে, সে কি জানে এই ঘুষের টাকা তার সমানে বসে থাকা মানুষ কিভাবে যোগাড় করছে? ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বেশি দামে জিনিস বিক্রি করছে বাজারে। সেই জিনিস কিনে খাবার সাম্রথ অর্জনের জন্য স্কুলের শিক্ষক স্কুলে না পড়িয়ে বাসায় অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে পড়াচ্ছেন, সেই ব্যবসায়ীর লাভের টাকা শিক্ষকের পকেটেই যাচ্ছে আবার। যখন ই জানার বিপরীতে গ্রেড বেশি মূল্যবান হয়ে যায়, তখন মানুষ বই পড়ে জ্ঞান অর্জনের পথে পা না বাড়িয়ে প্রশ্ন পত্র কিনে এক রাতে মুখস্ত করে ভাল গ্রেড নিয়ে আসার কথা চিন্তা করে। আর এই সব কিছু ই জাতীয় ভাবে আমাদের সরকার, যারা আমাদের লিগেল গার্ডিয়ান, দেখে ও না দেখার ভান করে ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য বা উপরে উপরে দেখানর জন্য দেখ কত ভাল ফল করেছে আমাদের ছেলে মেয়েরা। এটা আমাদের সফলতা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়ম বহির্ভূত যে আয় করে জীবন যাপনের মান উন্নয়ন করছে বলে মনে করছেন, সেই যাপিত জিবনে সবকিছুই ধবংশকারি উপাদানে ভরপুর।। সাময়িক আলোর ঝলকে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি না হয়তো।
এক সময় বাংলাদেশে হাউস বিল্ডিং ঋণ দিত বাড়ি বানানোর জন্য। তখন অনেকে ই ২ কাঠা জায়গা অধিক বাজার মুল্য দেখিয়ে ব্যংক লোণ নিত। এমনি একটা বাড়ি আমাদের পাশের এলাকায় ও ছিল। জলা ভুমিতে ৬ তলা একটা বাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল, চার পাশে দেয়াল আছে, ছাদ আছে কিন্তু ভিতরে কোন ঘর নেই। কোন জন মানব ঐ বাসায় থাকতো না।।। । বাড়ির মালিক ও ঐবাসায় থাকতে পারত না। । আমাদের সমাজের অবস্থা এখন ঐ বাড়ির মতো।
অনেক বছর উন্নয়নের বা কর্পোরেট জোয়ারের বাইরে থাকার কারনে হঠাৎ করে নতুন এই জোয়ার আমাদের চোখ ধাধিয়ে দিচ্ছে। । যে যেভাবে পারছি এই জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিচ্ছি। । কো।ন নিয়ম নীতির চিন্তা করছি না।, বাইরের বিষয় যা চখে দেখা যায় তাই গুরুত্ব পূর্ণ মনে করছি আমরা। । এটা কে ই অর্জন মনে করছি। । ব্যক্তি অর্জন মুখ্য হয়ে যাচ্ছে । দেশ, জাতি, সমাজ এমন কি পরিবারের চেয়ে ও। । আমরা কেউ এর বাইরে থাকতে পারছি না। এমন কি আমারা আমাদের জন্য একজন যোগ্য সরকার ও নির্বাচিত করতে পারছি না, যে ব্যক্তি র চেয়ে দেশ কে গুরুত্ব দেবে। দেশের বাইরের চাকচিক্য না, জাতি হিসাবে আমাদের সঠিক পথে রাখবে এবং রাখার সরবোচ্চ চেষ্টা করবে। । অবশ্য এটা ও ঠিক শাসক তো আমাদের ই কেউ হবে।
এখন ই সময় নতুন করে চিন্তা করার। । বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জামা না বানিয়ে, আমাদের আবহাওয়া, জলবায়ু, জনগণের শারীরিক গঠন, রং চিন্তা করে নতুন পোশাক ডিজাইন করা ও পড়া।। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামুলক মুল্য বোধের চর্চা করাতে হবে সব স্কুলে। । পড়াশুনার চেয়ে মূল্যবোধের চর্চা কোন শিশু সঠিক ভাবে করছে কি না তার উপর গ্রেড করা উচিৎ। । মূল্যবোধহীন কোন জাতি নিয়ে আমরা বেশি দিন এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারব না। । অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে হেরে যাবার পূর্বে আমরা নিজেরা ই নিজেদের মৃত্যুর কারন হব।
১০০ ভাগ ঠিক বলেছেন । অবশ্যই আমাদেরকে সচেতন হতে হবে । যেভাবে চলছে এটাকে চলা বলেনা । এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে জাতিকে । ব্যাতিক্রমধর্মী লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ !
শেষ প্যারাট বেশি ভাল লেগেছে
ধন্যবাদ
মন্তব্য করুন