আমরা
চাওয়া পাওয়ার বালাই নেই, রঙিন ঘরের স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন বাস্তবায়নের তাড়া নেই, ব্যাক্তিগত আলাদা কোন সময় নেই। যুথবদ্ধতায় একাকী সময় কাটানো, যার যার বইয়ের পাতায় বা সিনেমার পর্দায় নিমগ্ন। তুমি ফেসবুক এ, আমি আমার মতো খোমা খাতায়। মাঝে মাঝে মতের আদান প্রদান সমসাময়িক বিষয়ে। অবাক বিষয়, তোমার আমার পড়ার রুচি, দেখার ভঙ্গি, প্রকাশ সব ই ভিন্ন। তুমি ইতিহাস হলে আমি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস। তুমি মানুষ দেখ নির্লিপ্ত ভাবে, আমি মানুষ এর মনসতত্ত্ব খুঁজি। তুমি চার দেয়ালে আকাশ সৃষ্টি কর, আমি আকাশে মিশে গিয়ে আকাশ ধন্য করি। কখন ও হাতে হাত রেখে হেঁটেছি মনে পড়ে না। পাশা পাশি রিক্সা চড়া তাও কোন মিছিল, মিটিং, আড্ডা বা বইয়ের দোকান এ যাওয়া, খুব বেশি জোড়া জোরিতে বাজারে যাওয়া। তুমি রক হলে আমি রবীন্দ্র বা লালন।মিল যে ছিল না এমন ও না, চা বা কফি, কোন দ্বিমত নেই। আদর্শের জায়গায় অমত নেই। আমাদের কোন টানা টানি নেই নিজেদের পৃথিবীতে বদ্ধ করে রাখার,
কোন অভিমান নেই। এতো এতো নেই এ সবাই বিরক্ত। আমাদের বাড়ী, গাড়ী নেই, মতের মিল নেই, ৪০ মিনিট এর টক শো নিয়ে ঝগড়া করে ফেলি
টানা তিন দিন। আমাদের সন্তানের কিভাবে যেন দুই মেরুর দুই জনের মাঝে এঁটে যায়। ছোট যে মন, তার ও মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের ভালবাসা নেই। ১৪-১৫ এর কিশোর মণ যখন ছোট কে বুঝায়,না, ওরা ভালবাসে, তুমি বুঝ না।
এমন ছাপোষা যৌথ জীবন ও ঘোর লাগা রঙিন ঘরের হিসাবি সংসারীদের
ও যে ঈর্ষান্বিত করতে বুঝতে পারি নি
তখন মনে হয় কিছু একটা তো আছে ই। নইলে ১৭ বছর কিভাবে গেল বুঝতে ই তো পারলাম না। ধারনা আরও পোক্ত হয়, যখন দেখি, অনেক ঘোর সংসারীও বাঁকা চোখে তাকায়।
অবাস্তববাদী, বেহিসাবি, উড়নচণ্ডী তকমায় ভাসিয়ে দেয়। একজন আরেকজন কে মানুষ না করতে পারার ব্যর্থতা নিয়ে উপহাস করে। মাত্রারিক্ত উপহাস জীবন বিপন্ন করে,
কিন্তু আমরা বদলাই না
বেহিসাবি ঘোর লাগা জীবন নিয়ে সকলের সকল উপহাস নিয়ে
গোপন কুঠুরিতে কাল্পনিক প্রেমিক বা প্রেমিকার মূর্তি নিয়ে
আমরা পাশাপাশি থেকে গিয়েছি
এই থেকে যাওয়া ও কিছু একটা তৈরি করেছে আমাদের চার পাশে
অনেক কে ক্ষিপ্ত করেছে
আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের কে আলাদা করতে পারেনি
এই বন্ধুত্ব চিরন্তন, এটা ই সঞ্চয় আর সম্পদ
তোমার অনুপস্থিতির চেয়ে বড় অপ্রাপ্তি আর নেই
মন্তব্য করুন