ইউজার লগইন

বিজয় দিবস তুমি //

১৬ই ডিসেম্বর, ২০১২ ইং
উত্তরা ঢাকা

বিজয় দিবস তুমি//

আমার কৌশোরে বড়শী ফেলে
দীর্ঘ শ্যান দৃস্টিতে তাকিয়ে থাকা
প্রতীক্ষার পর পাওয়া
ছট ফটানো মাছের আনন্দ।

কৌশোরে আম কাঠালের গাছে চড়ে
পাকা পাকা আম, কাঠাল পারা,
প্রমান সাইজের কাঠাল বা দু একটি আম
গাছে বসেই সাবার করার আনন্দ।
খেলতে গিয়ে ঘাম জড়ানো বিজয়ের পর,
মিছিল করতে করতে গ্রামে ফেরার আনন্দ।

বিজয় দিবস তুমি
এস,এস, সি রেজাল্টের পর বৃষ্টিতে ভিজে
রেজাল্ট সংগ্রহ করার পর আত্নীয় ও পড়শীদের
বাড়িতে মিষ্টি বিতরণের আনন্দ।
তুমি আমার বোনা ধান ক্ষেতে
ফলানো সোনালী ধান কাটার আনন্দ।
বিজয় দিবস তুমি, ন মাস প্রতিক্ষার পর
প্রথম বাবা হবার আনন্দ।

কিন্তু তোমাকে পেতে
হে বিজয় দিবস,
মনে পড়ে, গজেন স্যারের কথা,
কত আদর করতো আমাকে,
বড় ভাইয়ের বন্ধু, টগবগে তরুণ
যুদ্ধে গিয়ে আর ফিরে আসেনি।
তার বিধবা মা আমৃত্যু
শুতে, বসতে, কাজ করতে করতে
এমন কি রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে
গজেন গজেন বকেছে,
আর কোন মুক্তি যোদ্ধাকে দেখলেই
বলত আমার গজেনকে দেখেছ?
শেষ বার কোথায় দেখেছিলে?
আর আমার ভাই ছুটিতে এলে
ঘন্টার পর ঘণ্টা পাশে বসে ছেলে
হারানোর দুঃখ ভূলতে চেয়েছে।

তোমাকে পেতে
হে বিজয় দিবস

এ রকম ৩০ লক্ষ গজেন
যে হাড়িয়ে গেছে।
দু লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে।

আর কত লক্ষ যে হয়েছে আহত
তার হিসেব তো আমার কাছে নেই।

তোমাকে পেতে,
হে বিজয় দিবস,

বোন হয়েছে,দুলাভাই হারা,
ভাবি হয়েছে, ভাই হারা,
চাচী হয়েছে, চাচা হারা
ফুপু হয়েছে, ফুফা হারা,
খালা হয়েছে, খালু হারা
আরও আরও কত, কতজন হয়েছে
স্বজন হারা।
কতজন তাদের সহায় সম্বল
বাড়িঘর সব হারিয়েছে।
হিন্দু, মুসলিম, কেঊ তাতে বাদ যায়নি,
ধনাঢ্য, কিসমত সরকারের
গোলাঘরের আগুন একমাসেও নিভেনি।

আমার বড় ভাইটি যুদ্ধ থেকে ফিরে
সহ যোদ্ধাদের করুণ মৃত্যুর কথা
স্বরণ করে করে প্রলাপ বকতো, আর
অসুস্থ হয়ে কয়েক বছর বিছানায় পড়েছিল।

ভাইয়েরা মুক্তিযোদ্ধা হওয়াতে,
দিনের পর দিন মাসের পর মাস
শহর থেকে অনেক দূরে আত্নীয়
স্বল্প পরিচিত, কত বাড়িতে থাকতে
হয়েছে,
কত দিন না খেয়ে কেঁদেছি,
এ সবি আমার মার কাছ থেকে শোনা
কারন মনে রাখার মত বয়স তখন হয়নি।
মা গো তোমার কথা মনে হওয়াতে
আমারা লেখার ক্ষমতা হাড়িয়ে ফেলেছি
মা গো তুমি চলে গেলে ৪ঠা, অক্টোবর,২০১২
তাই আমার এ অবস্থা, কিন্তু
৭১ এ যারা বাবা মা সবাইকে হারিয়েছে
তাদের কষ্টটা কত ভয়াবহ।
সন্তানের দোয়া আল্লাহ্ রাব্বুল
কবুল করেন
তাই তুমি ও বাবার সাথে
৭১ এ যত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা
শহীদ হয়েছেন।
সকলের জন্য দোয়া করছি।
রাব্বির হাম হুমা
কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।
হে, প্রতিপালক,
তুমি তাদের প্রতি তেমনি সদয় হও,
যেমন তারা শৈশবে আমাকে,
লালন পালন করেছেন।
আমিন।।
১৬ই ডিসেম্বর, ২০১২ ইং
উত্তরা ঢাকা

পোস্টটি ৫ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আহসান হাবীব's picture

নিজের সম্পর্কে

তোমার সৃষ্টি তোমারে পুজিতে সেজদায় পড়িছে লুটি
রক্তের বন্যায় প্রাণ বায়ু উবে যায় দেহ হয় কুটিকুটি।।
দেহ কোথা দেহ কোথা এ যে রক্ত মাংসের পুটলি
বাঘ ভাল্লুক নয়রে হতভাগা, ভাইয়ের পাপ মেটাতে
ভাই মেরেছে ভাইকে ছড়রা গুলি।।
মানব সৃষ্টি করেছ তুমি তব ইবাদতের আশে
তব দুনিয়ায় জায়গা নাহি তার সাগরে সাগরে ভাসে।
অনিদ্রা অনাহার দিন যায় মাস যায় সাগরে চলে ফেরাফেরি
যেমন বেড়াল ঈদুর ধরিছে মারব তো জানি, খানিক খেলা করি।।
যেথায় যার জোড় বেশী সেথায় সে ধর্ম বড়
হয় মান, নয়ত দেখেছ দা ছুড়ি তলোয়ার জাহান্নামের পথ ধর।
কেউ গনিমতের মাল, কেউ রাজ্যহীনা এই কি অপরাধ
স্বামী সন্তান সমুখে ইজ্জত নেয় লুটে, লুটেরা অট্টহাসিতে উন্মাদ।
তব সৃষ্টির সেরা জীবে এই যে হানাহানি চলিবে কতকাল।
কে ধরিবে হাল হানিবে সে বান হয়ে মহাকাল।।