খুব প্রিয় মানুষদের জন্মদিনে!
যদিও আজ বাংলাদেশে খুব একটা সুখের সময় না। প্রথমত আজ বুদ্ধিজীবি হত্যা দিবস। পুরো ৭১ জুড়েই মুলত বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড ঘটেছে নারকীয় কায়দায়। এই দিনে অনেককে ধরে নিয়ে গেছে শেষ মরণ কামড় হিসেবে। যে সব বুদ্ধিজীবিরা শহীদ হয়েছেন তারা বেঁচে থাকলে দেশটা অন্যরকম হলেও হতে পারতো, এই বিশ্বাস আমার সব সময়ের। প্রত্যেকটা শহীদ বুদ্ধিজীবিকে নিয়েই যখন পড়ি মনে হয়, এরকম মানুষের কত দরকার ছিল এখন। কিন্তু হায় তারা সব বছরের ১ দিনের স্মৃতির জন্যই আমাদের মনে বেঁচে থাকে। শুধু সেইসব বুদ্ধিজীবি না এখনো সাম্প্রতিক সময়ে যারা গুম হয় কিংবা রাষ্ট্রীয় বাহিনী অথবা সন্ত্রাসীর হাতে খুন হয় তাঁদের সবার পরিবারের জন্য ভীষন মন খারাপ হয়। সারা জীবন তপস্যা করলেও তো সেই পরিবারের কাছে নিহত স্বজনরা ফিরে আসবে না আর, এটা কত বড় শোকের তা আমরা বুঝবো না। তাই তা নিয়ে লিখে আমার আর কি হবে। এমনিতেও লেখা নিয়ে বড় চিন্তায় আছি। নোটবুকের মাদারবোর্ড নষ্ট, আজ গেল পিসি নষ্ট হয়ে, লিখছি মামার ল্যাপটপ দিয়ে যা কাল মামা হবিগঞ্জে নিয়ে যাবে অফিসের সাইটে। তার আগেই এই ট্রিবিউট পোষ্ট লিখে ফেলি।
আজ যথাক্রমে লীনাপু আর কামাল ভাইয়ের জন্মদিন। আমি পত্রিকা পড়া ছেড়ে দিয়েছি ইদানিং,কারন পাতা খুললেই সুন্দরবনের তেল চিটচিটে বিষাক্ত পানির ছবি, মৃত প্রানীর ছবি, মনকে বিষিয়ে তুলে। সারাদিন আর সেই বিষ থেকে মন ভালো হয় না। জাতির চোখের সামনে ধ্বংস হবে এই গ্লানি সেই ফার্নেস ওয়েলের মতোই মনকে বিষাক্ত করে দেয়। তাই পত্রিকা থেকে দূরে থাকি, তাই রাখা হয় না তারিখের হিসেব। এমনিতেই দিন ছোট কিভাবে চলে যায় বুঝতেই পারি না। মামার সাথে অগ্রহায়নের কয় তারিখ আজ, তা নিয়ে তর্ক করতে গিয়ে মনে পড়লো আরে কিছু সময় পরেই তো আমার প্রিয় দুই মানুষের জন্মদিন, আর আমি কিনা বসে বসে টিভি দেখছি। ফেসবুক টেসবুক লাগে না কিছু কিছু ডেইট অটো মনে এসে যায়। মনে হয় নিজের জন্মদিবসের চেয়েও এইসব ডেটগুলো বেশী করে স্মৃতিতে রয়ে গেছে।
নতুন করে আর কি লিখবো, সেই সামহ্যোয়ারের আমলে কামাল ভাইকে দেখতাম ব্লগে তারপর এই ব্লগে। একমাত্র উনার রিসেন্ট লেখা গুলোই উনার সাইটে পাওয়া যেত। বড় মজার ব্যাপার প্রতিদিন পড়ে শেষ করে ফেলতাম। তখনকার দিনে নেটের এত স্পিড ছিল না, তাই নেটে পড়াশুনা করাই একমাত্র কাজ। পড়তে পড়তে এক ঘোরে চলে যেতাম। মনে হলো কামাল ভাই তো অসাধারণ লিখে, আমি আগে পড়ি নি কেন। তখন চমৎকার সব ব্লগ লিখতেন কামাল ভাই, এবং আমাদের মতো অতি সাধারণ ব্লগারদের পোষ্ট খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ে মন্তব্য করতেন। নেটে কামাল ভাইয়ের 'আগন্তুক' উপন্যাসটা পড়ে এত ভালো লাগছিল যে বইটা আজিজে গিয়েছিলাম কিনতে, কিন্তু কোথাও নেই। এক দোকানে পেলাম উনার এক গল্প গ্রন্থ। তারপরের কথা তো অসংখ্যবার বলেছি। লেখা যাই কিছু হয় না হয় আজকাল, তাতে উনার অবদান অনস্বীকার্য। অপাত্রে তিনি দান করেছেন কত অসাধারণ সাজেশন্স। উনার মতো বড় লেখক আমার কাছের মানুষ, ভাবতেই আনন্দ। তার চেয়েও বেশি আনন্দ উনার কথা শুনতে। এত দারুন ভাবে উনি কথা বলেন, এবং সব কিছু নিয়ে স্মৃতি থেকে এমন এক বিশ্লেষন দেন- যা মুগ্ধ হয়ে শোনা ছাড়া আমার আর কিছু করার থাকে না। যদিও কয়েকমাস ধরে কিছু ব্যাক্তিগত কারনে ও ভীষন ব্যস্ততায় কামাল ভাইয়ের মন মেজাজ বা দিনকাল ভালো কাটছে না, ফেসবুকেও তেমন দেখি না, তাই আমার সাথে সেরকম ভাবে যোগাযোগও রক্ষা করা হয় না। তবুও উনার কথা সব সময়ই মনে পড়ে। মনে পড়ে বলেই এই নিয়ে তিন বছর উনার জন্মদিনে আমার পোষ্ট লিখতে বসা। অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাইয়া। অনেক ভালো থাকেন। এমনিতেই আপনি তরুণ, এরকম তারুন্য ধরে রাখেন আজীবন। আর সব কথা তো আগেই নানান ভাবে লিখে ফেলেছি।
http://www.amrabondhu.com/aliarafat/5619
লীনাপুর কথা আর নতুন করে আর কি বলবো। কি আর বলার আছে, এই যে লিখছি এই ব্লগে তার জন্য লীনাপুর ভুমিকা বিশাল। কত বিশাল তা আমি জানি। আমার আগে শিশুতোষ মার্কা লেখা সব উনি কি পরমযত্নে পড়ে ভালো বলতেন। লীনাপু ব্লগ ছেড়েছেন সেই কবে, তাও এখনও লিখতে শুরু করলেই ভাবি আর কেউ পড়ুক না পড়ুক, আপু পড়বেই। আর জিগেষ করলে বলবে, ভালো হচ্ছে তো। সামহ্যোয়ারে আপুর লেখা পড়তাম তবে উনার সাথে আমার তেমন চেনা জানা হয় নাই। উনাকে প্রথম দেখি নরাধম যখন দেশে আসলো সেইদিন রেষ্টুরেন্টে। কথা হয় নাই। ব্লগেই দেখতাম- উনি আমাকে লিখতে খুব উৎসাহ দিতেন, ল্যাবএইড তখন এবির খানাদানার অফিস, একদিন দেখা হলো, কথা হলো অনেক, খুটিয়ে খুটিয়ে আমার খোজ খবর সব নিলেন। তারপর থেকে সেই যে শুরু হলো, তা চলছেই। উনার লেখা, উনার বই পড়া, নিজের চিন্তাভাবনা সব কিছুই ইউনিক। এরকম মানুষ আমি আগে দেখি নাই। তবে সব চেয়ে ইউনিক উনার ভাই প্রেম। যে ভালোটা বাসেন আমাকে- তাতে অবাক হয়ে যাই। আমার কোনো বোন নাই, উনার সাথে কথা বললে মনে হয় ইশ্বরপ্রেরিত বড় বোন এসে পড়েছে দুনিয়ায়, আর চিন্তা নাই। যোগাযোগ কম হয় তাও আমি সব সময় জানি আমার সাথে আছে আপু। কত বই ধার নিয়ে পড়েছি উনার কাছ থেকে তার হিসাব রাখতে পারলে ভালো হতো। আর এককালে বই তো উপহার দিয়েছেন সমানে। অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপু। নামিরা আর শ্রেয়াকে নিয়ে অসাধারণ সময় কাটুক সামনে। শ্রেয়া মামনির জন্য অনেক আদর। রাস্তায় কোনো শ্রেয়ার বয়সী মেয়ে দেখলে তাকাই, শ্রেয়াও নিশ্চই এরকম বড় হচ্ছে। নতুন করে কি বলবো, উনাকে নিয়েও আমি লিখেছি আগে। http://www.amrabondhu.com/aliarafat/6947
আপসোস খালি একটাই আজ যদি এই দুইজন ব্লগে থাকতো। তবে কত অসাধারণ হতো।
লীনা আপুর আরেক সন্তানের জন্য আদর-দোয়া নেই কেন?
অবশ্যই আছে। নামিরা এখনো খুব ছোট তো তাই ওকে নিয়ে বেশি কথা বলার নাই! নামিরার জন্য অনেক আদর আর ভালোবাসা।
ঠিক
আমি সব সময় ঠিক কথাই বলি
কথাটা খুব ভাল্লাগছে।
শান্তর পোস্ট পড়ে দুইজনেই ব্লগে আসুক।
লীনাপা এবং কামাল ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা আবারো। ভালো থাকবেন, সবসময়।
লীনাপা এবং কামাল ভাইকে জন্মদিনের
শুভেচ্ছা,
শুভকামনা কখনোই পুরোনো হয় না!
মন্তব্য করুন