ইউজার লগইন

ফাক অল দোজ পারফেক্ট পিপল!

শিরোনামের কথাটা আমার না। চিপ টেইলরের একটা গানের লাইন। আমার ভীষণ প্রিয়। সকল ব্যর্থদিন, গ্লানির দিন, হতাশার দিন, সুইসাইডাল ভাবনার দিন গানটা মনে পড়ে। আসলেই এই প্ল্যানেটে দরকার ছিল না এদের। তাও তারা আছে। উপকার করছে না বিশেষ। তবুও আছে। গানটা শুনতে শুনতে মনে পড়ে কয়েকটা লাইন। ইন্টারনেটেই দেখেছিলাম।

The loneliest people are the kindest,
the saddest people smile the brightest,
and the most damaged people are the wisest.
All because they don't wish to see others suffer like they do!

চিপ টেইলের বাবার দেয়া নাম ছিল ভিন্ন। এটা তার শিল্পী জীবনের নাম। আশি বছরের উপরে তার জীবনে তিনি সবসময় ইন্ডিপ্যান্ডেন্ট বিভিন্ন লেভেলে নিজের কান্ট্রি ও ফোক রক গান শুনিয়ে যাচ্ছেন। তার একটা রেকর্ড কোম্পানীর নাম, বুদ্দাহ রেকর্ডস। আরো অনেক গল্পই তাঁকে নিয়ে করা যায়। সেটা আজ থাক।

নভেম্বর মাস এসে পড়লো। নভেম্বর আর ডিসেম্বর হলো হতাশা ও বিষণ্ণতার সময়। সারা বছর কিছু করা হলো না, এই বেদনা এই দুটো মাসেই পোড়ায়। নতুন বছরে নতুন আশাবাদ। নতুন করে আবার ব্যর্থ হয়ে আবার নতুন হতাশ থাকা আর কি। এই চক্র চলতেই থাকে। চক্র নিয়ে মনে পড়লো এক মালায়লাম সিনেমা। সিনেমাটা অক্টোবরের কোনো শুক্রবারের দুপুরে দেখেছিলাম। সিনেমাটার কোনো গল্প নাই। সিনেমাটার নাম, থাল্লুমালা। নেটফ্লিক্সে আছে। সিনেমাটায় কিছু আছে ননসেন্স ফাইট আর দুর্দান্ত ভিজুয়াল। তো একটা চরিত্র থাকে ওমেগা বাবু। যার কোনো কাজ নাই। দুবাই যাচ্ছে, এয়ারপোর্ট যাবার সময় কাউকে অযথাই মার দিলো। আমাদের ভাগ্য মনে হয় একেকটা ওমেগা বাবু, অযথাই মার দেয়ার জন্য বসে থাকে। সিনেমাটায় আছে একটা দুর্দান্ত ফাইট সিন সিনেমা হলে। আমি আগে আমার বন্ধু পুলককে বলতাম। ধরেন যদি থাকতো সিনেমায়। যে বলাকা হলে নায়ক তুমুল মারপিট করছে, মজার হতো। এতদিন পর এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে খুব ভালো লেগেছিল। আরেকটা মালায়লাম ছবি দেখলাম সেদিন রাতে, পালতু জানোয়ার। মানে ডমেস্টিক এনিম্যাল। এক ছেলে সরকারী চাকরির লোভে পশু সম্পদ কর্মীর চাকরি নেয়। কাজটা তার পছন্দ না। সে ছিল এনিমেটর। এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেজাজ হারায়। আর গ্রামের মানুষের কুটবুদ্ধিতে বিরক্ত হয়। সে হাল ছেড়ে দেয়। এসব নিয়ে তার জীবন। এমন সময় তার জীবনে আসে একটা গরু। সিনেমাটা এত সিম্পল। আর পরিচালক বাসিল জোসেফ এখানে নায়কের ভূমিকায়। বাসিল জোসেফ আমার খুব ভালোবাসার ডিরেক্টর। সে গোডা, মিন্নাল মুরালি টাইপ ভালো ভালো সব সিনেমা বানিয়েছে। এছাড়া এখন মালায়লাম ছবি গুলোর ভেতরে একটা ফিচার হলো, দুই চরিত্রের কনফ্লিক্ট। এটা আদিত্যম কস্মিয়ম, কাদুভা, ওরু ঠেক্কান ঠালু কেইস। এগুলা এখন আর টানে না। এখন মনে হয় মারাঠি ছবি চুম্বকই আমার জন্য আদর্শ। কি সুন্দর মানুষের গল্প।

আমি টানা এক মাস ধরে দেখলাম কিমস কনভেনিয়েন্স নামের টিভি সিরিজ। ভারী মজার। কোরিয়ান ইমিগ্রান্ট বাবা মা সন্তানের গল্প। কিন্তু আমাদের সাথেও মিল আছে। সব এশিয়ান বাবারাই বোধহয় কিছুটা কিমের বাবার মতো। এই সিরিজটা আমি দেখেছি আমার ছোটবোন প্রত্যাশার কারণে। তার খুব প্রিয় সিরিজ। তবে মানুষের যে সব কথা আমি শুনি তা না। যেমন অনামিকা অনেকবার বললো, হাউজ অফ ড্রাগন দেখতে। দেখি নাই। জেমস, শুভ ভাই বলতো, গেইম অফ থ্রোন্স দেখতে। হয়ে উঠে না। সোহানের কারণে আমি চার সিজন ব্রেকিং ব্যাড দেখেছি। আমার কাছে এটার চেয়ে বেটার কল সউল বেশি ভালো লেগেছে। এখন যেমন খুব ভালো লাগতেছে, শান্তারাম। বইটা পড়ার কারণে আমার সিরিজটা কানেক্ট করতে পারতেছি। আর সত্তর আশির দশকের ভারত হলিউডের চোখ দিয়ে দেখতে ভালোই লাগে। আর ভাত খাওয়ার সময় একটা সিটকম একটা লাগেই। দেখছি কমিউনিটি। খুবই মজার সিরিজ। সিরিজটা কেন হিট হলো না এটা একটা বিস্ময়। আমার এই ধরনের সিরিজ পছন্দ। যেমন পার্ক এন্ড রিক্রিয়েশনস, সেইন্টফিল্ড। একটা ফ্রেঞ্চ সিরিজ দেখলাম, স্ট্যান্ডিং আপ, স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানদের নিয়ে, এত সুন্দর ও অথেনটিক। সাবটাইটেল পড়েই এত হেসেছি। আমার এমন হয় মাঝে সাজেই। যেমন একটা তেলেগু মুভি আছে, জাথি রত্নালু। এত মজার। আন্দাজ আপনা আপনা, হেরা ফেরি, লেভেলের কমেডি মুভি।

পড়তেছি কি? অমর্ত্য সেনের জগৎ কুটির, শামিম আহমেদের লেখা কলকাতায় গালিব আর জাফর আহমেদ রাশেদের আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্প। তিনটা বই ই প্রায় শেষ দিকে। আমি এক সাথে দু তিনটা বই পড়ি। একটা ভালো না লাগলে আরেকটা। আর থিয়েটারওয়ালা, নতুন দিগন্ত ও কালি ও কলমের ম্যাগাজিন তো আছেই। সাথে এখন মোবাইলে পড়ার চেষ্টা করি। বাংলা ইংরেজি অনেক ধরনের বই। অল্প অল্প করে পড়ি। হাওয়ার্ড জিনের এমেরিকান হিস্ট্রি এখন আমাকে খুব টানছে। মোহাম্মদ আজমের একটা বই অর্ধেক পড়ে রেখে দিছি। নন ফিকশনে আমি এত ভাষার খেলা নিতে পারি না। যে কারণে মানস চৌধুরীর বই শেষ করতে পারি না। তাদের দাবী হলো জ্ঞান জগতে বিচরণ এত সহজ নয়। আমার কথা হলো আমি কঠিনকে ভালোবেসে ইংরেজি পড়বো। বাংলায় আমি নন ফিকশনে এত ভাষার প্রায়োগিক দক্ষতার প্রকাশ চাই না। যেমন ধরুন বাংলা গানের ইতিহাস, গোলাম মুরশিদ কি সহজ করে লিখেছেন। সিনেমা আর বই এক না। জেফরি ডেমারকে নিয়ে সিরিজ দেখলেও আমি কোনো লেখকের পন্ডিতি করা বই জেফরি ডেমারকে নিয়ে লেখা পড়তে চাই না। কারন বই পড়াই এখন চ্যালেঞ্জিং। তার ভেতরে পাঠের চ্যালেঞ্জ কেন নিবো। এইজন্য আবার সুনীল সমরেশ হুমায়ূন আহমেদ পড়ে জীবন পার করবো এটারও মানে নাই। মাঝামাঝি একটা অবস্থানে থাকতে হবে। সন্দীপন বলে গেছে, বাংলা সাহিত্য করতে আসলে বাংলা ভাষাটা ঠিকঠাক জানলেই যথেষ্ট। আমারও তাই মনে হয় এত থিসিস আর অভিজ্ঞতা জানিয়ে কি হবে যদি আমি কি বলতে চাই, তাই ক্লিয়ার না হয়। যাক ফেসবুক ডিএক্টিভেট। মন মেজাজ খুব খারাপ। খুবই ডাউন লাগে। তাই লিখলাম পোষ্ট। ভালো থাকবেন সবাই।

পোস্টটি ৫ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


চিপ টেইলরের 'দিস ইজ হাও ইট ওয়ার্কস' আর 'ড্যান্স উইদ আ হোল ইন ইওর শু' মোবাইলে আছে অনেকদিন হইছে।

কমিউনিটি অসাম, কিছু এপিসোড মাস্টারপিস।

অযথা লেখা চলতে থাকুক, ভালোই লাগে পড়তে। ভালো না থাকার মাঝে যে আমরা একলা না এইটা জানানোর জন্য হইলেও লেখা চলুক।

আরাফাত শান্ত's picture


থ্যাংকস বর্ণ। কতদিন পর কারো কমেন্ট দেখলাম। খুব ভালো লাগলো। লিখবো আশাকরি!

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আরাফাত শান্ত's picture

নিজের সম্পর্কে

দুই কলমের বিদ্যা লইয়া শরীরে আমার গরম নাই!