আরাফাত শান্ত'এর ব্লগ
বইমেলা থেকে পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ প্রিয় লেখক আহমাদ মোস্তফা কামালের 'প্রেম-অপ্রেমের গল্প'
আবারও লিখতে বসলাম, কারন না লিখলেও রাতটা চলে যায় আর লিখলেও চলে যায় রীতি মেনে। তাই লেখা শেষের অনুভুতিটাই ভালো, রাতে ভালো ঘুম আসে। সকালটাও আনন্দময় কাটে। যদিও শরীরের অবস্থা বিশেষ ভালো না। টুকটাক শরীর খারাপ, গলা ভেঙ্গে কাঠ, নিজের কন্ঠস্বর নিজেরই অচেনা লাগে। বলি টিএসসি, শুনে রিকশাওয়ালা কেএফসি। কী যে বিপদময় অবস্থা তাও আমার তাফালিং কমে না দৈনন্দিনের। সোমবারে এক বন্ধুর বাসায় গেলাম সন্ধ্যের দিকে। আড্ডা জমলো, দারুণ নাস্তা হলো, ফেরার সময় তিনটা বইও ধার আনলাম। ধার করে ও বই কিনতে কিনতে টেবিলে অপঠিত বইয়ের স্তুপ। এত বই আমার পড়ার অপেক্ষায় বসে আছে তা ভাবতেও অনেক শান্তির। তবে শান্তি নাই মানুষের, বিভিন্ন কাছের দুরের মানুষ সমন্ধে আমার কিছু উচ্চ উচ্চ ধারনা থাকে, নানান ঘটনার কারনে সেই উচ্চ ধারনার কাচ গুলো ভেঙ্গে পড়ে হুট করে, তখন নিজের উপর তীব্র মেজাজ খারাপ হয়। আমি না হয় সুবিধের লোক না, কিন্তু সবাই কেন আমার মতই হব
বইমেলা থেকে পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ একদিন অহনার অভিবাসন
এত অপেক্ষার বইমেলাও ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। জীবন থেকে তরতর করে খালি দিন গুলো চলে যাচ্ছে, ভাবতেই মন খারাপ হয়ে যায়। অনেকে বলে সময় তাদের কাটে না, আমি তো দেখি সময় থাকেই না কোনোক্রমে। যেভাবেই থাকি, যাই করি সময় দ্বিগুন গতিতে চলে যায়। সে কথা যাক, সময় নিয়ে হতাশা আগের অসংখ্য পোষ্টে করেছি। এখন বাদ দিয়ে অন্য কথা বলি। ধুলোর সমুদ্রের যে বই মেলা, যাচ্ছি নিয়ম করে। কিন্তু সমস্যা হলো- মেলায় কোনো কাজ থাকলে তা মিস করে ফেলি, অথচ এমনিতে মেলায় যাই প্রায় প্রতিদিনই। যেমন কালকের কথাই ধরুন না, বাংলাদেশের খেলা দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল, মেলায় আর যাবো না। কিন্তু কি মনে হলো হুট করে বাসায় আসলাম, বুয়া রান্না করে নাই গোটা গোটা অক্ষরে লিখে গেছে চাল নাই। আমি বের হয়ে গেলাম সাথে সাথেই। রহীমকে ফোন দিলাম, রহীম হলো গিয়ে সেই রিকশাচালক যার ফোন নাম্বার আমার মোবাইলে সেইভ করা আছে, দূরে কোথাও যাবার নাম নিলেই রহীমকে ফোন দেই। পুলক ও আস
বইমেলা থেকে পাঠ প্রতিক্রিয়া- অয়নান্ত সূর্যের দিন
ঘুরে ফিরে ফেব্রুয়ারী এলেই বাংলা বই নিয়ে হন্তদন্ত শুরু হয়ে যায়, মানের প্রশ্ন আসে, সাপ্লাইয়ের সমস্যা ধরা পড়ে, প্রাপ্তি ও দোকানের সংখ্যা নিয়ে হা হুতাশ উঠে, দাম নিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ হয় অনেকের, লেখকের রয়েলিটির প্রসঙ্গ আসে, দেশে কত জন লোক বই পড়ে আর কত লোক মেলায় আসে ঘুরতে, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত চারিদিকে শুনতে হয়। আমার কাছে বই হলো প্রতিদিনের জিনিস, প্রতিমাসে সংগ্রহের জিনিস, জীবন যাপনের প্রতিটা বাকে নিজেকে ঋদ্ধ করার জিনিস। আমার এই সীমিত অর্থের দিন যাপনে প্রতিমাসেই বই কিনে সংগ্রহ করি, ধার নেই ও পড়ি। অথচ এই দেশে মাত্র এক মাসেই বই নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা হয়, এক মাসের কয়েকদিন সামান্য কিছু মানুষ অল্প কিছু বই কিনে, ভুষিখোর লেখকেরা বস্তায় বস্তায় বই লেখে, তা কখন মেলায় আসে আর কখন চলে যায় তার হিসাব কেউ রাখে না, এক মাসেই টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা গুলোতে বই প্রেম ভাতের ফেনের মত উতলে উঠে, সব শেষ হয়ে শুধু থেকে যা
চলে যায় বসন্তের দিন!
শেষমেষ ব্লগের শিরোনাম হুমায়ূন আহমেদের এক বইয়ের নাম থেকে মেরে দিলাম- এই বাকী ছিল মনে হয়। বইটা মনে হয় আমার পড়া ছিল আগে। আজ কোন স্টলে গিয়ে জানি দেখলাম বইটা, সাত বছর ধরে হুমায়ুন সাহেবের বই কিনি না মেলায়। আমার এক ক্লাসমেট বন্ধু আছে আবুল খায়েরে স্টিলের ইঞ্জিনিয়ার, সে কঠিন হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত। এখন আমার এইসব নাক সিটকানো দেখলে বলে উঠে নাইন টেনে তো সমানে গিলতি, এখন সমস্যা কি?
Agnee- 2014
ধারনা ছিল না আজ সিনেমা দেখা নিয়ে পোষ্ট লিখবো, মানুষের জীবনের ঘটনা প্রবাহ যে এত অনিশ্চিত কখন যে কী হবে বোঝা দায়। টিভি নাই সময় পেলে আমি বাসাতেই প্রচুর সিনেমা দেখি অনলাইনে। কিন্তু হলে গিয়ে এই মাসে সিনেমা দেখা হবে তা আমার ভাবনায় আসে নি। সেই আলাপে পড়ে আসছি, আজ সারাদিন এই টিপটিপ বর্ষা আর মেঘময় দিনে আমার মন মেজাজ খুব একটা ভালো ছিল না। দেরীতে যথারীতি ঘুম থেকে উঠে বাসাতেই বসে ছিলাম না খেয়ে, মামা অফিসের কাজে হবিগঞ্জ অনেকদিন তাই সকালে নিয়ম মেনে বুয়ার দেখা নাই। বাসাতেই বসে ছিলাম, বন্ধুর বাসা থেকে অনেক গুলা বই এনেছি তার ভেতরে তিনটা বই দুইদিনের ভেতর শেষ করার মনোবাসনায় বই পড়া শুরু করলাম। বেছে বেছে অবশ্য চিকন ও মাঝারী তিনটা বই ই নিলাম, প্রথমেই শেষ করলাম এবিএম মুসার মুজিব ভাই, অসাধারণ একটা বই। খুবই চনমনে সব তথ্যে বইটায় ঠাসা। তারপর পড়লাম মৌলি আজাদের, হুমায়ূন আজাদ আমার বাবা। এই বইটা লাগলো মোটামুটি। ব্যাক্তি হুমায়ুন আজাদের কিছু স্নেহশীল মাখা ব্যাক্তিগত জীবনের আলাপ আলোচনা জানলাম। তবে লেখিকা এত প্রখ্যাত ব্যাক্তির সন্তান হয়েও লেখার হাত খুব একটা ভালো না। তারপর পাকিস্তান আমলের চীফ মিনিস্টার আতাউর রহমান খানের
তাই চোখের আড়ালে থেকে গেল কতোকিছুই!
পোষ্ট লিখছি যখন ফাগুন তখন শুরু হয়ে এক দিন চলে গেল। বাসন্তী আর হলুদে পুরো ঢাকা শহর একাকার হয়ে- সাদর সম্ভাষন জানালো ফাল্গুন মাসকে। ফাল্গুন আর বৈশাখ হলো অতি বুর্জোয়া মাস, তাদের আগমনে উল্লসিত শহর নগরে ব্যাপক আয়োজন মানুষের, উৎসব চলে এই মাসগুলোর আগমনে। এই দুটো মাস বড়ই কপালওয়ালা, আষাঢ় কিংবা অগ্রহায়নের সেরকম কোনো কপাল নাই, অথচ সেই মাস গুলোও কত অসাধারণ। ক্লাস নাইনে নাকি ইলিভেনে পড়তে হয়েছিল সুফিয়া কামালের 'তাহারেই পড়ে মনে'। ফাল্গুন এসে পড়লেও কবির মনে শীতের জন্য বিরহ। সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষের শোকে তিনি কাতর। আমার ঠিক উল্টো, শীতের চলে যাওয়াতেই আমি যারপরনাই আনন্দিত। কারন লম্বা লম্বা দিন, ঝাঝালো রোদ, ক্লান্তির ঘুম, লোডশেডিংয়ের রাত, বাইরে ঘুরে ঘুরে চামড়ার বারোটা বাজানো এইসব গরমের দিনের আসল সুখ। কাউকে যদি বলি গ্রীস্মকাল আমার প্রিয়, হয়তো হো হো করে হেসেই উড়িয়ে দিবে। কিন্তু আসলেই গরমের দিন আমার ভালো লাগে। গ্রীস্মকে আমার মনে হয় আমাদের আসল বাংলাদেশের চেহারা। কঠোর, ঝাঝালো, সব কিছু পুড়ছে এমন এক অবস্থা। বর্ষাকাল তার তুলনায় মধ্যবিত্তের মতো, সব কিছু লুকিয়ে রাখা ও গ্ল্যামারাস একটা ভাব আনাই তার কাজ।
টুকটাক অসুখের দিনগুলো!
শিরোনাম থেকেই বোঝা যায় আমার শরীরটা ভালো নাই। তবে তেমন কোনো জটিল অসুস্থতা না, এমনিতেই শরীর ভালো লাগে না। ঠান্ডা বাড়ী থেকে লাগিয়ে আসছি, তার ভেতরে নতুন যুক্ত হয়েছে মাথা ব্যাথা ও জ্বর জ্বর ভাব! এইসব টুকটাক রোগবালাই নিয়ে একটূ অসুবিধাতেই আছি কয়েকদিন। আমার অবশ্য তেমন একটা রোগে শোকে কাটাতে হয় না। সেই কবে একবার টাইফয়েড হয়েছিল; তারপর গত আট নয়বছর ধরে শরীরটা বেধড়ক ভালোই কাটছে। টুকটাক ঠান্ডা লাগা আর জ্বর এই মুলত আমার এখনকার অসুস্থতার একমাত্র গন্তব্য। তাও তা- বিধাতার অপরিমেয় রহমতে আসেও কম। তবে যখন আব্বু আম্মুর সাথে থাকতাম, তখন মজা ছিল। সামান্য জ্বর হলেই যে সবার এটেনশন পেতাম তাতে অবাক লাগতো। আমার অসুস্থতায় সব চাইতে বেশী চিন্তায় পড়তো আম্মু, আম্মুর সেই উদ্বিগ্ন মুখের কথা এখনও চিন্তা করলে চোখে পানি এসে যায়। এই চার পাঁচদিন ধরে হালকা ঠান্ডা আর মাথা ব্যাথাতেই ভাবি বাড়ীতে থাকলে কত মজা হতো। কিন্তু কি আর করা, মামা নেই বাসায় একা একাই দিনগুলো কাটছে!
এরপর আমি মিলিয়ে যেতে পারি, কোনোদিন ফিরে আসবো কিনা জানি না!
হুমায়ুন আহমেদের একটা বই ছিল নাম 'তুমি'। সেই বইয়ের ভুমিকায় লেখা ছিল নাম 'তুমি' নাম দিতে ইচ্ছে হলো তাই দিলাম, উপন্যাসের সাথে কোনো মিল নেই শিরোনামের। সেরকম এই পোষ্টের শিরোনামের সাথেও আমার পোষ্টের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাও দিয়ে দিলাম নাম অযথাই, ইচ্ছে হলো তাই। তাহলে এই নামের উৎপত্তি কোথা থেকে?
বাড়ী থেকে ফিরে, বইমেলা ফার্স্ট লুক!
সবাইকেই ফিরতে হয়, আমাকেও তাই ফিরতে হলো বাড়ী থেকে। যদিও শরীরের কন্ডিশন আশাব্যাঞ্জক না, ঠান্ডা লেগে মাথা খালি ভনভন করছিল গত কাল পরশু। আজ একটু কম, তবে শরীরটা কেমন জানি অসস্তিকর ঠেকছে। এক ডাক্তারকে ফোন দিলাম তিনি বললেন বসে থাকা লোকজনেরই এই সব হয়, শরীর মেজমেজ করে সাথে মাথা ভনভন করবে। যারা কাজের লোক তাদের নাকি এসব হয় না! শুনে পিত্তি জ্বলে গেল, তাই কাজ নিয়ে বসলাম। বই পড়ছিলাম, তার আগে ঘন্টা খানেক চায়ের দোকানে বসলাম, নিউএইজ পত্রিকা কিনে হেডলাইনে চোখ রাখলাম। এই তো বাসায় ফিরে জোহরের নামায পড়ে ভাবলাম একটা ব্লগ লিখতে থাকি- যতদুর লেখা যায়, পছন্দ না হলে পোষ্ট করবো না প্রথম পাতায়!
বই মেলা প্রিভিউ!
কোনো ভাবেই কেউ আটকাতে পারলো না ফেব্রুয়ারী মাসকে আর, আমি এবার তো ভাবলাম রাজনৈতিক দোলাচলে সব কিছুই আটকে যাবে। কিন্তু আটকানো গেল না ফেব্রুয়ারী মাসকে, তাতে আমি বেজায় খুশী। আমি তো চাই বছরে তিনটা ফেব্রুয়ারী আসুক, তাতে তিনটা বইমেলা হোক। গতবারে বইমেলার শেষ দিনে রাতে যখন রিকশায় বাসায় ফিরছিলাম- একা ভাবছিলাম ফেব্রুয়ারী মাস কেন একত্রিশে হয় না, কেন মেয়াদ বাড়ায় না মেলার কখনো, এইসব যাবতীয় অর্থহীন ভাবনা। কিন্তু আ্মার ভাবনা আমার মতোই ছেলেমানুষ মার্কা। তাই কিছুই হয় না, হবারও কথা না। তবে কাল থেকে ফেব্রুয়ারী এই ভাবতে ভাবতেই আমার মনটা চনমনে হয়ে উঠছে। তবে দুঃখের কথা হলো আমি ঢাকার বাইরে। এখানে অবশ্য আছি স্বর্গ সুখে, কিন্তু মেলা তো কাল শুরু হচ্ছে যেতে পারবো না ভাবতেই সব সুখ মাটি মাটি লাগছে। আমি ঢাকায় যখন থেকে স্থায়ী ভাবে থাকি তার পর থেকে সব মেলাই প্রথমদিনে যাবার একটা বাতিক আছে। প্রাইমিনিস্টার উদ্বোধন করে চলে গেলে, ভিআইপিরা বিদায় নিলে আমজনতাকে লাইন দিয়ে ঢুকানো হয়। সবাই বলে বইমেলার লাইন বিরক্তিকর, লাইন ভেঙ্গে সামনে চলে যায়, আমার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতেই ভালো লাগে। মধুর এক অপেক্ষা। প্রথম দিনে মেলায় গিয়ে দেখা যায় অনে
তিক্কি!
'তিক্কি' শব্দটা জামালপুর- শেরপুরের মানুষদের মুখেই বেশি শুনেছি আমি। আমার আম্মুও ইউস করে, এর অর্থ হলো খুব মনে লাগছে যাকে বলা যায় আঁতে ঘা লাগা। কিছুটা 'সাময়িক উত্তেজনায় মেজাজ খারাপ' এমন কিছু। ঢাকার আম জনতার ভাষায় বলতে গেলে 'বিগাড়' উঠা। গতকালকে আমারও তেমন 'তিক্কি' উঠছিলো নিজের উপরেই। প্রচন্ড শীত জামালপুরে, ঘুম থেকে উঠতে হলো দেরী, মোবাইলে ও ল্যাপটপেও চার্জ নাই এক ফোটা, অনেক দিন পর ভাবলাম বাংলাদেশের খেলা দেখবো টিভিতে তা আর হলো কই?
চলে যায় দিন আরামের অঞ্চলে!
নামটা খুব এক ভারিক্কি হয়ে গেল, তবে ঠিকই আছে এই নামই বলা উচিত। মাসুম ভাইয়ের বই ছিল- রঙ্গরসের জীবনযাপন নয়তো দিন যাপন যেকোনো একটা ( নামটা এক্সেক্টলি ভুলে গেছি)। সেখানে এক ছাত্রের কথা বলা আছে যে বলেছিল, বেহেশত- আরাম আর আরাম, দোযখ- মাইর আর মাইর। আমি বড়ই আরামে আছি তাই বলা যায় বেহেশতের কোনো এক লেভেলেই অবস্থান করছি এখন। তবে বেহেশতে ১৮+ অনেক সুযোগ সুবিধা আছে এখানে তার কিছুই নাই, তবুও এর বাইরে যা থাকা দরকার কম বেশী সবই আছে। আর বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের গ্রামের বাড়ী নিয়ে মিডলক্লাস অবসেশন আছে তা মেলালে তো আমার এখানে রীতিমত স্বর্গে থাকারই আনন্দ। বাড়ীতে এসে মনটাও ভালো, আমার এক বন্ধু ছিল সে শহুরে থাকা গ্রামের মানুষ, সে আমাকে সব সময় বলতো দুনিয়ার সব চেয়ে শান্তিময় স্থান হলো নিজের গ্রামের বাড়ীতে থাকা, আমি বলতাম হ তোরে কইছে, ক্ষেত কুথাকার। আমার গ্রাম ভাল না লাগলেও এই শহরতলী মার্কা গ্রামের বাড়ীটা খুব ভালো লাগে।
সময় কেবল, সময় শুধু-সময় নিয়ে যাবে!
টেকনিক্যাল হিসেবে আজ, আমার হিসেবে কাল বাড়ীতে যাচ্ছি ট্রেনে। সকালের ট্রেন। এই ট্রেনটার নামটা অসাধারণ- অগ্নিবীনা। কিন্তু নাম যতো সুন্দর এই ট্রেনের সার্ভিস ততই বাজে। নয়টা চল্লিশে ছাড়ার কথা, কিন্তু ছাড়ে মাঝে মাঝে একটায়। কপাল সুপ্রসন্ন থাকলে সাড়ে দশটা কিংবা এগারোটায় ছাড়বে, ততক্ষণ বলদের মত প্লাটফর্মে বসে বসে পত্রিকা মুখস্থ করতে হবে কিংবা মানুষের দিকে চেয়ে থেকে থেকে উজবুকের মত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ভেবেছিলাম পাভেলরা এত দামী ফ্ল্যাট কিনলো কমলাপুরে, এখন গেলে সময় কাটবে আনন্দে আড্ডায়। কিন্তু কাল পাভেলের এক্সাম, তাই ফ্রি নাই। সেই সাত সকালে বাসে ঝুলতে ঝুলতে এসে খালি পেটে আমাকে একা একাই থাকতে হবে। তবে এত কিছুর ভেতরেও বাড়ী যাওয়ার আনন্দের কমতি নাই। আড়াই তিন মাস পর বাড়ীতে যাচ্ছি কিন্তু মনে হচ্ছে অনেক দিন পর বাড়ীতে যাচ্ছি। কারন নভেম্বরে যখন গিয়েছিলাম তখন মামার বিয়ে শাদী নিয়েই হন্তদন্ত, বাড়ী যাওয়ার ফিলই পেলাম না কোনো। আমার আবার ৯-১০ দিন বাড়ীতে বসে ভালো মন্দ খেয়ে, টিভি দেখে বোর না হলে বাড়ী যাওয়ার ফিলিংস পাই না। কী এক সমস্যা!
তখন থাকবে পরে এক ফালি এই দিন!
দিন যাচ্ছে যত বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের যত স্মৃতিময় সময়ের গল্পগুলো ছিল, সেই গল্পের মানুষগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। সুচিত্রা সেন তো সেই কবেই সিনেমার সোনালী দুনিয়া থেকে চলে গেছেন, থাকতেন একেবারেই অন্তরালে। এবার সেই অন্তরাল থেকেও হারিয়ে গেলেন। আমার অবশ্য তাতে খুব একটা কষ্ট নাই, অনেস্টলি স্পিকিং আমি সুচিত্রা সেনকে আমার সময়ের সঙ্গে রিলেট করতেও ফেইল করেছি। তাঁর সপ্তপদী কিংবা হারানো সুর আমিও টিভিতে দেখছি কিন্তু আগের মানুষদের মত সেরকম মুগ্ধ হই নাই। ফ্যান্টাসীও জাগে নাই। তার চেয়ে রাজ্জাক ববিতার সিনেমা কম্পারেটিভলি আমার বেশী স্টানিং লাগছে টিভিতে। আর আমরা এমন এক নষ্ট প্রজন্মে জন্ম নিছি যারা সিনেমা হলের চেয়ে টেলিভিশন কিংবা কমিকস বইকে বেশী আপন করে পেয়েছে। তাই সিনেমার যে চার্ম তা আমি খুব বেশী ফিল করতে পারেন না। তাই সুচিত্রা সেনের গ্ল্যামারের বর্ননা আমার মুরুব্বীদের মুখেই শুনতে হয় আর পত্রিকাতেই পড়তে হয়। এরকম একটা গল্প আছে- জানি না সত্য মিথ্যা, পাকিস্তান আমলে একবার নাকি বোর্ডের কোন পরীক্ষায় আসছিলো বাংলায় উত্তমের বিপরীত শব্দ, সবাই নিঃসংকোচে লেখে আসছে- সুচিত্রা। আসলে সময় মানুষকে নানান ভাবে ভাবায় ও নানান কিছুতে আচ্
বঙ্গ ফ্রীল্যান্স বুদ্ধিজীবির বানিজ্যমেলা যাত্রা!
নামটা ধার করেছি মুনতাসীর মামুনের বই থেকে। বইটার নাম সবাই জানে- ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী। তার সেকেন্ড খন্ডে হরিপ্রভা তাকেদার গল্প আছে। হরিপ্রভা তাকেদা হলো ঢাকার প্রথম আধুনিক মহিলা। তার স্বামী উয়েমন তাকেদার ঢাকায় আসেন ভাগ্যের সন্ধানে, ১৯০৩ সালের দিকে খোলেন 'ইন্দোজাপানিজ সোপ ফ্যাক্টরী'। ঘনিষ্ঠতার সুত্র ধরে ১৯০৬ সালে তারা বিবাহ করেন। ১৯১২ সালে ব্যাবসা গুটিয়ে তাঁরা জাপান যাত্রা শুরু করেন। কোনো বঙ্গ মহিলার প্রথম জাপানী বিয়ে করে জাপান যাত্রা সেই প্রথম। ১৯১৫ সালে তিনি বইটা লিখেন নাম 'বঙ্গমহিলার জাপান যাত্রা'। নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের দেখা করেন, জাপানের নানা শহরে ঘুরেন, শ্বশুর শ্বাশুরীর ও এলাকাবাসীর ব্যাপক আদর স্নেহ পান। তার বই পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন কিশোর বয়সী অন্নদাশঙ্কর রায় থেকে বুদ্ধদেব বসু। একজন সাধারন বঙ্গমহিলা যিনি কিছুই দেখেন নি তার দুনিয়ার তার চোখে জাপান ও জাপানীদের সেই সময়ের সমাজ নিয়ে লেখতে পারা নিঃসন্দেহে অসাধারণ ব্যাপার। এশিয়ার বাইরে কিংবা এশিয়ার অন্য কোনো ভাষায় এরকম জাপান নিয়ে সম্পুর্ন কোনো বই বের হয়েছে কিনা তা গবেষনার বিষয়। ওয়াতানাবে নামের এক জাপানী জানাচ্ছেন জাপানীদের সেই সময়ের মন মানস