ইউজার লগইন

অনিমেষ রহমান'এর ব্লগ

শ্যাম-রাধা বিচ্ছেদঃ ০৬-রাধাবৃক্ষ

গাছের পাতা উড়ে হাওয়ায়
উড়ে আঁচল তোমার,
বুকের মাঝে কষ্টগাছ
শিকড় বাকড় শুধু আমার।

তুমি হইলা ফুল আর ফল
আমি দিলাম ছায়া আর জল।

অনিমেষ কয়-হাওয়ায় উড়ে
যাইবা কোথায় রাধা;
কৃষ্ণ হইলো একলা নাও
সে দুঃখনোঙ্গরে বাঁধা।

তুমি হইলা পুজার যোগ্য
ফুল-ফল সব তোমার ভোগ্য,
তুমি প্রেমের ধারা,
রাধা বিনে বহে কেমন
দিন রাত সব আছে যেমন
প্রেমের ঝর্নাধারা।

নারীদের গল্পঃ ০১- দাগ

মাত্র চিটাগাং ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হইছি। শহর থেকে দল বেঁধে ট্রেনে করে আসা-যাওয়া করি। আমি উঠতাম ঝাউতলা থেকে। দলটা সাইজে দশ-বারো জনের হয়ে গেলো ছেলে আর মেয়ে মিলিয়ে। দলে যারা মুল ষ্টেশন অর্থাৎ বটতলী থেকে উঠতো তারা কাগজ কিংবা ইটের টুকরা কিংবা নিজের ব্যাগ দিয়ে সীট রাখার চেষ্টা করতো। আমি উঠতাম ঝাউতলা থেকে। আমাদের গ্রুপের একমাত্র আমি আর বাকিরা বটতলী আর কেউ কেউ উঠতো ষোলশহর থেকে। মুল ছাত্র-ছাত্রীদের ষ্টপেজ ছিলো বটতলী আর ষোলশহর।আর অন্যান্য ষ্টেশনগুলোতে টুপ টাপ দুই একজন উঠতো কিংবা নামতো। আমি আর তুহীন সব সময় দরজায় বসে যেতাম। সে এক অসাধারন মজা। ফতেয়াবাদ থেকে ট্রেনটা যখন বাঁক ঘুরে ইউনিভার্সিটির ষ্টেশনের দিকে যেতো অদ্ভুত সুন্দর লাগতো।আরেকটা বিরক্তিকর কাজ হলো ট্রেনের জন্য অপেক্ষা! ঝাউতলাতে দাঁড়িয়ে আছি তো আছি! ট্রেনের খবর নেই। ফেরার পথে হেলে দুলে সেই ট্রেন আবার ফিরতো-ঠিক ষোলশহরে আসলেই ট্রেন প্রায় ফাঁকা। আমি ঝাউতলা নেমে পাহাড়ী আঁকা-বাকা পথে চলে যেতাম আমার গন্তব্যে।

দয়াল তোমায় প্রনাম

আকাশপানে খুঁজে বেড়াই
কোথায় তোমার বাস-
দয়াল তুমি দয়ার সাগর
মিটাও মনের আশ ।

গয়া-কাশি-মক্কা শহর
রেশমপথে রেশম নগর
দুনিয়া তার পাগলা নাগর
খেল খেলে যাও পাগলা ডাগর।

তুমি বুদ্ধ-তুমি যীশু
তুমি মালিক-পথের শিশু
উড়াইয়া নাও মেঘপাখি
সকাল বিকাল তোমায় আঁকি-
অনিমেষ কয়-সবি ফাঁকি
হৃদমাঝারে আঁকি-বুকি
দমে দমে দমের খেলা
সময় যে নাই-গেলো বেলা।

আগুন নিভাও-আগুন জ্বালাও
কষ্টেরে দুধ কলা খাওয়াও
তুমি আল্লাহ তুমি খোদা
তুমি কৃষ্ণ-তুমি রাধা।

তোমাতে আমি থাকি
আমাতে থাকো তুমি-
আকাশ ছুঁয়ে ভুমি থাকে
দয়াল তোমায় প্রণমি।

ছুডুলোক কিংবা ভদ্রলোক বয়ান

‘রাজনীতি’ কাহাকে বলে? ইহা কি নীতির রাজা না রাজার নীতি। আমি আসলে অনেক আগে থেকেই কনফিউজ ছিলাম-এখোনো আছি। রাজনীতিসচেতনতা কি একটা দেশের মানুষের যোগ্যতা কিংবা অযোগ্যতার মাপকাঠি হতে পারে? হাঁ মাপকাঠি হইতেই পারে। রাজনীতির সবচাইতে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হলো দেশ সম্পর্কে ভাবা। কি করলে কি হতে পারে? কি না করলে কি হতে পারতো? এই যে ভাবা-ভাবি তার নাম রাজনীতি দেওন যায়। অন্ততঃ আমার মতো খুব সাধারন মানুষের কাছে। আর সাধারন মানুষের এই রাজনৈতিক ভাবনায় প্রথমেই চলে আসে গনতান্ত্রিক রাজনীতির কথা। অর্থাৎ যারা রাজনীতি নিয়ে ভাবেন-তারা চান কিংবা না চান তাদের চিন্তা চেতনায় জেগে থাকে গনতন্ত্র। যাক গনতন্ত্র নিয়ে ভাবার আগে রাজনীতি নিয়ে বহুল প্রচলিত জোক্স শুনে নেই-

স্কুল টিচার বাড়ির কাজ হিসেবে রাজনীতির সংজ্ঞা শিখে আসতে বললেন। এক ছাত্র তাই সেটা জানতে তার বাবাকে প্রশ্ন করল।
ছেলে: আচ্ছা বাবা রাজনীতি কি?
বাবা: রাজনীতি হচ্ছে সরকারী দল বা সরকার, বিরোধী দল, শ্রমিকশ্রেনী এবং জনগণকে সাথে নিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জল করা।
ছেলে: বাবা, সরকার, বিরোধী দল, শ্রমিকশ্রেনী- জনগণ এবং ভবিষ্যতটা একটা খোলাসা করে বুঝিয়ে দাও।

মুতিয়া মুরালীধরন কিংবা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওন

আজকে এক মজার ঘটনা। একটা দরকারী মেইল করছি। সহকর্মী বন্ধু হইলোঃ বিসমিল্লাহ কইয়া সেন্ড করেন। আমিও একি সময় সেন্ড করলাম আর মুখে কইলামঃ বিছমিল্লাহ! বিছমিল্লাহ’র বদৌলতে কাজটা হলে মন্দ হয়না। তবে পাশে থেকে আরেকজন হইলোঃ আপনি মাত্র সিগারেট খেয়েছেন আর সেই মুখেই বিছমিল্লাহ কইছেন-কাম হইবোনা! সাথে সাথে শুরু হইলো হাসা-হাসি। আরেকজন বুজুর্গব্যক্তি তিনি অবশ্য বিড়ি সিগারেট তেমন পান করেননা। তিনি বল্লেন আরো আজব কথা!
-সিগারেট তো আল্লাহ’র সৃষ্টি।
-হাঁ তাইতো!
-আরে না দুনিয়াতে আল্লাহ বলছে মন্দ কাজ থেইক্কা দূরে থাকতে। আরেকজন কোনা থাইক্কা আওয়াজ দিলো।
-আরে দুনিয়াতে আল্লাহ’র ইশারা ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়েনা আর এতো সুন্দর ফিনিশিঙ্গএর সিগারেট সৃষ্টিকর্তার হুকুম ছাড়া সৃষ্টি হবে-এইডা কেমন কথা?
-তার মাইনে হুইস্কি-ব্র্যান্ডি-ডান্ডি কিংবা গুন্ডা-গুন্ডি-আলু-পটল কিংবা তিতহোটলা কিংবা মানবতা বিধ্বংসি আনবিক বোমা সবি সৃষ্টিকর্তার খাজাঞ্চিখানা থেইক্কা নামছে? আরেকজন নামাজী নোট যোগ করলো।
-আপনার সাথে থাইক্কা সবাই ন-আস্তিক হয়ে যাচ্ছে। আমার দিকে তাকাইয়া আরেকজন কইলো।

মুরগা কাহানী

সেই কোন অতীতে এক মনিষী বলে গেছিলেন শুয়োরের খোয়াড়। তারপর কত দিন আর রাত-কত সকাল-কত দুপুর-কত নীরব-কত চান্নি রাইত-কাটাখালীতে কতো স্রোত-কতো কচুরীপানা-কতো ব্রীজ-কতো কালভার্ট-কতো বাত্তি-কতো খাম্বা-কতো জঙ্গল-কতো ষ্টেশান-কতো মাষ্টার-কতো সারেং-কতো নদী মরে গেলো-কতো নারী ভালোবাসাহীন প্রেমেবিক্রির খেলায় মাতলো-কতো পুরুষ তার কাপুরুষোচিত পৌরুষ দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করলো-কত শিশু পপকর্ণ-পপকর্ন বলে রাস্তায় রাস্তায় চিতকার দিলো-কতো হকার এক টাকা-দুই টাকা-তিন টাকা দামে পেপার বিক্রি করলো-কতো গাড়ীর নীচে তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরেরা মারা গেলো-কতো এয়ার আহমেদ দেশের মাটিতে শেশ শয্যা পাতবে বলে প্রান দিলো-কতো তাজুল-কতো দিপালী সাহা-কতো রউফুন বসুনিয়া-কতো মোজাম্মেল-কতো মাষ্টার’দা-কতো প্রীতিলতা-কতো ময়েজউদ্দিন-কতো তাজউদ্দিন-কতো মুক্তিযোদ্ধা লাথি-উষ্ঠা খেলো।তারপরে ব্রয়লার প্রজাতির মুরগা জন্ম নিলো ঘরে ঘরে; আনাচে কানাচে। ভরে গেলো মুরগায়। মাংশ খাওন যাইবো মাগার আন্ডা দিবোনা। আন্ডার হালি হইলো ৪০ টেকা। আন্ডা খাইবার চাইতাছো তো তাইলে লেয়ার নামে আরেকটা মুরগা আছে হেইডা লালন পালন করো।

আমি কেউনা

http://transreporter.com/images/gallary/railroad_tracks414-1333014544.jpg

ধলাই নদীর ক্ষরস্ত্রোতা ঢেউয়ে
ডুবে আর ভেসে উঠে-
মুছে গেছে সখী আমার
কলংককাজল-বেহায়া চোখ।

পাহাড়ে তোমার পা ছুয়ে-
আসা জল-কান্না
মিশে গিয়ে; গমকে
চমকে-পাড় থেকে দূরে।

কাছে চেয়ে-দূরে গেলাম-
ভাবনার রেললাইন-
পাশা-পাশি আজীবন,
দেখা হবেনা-আমি কেউনা।

শুধু কালকেউটে সময়,
দংশন-বিষে নীল-
চলে যাবার বেলায়
যায়না ভোলা-যায়না।

হাওর-নদী-সবুজ পাতা
হাত দিয়ে যেও বুকে,
মিশে গেছে প্রেমিক-বাউল বিকেলে
সন্ধা-কালোয় ঢেকে।

রাতের পাখি-ভোরে উড়ে যায়,
আমি কেউনা-শুধু উড়ে আসা ঝরা পাতা-
উদাসী বায়।

যদি মনে পড়ে-খুলে দিও দখিন জানালা
ছুঁয়ে যাবো-একাকী নীলপদ্মে আর তোমার
রাঙ্গা পায়।

ছবিঃ নেট থেকে

নাগরিক গল্পঃ ১৬- বিষন্ন গলি এবং রাজপথ

Here on the slopes of hills, facing the dusk and the cannon of time
Close to the gardens of broken shadows,
We do what prisoners do,
And what the jobless do:
We cultivate hope.

-কবি মাহমুদ দারবিশ

ব্যস্ত ফার্মগেট নীরব! টংদোকানের চা দোকানীরাও ফিরেনি। এক কাপ চা খেতেও যেতে হয় অনেক দূরে। রিক্সা-সি এন জি কিংবা বাস অনেক কম। দুই একটা যাও চোখে পড়ে-চালকের চোখে চৈত্রের বিষন্নতা। সওয়ারী নেই। আধা ঘুমন্ত-আধা জাগরিত এই শহর কেমন যেনো অপরিচিত লাগে অরুপের! কি করা যায়? এতো তাড়া-তাড়ি ফেরা ঠিক হয় নাই। আরো কিছুদিন থেকে আসা যেতো মফস্বলে।আরো দুই একদিন হেলা-ফেলায় কাটিয়ে দেওয়া যেতো। পকেটে সেল ফোন ডেকে উঠেছে।
-তুমি কই মামু? আজাদের ফোন।
-আমি তো ঢাকা।
-কি কও?
-ঠিকি কইতাছি।
-না কইয়া চলে গেলা?
-সেল ফোনের যুগে বলে আসতে হবে? টিকেট তো তুমি দিলা; ভুলে গেলা এতো তাড়া-তাড়ি?
-তা ঠিক। তবুও একটু বিদায় দিতাম।
-আবার আসতেছি কিছুদিন পরেই!
-কবে?
-আগামি সপ্তাহের দিকে।
-আমি ঢাকা আসবো মন্ত্রনালয়ে কাজ আছে-তারপরে দুজনে একসাথে ফিরবো।

নাগরিক গল্পঃ ১৪-বৃষ্টিকবিতা দিন

স্বর্গের সিঁড়িতে
একাকী বসে আছে পদ্মসুন্দরী-
নীল পলকে-অপলকে
হারায় চোখ-
ফিরে আসে ঘুমন্ত যৌবন-
অস্থির মধ্যাহ্নে!

আজকে কোথায় যাওয়া উচিত? অফিস না শহীদ মিনারে? হুমায়ূনের ফেরার কথা! আজকে কি মানিক মিয়ার জারুল কিংবা সোনাঝুরি অন্যান্য দিনের মতো হাসবে? আজকে কি গোলচক্করে ঠিক অন্য দিনের মতো মীরপুরের বেপরোয়া বাসগুলো গোত্তা দেবে ডানে আর বামে! কিংবা পুরানো বিমানবন্দর থেকে ঊড়বে হেলিকপ্টারগুলো প্রজাপতি ডানায় নীল আকাশে। আজকে কি আকাশ হাসবে প্রতিদিনের মতো? গত কয়েকদিন ঢাকার আকাশ হাসি-কান্নার মাঝেই আছে। হাল্কা বৃষ্টি মনে করিয়ে শ্রাবন মেঘের দিন। অরুপের কি খুব মন খারাপ আজকের দিনে? বকুলতলা দিয়ে হেঁটে বের হয়ে অরুপ ফিরে চললো শহরের উত্তরে। আজকে কবি আসার কথা দক্ষিনে। আজকে শহীদ তাজউদ্দিনের জন্মদিন। শীতালক্ষাপুত্র শহীদ তাজউদ্দিন! মোড়ে আসতেই উজ্জ্বল আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গেলো-সোজা পুবে হাঁটা শুরু করলো অরুপ। কিছুটা হেটেই মনে হলো একদিন কাজ-কর্ম না করলে কি হয়? একদিন সারা ঢাকা শহরের ব্যস্ত মানুষ দেখলে কেমন হয়!
-অরুপ কি করো? কই তুমি?
-আমি রাস্তায়-হাঁটছি; ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত মানুষ দেখবো।

অনিমেষ রহমানের নাগরিক গল্পঃ ১৩-থমকে যাওয়া শহর

ঝির ঝিরে বৃষ্টির মাঝে বেরিয়ে পড়ে অরুপ। ছাতা হাতে নিয়ে বের হওয়ার মতো বিরক্তিকর কাজ আর দুনিয়াতে দ্বিতীয়টা নেই। মানুষের হাত থাকবে খালি। সে হাত উড়বে বাতাসের সাথে। হাত স্বাধীন তো দুনিয়া স্বাধীন! আর আজকে পরাধীন হাত নিয়ে বের হলো অরুপ। মোড়ের টং দোকানে হালকা বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে দিনের প্রথম চা। না ছাতা মেলতেই হলো। বৃষ্টি আরো ঘন হয়ে নামছে। কিন্তু আজব ব্যাপার হলো সুর্যের আলো আছে। ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেলো অরুপের। এমন রোদ বৃষ্টির খেলা শুরু হলেই চিতকারঃ রোদ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে খেঁকশিয়ালের বিয়ে হচ্ছে। খেঁকশিয়ালের বিয়ের মাঝেই অরুপ নেমে পড়লো রাস্তায়।আজকে অফিস নেই কিন্তু অনেক কাজ। সেলফোন নড়ে চড়ে উঠলোঃ
-মামা আমি মতিঝিলে; তুমি থেকো কলেজের কাছেই।
-কিসে আসতেছিস? বাস না সি এন জি?
-না মামা বাস! অনেক আওয়াজে হারিয়ে যায় অন্তুর শব্দ।

অনিমেষ রহমানের বেহেস্তী বয়ানঃ ০৩-তঘমায়ে ছাগ জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খাঁন নিয়াজী

ফাকিস্তান নিয়ে বহুত ঝামেলায় থাকি। যেদেশে ক্রিকেটার থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই দুর্নীতিতে যুক্ত!সেখানে আবার বিচার বিভাগ দুই একদিন পর-পর রায় দিতাছেন। অমুক এরেষ্ট করো আবার অমুককে বাতিল করো। ছাগরাজ্যে উজিরে আজম একবার হলো ইউসুফ রাজা গিলানী তারপর বিচার বিভাগের কোপে তার কল্লা যাওনের পরে আসলেন মাখদুম শাহাবুদ্দিন। তিনিও ওয়ান্টেড হয়ে গেলে আসলেন স্বয়ং রাজা যার নাম হইলো ‘রাজা আশরাফ’। তিনি আবার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটেও জিতে এসেছেন। ছাগ রাজ্য সুখে থাকুক। দুনিয়াবি ছাগ রাজ্য নিয়ে আমার তেমুন মাথাব্যাথা নাইক্কা। এইডা হইলো আখেরাতি সিরিজ। তবু দুনিয়াতে হালকা টাচ দিয়া গেলাম।ভালুকুথা যে আদালত আজকের ফাকিস্তান চালাইতাছে তাদের পারফর্মেন্স কেমুন? একটু উইকি থেইক্কা ঘুইরা আসিঃ

অনিমেষ রহমানের রাজনৈতিক গল্পঃ ০৭- সন্ধি

দৌঁড়াচ্ছে মধু হাজী…………! কালভার্টের কাছে এসে পিছনে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই-হঠাত সচেতন হয়ে উঠলো; কেউ দেখে নাইতো! সামনে পাটোয়ারী বাড়ী-ওহাব পাটোয়ারী একসময় ইয়ারদোস্ত থাকলেও এখন সে হয়ে গেছে দুশমন। তার লোভ আছে পৌরসভা বিল্ডিংয়ের উপর। আগে ছিলো কমিশনার আর তলে তলে বাকশালী। এখন কিছুটা চুপ-চাপ থাকে। ব্যবসা-বানিজ্যে মন দিয়েছে। পাটোয়ারী বাড়ীর কালভার্টের কাছে আসতেই দেখা হলো পাটোয়ারী বাড়ির ছোটো ছেলে-মধু হাজী ঠিক তার নাম জানেনা। উদ্ভ্রান্ত মধু হাজীকে দেখে গোল চশমা পরা ছেলেটা ভয়ে ভয়ে তাকালো।হালকা-পাতলা সুন্দর একটা ছেলে।
-তোমার নাম কি বাবা?
-লেনিন। ছেলেটা ভয়ে ভয়ে বললো।
-ভালো নাম? তুমি ওহাব পাটোয়ারীর ছেলে না?
-জ্বী আমার ভালো নাম হাসান ওহাব ডাক নাম লেনিন।
হাতের কনুইয়ে তখনো কাদামাটি লেগে ছিলো। মাথায় পেঁচানো হাজী গামছা উত্তেজনায় হাতে দলা করে রেখেছে মধু হাজী খেয়াল করে নাই। লুঙ্গিতেও কাদামাটির দাগ। হাজী গামছা দিয়ে কাদামাটি দিয়ে মুছতে মুছতে জিজ্ঞাস করলোঃ
-তুমি কোথায় পড়ো?
-চিটাগাং চাচা।
-ভালো-তুমি কিংবা তোমাদের ভাইদেরকে তো দেশ গ্রামে তেমন দেখিনা।

অনিমেষ রহমানের কবিতাঃ পৃথিবী জুড়ে বিপ্লবী বাউল

ইন্দোচীন,সিয়েরা মায়েস্ত্রা-ইতিহাস,
ভোরে সুর্যের পানে চেয়ে থাকা
রাইফেল-বুলেট-প্রেমপত্র বুক পকেটে-
ইতিহাসের পাতায় পাতায় ভরে উঠে
রক্তের নোনা দাগ-তেতো শোষন
জৈষ্ঠ্যের ঘামে তপ্তচোখে মধুমাস।

তামাবিলে পাথর খুজে অকুলপাথার
কাটাখালি-কান্নায়,ভরে গেছে আগাছায়
রিক্সায় বসে চুমু গ্রীবায়-প্রবল আবেশে
জড়িয়ে বুকে-ঝঞ্জায় বাঁচিয়ে রাখা স্বপ্ন।

পল্টনমোড় গাড়ি-ঘোড়ার চক্কর পথচারী
একতারার সুর, অন্ধবাউল মাধুকরী-
দুরে কাঁদে শোকে-দুঃখে লালন একা,
হবে না যৌথখামার-হবেনা জীবন দেখা।

পথ আজ মিশে গেছে কবি আর ল্যাটিনের পথে,
মুক্তির আওয়াজ উঠে দিগন্তে সময়-রথে।
বাউল-বিপ্লবী ভাসান দেয় সাগর মহাসাগরে,
রক্তে দ্বিগুন মিছিল-ভয় নেই হিংস্র হাঙ্গরে।

অনিমেষ রহমানের বেহেস্তী বয়ানঃ ০২-মাগরেবী কায়েদে বিড়ি বাবা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ

n

-তোমার নাম?
-মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
-বাবার নাম?
-জিন্নাভাই পুঞ্জা।
-দেশ?
-পাকিস্তান।
-পাকিস্তান কোথায়? ইয়ে তোমার জন্ম তো দেখি ভারতে!
-পরে আমি হেইডারে পাকিস্তান বানাইছিলাম।
-পাকিস্তান কুতায়? যা বেটা লাইনে দাঁড়া-তুর পাকিস্তান আমাগো লিষ্টে নাইক্কা। যা ওয়াল ধইরা খাড়া।
-বেয়াদবী করলে সমস্যা হইবে-ম্যা পাকিস্তানী মুসলিম ওয়াতানের নেতা।
-তুমি ম্যা ম্যা করো ক্যালা? তুমি কি ছাগু? এখানে সব মুর্দা; মুসলিম-টুস্লিম সব দুনিয়াতে-এইডা হইলো গিয়া আখেরাতি এরিয়া। এইখানে তুমার কুনু রাজনীতি চলবেনা।
-এইখানে কিতা চলবে?
-এই চুপ চাপ খাড়াইয়া থাক-কথা কম। যমরাজ রাঙ্গা চোখে কইলো।
-ইয়ে একটা বিড়ি হইবে?
-শালা গাজাড়ি তুমার রিপোর্ট কইতাছে-তুমি ব্যাটা মরছো বিড়ি খাইয়া যক্ষা লাগাইয়া। যাও তুমারে গুলুবুদ্দিন হেকমতিয়ারের কাছে মানে আফগানিস্তানের গ্রুপে দিয়ে দেই-হেরা নাকি পপি নামের গাছ দিয়া কি বানায়-যাও দূরে যাও। হেগো কাছে যাও। তুমার শরীর থেইক্কা এখুনু ‘পিস্তল বিড়ি’র গন্ধ বাইর হইতাছে।

অনিমেষ রহমানের নাগরিক গল্পঃ ১২- রিম ঝিম বর্ষায় মন খারাপ করতে নেই

সত্য যুগে ছিলেন হরি,
দ্বাপরে রাম ধনুকধারী,
ত্রেতায় কৃষ্ণ বংশীধারী,
তাই লালন কয়, কলিতে হচ্ছে লীলা
ও নিত্য কথা কেউ কয় না।।
-ফকির লালন সাঁই