ইউজার লগইন
ছোটগল্প
বৃদ্ধাশ্রম
আজকাল লিলির সাথে সম্পর্কটা আমার
ভালো যাচ্ছে না ।
লিলি আমার বিয়ে করা বউ ।
দেখতে অসম্ভব সুন্দরী সে , আধুনিকা ,
স্মার্ট আর অত্যন্ত
রুচিশীল এই
মেয়েটাকে ভার্সিটি লাইফের প্রথম
থেকেই
আমি পছন্দ করতাম ।
আমেরিকা থেকে পি এইচ ডি করে আসার
পর নামকরা এক
ভার্সিটিতে আমি লেকচারার
হিসেবে জয়েন করি ।
তার কিছুদিন পরেই লিলির সাথে আমার
বিয়ে হয় ।
এবার লিলির সাথে আমার সম্পর্কের
অবনতির
কারণটা ক্লিয়ার করছি ।
আমার বাবার বয়স প্রায় ৬৫ বছর। মা অনেক
আগেই
মারা গিয়েছেন । আমার
বাবা আলঝেইমার্স নামের এক কঠিন
রোগে আক্রান্ত । এই রোগে আক্রান্ত
হলে মানুষের
হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা ।
সে কাউকে চিনতে পারেনা, ঠিকমত
কথা বলতে পারেনা, সবকিছু
ভুলে যায়।
বাবার সেবা যাতে ঠিকমত করা হয় এ জন্য
আমি এক
মহিলা পরিচারিকাকে ঠিক
করেছিলাম। একবার গুরুত্বপূর্ণ এক
সেমিনারে যোগ দেয়ার জন্য
আমাকে কয়েকদিন
নিশি সহচর
রাতের খাবার খেয়ে মেস
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরলাম..
বাসা থেকে কিছুটা দুরে একটা ছোট্ট
চা দোকান আছে ।
প্রায় সময় রাতের বেলা ওখানেই
আড্ডা দেই..
ঐ দোকানের চা টা অসাধারণ!!!
চা খেতে খেতে সিগারেট
খাওয়াটা আমার অভ্যাস।
দোকানীর কাছে অনেক
টাকা বাকি পরে আছে..
টাকার জন্য খালি ঘ্যান ঘ্যান করে
হঠাৎ গলিতে কয়েকটা কুকুরের চিৎকার
শোনতে পেয়ে বা দিকে তাকালাম.....
একটা পুলিশের গাড়ি দেখা যাচ্ছে বড়
রাস্তায়!
দুজন পুলিশকে দেখলাম এদিকেই আসছে..
সিগারেট টা ফেলে দিয়ে চায়ের
কাপে শেষ চুমুক দিলাম ।
পুলিশ দুজন
কাছে এসে দোকানিকে জিগেস করল--
কালু কসাইয়ের বাসা কোনটা??
দোকানি হাত
দিয়ে ইশারা দিয়ে দেখিয়ে দিল ।
পুলিশ দুজন চলে গেছে..
ইতিমধ্যেই আমি ঘামতে শুরু করেছিলাম!!
সারাদিন কত অপরাধই করেছি..
আর অপরাধী পুলিশ দেখলেতো ভয় ই
পাবে । গত সপ্তাহে এই চা দোকানের
সামনে রফিক নামে এক সি এন
জি ড্রাইভারকে পিটিয়েছিলাম,
পরিনতি
এখানে পোকামাকড়েরা বাসা বাঁধে,
একসময়।
শরীরের
পরতে পরতে লেগে থাকা মার্সিডিজের
অহংকার। দ্বিতল বাড়ির
প্যাঁচানো সিঁড়িতে লুকায়িত
বৈভবের অমৃত। শান
বাঁধানো ঘাটে পড়ে থাকা ধূমায়িত
চায়ের আফিম। শত শত ঘামের বিন্দুর
গড়ে তোলা
সমুদ্রের উত্তরীয়। নামে না কখনও কাঁধ
বেয়ে একবিন্দুও।
ধবধবে সাদা সারসের বুকের উপর
চেপে থাকা
মানুষসকল হেঁটে যায়। বাতাসে তখন
পারফিউমের
গন্ধ। কেউ কেউ নাক চেপে ধরে, বিষাক্ত
রক্তের
বোটকা গন্ধ ভেসে আসে। কেউ কেউ
বুঝতে পারে, কেউ কেউ পারেনা।
একদিন সব মিলিয়ে যায়। দাম্ভিকতার
মুখোশ বাতাসে
ভেসে যায়।
খসে পড়ে রক্তে ভেজা অভিশপ্ত উত্তরীয়।
সাদা
কাফনে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে। কেউ কেউ
দেখে, কেউ কেউ দেখে না।
এখানে পোকামাকড়ের ঘর বসতি হয়,
একসময়।
↓↓ বৃষ্টিবিলাস ↓↓
শুক্র বার, সময় সকাল ১০ টা। আদ্রিতা পড়ার
টেবিলে, কিন্তু কিছুতেই কনসেন্ট্রেশন
টা পড়ার দিকে রাখতে পারছে না। এর
কারন হচ্ছে জানালা দিয়ে গানের শব্দ
আসছে।
"".. সারাটা পথ জুড়ে আমি একা
হেটে যাই আকাশ তারার পানে চেয়ে
নীল জোছনায় স্মৃতিরও ভীড়ে...""
এই টাইপ একটা গান। এত জোরে কেউ গান
বাজায়। মেজাজ টা প্রচন্ড রকমের খারাপ
হচ্ছে তার। আগের বাসাটাই
ভালো ছিলো। এই রকম কোন
সমস্যা ছিলো না এই বাসাটায় আজ প্রায়
এক মাস। সেই প্রথম দিন থেকেই এই প্রবলেম
টা হচ্ছে। প্রতিদিন দুই টাইম পাশের
বাসার কে জানি প্রচন্ড জোরে গান
বাজায়। আসলে তার রুম টা তাদের বাসার
একটা কর্ণারে। বেলকনি আছে। পাশের
বাসার যে রুমে গান বাজে সেটা তার
রুমের সোজা। অদ্ভুত ব্যাপার
হলো সে আজো ঐ
রুমে কে থাকে বা কে এত জোরে গান
বাজায় সেই ব্যক্তি টাকে দেখার
সৌভাগ্য তার হয় নি। যদি হত
তবে আচ্ছা মত বকে দেয়া যেত।
রুপালী ছায়াপথ (সমাপ্তি পর্ব)
একঘেয়ে কর্মমূখর দিনগুলোর চাপে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলো অনিরুদ্ধ; তারপর এখানে এই ভাবনাবিহীন সময়গুলো দারুণভাবে উপভোগ করছিলো। সকাল-দুপুর-বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা আসে। একেকটা ক্ষণ যেন উড়ে চলে যায়।
এখানে জীবন কোন এক অদৃশ্য সূতোয় বাঁধা। ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন, হাসি-কান্নার বাঁকে হারিয়ে যায় ক্ষুদ্র স্বত্ত্বার চাওয়া পাওয়াগুলো। আজ সারাদিন চা বাগানেই পার করেছে অনিরুদ্ধ। চা শ্রমিকদের সাথে। বাগানের নারী শ্রমিকদের কচি পাতা উত্তোলনের দৃশ্যের কথা এর আগে বিভিন্ন লেখা পড়ে জেনেছে, লোকমুখে শুনেছে। আজ নিজেই দেখছিলো। ক্লান্তিকর সারাদিনের পর কত সামান্যই প্রাপ্তি ওদের! সারাদিন কিভাবে যেন কেটে গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নেমে আসে।
রুপালী ছায়াপথ (প্রথম পর্ব)
দিনগুলো একেকটা এমনি করেই ফুরিয়ে যায়।
কাজের চাপে পিষ্ট হওয়া একঘেয়ে ক্লান্তিকর বলয় থেকে বেরিয়ে একটু অবসর খোঁজে উদভ্রান্ত মন। তারপর একদিন হঠাৎ অবসর মিলেও যায়। তখন কেবল মনে হয় দূরে কোথাও ঘুরে এলে নেহায়েত মন্দ হয় না!
বসন্তের শেষ বিকেলে অনিরুদ্ধ যখন শ্রীমঙ্গল ষ্টেশনে নামলো ঘড়িতে তখন পাঁচটা বাজে। ততক্ষণে চা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা শেডট্রিগুলোর ছায়ারা পূবদিকে হেলে পড়েছে। আর, নতুন গজিয়ে ওঠা কচি চা-পাতাগুলো বিকেলের সোনালী আলোয় ঝলমল করছিলো। পাহাড়ের ঢালে চা বাগানগুলোতে অদ্ভুত আলো ছায়ার খেলাটা জমে উঠেছিল বেশ।
গল্পঃ ভাই
অনেকক্ষণ ধরে মোবাইলে রিং বেজে চলেছে। অপু মনে মনে ভাবে, ‘এত রাতে আবার কে ফোন করলো? এই মোবাইলটা হল আরেক যন্ত্রণা, বাথরুমে গিয়েও শান্তি নেই!’ হাতমুখ ধুয়ে দ্রুত বেরিয়ে আসে। ফোনটা হাতে নিতেই দেখে তপুর ফোন।
-কি রে তপু, তুই এত রাতে!
-দাদা, তুই কবে বাড়ি আসবি?
-কেন রে? মাত্র তিন মাস আগে বাড়ি থেকে ফিরলাম।
-মা খুব অসহায় হয়ে পড়েছে রে। সারাক্ষণ তোর কথা বলে।
-কেন? মা’র কি হয়েছে?
-মা’র শরীরটা ভাল যাচ্ছে না রে।
-তুই আছিস না, মা’র দিকে খেয়াল রাখতে পারিস না?
-তা তো রাখি, কিন্তু মা তোকে খুব মিস করে। বলে, অপুর চাকরি করার দরকার নাই, ওরে বাড়ি আইতে ক।
-তুই মাকে বুঝা তপু।
-আমারও তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে, দাদা।
-কি রে! তোদের হল কি? তুইও কি মা’র মত অবুঝ হলি?
সোনালী চুলের পুতুল
চলন্ত বাসের জানালার কাঁচের উপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। বৃষ্টির ছাটে জানালার এপাড়েও ঘোলাটে হয়ে আছে। তানিয়া বারবার হাত দিয়ে কাঁচ পরিষ্কার করে তাকিয়ে আছে চলন্ত দৃশ্যের দিকে। গ্রাম জলা গাছপালা পুকুর ঘরবাড়ি সব দ্রুত বেগে পেছনে পড়ে যাচ্ছে, সেই সাথে তানিয়া তার বাড়িকে ফেলে আসছে অনেক দূরে। আসার সময় ছোট ভাইবোন দুটি বারবার তাঁকে জড়িয়ে ধরছিল আর বাবা মা দুজনেই নিরবে কাঁদছিল।
সাপলুড়ু
শিউলি চিরকুটে চোখ বুলিয়েই বলে উঠলেন-
-উনি কোথায়? হ্যাঁ, চলে আসতে বলুন।
-স্যার বাসার গেটে; গাড়িতে । আপনি একটু আসবেন?
দুতলার সিঁড়ি ভেঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন তিনি। আজ মৃত্তিকা আর আকাশের প্রথম সাক্ষাৎ।
তাঁর পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে- কাঁপুনির মাত্রা এত তীব্র হতে পারে তিনি তা ঘূণাক্ষরেও ভাবেননি। ভাবতে পারার কথাও নয়। দীর্ঘ আঠারো বছর পর এ রকম কেউ ভাবতে পারে না। শিউলি কাঁপছেন আর ভাবছেন- কীভাবে তাঁকে রিসিভ করবেন ।
২.
তিন অধ্যায়
১)
ছাদের আকাশে নক্ষত্রের কনফারেন্স। কিন্তু আজ আমার নক্ষত্রে মন বসছে না। মনটা ভারী হয়ে আছে। চয়নকে ফিরিয়ে দিলাম। চোখেমুখে রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে ফিরে গেল ও। ফেরানো সহজ হত না। তাই ওকে জানালাম অগ্নির কথা। বললাম-‘তুমি ভুল বুঝেছ, আমি নই, বরং অগ্নি তোমাকে পছন্দ করে। তোমাকে বন্ধু ছাড়া আর কিছুই ভাবি নি আমি কখনো। ’
ঘোরগ্রস্তের মতন চলে গেল ছেলেটা। চয়নকে আমার মত অগ্নিও ভালবাসবে এটাই তো স্বাভাবিক। আমি দুঃখ পেয়েছি কিন্তু রাগ করিনি। সেই কবে থেকে আমি আর অগ্নি একই রকম, অবিকল। সব হাসিকান্না, পছন্দ-অপছন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছি দুজন। কিন্তু কিছু ব্যাপার কখনোই কারো সাথে ভাগ করা যায় না। কিছু অধিকার বুঝে নিতে হয় নয়ত ছেড়ে দিতে হয়। অগ্নি আমার এত কাছের, আমার আরেকটা স্বত্তা, তাই অধিকারটা ছেড়ে দিলাম। অগ্নির চোখের কোলে মেঘ দেখার চেয়ে চয়নকে ভুলে থাকা আমার জন্য অনেকটা সহজ।
২)
অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি ।
( সবাইকে ঈদের উপহার হিসেবে গল্পটা দিলাম )
মেয়েটির সাথে ছেলেটির পরিচয় ওদের স্কুলের একটি পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে । ছেলেটির নাম ছিল রাজ ।
তখন ওরা দুজনই পড়ত ক্লাস এইটে । প্রেম কি জিনিস ঠিক মত বুঝতেও পারত না । ওদের পরিচয় স্কুলের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ।
মেয়েটি যখন পুরষ্কার নিতে এসেছিল ছেলেটি আগ্রহ হয়ে মেয়েটিকে তার নাম জিজ্ঞেস করে বসে ।
তোমার নাম কি ?
মেয়েটি উত্তর দেয় , আমার নাম নাজরিন সংক্ষেপে নাজ বলে ডাকতে পারো ।
দুজনের নামের ছিল অনেক মিল । এভাবেই ওদের পরিচয় হয়ে যায় ।
চিরন্তন ভালবাসার স্বপ্ন ।
আমি ছিলাম তখন আমার কলেজের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আর মেয়েটি ছিল এইচ এসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ।
একদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল সে ছাতা ছাড়া ভিজে ভিজে রাস্তায় হাঁটছিল কোন রিক্সা পাওয়া যায় কিনা । আমি এগিয়ে এসে তাকে ছাতা মেলে ধরে সাহায্য করি রিক্সা পেতে । সে তখন কোনভাবে একটি রিক্সা ঠিক করে বাসাতে চলে যায় । পরেরদিন আবার তার সাথে আমার কলেজে দেখা আমি তাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম , এভাবে না ভিজে পরে বাসাতে গেলেইতো পারতে এত্ত তারাহুড়ো কি ছিল ?
সে বলেছিল আপনি যদি সেদিন আমাকে সাহায্য না করতেন আমার হয়তো আরও দেরি হত বাড়িতে পৌছাতে কারণ আমার মা অসুস্থ ছিলেন । কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে আমি জানলাম সে আমাদের কলেজের এইচ এসসির ছাত্রী । তার নাম ফারহানা ।
প্রখর সকাল
দিনটা শুরু হচ্ছে ইঁচড়ে পাকা সকাল দিয়ে। এলারম এর শব্দে ভোর হয়। প্রতিদিনের অভ্যাসে টুক টুক হেটে টয়লেটে। পানি ডিস্ট্রিবিউশন এ কোন সমস্যা আছে নির্ঘাত। পানির তাপমাত্রা এই সময়ের তাপমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। হাত মুখে একটু জলুনি অনুভব হচ্ছে। মনে মনে গালি দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। গালি দেয়াটা ঠিক কাজ না, যাকে গালি দেয়া হচ্ছে তার অনুভুতিতে আঘাত আসবে যদি শুনতে পায়। যদিও জানি সে শুনবে না। কিন্তু আমার শিক্ষা আমাকে এই গালি দেয়া থেকে বিরত রাখছে। খুব হাসি পাচ্ছে। আয়নায় এই জলুনি ধরা চেহারায় নিজের অজান্তে ই একটু হাসি ফুটে উঠলো। কাল ই এর একটা হেনস্থা করতে হবে। পানি ব্যবস্থাপনায় যিনি আছেন, তাকে ডেকে এর ব্যখ্যা চাইতে হবে। আর ব্যখ্যা যাই হউক, তার জন্য আমাদের এতো গুলো মানুষের যে সমস্যা হল তার জন্য তাকে মুল্য দিতে হবে। নিজের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়ে গেল। দিনে দিনে কেমন হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। একটু তে ই বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে।
স্পর্শের বাইরে
সেদিন রাস্তার ধারে গুঁড়ের জিলাপী দেখে রোমেল ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল। গুঁড়ের জিলাপী ওনার খুব প্রিয় একটা জিনিস। ঢাকা শহরের কোথায় কোথায় ভালো গুঁড়ের জিলাপী পাওয়া যায়, রোমেল ভাইয়ের তা মুখস্ত। উনি যে কতবার আমাকে নিয়ে সেসব জায়গায় নিয়ে গেছেন তার হিসেব নেই। এই জিনিস যে আমার খারাপ লাগে, তা কিন্তু না। সমস্যা হল গুঁড়ের জিলাপীর দোকানে রোমেল ভাই যান হেঁটে হেঁটে। আর তাঁর সাথে আমাকেও হাঁটতে হয়, যেটা আমার সবচেয়ে অপ্রিয় কাজ। শুধু যে ঢাকার ভেতরেই ‘গুঁড়ের জিলাপী অভিযান’ চলে, তা না। ঢাকার বাইরে বেশ কিছু জায়গায় আমরা গিয়েছি জিলাপী খেতে। সেই যাত্রাগুলো আরো ভয়ংকর। ঢাকায় অলি-গলি এমনিতেই বেশি, রোমেল ভাইয়ের জিলাপীর দোকানগুলো আবার এসব গলির শাখা-প্রশাখার ভেতর, যেখানে কোনভাবেই রিক্সা ঢোকা সম্ভব না। অবশ্য সম্ভব হলেও কোন লাভ হত না!
পচাশি বছরের যুবক যাবেদ আলী (প্রথম পর্ব)
আশি বা পচাশি বছরের যুবক। নাম যাবেদ আলী। আমার ড্রেইনেজ কন্ট্রাকটর। প্রথম যে দিন আমি তাকে দেখি রিতিমত আবাক হয়েছিলাম। লম্বায় প্রায় ছয় ফুটের কাছাকাছি, কাশ ফুলের মত দাড়ি গোফ ও মাথার চুল শরীরের রংগের সাথে মিলেমিশে একাকার। তদুপরি সাদা পাঞ্জাবি আরব্য উপন্যাসের জ্বিনের বাদশাহদের কথা মনে করিয়ে দেয়। পচাশি বছরের জাবেদ আলীকে ক্ষনিকে আমি ১৫ থেকে বিশ বছর বয়সের এক যুবকের প্রতিচ্ছবিতে দেখতে লাগলাম। আল্লাহ্ তায়ালা সকল মানুষকে সুন্দর অবয়বে তৈরী করেছেন। তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এই জাবেদ আলীর যৌবনের দ্যুতি চলন্ত পথের সাথিদের বা অন্দর বাহির বা কোন আড়াল থেকে দেখা দৃষ্টিকে কি এলো মেলো করে দিত না। কেউ কি মহান সৃষ্টি কর্তার এই মহান সৃষ্টি দেখে বলত না
“তোমার সৃষ্টি পানে যদি চাওয়া হয় চোখ সুন্দর হয়।
তোমার নামে যদি গান গাওয়া হয় গান সুন্দর হয়।“