ইউজার লগইন
ছোটগল্প
এক ছিলো গূড় আর অনেক ছিলো পির্ফা
তো একজন কইলো
: মনে হইতাছে, ___ ভাই আবারো কাঠির আগায় গুড় লাগাইয়া গেছেন! সব পিপড়া এক লগে হাজির হইতাছে এইখানে!!
ভাব্লাম, জুকার্বার্গের এত্তবড় একটা সাইট্রে কাঠি কইতেছে বেপার্টা কি?
জিগাইলাম কে গুড় আর কেডাইবা পির্ফা?
আসলেইতো???
আসল কাঠি কুনটা, গুড় কুন্টা আর পির্ফাই বা কারা...
আসলে ভেজাল হইছে কি, ইদানিং লুকজন খালি ঝিমায়।ঝিমায় আর জুকার্বার্গের সাইটে গিয়া একটা ঘরের ভিত্রে ঢুইকা ঝিমাইতে ঝিমাইতে আড্ডা মারে। এদিকে মাঠ খাখা করে। কেউ কস্ট কৈরা মাঠে আসে না, সবতে মিল্যা ঠিকঠাক মতো খেলাধুলাও করে না। এইটা আসলে ঠিক না। মাঠে নাম লেখাইয়া সেই মাঠে না আইসা ঘরের ভিত্রে বৈয়া বৈয়া আড্ডা দেওনটা আসলে একটু কেরাম কেরাম জানি লাগে।
যাই হৌক, ঘটনা হৈলো একজনে কইলো যে মাঠে না আইসা ঘরে বৈসা আড্ডা দেওন উচিত না, লগে লগে ঘরে ভিত্রে হাজির হয়া গেলাম আম্রা সবতে। পুলাপান সব খ্রাপৈয়া গেছেগা। কলিকাল ঘোর কলিকাল...
লেবার মার্কেট
১
মানুষের ভিড় দেখে ভেতরে ভেতরে ক্লান্ত হয়ে পড়ে আব্দুল মজিদ। এত মানুষ শহরে করে কি? থাকেই বা কোথায়? আর তার মতো সব হা-ভাতে অভাবী মানুষগুলো কি ঢাকা শহর ছাড়া আর কোনো শহর দেখে না? একটা সময় নৌকা বেয়ে তার সংসার চলেছে। স্ত্রী সন্তানদের ভরণ-পোষণ শেষে উদ্বৃত্ত কিছু থাকলে নানা পার্বণে ভালো মন্দ কিছু হয়ে যেতো। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র শুকিয়ে যাওয়াতে তার ভাগ্য বলতে গেলে খরায় পুড়ছে তখন থেকে। তার ওপর ছেলেরা যার যার সুবিধা মতো আলাদা হয়ে যে যেদিক পারলো চলে গেল। নয়তো এই বয়সে তাকে এখন কাজ খুঁজতে হতো না। সে শুনেছে, লেবার মার্কেট বলে শহরের বাজার বা স্টেশনের পাশেই গরু-ছাগলের হাটের মতো জন-কামলাদের হাট বসে। লোকজন এসে দেখে শুনে নিজেদের পছন্দ মতো লোকজন নিয়ে যায় প্রয়োজনীয় কাজ করাতে।
মুক্তগদ্যঃ আমার পা'য়ে পা'য়ে জড়ায় ঘাসে জমা মেঘেদের অশ্রু
*
আমার পা'য়ে পা'য়ে জড়ায় ঘাসে জমা মেঘেদের অশ্রু।
**
তুমি অবাক তাকিয়েছিলে জানালার শিক ধরে। মেঘেদের ঘনকালো ছায়া পড়েছিলো তোমার চোখে। বিষণ্ণ আকাশের শোকে, তোমার চোখের কোলেও জমেছিলো জল। ছিটে ফোঁটা বৃষ্টিরা, ঠিকানা খুঁজে খুঁজে হয়রান। দু' দণ্ড বিশ্রামে তোমার গালের শ্যামলা মাঠে নিয়েছিলো আশ্রয়য়। আমি অপেক্ষায় ছিলাম, গাঢ় বৃষ্টির কিংবা তোমার জানালা ছেড়ে চলে যাবার।
কে বলবে, পাওয়াতে বেশী সুখ? না কি হারানোতে?
***
দুরের বটগাছটাতে উথাল পাঠাল বাতাসের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে। তরুণ গাছটার বুড়োটে হলুদ পাতাগুলো এলোমেলো ছুটছে মুক্তির আনন্দে। পিচ ঢালা পথটা যেন নদী। বর্ষায় ভরভরন্ত যৌবন। ওই বাঁকে, এলোমেলো ওড়না নিয়ে ব্যাস্ত কিশোরী। আমি হেঁটে চলেছি... না... না... আমি নৌকা বেয়ে চলেছি পিচ ঢালা নদীতে। বাতাসের মাতলামিতে বারবার নিভে যাচ্ছে হাতের ম্যাচ, তবুও চেষ্টা করে চলেছি।
****
জীবন বহে নদীর মতো
এক.
বসন্তকাল- চৈত্রের শেষভাগ, রোদের তেজ যথেষ্ট। সকালেই সূর্য পূর্ণ তেজে পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে চলছে। গতকাল একচোট ঝড়বৃষ্টি হয়েগেছে। আজ অবশ্য আকাশ পরিষ্কার। আকাশের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে কেবল তুলার মতো হালকা একখণ্ড মেঘ ভেসে আছে। শুভ্র মেঘের ফাঁক গলে নীল আকাশ দেখা যায়।
সকালে জমিতে হাল দিয়েছে সাদেক আলী। সাদেক আলীর বয়স আনুমানিক বিশ। তার নাম রাখা হয়েছিল সাদিক আহমেদ। জন্ম হয়েছিল সুবেহ-সাদিকের সময়; তাই ঢাকায় পড়ুয়া বড়বাড়ির মেয়ে তার নাম রেখেছিল সাদিক আহমেদ। বড়বাড়ির মেয়ের সেই সখের নাম অশিক্ষিত বাবামায়ের ঘরে ক্ষণকাল থেকে হাফিয়ে উঠল। সাদিক আহমেদ পরিবর্তিত হয়ে বাবা-মায়ের কাছে হলো সাদেক আলী আর পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে হলো 'সাদেইক্যা'। সাদেক আলী ছোট সময় যদিও শ্যাম বর্ণের ছিল কিন্তু রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে এখন হয়েছে কৃষ্ণবর্ণের। খাটোমতো ছেলেটি। বুকের পাটা যথেষ্ট চেপ্টা, চওড়া কপাল, মাথাবর্তি লালচে-কালো চুল।
একজন নিশি
আমার বন্ধু ব্লগে অধমের প্রথম পোষ্ট
আকাশে চাঁদ ওঠেনি আজকে। নিশির মন খারাপ, আকাশে চাঁদ ওঠেনি সেইজন্য না, অন্যকারণে।শশী এসে চা দিয়ে গেলো।অন্যমনস্ক ভাবেচায়ে চুমুক দিতে লাগল নিশি।পিসিতে রবীন্দ্র সংগীত বাঁজছে, মন ভাল করারআশায় ছেড়েছিল , মন ভালো হওয়া দূরের কথা এখন রীতিমতো বিরক্তি লাগছে। শশী বলল-" তোর কি হয়েছে রেআপু?"
" কিছু না"- ভ্রু কুন্চিত করে বলল নিশি।শশী ফোস করে একটা শব্দ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল, মুখ দিয়ে বিচিত্র ধরণের শব্দ করা ওর একটা বদঅভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে।
সূর্যের সমুদ্র স্নান
বিকেলের ডাকে আসাদের চিঠি এসেছে। চিঠির মুল বক্তব্য : "ইদানিং কালের অবিবাহিত মুসলিম বাঙালি মেয়েদের বোরকা প্রিয়তা এতই বেড়েছে যে, উপলক্ষ্য লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে গেছে। যাতে মূখ্য হয়ে উঠেছে গৌণ আর গৌণ হয়ে গেছে মূখ্য। বোরকা মূলতঃ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে তৈরি মেয়েদের জন্য এক প্রকার বিশেষ পোশাক। যা পরিধানের উদ্দেশ্যে নারীকে আচ্ছাদিত রাখা, সহজ কথায় নারীদের পরপুরুষের চোখের আড়াল রাখা। এটি হচ্ছে তাদের স্টাইল। আবহমান কাল ধরে ধর্মভীরু মুসলিম নারীরা নিজেদের একটু অবরোধ করে রাখতে পছন্দ করে আসছেন এবং এখনও করেন। তাই তারা এই বোরকার অভ্রুতে নিজেদের মুড়িয়ে রেখে বেশ সাচ্ছন্দ বোধ করেন। কিন্তু বর্তমান কালের অবিবাহিত বাঙালি মুসলিম নারীগোষ্ঠী বোরকাকে ফ্যাশন হিসেবেই গ্রহণ করেছে। তাদের পর্দা প্রথা মেনে চলা লক্ষ্য নয়, লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের আর একটু কামনাময়ী করে তোলা। মেয়েদের চোখের আর্ট সর্বদাই চমৎকার। কুৎসিৎ
আকাশ থেকে ফেলছে ছায়া মেঘের ভেসে যাওয়া
একাগ্র চিত্তে তিতলি ডুবে গেলো নিজের মধ্যে। লাষ্ট সেমিষ্টারে নিজের রেজাল্ট দেখে নিজেই অবাক হয়ে গেলো। রেজাল্ট ভালো হওয়াতে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অনেক বেড়ে গেলো। মন্দ লাগে না পড়াশোনা করতে বরং বেশ ভালো সময় কেটে যায় তার পড়ার মধ্যে ডুবে থেকে। মাঝে মাঝে এক মনে ইজেলে তুলি ঘষতে থাকে। নানা রঙ এক সাথে মিলিয়ে নিজে একটা আলাদা রঙ তৈরি করে। কল্পনা তার সীমাহীন বিস্তৃত। একদিন ভাবল আকাশটাকে লেমন ইয়েলো করে দিলে কেমন হয়? আকাশকে সবসময় আকাশি রঙের হতে হবে কেন? লেমন ইয়েলো আকাশ একে তার নীচে পিঠ ভর্তি খোলা চুলের ম্যাজেন্টা শাড়ি পড়া এক মেয়ে আঁকলো। বড় বড় চোখের কাজল পড়া সেই মেয়ে হাতে হালকা বেগুনী রঙের ছাতা ধরে রেখে ছাই রঙা বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে। নিজের সৃষ্টির প্রতি নিজেই অনেকক্ষণ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো। আর কি করবে?
যন্ত্র (শেষ পর্ব)
এগুলা কি হচ্ছে? সব তোর দোষ। রায়হানকে উদ্দ্যেশ্য করে অর্কের বলা কথাটুকু বিভাজনের রেখা টেনে দিয়েছিল। রায়হান স্বভাবসুলভভাবে ক্ষেপে গিয়ে অর্কের কলার চেপে ধরেছিল। বাকি দুজন ওদের ছাড়ানোর চেষ্টায় ব্যতিব্যস্ত ছিল। ওরা সিগারেট তৃষ্ণা ভুলে গিয়েছিল, দাঁড়িয়ে ছিলো কিংবা ঝগড়ারত ছিলো আলোবন্দী হয়ে। ঠিক তখন-ই যুবকেরা সচেতন হয়, কারণ অস্থির চিত্রগুলো যা তারা ফোকাস করতে পারছিল না, তাদের কিছু একটা বলতে চাচ্ছিল।
রায়হানকে দেখা যাচ্ছে, কলেজ গেটের সামনে ধূমপানরত অবস্থায়। অর্ককে দেখা যাচ্ছে চা পানরত অবস্থায়।
কোথাও চলে যেতে ইচ্ছে করে। অর্ক রায়হানকে উদ্দ্যেশ্য করে বলে।
রায়হান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আমারো। তারপর তারা কিছুক্ষণ কথা বলে। অর্কের ভেতর চলতে থাকা এই দৃশ্যগুলোর দিকে আঠা দিয়ে আটকানো দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে ছিল বাকি তিনজন।
হারিয়ে ফেলা
ব্যস্ত শহরে ঠাস বুনটের ভীড়ে , আজো কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখে ফিরে..............মোবাইলের রিং টোনে ঘুম ভেঙে যায় রিফাতের । ম্যানেজারের কল, বিরক্ত হয়ে কেটে দেয়। সময় দেখে দূপুর ২টা , মাথাটা ভারী লাগে হ্যাংওভারের ধকল এখনো আছে। কাল রাতে ওর প্রিয় হুইস্কি জ্যাক ডেনিয়েলের বোতল প্রায় শেষ করেছে । জ্যাক ডেনিয়েলের সংক্ষিপ্ত নাম ' জে ডি ' মনে পরতেইচোখ ভিজে উঠে। জে ডি ওর অনেক প্রিয় একজন মানুষের নাম.......ছিল। জেনিফার দিপ্তি সংক্ষেপে জে ডি।
বিছানায় শুয়ে শুয়েই সিগারেট ধরায় আর ভাবে , ভালোই চলছিল সব । একই শহরে থাকতো ওরা । পরিচয় ফেসবুকে , তারপর কথা বলা , ডিনার করা , ঘুরে বেড়ানো , সিনেমা দেখা .,,,,,,অবশেষে ভালো লাগা।
যন্ত্র
( সাধারণত পর্বভিত্তিক লেখা খুব একটা দেই না, যারা পড়বে তাদের বিরক্তির কথা ভেবে। এইবার দিলাম। বিরক্তির জন্য আগামভাবে ক্ষমাপ্রার্থী)
#
একটি ঘর, খুব বেশি বড় নয়। এখন সভাকক্ষের মতো করে সাজানো হয়েছে। পাঁচটি সারিতে,পাঁচটি করে চেয়ার। সামনে বড়সড় টেবিল। পেছনে ঝুলছে ক্যালেন্ডার। সেখানে তারিখ ঝুলছে গতমাসের। জানালা আছে কিন্তু এখন বন্ধ। বিশাল পর্দা নামানো। ঘরে চলছে এসি। তাদের কেউ এসির ঠান্ডা বাতাসে অনভ্যস্ততার দরুণ কাঁপছে। তাদের হাত-পা শুকিয়ে আসছে। তবু, তারা অপেক্ষা করছে।
দুজন বিশালদেহ নিরাপত্তা কর্মী ঘোরাফেরা করছে। তাদের মাথায় কালো টুপি। আপাতদৃষ্টিতে তাদের কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হচ্ছে না।
বড় টেবিলের ওপাশটা খালি। কেউ এসে বসবেন সেখানে। সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছে।
পাখির মত দিন
হে খোদা এতো রোদ দিওনা, এতো গরম হল্কা দিওনা, বৃষ্টি দিওনা, শুধু ছায়া আর ঝিরঝিরে বাতাস দাও । তোমার কাছে এই একটাই চাওয়া । আর কিছু কখনও চেয়েছি বলো?
সকালের ঘুম ভাঙ্গা প্রথম প্রার্থনা তন্ময়ের । প্রতিদিন একই চাওয়া ওর ইশ্বরের কাছে । যতই বলুক আর কিছু চাইনি, ও কিন্তু শীতে একটা গরম কম্বল দিতে বলেছিল ইশ্বরকে । তখন শুধু পাতলা একটা লেপ ছিল ওর । তারপর সত্যি একদিন মিলেছিল একটা নতুন ফুলতোলা কম্বল ।
গল্প: বিলের পদ্মফুলের ক্ষেত্রে হয়তো প্রাসঙ্গিক
একটা দারুণ ব্লগ ছিলো। সেখানে ছিলো চাঁদের হাট। এক অনন্ত রাতের গভীর আকাশে বসেছিলো ভরাপূর্ণিমার চাঁদের হাট। আমি ছিলাম সেই ব্লগটার মডারেটর। লোকজনকে বলা ছিলো, কোনো গণ্ডগোল করা চলবে না। লোকজন কোনো গণ্ডগোল করতো না। তারা খুবই মজা করতো। আমি চুপ-চাপ বসে দেখতাম, সবাই কি করে। কারণ এই কাজটাই ছিলো সবচে' সহজ। এটা করতে গিয়ে আমি ভাবনার কাজটাও চালিয়ে নিতে পারতাম পুরোদমে। কোনো কিছু নিয়ে ভাবা হচ্ছে আমার প্রথম কাজ। এবং আমি ঠিক করেছি কখনো জীবনে কোনো কাজ করবো না। কেবল ভাববো। একেকজন মানুষ একেকভাবে চিন্তা করতেই পারে। তাই না? ইনটু দ্য ওয়াইল্ডে কি দেখাইসে?
নিয়া যখন একটা পোস্ট দিতো তখন আমি মাঝে মাঝে কয়েকজনের কমেন্ট সাময়িক বন্ধ করে দিতাম। ওরা আক্রোশে লাফালাফি ঝাপাঝাপি করতো। আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খেতে চাইতো। কিন্তু কোনোকিছুতেই আমি ওদেরকে নিয়ার ব্লগে কমেন্ট করতে দিতাম না।
গল্প: কপট চোখ রাঙানিসমৃদ্ধ একটা ছোট্ট কথোপকথন
পেশাজীবনের শুরুর দিকের ঘটনা। ইশরাত আমাকে দেখলেই দৌড় দিতো। খুব আশ্চর্য হতাম। ও'ও রিপোর্টার। কিন্তু কোথায় কাজ করে সেটা কোনোদিন জানার সুযোগ পাই না। অ্যসাইনমেন্ট শেষ হওয়ার পর আমি বেশ ক'দিন কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মূহূর্তের মধ্যে সে ফুড়ুৎ হয়ে গেছে। এবং কিছুটা যেন আমাকে নজরে রেখেই ফুড়ুৎ হয়ে গেছে। হয়তো একদম কাজ শেষে আমি নোটবুকটা বন্ধ করার জন্য একটু নিচের দিকে তাকিয়েছি। ওটা ব্যগে পুরে ওকে গিয়ে কথাটা জিজ্ঞেস করবো, কিন্তু চোখ তুলে দেখি নেই।
কারণটা কি আমি বুঝতে পারতাম না। একদম প্রথমদিন আমি ঠিক ওর পাশের সিটটায় গিয়ে বসেছিলাম। ওকে তখনো দেখি নি। পুরা হলে ঐ একটাই সিট খালি ছিলো। আমি বসার পর খেয়াল করলাম, এতক্ষণ আসলে অন্যকেউ ওর পাশে বসার সাহস পাচ্ছিলো না। এই সিটটাকে লাস্ট চয়েজ হিসেবে ধরে রেখে সবাই একে একে বসেছে। তারপর আমি ঢোকার সময় কেবল ওটাই খালি ছিলো। কোনোদিকে না তাকিয়ে বসে পড়েছি।
সরোজ পাখি হতে চেয়েছিল
১
পাখিটাকে সরোজ ছেড়ে দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার কেমন যেন মায়া পড়ে গেল ময়নাটার উপর। স্কুল থেকে বাসায় ফেরার একটা তাড়া ছিল প্রতিদিন, যতদিন পাখিটা ছিল। একটা সখ্যতাও তাদের মাঝে গড়ে উঠছিল। মার উপর এখন আবার কিছুটা রাগ হচ্ছে। মা যদি অমনভাবে না বলতো, তাহলে সরোজ পাখিটাকে এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতো না। এটাও ঠিকই তার ইচ্ছে হচ্ছিল পাখিটাকে খাঁচা থেকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পাখিটাকে হাতে তুললে সে ইচ্ছে আর থাকে না। কেমন তুলতুলে শরীর। এখন সে কী করে! স্কুল থেকে বাসায় ফিরলে কেমন সব ফাঁকা ফাঁকা লাগে। যখন ময়না ছিল না, তখন তো তার এত কষ্ট লাগেনি, এত খারাপ লাগা দূরে থাক, কোন কিছু এত ফাঁকা ফাঁকা লাগেনি।