বর্ণচোরা - ২
বাইরে আসার পর থেকে সব মিলিয়ে খারাপ ঘটনার শেষ নেই। কাজে প্রায়ই শুনতে হয় বাংলাদেশীদের বদনাম। মুখ বুঝে সহ্য করি। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু ব্যাতিক্রমী ঘটনা চোখে পড়ে যায়। নিজের মনে হাসি আর চিন্তা করি “কৃষ্ণ করলে লীলা খেলা আমি করলে পাপ” । আমার বাসায় বাঙ্গালী আমরা তিন ভাই আর সবাই বিদেশী। এদের সাথে আছি অনেক দিন হয়। এর মাঝে ১ জন ঘানা, ১ জন নাইজেরিয়া, ৩ জন বুলগেরিয়া ও ২ জন রুমানিয়া। মহাদেশ ভিত্তিতে ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। শেয়ার কিচেন আমাদের। লম্বা সময় হয়ে গেলো আমরা প্রতিবেশী তাও কেন যেনো বুলগেরিয়ানদের সাথে তেমন সম্পর্ক হয়নি। আমাদের কোন অনুষ্ঠান থাকলে বলতে হয় তাই বলি ওরাও তাই শুনে বলা লাগে আচ্ছা থাকব তাই বলে।
এদের মাঝে যে বুলগেরিয়ান ভদ্রমহিলা আছেন তার ইংরেজীটাই সবচেয়ে ভালো। এবং অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সে কোন এক অজ্ঞাত কারনে আমাদের দেখতে পারে না। অবশ্য নিজের দরকারের সময় ঠিকই নিজের প্যাকেট থেকে সিগারেট অফার করে আর অন্য সময় লাইটার চাইলেও বলে নেই। উৎকন্ঠিত হবো না বিস্মিত জানি না।
আজকে বিকেলে ফিরে রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, যেহেতু দুই ভাইয়েরই কাজ আছে তাই রান্নার দ্বায়িত্ব আজ আমার। গুন গুন করতে করতে পেয়াজ কাটছি, পায়ের শব্দে তকিয়ে দেখি ভদ্রমহিলা রান্নাঘরে এসেছেন। হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “ একাশ (আকাশ) বিয়ার খাবে?” ভদ্র ভাবে এড়িয়ে গেলাম। বুঝলাম কিছু একটা ধান্ধাবাজী আছে তার মনে। মহিলা একটা সিগারেট ধরিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “ তুমি কি ইন্ডিয়ান কারী রান্না করছো?” কোন এক অদ্ভুত কারনে মাছ দেখলেই মহিলা মনে করে এটা ইন্ডিয়ান কারী। প্রতিবারের মত বললাম “না ইন্ডিয়ান না এটা বাংলাদেশী কারী”। এখানে বলে রাখা ভালো মহিলা প্রতিবার মাছ রান্নার সময় দুই এক টুকরো চাইবেই। আমরাও খুশী হয়েই খাওয়াই। হাজার হলেও অতিথিপরায়ন জাতি আমরা। এখানে তো আর অতিথি নেই এই মহিলা খেলেও ভালো লাগে। একটু পরে মোবাইল বের করে তার মাতৃভাষার কারো সাথে কিছুক্ষন কথা বলে বলল “ একাশ তোমার রান্না হতে কত ক্ষন? “ কেন জিজ্ঞেস করলে সে বলল সে কি এক সমস্যায় পড়েছে তার মোবাইলের কাস্টোমার কেয়ারে কথা বলে দিতে। বিয়ার দিতে চাওয়ার ঘটনা এতোক্ষনে জলবৎ তরলং হলো। বললাম আমি একটা সফিস্টিকেটেড কারী রান্না করছি। রান্না শেষ করে কথা বলে দিবো।
রান্না শেষ করা পর্যন্ত মহিলা বেশ ধৈর্য্য ধরে বসে ছিলো। বুঝলাম সিরিয়ার ধরনের কিছু হবে। রান্না শেষ হওয়ার পরে তাকে সমস্যা জিজ্ঞেস করে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কিছুদিন আগে সে ড্রাঙ্ক অবস্থায় মোবাইল কই রেখেছিলো পাচ্ছিলো না। সে তার কোম্পানীকে জানায় এবং তার সেট সীম লক করিয়ে নতুন সেট আনায়। এরপরের দিনই সে তার সেট পেয়ে যায় এবং পুরানো সেট একটিভ করায়। এখন সে চাচ্ছে তার নতুন সেটও এক্টিভ করাতে। আমি কাস্টোমার কেয়ারে কথা বলে তাকে বললাম “ দেখো তুমি একটা কন্ট্রাক্টে একটাই সেট ব্যাবহার করতে পারবে।এটাই নিয়ম। এবং যে কোন একটা সেট তোমার ওদের ফেরত দিতে হবে।“ কেন সে দুইটা সেট এক সাথে ব্যাবহার করতে পারবে না এই বিষয়ে বেশ কিছুক্ষন ইংরেজদের নিয়ে বিষোদগার করলো। এবং এরপরে সে একজন পাকিস্তানীকে ফোন করে সেট আনলকের উপায়ও জেনে নিলো। আমি হাসলাম, একবার বীন ব্যাগের টাকা সবাই শেয়ারে দেওয়ার কথায় সে বলেছিলো “Bloody asian, only how to take money from others.”
সব মাছে কি খায়, ঘাউড়া মাছের দোষ হয়, সেরাম আর কি...
ভালো লাগতেছে, চলুক।
ওই সাঈদ ভাই ঘাউড়া মাছ কিতা?
কি মাছ রান্তাছিলেন ভাই?
হুম! সাউথ এশিয়ানদের মধ্যে ইন্ডিয়া আর শ্রীলঙ্কানরাই একটু বেশী কৃপন টাইপ হয় সে দোষ্টা বাকীদের ঘাড়ে এসে পড়ে।
ভদ্রমহিলাকে কি সেদিন মাছের তরকারী দেননাই?
লেখাটা ভালো লাগল চলুক.....................
... only knows how to take fish from Asians... সুযোগমতো এইরকম কিছু শুনায় দিয়েন।
চলুক...
প্রবাসে আপনার অভিজ্ঞতাগুলো আরো লিখুন...
চলুক
ভদ্র মহিলাকে কি মাছ দেন নাই?
চলুক
কাহানী ঘার ঘার কি। কিন্তু কইলেই দুষ
সফিস্টিকেটেড মাছের রেসিপি/মাছের সফিস্টিকেটেড রেসিপি জানতে চাই
মন্তব্য করুন