ব্লগারদের আন্দোলন - ব্লগারদের কাদা ছুড়াছুড়ি : তবুও শাহবাগ জেগে থাকবে
আজকের যে কাদা ছুড়াছুড়ি চলতেছে তার প্রধান দায় আইজুর(দুই বা ততোধীক ব্যক্তির নিক. সে-ই শাহবাগ নিয়ে কাদা ছুড়াছুড়ি শুরু করেছে প্রথম--
শাহবাগ মাঠা কর্মসূচি, ইমরান ব্লকার না, পাঞ্জাবি পড়ে, হাস্যকর কর্মসূচী দেয়, সাহস থাকলে শিবিরের মিছিল মোকাবেলা করেন, পুলিশ প্রহরায় এইসব মাঠা কর্মসূচি সবাই পারে, আওয়ামী মিডিয়া সেলের নিয়ন্ত্রক, আমি শাহবাগকে দুর্বল নেতৃত্বছাড়া করতে চাইছি, তিন ভাঁড়ে ডিসিশান দেয়, ইমরান আর কন্ডম একই কথা, পাঞ্জাবির হিসাব দেও, সাভার ট্রাজেডিতে প্রজন্ম চত্ত্বর এত মাতামাতি করছে কেন, সব শেষে সাভার ট্রাজেডিতে টাকার হিসাব চাওয়া।
একটা আন্দোলনকে দুর্বল করতে হলে মুখপাত্রকে হেয় করতে হয়। এইটা শাখামৃগের ভাল জানা আছে। বার বার বলা হচ্ছিল ইমরান হল মাইক। সবাই মিলে ডিসিশান নেয়ার পর একটা মাইক দিয়ে প্রচার করতে হয়। একজনকে মাইক হিসেবে মেনে নিতেই হবে। তাই ইমরান ওখানে। যারা শাহবাগ আন্দোলন সংশ্লিষ্ট তারাই এই ডিসিশান নিছে যে ইমরানই মুখপাত্র হবে।
হ্যাঁ এটা ব্লগারদের আন্দোলন। তারাই প্রথম ইগনাইট করেছে। এরপর এটা গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। এখানে জড়িত হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী ও তাদের রাজনৈতি করতে না দেয়ার পক্ষে আপোষহীন সামাজিক, সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সঙ্গগঠনগুলো।
আইজু নিকেরা এই গণ আন্দোলনকে দুর্বল করতে চেয়েছে বলেই এই সংশ্লিষ্ট ব্লগাররা আইজুর বিরুদ্ধে গেছে। আইজু নিকের সেই ভুমিকাকে আড়াল করার জন্য এখন চলছে কার ফ্যামিলি কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল সেটার খোঁজ করা। আইজুর জামায়াত নেতার শ্যলক না হইলেও কিছু আসে যায় না। বাঁশেরকেল্লা ও মহাচুদুর যা করতে পারে নাই সেটা আইজু করেছে। সে ঘরশত্রু বিবীষণ। এই আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধপন্থিরাই জড়িত। এদের বেশীরভাগই যেহেতু আওয়ামীলীগপন্থি (বিএনপির বর্তমান অবস্থানের কারনে ওদের মুক্তিযুদ্ধপন্থিরা প্রজন্ম চত্ত্বর থেকে দূরে থেকেছে, কেউ কেউ অংশও নিয়েছে ইতিহাসে দায়মুক্তির জন্য) সেইজন্য আইজু মানুষের কাছে এটাকে লীগগন্ধ উসকে দিছেন।
এই বিচার শুরু করেছে লীগ। আর কোন রাজনৈতিক দল এই কাজ করত কিনা প্রবল সন্দেহ আছে। প্রজন্ম চত্ত্বর চেয়েছে পালের গোদাগুলোর কেউই যেন কাদের মোল্লার মত বের হয়ে যেতে না পারে। কারন সরকার চেইঞ্জ হলেই কাদের মোল্লার যাবতজীবনের সাঁজা কমে দুই-একবছরে পরিণত হবে। তারা যুদ্ধাপরাধীর সঠিক বিচার নিশ্চিত হওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের ফলে ট্রাইবুনালের আইন পরিবর্তন করা গেছে, সাইদীর রায় দুই বার পিছিয়েও আমরা ফাঁসির রায় পেয়েছি, কিছুদিন আগে কামরুজ্জামানের ফাঁসির রায় হয়েছে। নেক্সট গোয়াজমের রায় পাব আশা করছি সবাই। ফাঁসির রায়ই শেষ কথা না। ফাঁসি হতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গঠনকে বেন করতে হবে। একাত্তোরের এইগুলোই অসমাপ্ত কাজ। এই কাজগুলো করার জন্য শহীদ জননী জাহানারা ইমাম কতৃক প্রতিষ্ঠিত 'ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি' আন্দোলন করে আসছে প্রায় ২১ বছর ধরে।
শাহবাগ একটা চেতনার নাম, যে চেতনা যুদ্ধাপরাধীদের ঘৃণা করতে শেখায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিস্মৃত জাতিকে আবার ইতিহাসমুখি করেছে এই চেতনা। আমরা চাইনা ধর্মের নামে একদল লোক অমুসলিমদের বাড়িঘর মন্দিরে আগুল লাগিয়ে দিক, চাইনা ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা করুক সারা দেশে, চাইনা ধর্মের নাম দিয়ে বাঙালি জাতিকে কেউ দ্বিধাবিভক্ত করুক। আমরা চাই সাভার ট্রাজেডিতে যেভাবে সকলে একসাথে কাজ করেছে বিপন্ন কর্মীদের উদ্ধার করেছে তেমনি কাদা ছুড়াছুড়ির পলিটিক্স নয়, দেশপ্রেম দ্বারাই সবাই বিপন্ন দেশকে উদ্ধার করুক। আমরা দেখেছি মৌলবাদীরা কি করে হেফাজতের মত অরাজনৈতিক সংগঠকে সরকারের বিরুদ্ধে নিয়ে যায় 'ইসলাম গেল' রব তুলে। আমরা এইসব নোংরা রাজনীতি থেকে পরিত্রাণ চাই, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের চাই না।
এইসব আর দেখতে চাই না
এই শাহবাগ সরকারের মুখের সামনে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলছে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী চাই, অন্য কোন সিদ্ধান্ত চলবে না। এই প্রজন্ম চত্ত্বর শিবিরের বোমার সামনে বুক পেতে দিয়েছে। এতকিছু পরও শাহবাগ নেতৃবৃন্দের সমালোচনা করা, শাহবাগ আন্দোলনকে দুর্বল করতে চাওয়া আইজু নিকদের জন্য একরাশ ঘৃণা।
[এটা আইজুর সমালোচনা করে হিট খাওয়ার পোষ্ট না। সময় এই পোষ্ট দিতে বাধ্য করেছে। ]
এই পোস্টটা এবির সাথে যায় না...
এই ক্যাচাল এখানেও না আনলে চলে না?
এই বিষয়টা আর ব্লগীয় ক্যাচালের অন্তর্ভুক্ত না। কারণ আইজু ইস্যু অনেক ব্লগার ও লোককে দ্বিধাবিভক্ত করেছে যারা একসময় শাহবাগ সমর্থন দিত। আমার এই পোষ্টের উদ্দেশ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের শাহবাগ আন্দোলনের কিছু বেসিক বিষয় নিয়ে ধারণা দেয়া ও পুনঃস্মরণ করিয়ে দেয়া।
মন্তব্য করুন