প্রেমিকের ভালমন্দ
(আমার প্রতিটি লেখার মত এটিও প্রাত্যহিক জীবনের কথোপকথনের ফলে তৈরী।আমার এক বন্ধূর 'আমার প্রেমিক ভাল না' টাইপের অভিযোগ থেকেই আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবি।)
মানুষ ভাংগা চেয়ারেরই প্রেমে পড়ে।
প্রেমের ইনিশিয়াল ইমপেক্ট মারাত্নক, মানুষ সরাসরি ভেংগে পড়ে। তবে ধকল কাটিয়ে উঠার পর মানুষের মনে হয় আসলে সে ভাংগা চেয়ারেরই প্রেমে পড়েছে। তিন পা নিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় এমন চেয়ার। সারফেসে পেরেক ওঠা, 'বসলে-নড়াচড়া-বারণ' এমন চেয়ার।
সমস্যা আপনার মধ্যে:
আপনার যে মন নিয়ে আজ প্রেমে পড়তে যাচ্ছেন, তা কিন্তু মোটেই 'ইনোসেন্ট' না। সেই মন প্রেমে পড়ার আগেই বিরহের গান শুনে বিছানা ভাসিয়ে ফেলেছে, প্রেমিকা পাবার আগেই পার্কে ঘোরার প্ল্যান, এমনকি মাঝে মাঝে ঝগড়া করার সুখও কল্পনায় চেখে ফেলেছে। এই মন ঋদ্ধ, অন্যের জীবন থেকে 'বাস্তব' অভিজ্ঞতা লব্ধ। তাই আপনার সম্পর্কের মধ্যে পান থেকে চুন খসলেই আপনি বোঝেন, ওয়াট ইজ কামিং...আপনি এন্টিসিপেট করেন...
এটা হল 'আগেই জানতাম/আগেই বলেছি' সিনড্রম। এই রোগে সম্পর্ক বাঁচেনা। কারন মানুষের সবচে বর সমস্যা হল সে যা এন্টিসিপেট করে, তাই দেখে।
সমস্যা তার মধ্যে:
মানুষ হারমিট কাঁকড়ার মত, তার কোন প্রতিরক্ষাপ্রাচীর নেই। অথচ ছোটবেলা থেকেই তাকে শেখানো হচ্ছে, তার জন্য বাইরে অপেক্ষা করে আছে এক নিস্ঠুর, বর্বর পৃথিবী। 'রিয়েল ওয়ার্ল্ড' নামক জুজুর ভয়ে পৃথিবীতে সে নিজেকে পায় আক্রান্ত হিসেবে।ফলত: সে একের পর এক পরা শুরু করে বিভিন্ন মাপের ও পারপাসের বর্ম। শত্রুকে না দেখেই সে ছুরিতে শান দিতে শেখে। সন্দেহের মধ্য দিয়েই সে সূত্রপাত করে জাগতিক সব সম্পর্কের। পাঠিকা, এত সহজে তুমি তার তল পাবে! এত সহজে সে খুলতে পারবে তার সেই সব মুখোশ, যা ইতোমধ্যে তার নিজের কাছেই মুখ বলে ভুল হয়!
কারন, মানুষতো শুধু মানুষ না। তার উপরতলা, নীচতলা আছে। 'ভেতর বলে দূরে থাক, বাহির বলে আসুক না' টাইপের জটিলতা আছে। প্রাইভেট-পাব্লিক আছে।'নিজেই তাজ্জব তুমি একদিকে যাইবার চাও, অথচ আরেক দিকে খুব জোরে কেউ দেয় টান' আছে।
মানুষ ভাংগা চেয়ারেরই প্রেমে পড়ে। কিন্তু কি এক মায়াবলে এই ভাংগা চেয়ারই ময়ূর সিংহাসন হয়ে যায়। এই ভীষন ভাংচুর লুকিয়ে রাখা রুক্ষ মানুষটার মনের কোথাও একটা সুইচ আছে যাতে হঠৎ টিপ পড়ে গেলে তারও দুকূল ভেসে যায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, অনির্শেষ সৌন্দর্য্যের প্লাবন বয়ে যায়। ঈশ্বরহীন বিশ্বে মানুষ ঈশ্বরের মতই কষ্ট পায় তার সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিয়ে। অর্থৎ সে মানুষ হয়ে ওঠে।
পাঠিকা, তুমি কি সুইচটি পেয়েছ?
বিলাপ:
হায়রে, রবীঠাকুরের কাল গত হয়ে গেছে। তার টাইমে জীবনে কেউ 'বসন্তের এই বাতাসটুকুর মত' আসলেও তাকে নিয়ে ভাববার অবকাশ ছিল। এখন আমরা ছুটি, 'করুণ চিলের মত সারাদিন, সারাদিন ছুটি'। এখন আমরা পরের সাথে কথা বলি সারাক্ষন, তাকে নিয়ে ভাবিনা; নিজেকে নিয়েই ভাবি, নিজের সাথে কথা বলিনা। আমাদের আত্নার সাথে অন্তরংগ ডায়লগ শেষ হয়ে গেছে।
ও পাঠিকা, তোমাকে আমি কি জীবন বোঝাব! জীবনের শিরায় তুমি তরল আগুনের মত বয়ে চল! তোমার কোন থামাথামি নাই? আহত পশুর মত তুমি কোন ব্যাথা বুকে নিয়ে কোন নির্বাণ খুজে ফের?
তোমার চেনা পথের বাইরে পা ফেললেই দেখতে পাবে অদূরে একটি পুরনো স্টেশন। এটা সময়হীন। টি স্টলে বসে চা খাও আর ভাব। তুমি আগে তোমাকে ফিরে পাও!
সেটাই, এই "আমি" টাই সব দোযে দায়বদ্ধ। আবেগে ভেসে যাওয়ার, এন্টিসিপেট করার, মুখোশটাকে সত্যি মনে করার, নিজেকে বিলিয়ে দেবার, সর্বোপরি নিজের চেয়েও সেই আধ ভাঙ্গা চেয়ারকে মূল্য দিয়ে ফেলার - দোযে দোযী।
নারীদিবস গেলো বলেই কি শুধু পাঠিকাদের উদ্দেশ্যে লিখলেন, নাকি পাঠকরা "প্রেমিকা দোযী" এই টাইপ আলোচনায় যায় না মনে করেন?
লেখাটা বেশ ভালো লেগেছে, আপনার বিশ্লেষন পছন্দ হয়েছে! সুন্দর একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ।
দেয়াল, ওয়ার্ল্ড, অবকাশ, সৌন্দর্য্য - বানানগুলো ঠিক করে ফেলেন।
@ জেবীন, তাতা-
" নারীদিবস গেলো বলেই কি শুধু পাঠিকাদের উদ্দেশ্যে লিখলেন, নাকি পাঠকরা "প্রেমিকা দোযী" এই টাইপ আলোচনায় যায় না মনে করেন?"
এইটারে আপনারা আোপরাধ মনে করেন কি না জানিনা, তবে আমার দৃষ্টিতে এইটা অপরাধ! নারীদিবসে উল্টা নারীদের এগেনস্টে লিখা হলো! নারীকে জীবনের শিরায় বহমান তরল বলার (একটা বিশেষণ না যেন এডভার্ব ছিল , ভুলে গেছি ) মধ্যে নারীকে চিরচেনা ঐ ক্লাসিক্যাল/প্রচলিত "প্রেরণাদায়িনী পরেমিকা" হিসেবে পবনেচ্ছার (পাবার ইচছা- পবনেচ্ছা ) প্রকাশই দেখি। কি বলেন?
=====
জেবীন আর তাতা'র কমেন্ট পড়ে মনে হলো ইট্টু গ্যান্জাম করি ( স্বঘোষিত মেইলশৌভিনিস্ট হিসেবে একটা দায়িত্ব আছেনা খেক খেক খেক). ). তারপর ভাবলাম গয়নজামের সর্বপরকার ব্লগীয় ভারসন এড করা যায় কিনা.. সাহিত্য ভার্সন পর্যন্ত আইসা ভাবলাম ছাড়ান দেই... হুফফফ.. এত সব গ্যানজামের ভেতর পোস্ট নিয়া আমার কমেন্ট জানানোই হইল না। ... পরে আইসা কয়া যামু :
বাই দ্য ওয়ে, উপরের কমেন্টে লিখা "আোপরাধ" বানানটা আসলে টাইপো .. খেক, খেক খেক ... আর সব ভুল বানানের শব্দগুলার চেয়ে আমার বেশী পড়তে অস্বস্তি লেগেছে "পরা" কে "পড়া " আর "সুইচকে" "সুইস" লিখায়... বানান দুইটা বদলালে একটানে পড়ার পথে দুইটা স্পীডব্রেকার কমব :)।
পোস্টের কমেন্ট পরে দেয়া হবে
বাফড়া@আমার মোটেও লাগে নাই চাদঁবেনে নারীদের বিপক্ষে বলেছেন, প্রশ্নটা জানার আগ্রহেই উনাকে জিজ্ঞাস করা।
আর অভিজ্ঞ লেখক ঠিকই বুঝেছেন যে, মেয়েরা নিতান্তই ভুলের বশবর্তী হয়েই "পেরেক ওঠা আধ ভাঙ্গা চেয়ার" গুলোর মোহে পড়ে যায়, একসময় বুঝে উঠতে পারলেও, মেয়েদের স্বভাবসুলভ মায়া কাটাতে পারে না, ভাবে আমারই তো হোক না ভাঙ্গা চেয়ার, এতে করে পেরেকের আঘাতে যতই রক্তক্ষরন হোক না কেন। আবার কখনো উঠতে গেলে কাপড় ছেড়াঁর ভয়ে তথাপি "পাছে লোকে কিছু বলে" চিন্তায় ঊঠে যেতে পারে না। আর যত বন্ধু/সাথী যাই বিশেষনে বিশেষিত করাই হোক না কেন ঘুরেফিরে নারীদের "পবনেচ্ছার (পাবার ইচছা- পবনেচ্ছা)"'র মাঝেই সীমাবদ্ধ করা হয়ে যায়!!
তোমার কমেন্ট দেখার আশায় রইলাম, দিনে দিনে তো হাওয়া বাতাস হয়ে ঊঠছো, ব্লগে দেখাই যায় না!! কিছু লেখা দেখতে চাই... আশায় রইলাম
লেখক@আরেকটা বানান ঠিক করেন "বড়ো আঘাত"... সুন্দর লেখাটায় চোখে লাগছে বানান গুলো। আর বারবার বানানের কথা বলছি, আশা করছি যে মনে কিছু নেবেন না।
পাইছি ঘাপড়ারে
ভুল: নারীদিবসে উল্টা নারীদের এগেনস্টে লিখা হলো!
সঠিক: নারীদিবসে উল্টা নারীদের এগেনস্টে লেখা হলো!
ভুল: (একটা বিশেষণ না যেন এডভার্ব ছিল , ভুলে গেছি )
সঠিক: অ্যাডভার্ব
আরো দুই একটা আছে মনে হয়। ধরলাম্না
@রায়হান ভাই- জ্বিনা ব্রাদার, এত সোজা না.. পয়লা কথা হলো আপনেরে বলছিলাম পোস্টে বানান ভুল ধরতে, কমেন্টে নয়। সেকেনড কথা হইলো , এই কমেন্ট মবিল থিকা করা...তাই কষ্ট কমাতে এইখানে "মনোয়" "বুল" "বানাম" "থকলেও "কারেকক্ট" করা হবে না । ৩নং কথা হইলো , লেখা আর লিখার মইধ্যে যদি তফাত থাকে ব্যাভারের তবে কমু এইটা এতই এদভানসড লেভেলের যে আমার জানাই ছিলনা.. যাউগ্গা, দেখা হইলে লিখা/লেখার ব্যাপারটা ভালোমত বুইঝা নিমু যাতে আর ভুল না হয়
কইলাম না ইংলিশ শব্দেরে বাংলায় লিখলে ঐখানে বানান চেক না করতে।
তুমি মানা করলেই আমি মানুম ?
যাউক্গা, তোমার একটা পোস্ট পড়লাম বানাম্ভুল ধরার বাঞ্ছায়। একটা পাইলাম মাত্র।
কি'র যায়গায় কী হইবে। হতাশ হইলাম চরম।(আমার একটা পোস্টে কম কইরা হইলেও এক লক্ষ থাকে)। দেখি অন্য কেউরে ধর্তারিনি।
আগামী কুন আড্ডায় এসপ বানাম্ভুল নিয়া আলোচনা হবে আগেই জানাইয়েন পিলিজ লাগে।
আমার নেট লাইন সমস্যা করছে তাই সব উত্তর দিতে পারছিনা।
ধন্যবাদ দিয়ে নেই।
পরে সুযোগ নাও পেতে পারি।
'পাঠিকা' বলতে আমি নারী বোঝাইনি। নারী ও পুরুষ উভয়কেই বুঝিয়েছি। রিডার কে 'পাঠিকা' বলে সম্ভোধন করা সলিমুল্লাহ খান শুরু করেছেন। অনেকটা ইংরেজি 's/he' র মত।
এটা এখন প্রায় প্রতিষ্ঠিত।
শিরোনামে 'প্রেমিক' না লিখে 'প্রমস্পদ' লেখার ইচ্ছা ছিল, সেক্সুয়ালি নিউট্রাল করার জন্য। শুনতে খারাপ লাগে তাই দেই নি।
এটা আসলে ১০-১২ দিন আগে লেখা।
কালই সময় পেয়ে পোস্ট করলাম। আমার টিইমিংয়ের কারনে এই পেদানি খেলাম। নারীদের উপদেশ দেওয়া থেকে শুরু করে অনেকগুলো সংস্কার থেকে নিজেকে মুক্ত বলেই ভাবি।
...চিয়ার্স...
আপনার উত্তর দেখবার অপেক্ষায় ছিলাম। নেটলাইন এ-যাত্রা সেই সুযোগ দিলো না। আপনার রেখার ধাঁচ আর চিন্তার ধারা ভিন্ন ধারার তাই যা বোঝাতে চান হয়তো ঠিক ভাবে বুঝতে পারি না।
!!!
আরো লিখেন, আপনার গভীর লেখা আর তারচেয়ে গভীর মনস্তত্ব বোঝার চেষ্টা করি!
ধন্যবাদ। লিখব।
হারমিট ক্র্যাবের উদাহরণটা জোশ হইসে।
আমি প্রায়ই দেখি পোষ্ট পড়ে আমি মন্তব্য করবো বলে ভাবি জেবীন সেটা কটকট লিখে রেখেছে । কি আর করা। আমরা দুজনেই গ্রেট আর গ্রেট মাইন্ডস থিংকস এ লাইক
তাই আমারো প্রশ্ন
তাতা'পু@ অনেক আগে এফবি'তে একবন্ধু কি জানি ফাইযলামি কথা বলায় আপ্নে সুইটলি তারে বলছিলেন "ডিজিএম"!!...... জোস লাগছিল ব্যাপারটা উপ্রে বাফু'র কমেন্ট দেখছেন না?... এবারো আপ্নের মনের কথাটা বলে দিতেছি। ওই স্বঘোষিত মেইলশৌভিনিস্টরে বলতেছি, "ডিজিএম"!
লেখকের সুবিধার্থে, এইখানে বাফড়া'কে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার উপাধি দেয়া হয় নাই, দূরে গিয়া মরতে বলা হইছে!!...
@ জেবীন- তুমারে এজিএম, (আগে গিয়া মরো) .. খিকজ
@তাতা- আপনের ৈ গ্রেট ম্যান থিংস এলাইক দেইখা মনে পড়ল "ফুলস নেভার ডিফার" .. মনে পড়ছে খালি, কই নাই কিন্তুক.. বাই দ্য ওয়ে, গ্রেট ম্যান থিংস এলাইক কথাটা কয়া একবার করূণ অবস্হায় পরছিলাম.. .. ভাবলে অহনো খারাপ লাগে নিজের জন্য
বাফড়া, তোমার দশা করুণই থাকা উচিত। সব কথায় বাম হাত দেয়া। মুরুব্বীদের মাঝখানে পোদ্দারী।
পুরা লেখাটাই জটিল লাগলো। শেষ কথাটায় আটকে গেলাম। গ্রেট।
আর কোনদিন নিজেকে ফিরে পাওয়া সম্ভব না
স্টলে বসে চা খেতে চাই আর সেটি অবশ্যই একা একা নয়
এক নারী নেত্রী কইছেন, পুরুষ আর নারী সমাজের দুটি চাকা। একসাথে চলতে হবে। আপনি আপনার চাকা নিয়া স্টলে বসে চা খাবেন।
আরেকটা সম্পুরক মন্তব্য, নারীদের এতো অসহায় ভাবি না, পুরুষদের চাইতে নারীর সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা কোন অংশে কম নয়। একা একা চা খাবো আর ভাববো কেন! হয় বান্ধবী নয় বন্ধুকে নিয়ে চা খাবো। পাঠিকাদেরকে এত বোঝানোর কি আছে! পাঠিকারা আজকাল নিজেরাই নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে
টাইম শেষ (
আমার নেট লাইন খুব্বি দিসটার্ব দিচ্ছে। একটা রিপ্লাই কে অনেকবার দেখাচ্ছে। এটা কি ঠিক করা যায়?
বিব্রতকর সমস্যার জন্য স্যরি।
কঠিন হয়ে গেছে একটু!
মন্তব্য করুন