ইজ্জতের মুল্য ও দাম
কোন এক দেশের সর্বোচ্চ পাহাড়ের নিচে একটা ছিমছাম গ্রাম আছে- নাম দার্জিলিং পাড়া। আট-দশটা পরিবার নিয়ে পাহাড়টাকে মাথায় করে গ্রামটা দাঁড়িয়ে আছে। ভ্রমনকালে, এখানে আমরা একবার বিশ্রাম নেয়ার জন্য দাঁড়াই, এবং একটুপর একটা বাড়ির পাশের পেয়ারা গাছে হামলা চালাই। যত পারি খেয়ে এবং যত পারি নিয়ে যখন দাম চুকাতে যাব, তখন খুব বিপদে পড়লাম। গাছের মালিক টাকা নেবেনা। কারন, তারা পেয়ারা বিক্রী করে না। তো তারা কি বিক্রী করে? খোঁজ নিয়ে জানলাম তারা খুব টক কি জানি একটা ফল বিক্রী করে। একটা ফল মুখে দিয়ে দেখলাম: জন্মের টক।
ভাবলাম লোকটাকে একটু মার্কেট ইকোনমি বুঝাই। বললাম, "বুঝলেন দাদা, যার চাহিদা আছে, তা বিক্রী করুন। যেটার চাহিদা নাই, তা বিক্রী করা টাফ।"
-কে শোনে কার কথা, ঐ লোক টাকা নিলোই না।
-তার ধারনা সব কিছু বিক্রী করা যায় না।
গ্রামের পাব্লিকতো! এখনো লাভ-লসের হিসাব বোঝে নাই, মানলাম। কিন্তু আমাদের শহুরে প্রতুলকুমারও যদি একই কথা বলে, কেমনডা লাগে! ওনি গান ধরেন: "আলু বেচ, ছোলা বেচ, বেচ বাকেরখানি, বেচোনা বেচোনা বন্ধু তোমার চোখের পানি।" ইত্যাদি, ইত্যাদি।
তাহলে কি সবকিছু বিক্রী করা যায় না! কই চারদিকে তো কত মানুষ সব কিছু বিক্রী করে দিচ্ছে- বিবেক, ইজ্জত -সব!! ইজ্জত তো আবার রিনিউয়েবল, সকালে বিক্রী করলে বিকালে আবার করা যায়। এটা বিক্রীর টাইম। শুধু কি আব্দুন নূর তুষারদের ইজ্জতের দাম আছে! আমার ইজ্জতের দম নাই!! ত্রিশটি 'বসন্ত' শুধু শুধুই এটাকে আগলে রাখলাম। চলেন, বিক্রী হয়ে যাই।
চলেন কেনাবেচার হাটে বিক্রী হইয়া যাই...
কত টাকা কেজি দরে তুষার গেল?
তুষার? এ আর নতুন কি? অভ্রর আমলে একবার পল্টি দিছিলো না?
কখন কোন দিকে ছাতা ধরতে হয়, এ মানুষগুলো এত নিবিড়ভাবে জানে দেখলে অবাক লাগে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাটা কেমনে মিস হল বুঝলাম না। কোন ক্লাসে শেখায় এটা? তারা এত সাবলিলভাবে মিথ্যা বলে মনে হয় আমরা বুঝিই না ওস্তাদ কি দিচ্ছেন!
ভবের হাটে দোকান দিয়ে করলি বেঁচা কেনা
মজহার কত টাকায় বিক্রি হইলো জানতে মঞ্চায়
মজহার সাহেব অনেকদিন ধরেই ঠারেঠুরে এই খোয়াব ব্যক্ত করেছেন। ইংগিতের উপর ভরসা হারিয়ে এবার নগ্ন হয়ে দেখা দিলেন। ওনার কাপড়ের অভাব হলে নিজের দোকান(প্রবর্তনা) থেকেই নিতে পারেন।
ভবের হাটে দোকান দিয়ে করলি বেঁচা কেনা
মন্তব্য করুন