বিশ্বকাপ বনাম নিঃস্বকাপ
দৃশ্য-১
চাচী সবাইকে আশ্বস্ত করে বললেন- ভয়ের কোন কারন নাই, আমাদের দলে তোমাদের ‘কাকা’ আছে, জয় তোমাদের সুনিশ্চিত। চাচীর কথা শুনে সব ভাতিজারা রে রে করে বেরিয়ে পরল, ফলে রাতারাতি দোকান পাট রাস্তা-ঘাট অলি গলি সব ব্রাজিলিয়ান পতাকায় ছেয়ে গেলো। ভাতিজীরা ঘরে বসে কাকাকাকাকাকাকাকাকা......... রব তুলে এমন অবস্থা করল যে ডাস্টবিনে খাদ্য অন্বেষনরত কাক পক্ষীগুলি এস্ত ব্যস্ত হয়ে উৎসুক নয়নে তাদের পানে তাকিয়ে রইলো।
মেশো মশাই (খালুজান) বসে থাকার লোক নন- হুংকার মেরে বললেন – ভাগিনা-ভাগ্লীরা শোন- তোমাদের ‘মাসি’ (Messi) থাকতে আবার চিন্তা কি? তোমরা কেনো ঘরে বসে থাকবে? ......আর যায় কোথায়- মূহুর্তের মধ্যে বাড়ির ছাঁদ চিলেকোঠা সহ সব কিছু আর্জেন্টিনার পতাকায় ছেয়ে গেলো। সারা দেশে একমাত্র সংসদ ভবনের মাথায় বাংলাদেশের পতাকাটা ভয়ে জড়সড় নিস্তেজ হয়ে নিচের দিকে ঝুলে রইল। বাদলা দিনের ঝড়ো হাওয়াও কিছুতে তাকে নাড়াতে পারলো না। ভাগিনাদের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘরে বসে ভাগ্নী গুলি ম্যাসি ম্যাসি ম্যাসি ম্যাসি............ বলে এমন শোরগোল শুরু করে দিলো যে ঘরের কোনের ম্যাছি-বিড়াল আর ইদুঁর গুলি ভয়ে কোঁ কোঁ করতে থাকল।
দৃশ্য-২ (নেদারল্যান্ডস)
আজ ব্রাজিল-নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। আগের দিনেই অফিসের বড় কর্তা বলে দিয়েছেন তোমরা যারা খেলা দেখবে তারা ইচ্ছে করলে অফিস টাইমের আগে আগেই কাজ আরম্ভ করতে পারো এবং আগে আগে বেরিয়েও যেতে পারো, শর্ত একটাই ‘নিয়মিত কাজগুলি শেষ করে যেতে হবে’। যথা সময়ে কাজ সেরে বাসার জন্য রেডি হচ্ছি আর অম্নি বউএর ফোন- ‘এই তাড়াতাড়ি এসে আমাকে অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাও। আজ আমরা সিটি সেন্টারে বড় পর্দায় খেলা দেখবো। বাইরে প্রচন্ড গরম হেতু রাজি না হলেও বউএর আগ্রহে শেষকালে রফা হলো আমরা হাফ টাইমের ব্রেকে সিটি সেন্টারে যাবো, এখন গেলে কিছু খেলা মিস হয়ে যাবে।
এ বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে আজকে সারাদিন রেডিওতে অবিরাম দেশাত্ববোধক গান বাজিয়েছে প্রায় সব গুলো সেন্টার। সব টিভি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ফুটবল দেখাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়ছে। মোটামুটি সবাই কমলা রঙের কাপড় পরে বের হয়েছেন। আমরা সবাই খেলা দেখছি তবে সবার মন খুবই খারাপ কারন ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ডস একটা গোল খেয়ে ফেলেছে। আমাদের পাশেই কয়েকজন ব্রাজিলিয়ান (৮/১০ জন হবে, বলে রাখি এখানে প্রায় ৪/৫ হাজর ডাচ লোক খেলা দেখছে) সারাক্ষন নেচে গেয়ে ভেপু বাজিয়ে মাত করে রেখেছে। তার পরেও অনেক ডাচ লোক তাদের দিকে তাকিয়ে মাঝে মধ্যে দুই আঙ্গুলে ‘V’ চিহ্ন দেখাচ্ছে। আমার পাশেই এক ডাচ লোক তাদের বললো “খেলার সাথে সাথে আমারা তোমাদের নাচও উপভোগ করছি, তোমরা খুব সুন্দর নাচো”।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ডাচরা নেচেগেয়ে একাকার করে দিল। ব্রাজিলিয়ান গুলি বির্মষ হয়ে দাড়িয়ে রইল। তাদের মাঝে হেরে যাওয়ার দুঃখ থাকলেও ভয়ের লেশ মাত্র ছিল না। ছিল না কোনো হানা হানি বা ভাংচুরের ঘটনা। তারা সবাই নেচে গেয়ে ফুটবলের বিশ্বকাপ জয়ের দিকে এগিয়ে গেলো.....................।
দৃশ্য-৩
খেলা শেষ.........। চাচী আর মেশোর কোনো খবর নাই, ‘কাকা’ আর ‘মাসি’র মুখে কথা নাই। ভাতিজাদের হাতের খোলা রাম-দা আর ভাগিনাদের ছোড়া কেরোসিনের বোতল আর আগুনের তান্ডবলীলায় দেশের নিরীহ মানুষগুলি পালানোর পথ খুজে না পেয়ে দিশেহারা।
আমরা বিদেশে বসে ইন্টারনেটে দেশের দৈনিক গুলি খুললেই বাস ভাংচুরের ছবি সহ ভাগিনা-ভাতিজাদের বীরোচিত খবরে মুখে থু-থু দিতে ইচ্ছে করে.........।
ছাগলের তিনটি বাচ্চা এক সংগে জন্ম নিলে নাকি বুদ্ধিমান দুটো মায়ের দুই বাটে রিতীমত দুধ খেয়ে তাজা হয় আর তিন নাম্বারটি দুধ না খেয়েই দূরে থেক তিড়িং-বিড়িং লাফিয়ে অবশেষে নিস্তেজ হয়ে পরে থাকে। আমরা আর কত কাল ছাগলের তিন নাম্বার............... ।
খেলাধূলায় দর্শকদের মাঝে পক্ষ-বিপক্ষ থাকে এতে দোষের কিছু নাই, বরং পক্ষ-বিপক্ষ না থাকলেই খেলা নিরামিষ নিরানন্দময় হয়ে পরে। তাই বলে খেলোয়ারচিত মনোভাব থাকবে না, আর খেলা শেষে মারা-মারি হানা-হানি, সম্পদের ক্ষতি করা, এ কেমন পক্ষালম্বন!
সারা বিশ্ব যখন খেলাধূলা আর জ্ঞান বিজ্ঞানের বিশ্ব কাপের দিকে তীর বেগে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমারা জ্বালাও পোড়াও আর হরতালের “নিঃস্বকাপের” দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
আসুন এবার কিছু ছবি দেখি
ড্র'র আগে গর্বিত ব্রাজিল সমর্থকরা
হাজার পাঁচেক হল্যান্ডবাসীর ভীড়ে গোটাকয় ব্রাজিলিয়ান নির্ভয়ে খেলা দেখছে।
(হয়ত এই ডাচ লোকগুলি আমাদের ভাতিজা-ভাগিনাদের মত তেজী-বুদ্ধিমান না)
উৎকন্ঠিত অরেঞ্জ সমর্থকরা
দুঃখিত ব্রাজিলিয়ানরা
বিজয়ের উল্লাস হাতে নিয়ে "ডেমো" গোল্ড কাপ
মজিবর রহমান তালুকদার (দুলাল)
০৪.০৭.১০
এইটা তাইলে দুলাল ভাই?
আইচ্ছা...
স্বাগতম
ব্যাপক স্বাগতম
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এতো ভীড়েও আমাকে চিনে ফেলেছেন ! দেখা হবে তাড়াতাড়ি।
মজিবর নামে চিনি নাই, তালুকদার (দুলাল) দেখে চিনে ফেলছি
আইচ্ছা...
স্বাগতম
ব্যাপক স্বাগতম
আচ্ছা তাতপু এই দুলাভাই আপনের ছবিগুলা দিয়া ব্লগ লিখছে।আপনার কাছ থেকে পারমিশন নিছে?না নিলে কপিরাইটে মামলা করেন।
ছবিগুলা দেইখাও কি বুঝতাছেন না কেডা তুলছে
না ভাই, মামলাটা আসলে আমার করার কথা। ছবিগুলা আমারই তোলা।
না ভাই, মামলাটা আসলে আমার করার কথা। ছবিগুলা আমারই তোলা।
তোমাকেও ধন্যবাদ।
ওহ বুঝছি এ আমাদের দুলাভাই.।।।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
আমি আনন্দিত। আপনার উষ্ণ আন্ত্রিকতার জন্য ধন্যবাদ।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
নিয়মিত থাইকেন শ্যালকদের পাশে
এতো আপ্যায়ন পেলে কে যেতে চায় বলুন।
স্বাগতম !
ধন্যবাদ।
ব্লগে বড় আপাদের ধ্যাতানিতে থাকতে থাকতে একজন দুলাভাই ব্যাপক মিস কর্তেছিলাম
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
-------------------------------------------------
সুন্দর ছবির জন্য থ্যাংকস । ভালো থাকবেন ভাইয়া ।
ধন্যবাদ, আপনিও ভাল থাকবেন।
টিভির দিকে তাকাইয়া থাকতে থাকতে চোখ ব্যাথা হইয়া গেল, তবু্ও এই নাচ দেখতে পারলাম না, আফসুস।
এবিতে, আমাদের ভুবনে স্বাগতম।
এই নাচ টিভিতে আসে না, এই নাচ লাইভ।
পরের বার চলে আসবেন একসাথে নাচ মানে থুক্কু খেলা দেখতে যাবোনে
আমাদের দুলাভাই নাকি?
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম।
দুলাভাই আসছে কেউ মিষ্টি খাওয়ায় না কেন?
শালাদের হাতে খাবে না দুলাভাই।
তাই ওয়েট করতেছে কখন তার ছোটগিন্নীরা এসে তাকে মুখে তুলে খাওয়ায় দিবো!!!!!!!!!
আইছে আরেকজন! শালারা মিষ্টি নিয়ে আসুক। শালিকারা তো আপ্যায়ন করবেই।
দুলাভাইয়ের জন্য রসগোল্লা আনছি। দুলাভাইয়ের ছোট গিন্নীরা সব কই??????
আপনি ভাই একেবারে মনের কথাটা বুঝে ফেল্লেন !!!!!!!
আহা- কতো দিন হয়, শালিকাদের হাতের মিষ্টি খাই না।
ধন্যবাদ।
ধুর ছবি ছোট হয় না কেন?????? কেও আমারে বাচান।

সবগুলিই কি আমার জন্য?
শালিকাদের ডাকেন, আপনিও আসেন।
ওয়েল কাম টু আওয়ার দুলাভাই।
আর একজন দুলাভাই পেয়ে যারপরনাই খুশি হলাম।
কিন্তু দুলাভাই, পোস্টের অনেক ছবিতো আমাদের আগেই দেখা শেষ!
আপা আপনার ছবি আগেই মেরে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছিলো! হা হা হা
দুলাভাই, যা কিছু করেন আপা'রে জিগাইয়া করবেন নাইলে কিন্তু ধরা।
ভাল থাকুন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমাদের বিদেশী দোয়া প্রয়োজন।
ধন্যবাদ।

আমিনননননন
এই জন্যই তো বলি, গল্প চেনা চেনা লাগে
দুলাভাইকে স্বাগতম
ধন্যবাদ।
প্রথম থেকেই পুরা কাহিনী চেনা চেনা লাগতেছিলো। দুলাভাইকে শুভেচ্ছা-স্বাগতম। আর যতই বলেন না কেন, সাধারণ পাঠক, পড়তে চাই; এবি'তে আমরা যারা শ্যালক-শ্যালিকা আছি তারা কিন্তু এত সহজে ছাড়বো না। আমরা আরো আরো পোস্ট চাই।
দুলাভাইকে শুভেচ্ছা নিরন্তর।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
আরেকজন দুলাভাই পাওয়া গেলো, ওয়েলকু
ভাই, আপনাকে অনেক আনন্দিত মনে হচ্ছে। আপনি লিখেছেন - আরেকজন দুলাভাই পাওয়া গেলো, ওয়েলকু। 'ওয়েলকু' টা কি! জানাবেন আশা করি।
অনেক কিছু অজানা থেকে গেল দুনিয়ায়!
এত্তগুলান মানব সন্তান পয়দা করলেন, আর ওয়েলকু শব্দের অর্থ জানেননা ?
ওয়েলকু মাইনে ওয়েলকাম... স্বাগতম... আসেন... বসেন... খোশ আমদেদ...
ধন্যবাদ।
দুলাভাইরে বিশাল স্বাগতম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
দুলাভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম
এত রসগোল্লা খায়া নিশ্চয় পেট ভইরা আছে! তাই আমি আর নতুন কইরা কিছু দিলাম না!
ধন্যবাদ, আর কিছু দিতে হবে না।
মোটে এই কয়টা ফটুক।


আরো কিছু ছবি দিতেন, আর, আপনারা নাচ উপভোগ করলেন, কিন্তু, আমাদের দেখার কোন ব্যবস্থা করলেন না।
যাই হোক, এবিতে স্বাগতম।
সবাই দুলাভাই বলতেছে, আমিও দুলাভাই বলি...
ছবি দেখে আর কি হবে। একবার আসুন আমাদের এখানে বেড়াতে- খুব মজা হবে।
স্বইচ্ছায় যখন পরম আত্নীয় হলেন তবে আর দেরি কেন, চলে আসুন তাড়াতাড়ি।
মন্তব্য করুন