ইউজার লগইন

ইকোনমিস্ট-আমার দেশের অপপ্রচারণা : ষড়যন্ত্রের নতুন ফ্রন্ট (প্রসঙ্গ: ICT হ্যাকিং)

বাংলাদেশের চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল শুরু থেকেই নানা ধরণের শত্রুর মোকাবেলা করে কাজ করছে। দেশে এবং বিদেশে, মিডিয়ায় অথবা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিরামহীনভাবে চলছে অপপ্রচারণা, ট্রাইবুনালের ইমেজ ধ্বংস করার চেষ্টা, ট্রাইবুনালের কাজকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা। আমরা দেখেছি বহির্বিশ্বে টবি ক্যাডম্যানের মতো লোকেরা কীভাবে ট্রাইবুনাল সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বেড়িয়েছে, দেখেছি আলি আলগামদির মতো মিডিয়াবাজেরা সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশ এবং ট্রাইবুনাল সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়েছে, এমনকী বাংলাদেশ সরকারকে নানা ভাবে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয়ার নিদর্শনও মিলেছে। ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যাগুলোর একটির খলনায়কদের বিচারের আওতায় আনার এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রক্রিয়াটিকে ক্ষতিগ্রস্থ করার পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। সুদূর তুরস্কের একটি রাজনৈতিক দল সাদেত পার্টির উদ্যোগে ইস্তাম্বুলে গোলাম আযম সহ এসব অপরাধের দায়ে আটক ব্যক্তির মুক্তির দায়ে সমাবেশ হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সর্বশেষ সংযোজন লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রিকা দি ইকোনমিস্ট, এবং তাদের ল্যাজ ধরে ধরে বাংলাদেশের আমার দেশ।

মূল ঘটনাটুকু এই কয়দিনে সবাই জেনে গেছেন মনে হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সাথে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপ কথোপকথনের একটি রেকর্ড ইকোনমিস্টের হাতে এসেছে। আরো এসেছে নিজামুল হক নাসিমের ইমেইল একাউন্টের তথ্য। এই কথোপকথনে নাকি ট্রাইবুনাল সম্পর্কে বিস্ফোরক সব তথ্য রয়েছে, সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়াটিই যে একটি সাজানো ব্যাপার স্যাপার এমন সব প্রমাণ রয়েছে। ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে নিজামুল হক নাসিমকে ফোন করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আর গতকাল ৮ ডিসেম্বর, ২০১২ আমার দেশ পত্রিকায় এই কথোপকথনের একাংশের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশিত হয়েছে।সংক্ষেপে এই হলো ঘটনা।

এবার একটু ভালো করে পুরো ঘটনাটির দিকে আমরা তাকাবো। প্রথমেই আসা যাক আমার দেশের প্রতিবেদনটির ব্যাপারে। একেবারে শুরুতেই একটি মারাত্মক ভুল করেছেন আমার দেশের প্রতিবেদক। সেখানে নিজামুল হক নাসিমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত এই নামে কোন ট্রাইবুনালের অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশে যে দু’টি ট্রাইবুনাল চলমান তাদের নাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এক এবং দুই। গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্যগত ভুল দিয়ে শুরু হয়েছে আমার দেশের প্রতিবেদন।প্রতিবেদনের বাকি অংশটুকু লিঙ্ক থেকে পড়ে নিতে পারেন। আমরা সরাসরি আলোচনায় চলে যাবো।

প্রথমত, বিশ্বে এই ধরণের বিচার যখনই হয়েছে, যেটি যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অপরাধ নিয়ে কাজ করে এবং যার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব অপরিসীম, তখনই বিচারকেরা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সোর্স থেকে সাহায্য নিয়েছেন, নিয়ে থাকেন। এর জন্য নিয়োজিত থাকে গবেষক টিম, কপি এডিটর, প্রুফ রিডার, নিয়োজিত ইন্টার্নদের একটি টিম। একটি বিষাল ওয়ার্কফোর্স কাজ করে এরকম একটি বিচার প্রক্রিয়ার পেছনে। বাংলাদেশে সেটি হয়নি নানা জটিলতায় – আমাদের দেশটি দরিদ্র, আমাদের ভেতরে বাইরে শত্রু অসংখ্য, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক জটিলতা প্রচুর। আমাদের সামর্থ্য হয়নি এটি করার জন্য, আবার সে কারণে সমালোচকরাও বসে থাকেননা। সেই অবস্থায় এই কাজটি বিনে পয়সায় করে দিতে এগিয়ে এসেছেন কয়েকজন মানুষ। তারা কী করেছেন? গবেষণা, ড্রাফটিং আর এডিটিং সহায়তাটুকু দিয়েছেন। সেটিও করেছেন বিচারকের অনুরোধে, বিচারকের বেঁধে দেয়া নির্দেশনা অনুসারে। এই প্রসঙ্গে নিজামুল হক বৃহস্পতিবার আদালতে তিনি বলেছেন,

আমরা আগেই বলেছি ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ নতুন একটি আইনে তার বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশের জন্য কাজটিও নতুন। সে কারণে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ হিসেবেই আমি আহমেদ জিয়া উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেছি। যা ছিলো একান্তই নিজস্ব আলোচনা।

বইয়ের প্রুফ দেখলেই নিশ্চয়ই কেউ লেখক হয়ে যান না। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে কোন অংশই অস্বচ্ছ বা বেআইনী ভাবে করা হয়নি।

দ্বিতীয়ত, আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে নিজামুল হক নাসিমের যে আলোচনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ অনানুষ্ঠানিক আলোচনা, আগ্রহী পাঠক উপরের লিঙ্কে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। আলোচনাগুলো হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে, কেমন অগ্রগতি হয়েছে, দেশের মানুষ এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং আগ্রহ কীরকম এইসব নিয়েই। এটি মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়, মানুষ খুব সাভাবিকভাবেই সাধারণ অন্তরঙ্গ আলোচনায় চলমান বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করে। বাংলাদেশে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা ঘটছে সেটি নিয়ে দু’জন মানুষ ঘরোয়া আলোচনা করে নিশ্চয়ই মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেননি। আমরা দেখেছি সেখানে হজ্ব যাত্রা নিয়ে কথা আছে, দু’জনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা আছে, প্রতিবেশীদের সামাজিক অনুষ্ঠান নিয়ে কথা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী আছে ট্রাইবুনাল নিয়ে কথা। খুবই স্বাভাবিক, তারা আইনের লোক, চলমান বিচার প্রক্রিয়ার সাথে একজন জড়িত আছেন কাজেই সেটি নিয়েই বেশিরিভাগ আলোচনা হবে এটিই স্বাভাবিক। আব্দুর রাজ্জাক কিংবা তাজুল ইসলাম নিশ্চয়ই তাদের বন্ধুদের সাথে পদ্মার পানি শুকিয়ে যাওয়া কিংবা শ্রীমঙ্গলের বৃষ্টিপাত নিয়ে ঘরোয়া আলোচনা করেন না।

তৃতীয়ত, আমারদেশে যা এসেছে সেটি দু’জনের কথোপকথনের একটি অংশ। আমরা জানি না এই যে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির জাল এট কতদূর বিস্তৃত। একজন সম্মানিত বিচারপতির ব্যক্তিগত আলাপচারিতার গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়েছে, বেআইনীভাবে। যেহেতু ট্রাইবুনালের বিচারকের উপরেই সাক্ষীদের সুরক্ষার চূড়ান্ত বর্তায় যেহেতু এই পরিস্থিতিতে সাক্ষীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কতখানি সুরক্ষিত রয়েছে সেটিই এখন প্রশ্নের মুখোমুখি। বরং, এই প্রশ্ন করা যেতে পারে, সাক্ষীদের ব্যক্তিগত তথ্য এভাবে বেআইনীভাবে সংগ্রহ করে সেটি যে তাদের বিরুদ্ধের ব্যবহার করা হয়নি তার নিশ্চয়তা কী? একের পর এক সাক্ষীরা যে আদালতে হাজির হতে সংশয় প্রকাশ করেছে, এসবের পেছনে এই ধরণের কোন ষড়যন্ত্র থাকার সম্ভাবনা চলমান পরিস্থিতিতে বাদ দেয়া যাচ্ছে না একেবারে। এই বিষয়টি নিয়েই বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

চতুর্থত, প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া গেছে তারা একটা রায় চায়। খুবই স্বাভাবিক এক একটি ব্যাপার। প্ররথিবীর ইতিহাসে এরকম বিচারের ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি, বাংলাদেশে ঘটছে। রায়ের ব্যাপারে দেশের মানুষ দারুণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। এর পেছনে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, লোকবল ব্যয় হচ্ছে। সেটি নিয়ে সরকারের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের চিন্তা থাকাই স্বাভাবিক।

পঞ্চমত, আমরা জেনেছি ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে নিজামুল হক নাসিমকে ফোন করে এই রেকর্ডের কথা প্রথম জানানো হয়। এর পর ট্রাইবুনাল-১ যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ এনে তার কারণ জানাতে নোটিশ দেয় ইকোনমিস্টকে। এছাড়াও বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রীতিবিরুদ্ধ ও তা বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মত দিয়ে নিজামুল হক ইকোনমিস্ট কর্তৃপক্ষকে ওই কথোপকথন প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন। তাহলে এই কথোপকথন আমার দেশ পেল কী করে? এই সুস্পষ্টভাবে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন।

এবার ইকোনমিস্টের দিকে চোখ দেই। এটি মূলত কোন প্রতিবেদন নয়, একটি ব্লগ । যাই হোক, এখানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন এই কথোপকথনের কথা ৬ তারিখের আগে বিচারপতি জানালেন না। টেলিফোনে অন্য কারো সাথে কথা বলার কথা বিচারপতি বলেননি। এটি খুব হাস্যকর প্রশ্ন।প্রথমত, বিচারপতি কাউকেই কিছু বলতে বাধ্য নন, ইকোনমিস্ট অথবা ব্লগার বেনিয়ান এমন কোন অথরিটি নয় যার কাছে তাকে মুখ খুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, একজন বিচারপতি পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষকে ডেকে ডেকে বলবেন জীবনে কবে কার সাথে কী বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন – এটা বাড়াবাড়ি ধরণের অতিকল্পনা। তৃতীয়ত, যেখানে স্পষ্টত একটি বেআইনী উপায়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপতা বিঘ্নিত করা হয়েছে সেখানে নিজের নিরাপত্তাকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে তিনি কেন এটি নিয়ে কথা বলতে যাবেন? এবং চতুর্থত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে তাকে যেভাবে ফোন করা হয়েছে সেই প্রক্রিয়াটিই বেআইনী।

দেখা যাক বাংলাদেশের আইন এই ব্যাপারে কী বলে। ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে এই ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কয়েকটি ব্যাপার বলা আছে। আইনের কম্পিউটার সিস্টেমের হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও তার দণ্ড সম্পর্কিত ৫৬(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-

কোন ব্যক্তি যদি-

(ক) জনসাধারণের বা কোন ব্যক্তির ক্ষতি করিবার উদ্দেশ্যে বা ক্ষতি হইবে মর্মে জ্ঞাত হওয়া সত্ত্বেও এমন কোন কার্য করেন যাহার ফলে কোন কম্পিউটার রিসোর্সের কোন তথ্য বিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায় বা অন্য কোনভাবে উহাকে তগতিগ্রস্ত্ম করে;

(খ) এমন কোন কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে ইহার তগতিসাধন করেন, যাহাতে তিনি মালিক বা দখলকার নহেন;

তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি হ্যাকিং অপরাধ৷

আরো দেখতে পাই সংরক্ষিত সিস্টেমে প্রবেশ সংক্রান্ত অপরাধ তার দণ্ড সম্পর্কিত ৬১(১) অনুচ্ছেদে,

নিয়ন্ত্রক, সরকারী বা ঐচ্ছিকভাবে ইলেক্ট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে একটি সংরতিগত সিস্টেম হিসাবে ঘোষণা করা সত্ত্বেও যদি কোন ব্যক্তি উক্ত সংরক্ষিত কম্পিউটার, সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করেন, তাহা হইলে তাহার এই অননুমোদিত প্রবেশ হইবে একটি অপরাধ৷

এবং গোপনীয়তা প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও তার দণ্ড সংক্রান্ত ৬৩(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,

এই আইন বা আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে ভিন্নরূপ কোন কিছু না থাকিলে, কোন ব্যক্তি যদি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের কোন বিধানের অধীন কোন ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড, বই, রেজিস্টার, পত্রযোগাযোগ, তথ্য, দলিল বা অন্য কোন বিষয়বস্তুতে প্রবেশাধিকারপ্রাপ্ত হইয়া, সংশিস্্নষ্ট ব্যক্তির সম্মতি ব্যতিরেকে, কোন ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড, বই, রেজিস্টার, পত্রযোগাযোগ, তথ্য, দলিল বা অন্য কোন বিষয়বস্তু অন্য কোন ব্যক্তির নিকট প্রকাশ করেন, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ৷

বস্তুত ইকোনমিস্ট এবং আমার দেশ উভয়ই গুরুতর ধরণের একটি অপরাধ সংঘটিত করেছে।

এবার দেখা যাক, পূর্বোক্ত স্কাইপ কথোপকথনের ট্রান্সক্রিপ্ট থেকে আমরা আসলে কী দেখতে পাই।

১) সরকারের তরফ থেকে রায়ের ব্যাপারে তাগাদা দেয়া হয়েছে। দেশের জনগণও দ্রুত রায় চায়, গত কয়েকমাসের পত্র-পত্রিকা দেখলে সেটি পরিস্কার হবে। কাজেই সরকারও জনমতের সাথে মিল রেখে ব্যাপারটি দীর্ঘসূত্রিতার প্যাঁচে না ফেলে দ্রুত শেষ করতে। এটি আসলে বিচার কার্য শেষ করার প্রশ্নে সরকারের আন্তরিকতাই প্রকাশ করে।

২) আহমেদ জিয়াউদ্দিন এবং নিজামুল হক নাসিম দুইজনেই চাইছেন সরকারের তাগাদা অনুযায়ী তাড়াহুড়ো না করে একটু সময় নিয়েই কাজ শেষ করতে।

৩) বাংলাদেশের মানুষ শুধু একটি রায় শুনতে চাইলেও আইনী বিচারে তা যথেষ্ট না। এই ব্যাপারে বারবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন বিস্তারিত রায় দেওয়া হয়, এবং বিচারকও সেই প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

৪) বাংলাদেশে বিচারক ও বিচারপ্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই অযাচিত হস্তক্ষেপ করে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করা হচ্ছে আদালত কতটুকু পর্যন্ত জড়িত হতে পারেন।

৫) পরামর্শদাতার কাছ থেকে কোনো ‘রায়’ দেওয়া হচ্ছে না, শুধু রায় লেখার একটি সর্বজনস্বীকৃত কাঠামো সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।

এর মধ্যে আপত্তিকর অংশটি ঠিক কোনটুকু?

সবশেষে আমরা এই সিদ্ধান্তেই আসতে পারি, খুব বড় ধরণের একটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছে এই বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কতখানি মরিয়া। এখানে আরো একটি সম্ভাবনা উঁকি দিয়ে যায় আমাদের মনে। ইকোনমিস্টের কাছ থেকে আমার দেশ কীভাবে এই আলোচনার ট্রান্সক্রিপ্ট পেল? তাহলে কী মূল কারিগর আমার দেশ? তারাই এই সব তথ্য বেআইনীভাবে সংগ্রহ করে ইকোনমিস্টের কাছে পাচার করেছে?

আমরা যারা ইতিহাসের এই জঘন্য গণহত্যার বিচার চাই, তারা জোর গলায় এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই ট্রাইবুনাল বিরোধী সব ধরণের ষড়যন্ত্র সমূলে উৎপাটন করা হোক। দেশে বিদেশে ট্রাইবুনাল বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারণা চলছে তার উপযুক্ত জবাব দিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করি আবারও। বিচারক, সাক্ষী সহ এইবিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত প্রত্যেকের সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

এবং, বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা ট্রাইবুনালের পাশে থাকুন। ভয় পাবেন না, বিভ্রান্তও হবেন না। আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে। তার যা দরকার তা হলো আপনার সহযোগিতা। আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।

মূল লেখক: প্রীতম
প্রথম-প্রকাশ: আমারব্লগ.কম

পোস্টটি ১০ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মীর's picture


ভালো পোস্ট। স্টিকি করা হোক। লোকজনের বিষয়টার ব্যপারে জানা থাকা দরকার।

তানবীরা's picture


বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা ট্রাইবুনালের পাশে থাকুন। ভয় পাবেন না, বিভ্রান্তও হবেন না। আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে। তার যা দরকার তা হলো আপনার সহযোগিতা। আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।

পাশে আছি এবং থাকবো

এ টি এম কাদের's picture


১] আমি লুকোচুরির ধার ধারিনা , কোনো বিশেষ আদালতেরও না । আমি চাই আমার '৭১ এর "গান"টি আমাকে ফিরিয়ে দে'য়া হোক । '৭১ এ যা পারিনি, আমি ১০০% নিশচিত এখন তা পারব ।

সাঈদ's picture


সকল ষড়যন্ত্র ব্যার্থ করে ট্রাইবুনাল এগিয়ে যাক । এই কামনা রইলো।

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


জামাতের অভিযোগের পরের দিন পদত্যাগটা ভাল লাগলো না।

নিভৃত স্বপ্নচারী's picture


আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।

জয় হবেই।

শাশ্বত স্বপন's picture


বিশ্বজিৎ এর খুনীদের পূবুসূরীরা আগেও ছিল, এখন আছে, তারা চাপাতি দিয়ে কোপানোর মানুষ পায় না!!!!!!!

আরে ভাই, লীগ সরকারকে বলুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে, তাহলে বিএনপির আন্দোলনের স্রোত ৯০% থেমে যাবে। তারপর জগন্মাথের সাকিল, নাহিদদের শিবিরের মিছিলে ছেড়ে দেন, কয়খানা বাল ছিড়তে পারে, দেখি!!

রাজাকার কুত্তাবাচ্চাদের নিয়ে এ সরকার রাজনীতি করছে, ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যবসা করছে।

স্কাইপিতে বিচারপতি কতদিন, কত শত ঘন্টা আলাপ করেছে ?!! অযোগ্য বিচারপতি...। শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন--এদের সাথে কথা বলুন, দেখবেন, সরকার কি করছে ?

টুটুল's picture


আপনে আসলে কি কইতে চাইলেন? ঠিক বুঝলামনা

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম's picture

নিজের সম্পর্কে

১৯৭১ এ সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নিরসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, কর্মী এবং সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠা। এই সব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে দালিলিক, আর্কাইভ এবং গবেষণা সহায়তা প্রদান করা ছাড়াও ট্রাইবুনালের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দফতরসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মতামত এবং পরামর্শ বিনিময়, এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের অংশ। আইসিএসএফ এর কার্যক্রম, এর প্রকল্পসমূহ, এর সাংগঠনিক ইউনিটসমূহ এবং সাংগঠনিক নীতিমালাসমূহ সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসুন: http://icsforum.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

icsf'র সাম্প্রতিক লেখা