একটি বাংলাদেশ
অনেকদিন ধরে ব্লগ লিখি না, লেখা আসে না। নানা আইডিয়া মাথার মধ্যে গিজ গিজ করছে...কিন্তু লিখতে পারিনা। লিখতে বসলেই রাজ্যর ক্লান্তি এসে ভর করে, কী-বোর্ডে আঙ্গুল চলে না। অল্পতেই ধৈর্য হারাই। জানিনা এমন কেন হচ্ছে ! কিছুদিন কম্পু থেকে দুরে ছিলাম, এই জন্যই কি এমন হচ্ছে ! কে জানে !
আজ অনেকটা ধনু ভাঙ্গা পণ করে কম্পুতে বসেছি, এলেবেলে যাই মনে আসে, লিখবো। অন্তত একটা কিছু না লিখে আজ আর উঠছি না।
নিজের দেশে বিশ্বকাপ হচ্ছে। চারিদিকে উৎসবের আমেজ। রাজধানী ঢাকাকে নববধূর মতো সাজানো হয়েছে। আমরা জানি বধূটি মোটেও সুন্দরী নয়, কসমেটিক পলিশের মাধ্যমে তার কুশ্রী অঙ্গে কৃত্রিম সৌন্দর্যের প্রলেপ দেয়া হয়েছে। তবুও তাকে দেখতে সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে রাতের ঢাকা এখন যেন এক যৌবনবতী তরুণী, যার শরীরের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে রহস্যময় সৌন্দর্য আর অনাবিল আকর্ষন।
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট হচ্ছে । সে বিশ্বকাপে এবার বাংলাদেশ খেলছে অন্যরকম মর্যাদা নিয়ে। বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এখন আর মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়। আমাদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরার দিস শেষ। আমাদের ছেলেরা এখন জয়ের জন্য মাঠে নামে। নিজেদের দিনে যে কোন প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার ক্ষমতা রাখে । তাই আমাদের ক্রিকেট দলকে ঘিরে দেশবাসীর অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা। ক্রিকেট এখন আমাদের জাতীয় মর্যাদার অন্যতম প্রতীক।
ক্রিকেটকে ঘিরে সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে অন্যরকম আবেগ। দেশপ্রেমের চেতনায় যেন উদ্বেলিত সবাই, সৃষ্টি হয়েছে এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ। গড়ে উঠেছে সুকঠিন এক জাতীয় ঐক্য। আহা এই ঐক্য যদি দেশের সকল সম্ভাবনায় কাজে লাগানো যেত ! কিন্তু যারা এই জাতীয় ঐকমত্যের শক্তিকে কাজে লাগাবে, সেই রাজনীতিবিদেরাই বহুধা বিভক্ত।
আমাদের দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষও একসময় ভারত এবং পাকিস্তানকে ঘিরে দুই শিবিরে বিভক্ত ছিল। এই দুই দেশকে নিয়ে চলতো তর্ক-বিতর্ক, উঠতো চায়ের কাপে ঝড়। হায় এদেশের মাটিতে এক সময় পতপত করে উড়েছে পাক-ভারতের পতাকা। সেই দেউলিয়া যুগ শেষ হয়েছে, সেই সব গ্লানিময় দিন আর দৈন্য সময়ের অবসান ঘটেছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম আমাদের ক্রিকেট সমর্থনের সেই কালো অধ্যায়ের কথা জানেও না। তাদের সৌভাগ্য যে তারা বড় হয়েছে টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্ত এক গর্বিত জাতি হিসেবে। সত্যি ক্রিকেটের সুবাদে আমরা এখন গর্বিত এক জাতি। দেশপ্রেমের শানিত চেতনায় আমরা এখন অনেক বেশী উদ্দীপ্ত।
স্বাধীনতার শুরু থেকেই জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে কোন সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেনি। আমাদের রাজনীতিকরা বিভিন্ন ইস্যুতে জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। বৃটিশ দের সেই ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ পলিসি এখনো এদেশে বিদ্যমান। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি দু:শাসনের জন্য সবচে বড় হুমকি। অতএব জাতিকে যত পারো বিভক্ত করো এবং শাসন করো। এ হলো আমাদের রাজনীতিকদের মানসিকতা।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির গৌরবময় অধ্যায়ের পর আমাদের রাজনীতিকরা অহংকার করা যায়, এমন কোন অর্জনই জাতিকে উপহার দিতে পারেনি। বরং রাজনীতিবিদদের ক্ষমতার লোভ, দু:শাসন, দূর্নীতি আর ধ্বংসাত্মক রাজনীতি দেশকে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে, নষ্ট করেছে অনেক অমিত সম্ভাবনা। বর্তমানে দেশের যা কিছু অর্জন তার বেশীর ভাগই এসেছে ব্যক্তি উদ্যাগ থেকে। একজন ড: মোহাম্মদ ইউনুস নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তির মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মুখ অনেক উজ্জল করেছেন। অমিত তেজী যুবক মুসা ইব্রাহীম এভারেস্ট জয়ের মাধ্যমে গোটা জাতিকে নিয়ে গেছেন অন্যরকম এক গৌরবের উচ্চতায়। আর ক্রিকেট! ক্রিকেট আমাদেরকে যেমন হতাশায় ডুবিয়েছেন তেমনি আবার বারবার সাফল্যর আনন্দে ভাসিয়েছেন।
গত পরশুদিন ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সূচনা হলো। এই ম্যাচকে ঘিরে সবার মনে অন্যরকম এক প্রত্যাশা ছিল্। বিশেষ করে নতুন প্রজম্মের উৎসাহ ছিল সবচে বেশী।
আমার এগার বছর বয়সী কণ্যা অন্বেষা আর ছয় বৎসর বয়সী ভাতিজা তামিমের দৃঢ় ধারণা ছিল বাংলাদেশ জিতবে । সারাদিন ওদের মুখে শ্লোগান ছিল, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের রানের পাহাড় দেখেও ওরা এতটুকু ঘাবড়ে যায়নি। বিশেষ করে তামিম-জুনায়েদের উড়ন্ত সূচনা ওদের অনেক আস্থাশীল করে তোলে। সাকিব যতক্ষণ ক্রিজে ছিলো ততো ক্ষণ পর্যন্ত ওরা আশাবাদী ছিল বাংলাদেশই জিতবে। তাই পরাজয়ের পর এই কচি মুখগুলোর দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। শেষে আমি ওদের এই বলে সান্তনা দিয়েছি যে, ‘অবশ্যই বাংলাদেশ জিতবে, সামনে আমাদের আরো পাঁচটা খেলা আছে না !' আমরা হার দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। আর এ প্রজন্ম হারের পাশাপাশি বিজয় দেখতে দেখতে বড় হচ্ছে ভবিষ্যতে এই জাতিকে রুখে সাধ্য কার।
নানা সমস্যা-সংকটে জর্জরিত, রাজনৈতিক বিভেদ আর দ্বন্ধ-সংঘাতে অভ্যস্ত একটি জাতিকে আজ ঐক্যবদ্ধ করেছে ক্রিকেট, দেশপ্রেমের শাণিত চেতনায় জেগে উঠেছে যেন অন্যরকম একটি বাংলাদেশ। জয়তু ক্রিকেট।
অনেকদিন পরে ঈশানকে পোস্ট হাতে মাঠে নামতে দেখে ভালো লাগছে ।
]
[একবার রিভিশন দিয়ে টাইপোগুলো ঠিক করা যায় যদি, আরও ভালো হয় তবে।
নাজমুল ভাই, বানান এবং বাক্যগঠনের ব্যাপারে আমি যথেষ্ট সর্তক থাকি, তারপরও ভুল রয়েই যায়। রিভিশন দিয়ে যদ্দুর পেরেছি ঠিক করেছি।
"রাজধানী ঢাকাকে নববধূর মতো সাজানো হয়েছে। আমরা জানি বধূটি মোটেও সুন্দরী নয়, কসমেটিক পলিশের মাধ্যমে তার কুশ্রী অঙ্গে কৃত্রিম সৌন্দর্যের প্রলেপ দেয়া হয়েছে। তবুও তাক দেখতে সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে রাতের ঢাকা এখন যেন এক যৌবনবতী তরুণী, যার শরীরের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে রহস্যময় সৌন্দর্য আর অনাবিল আকর্ষন।"
আস্তাগফেরুল্লা!! (একটা ব্যাপক বনর্না চাই)
উদরাজী, তোমার শাহাবুদ্দিন-গুল বাহার কাহানীর আদলে এক খান কাব্য রচনা করিতেছি, সেইখানে তোমার জন্য 'ব্যাপক বর্ণনা' থাকিবে।
বাসায় এখন ১২০ টি চ্যানেল দেখা যায়! বেশীর ভাগ ইন্ডিয়ার! একটা চ্যানেল আছে "ইইউটিভি বিন্দাস" আমার (!) সাহাবুদ্দিন-গুলনাহার কে হার মানায়। নূতন নূতন আইডিয়া পাবে! লাভ লকাপ, ইমোশনাল অতত্যাচার নামক অনুষ্ঠান সমুহের আমি নিয়মিত দর্শক। এ বিষয়ে একটা পোষ্ট দিতে চাই। আমরা বন্ধুরা সইতে পারবে কি না বুঝতে পারছি না!
"রাজধানী ঢাকাকে নববধূর মতো সাজানো হয়েছে। আমরা জানি বধূটি মোটেও সুন্দরী নয়, কসমেটিক পলিশের মাধ্যমে তার কুশ্রী অঙ্গে কৃত্রিম সৌন্দর্যের প্রলেপ দেয়া হয়েছে। তবুও তাক দেখতে সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে রাতের ঢাকা এখন যেন এক যৌবনবতী তরুণী, যার শরীরের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে রহস্যময় সৌন্দর্য আর অনাবিল আকর্ষন।"
আস্তাগফেরুল্লা!! (একটা ব্যাপক বনর্না চাই)
জয়তু বাংলাদেশ
জয়তু ক্রিকেট।।
খাইছে
শুভ কামনা বাংলাদেশ দলের জন্য
শুভ কামনা বাংলাদেশ দলের জন্য
শুভ কামনা বাংলাদেশ' দলের জন্য

মন্তব্য করুন