সে আমাকে সহ্য করেছে, আমি তাকে সহ্য করেছি-দীর্ঘ বারোটি বছর।
দিনটি ছিল ১৯৯৯’এর ১২ মার্চ । তার আর আমার জীবনের সবচে স্মরণীয় দিন (নাকি ধরা খাওয়ার দিন !)। আজ থেকে একযুগ আগে ঠিক এই দিনটিতে আমরা একে অন্যের হাত ধরেছিলাম, জীবনের পথে একসঙ্গে হাঁটবো বলে (মাঝে মাঝে ঝগড়া করবো বলে !), জীবন সঙ্গী (নাকি জীবন যন্ত্রণা !)হবো বলে । শপথ নিয়েছিলাম সারাজীবন পাশাপাশি থাকবো (মাঝে মাঝে ঘর পালাই, সেও রাগ করে বাপের বাড়ি যায়)। তারপর... দেখতে দেখতে বারটি বছর । এই দীর্ঘ সময় আমরা একই ছাদের নিচে বাস করেছি (না করে উপায় নাই), একে অন্যকে সহ্য করেছি, ভালোবেসেছি, ঝগড়া করেছি (পাড়া প্রতিবেশী সাক্ষী), সুখ-দু:খ শেয়ার করেছি, একে অন্যের নি:শ্বাসের ব্যবধানে থেকে রচনা করেছি কতো আনন্দ-বেদনার কাব্য; নির্মাণ করেছি কত স্মৃতি, যাপন করেছি একটি টক-ঝাল-মিষ্টি (এবং তিতা) দাম্পত্য জীবন।
হাঁ বন্ধুরা, আজ আমাদের বিবাহের একযুগ পূর্তি হলো । মুনি-ঋষিরা বলে গেছেন, মানুষ চিনতে নাকি বারো বছর লাগে (একদম মিছা কথা, টাইম আরো বেশী লাগে ) । কিন্তু দীর্ঘ বার বছরের যাপিত জীবনে আমি তাকে কতটুকু চিনেছি জানিনা, তবে এটুকুই বলতে পারি, তাকে ছাড়া, তার সান্নিধ্য ছাড়া আমার একদিনও চলবে না (এইটা সত্য কথা )। সে আমার স্বপ্নদ্রষ্টা, সে আমার সুখ দু:খের সঙ্গী (ঝগড়ার সাথীও), আমার সকল কাজের প্রেরণা (তার প্রেরণায় (আসলে চাপে) সিগারেট ছাড়তে হইছিল ) , সে আমার ভালোবাসা । আবার সে আমার প্রথম সমালোচক (নাকি নিন্দুক ) । আমার প্রতিটি ভুল পদক্ষেপ সে দেখিয়ে দেয় (চোখে আঙুল দিয়ে) । আমার প্রতিটি অসংযত আচরণ সহ্য করে পরম ধৈর্য আর সহনশীলতা নিয়ে। আমি প্রায়ই তার যুক্তির কাছে (প্যাঁচের কাছে ) হেরে যাই, তার ভালোবাসার কাছে অবনত হই, তার আচরণের কাছে বিনম্র হই। তবে পাশাপাশি এটাও সত্য যে মাঝে মাঝে তাকে আমার অসহ্য লাগে (একদম খাঁটি কথা )। তার একরোখা (স্বৈরাচারী ) মনোভাব, তুখোড় খবরদারিতে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায়ই ভাবি, আমার স্বাধীনতা বুঝি তার হাতে বন্দী ! কিন্তু তার পরও আমি প্রতি পলে পলে তার ভালোবাসা অনুভব করি। আমার সামান্য অসুস্থতায় তার গভীর উৎকণ্ঠা আমাকে যার পর নাই তৃপ্তি দেয় । নিজের সৌভাগ্য দেখে মাঝে মাঝে নিজেরই ঈর্ষা হয় আমার (নিজের পিঠ নিজেরই চাপড়াইয়া দিতে ইচ্ছা করে) । তাই যতদিন বাঁচি, তার পাশেই থাকতে চাই (আর কই যামু !), তাকে নিয়েই শেষ করতে চাই সকল পথ চলা ( সে ছাড়া ঝগড়া করমু কার লগে )। আমি পরজনমে বিশ্বাসী নই, তবুও পরজনম বলে যদি সত্যিই কিছু থাকে, সে জনমেও জীবন সঙ্গী হিসেবে শুধু তাকেই চাই (তার লগে কাঁঠালের আঠার মতো লাইগা থাকতে চাই )।
আজকের এই আনন্দ দিনে তার জন্য লেখা একটি কবিতা ।
আমি চাঁদের কাছ থেকে এক গ্লাস জোছনা নিয়ে
দিলাম তোমার হাতে
তুমি জোছনা পান করে অভিমান ভেঙ্গে
চলো আমার সাথে
আমি পথের ধার থেকে একটি বুনো ফুল নিয়ে
গুঁজে দিলাম তোমার খোঁপায়
তুমি স্বপ্নিল আবেশে আমার গা ঘেঁষে
হাঁটো একটু মৃদু পায়
এসো দুজনে মিলে ভালোবাসার সেতু গড়ি আজ রাতে
আমি রাতের কাছ থেকে একটু নীরবতা নিয়ে
তোমাকে দিলাম
তোমার হাত দুটো আমার হাতের মুঠোয়
তুলে নিলাম
তুমি অপলক দৃষ্টিতে আমার চোখে
একটু তাকিয়ে থাকো
স্বপ্নের তুলি দিয়ে চোখের আকাশে
একটি ছবি আঁকো
চেয়ে দেখ ঐ গাছের পাতায় দক্ষিণা বাতাস মাতে
আমি বৃষ্টির কাছ থেকে এক পশলা জল নিয়ে
ভিজিয়ে দিলাম তোমাকে
ভালোবাসার সেই বৃষ্টিতে ভিজে একটু না হয়
জড়িয়ে ধরো আমাকে
আমি বুকের গভীর থেকে এক মুঠো প্রেম নিয়ে
তোমার হৃদয়ে দিলাম মেখে
হারিয়ে যেও না কখনো পথের মোড়ে
আমাকে একা রেখে
খান খান হয়ে যাবো আমি সেই বিরহের আঘাতে
আমি চাঁদের কাছ থেকে এক গ্লাস জোছনা নিয়ে
দিলাম তোমার হাতে
তুমি জোছনা পান করে অভিমান ভেঙ্গে
চলো আমার সাথে//
বন্ধুরা, আমাদের দাম্পত্য জীবনের কিছু আনন্দ মুহূর্ত বা সুন্দর স্মৃতি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।
আমার পরিবার: আমার ঠিকানা বিয়ের পর পাশাপাশি আমরা দুজন । আমার বাসায় নববধু রিনা।মধু চন্দ্রিমায় কক্সবাজার। মধু চন্দ্রিমায়।মধু চন্দ্রিমায় আমরা দুজন।আজ থেকে বারটি বছর, সে আর আমি যখন কিশোরী-কিশোর।আমার ক্যামেরায় রিনা।রিনা।আমার মেয়ের বয়স যখন এক ।আমাদের দুজনের সাম্প্রতিক ছবি।আমরা দুজন এবং আমাদের একমাত্র মেয়ে অন্বেষাঅন্বেষা ।অন্বেষা ।আমি এবং সে ।আমার পরিবার।
শুভেচ্ছা, শুভেচ্ছা, শতবার ফিরে আসুক এ সুখের দিন।
অনেক ধন্যবাদ নাজমুল ভাই।
শুভেচ্ছা রাশি রাশি.।.।.।.।।
ভাবীকে এই লেখা পড়ানোর ব্যবস্থা কি
শুভেচ্ছা অনেকনেক।
সত্য কথনে না ডরে বীর (তোমার ভাবী আবার শুইনা ফালাইলো নাতো !) ।
সত্য কথনে না ডরে বীর (তোমার ভাবী আবার শুইনা ফালাইলো নাতো !) ।
অভিনন্দন, শুভেচ্ছা, শুভকামনা। সদা সুখে থাকেন।
জয়িতা আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। সরি, জবাব দিতে দেরী হয়ে গেল। আমার পিসি থেকে ইদানীং আমি 'আমরা বন্ধু'তে লগ ইন করতে পারছি না। আজ অনেকক্ষণ ধৈর্যের পরীক্ষা দেয়ার পর অবশেষে ঢুকতে পারলাম।
অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। "মুনি-ঋষিরা বলে গেছেন, মানুষ চিনতে নাকি বারো বছর লাগে (একদম মিছা কথা, টাইম আরো বেশী লাগে )।" আমি মনে করি বিবাহিতরা (নারী ও পুরুষ উভয়কে বলছি) প্রত্যকেই একেকজন মুনি-ঋষিরা!
বন্ধু, ছবির পরিমান একটু বেশী হয়েছে। বিবাহের টক-ঝাল-মিষ্টি কথা একটু কম হয়েছে!
বাসর রাতে কি করলা? ঘর ছেড়ে কবে পালিয়েছিলা? সবচেয়ে কোন ক্ষুদ্র ঘটনায় এসব ঘটনা জানলে, নিজের সাথে একটু মিলিয়ে দেখতে পারতাম!
কিছুদিন আগে আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক ও লক্ষী ভাবী তাদের বিবাহের ৫০তম বার্ষিকী পালন করছেন বলে পত্রিকাতে দেখলাম। তোমার জন্য দোয়া করি যেন ১০০তম বার্ষিকী পালন করতে পার!
সুখে থাক। মেয়েটার লেখাপড়ায় ও খেলাধুলায় আশাকরি আরো আরো আরো অধিক অধিক মনোযোগী হবে। সর্বোপরী একজন আদর্শ স্বামী হতে চেষ্টা করে যাও! শুভকামনা।
আমার ১২তম দিনের কথা মনে রাখতে পারি নাই বলে যা হয়েছিল তা নিয়েই একটা পোষ্ট লিখে ফেলা যায়! আমি ১৩তম বছরে আছি! সিনিয়র, দেখলে দূর থকে সালাম দিবে!
কাছে আসতে মানা !
তুমি সাধারনত 'চুপচাপ' পইড়া যাওয়া পাবলিক, যাক আমার পোস্টে সময় নষ্ট কইরা দীর্ঘ কমেন্ট দিছ, সেজন্য তোমারে ধইন্যা। লেখায় টক-ঝাল-মিষ্টি একটু তম হইছে, কথা সত্য। কি করমু ! তোমার মতো গুছাইয়া লেখতে পারিনা, তা ছাড়া 'সেন্সরশিপ'র কারনে সব কথা কইতেও পারিনাই । বাসর রাইতে মানুষ কি করে, আমার চেয়েও তুমি ভালো জানো, কারন তুমি আবার এই বিষয়ে আমার একবছরের 'সিনিয়র'। তবে 'ঘর পালানো'র একটি কাহানী তোমাদের শুনানোর ইচ্ছা থাকলো, আমরা ভালো আছি, তুমিও ভালো থাইকো।
আপনাকে শুভেচ্ছা, ভাবীকে সমবেদনা। জীবন আরও সুন্দর হোক
মাসুম ভাই, সমবেদনার অর্ধেকটা আমার প্রাপ্য। আপনি সিনিয়র পারসন, আপনার কাছে এমন পক্ষপাতিত্ব আশা করি নাই। যাক, শুভ কামনার জন্য ধইন্যা।
শুভ কামনা ও শুভেচ্ছা
আপনাকে শুভেচ্ছা, জীবন আরও সুন্দর হোক
অনেক অনেক অনেক শুভকামনা, এরকম কয়েক যুগ পার হোক দুজনের এক সাথে । ভালো থাকবেন
আমি দেরিতে একদিন পার হয়ে প্রায় দুই ঘন্টা
শুভ বিয়েদিন ভাইয়া
লিজা, আপনার আন্তরিক শুভকামনায় অভিভূত হলাম...অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আল্লাহ সহ্য শক্তি আরো বাড়াক, সেই শুভ কামনা
অভিনন্দন
দোয়াটা একপক্ষীয় হইলো। আমার সহ্যশক্তি বাড়লেই হইবো, তারও ধৈর্যশক্তি বাড়তে হইবো। আপনাকেও অনেক...
অনেক অনেক শুভ কামনা বস
ভাল থাইকেন... ভাল কাটুক
ঢাকায় ছিলাম্না... তাই একটু দিরং হইল... সরি
অনেক অনেক শুভকামনা আপনাদের জন্যে... ভালো থাইকেন...
দেরি হইছে তো কি... শুভেচ্ছা, শুভকামনার সময় কখনো পার হয়ে যায় না...
একদম খাঁটি কথা বলেছেন জেবিন, বরং আমারই জবাব দিতে দেরী হলো, সরি। ভালো থাকবেন।
লেখা অতি উপাদেয় হইছে!
ভাবী ও আপনার জন্য যুগপৎ শুভেচ্ছা ও সমবেদনা!
শুভেচ্ছা সানন্দে গৃহীত হলো, কিন্তু সমবেদনা ????
অনেক অনেক শুভেচ্ছা!
দেরী হওয়ার জন্য দুঃখিত। "কথা না বলা" রোগে ধরছিলো
অনেক শুভকামনা রইল
মন্তব্য করুন