সুন্দরবন ভ্রমন ২০১৩ (পর্ব ২)
বাংলাদেশের দক্ষিনপ্রান্ত থেকে ভারত পর্যন্ত চলে যাওয়া বিস্তীর্ন সুন্দরবনের বেশিরভাগই ম্যানগ্রোভ বন দ্বারাই পরিপূর্ন। পঞ্চাশ প্রজাতির ম্যানগ্রোভের মাঝে সাতাশ প্রজাতির দেখা মেলে সুন্দরবনে। জীববৈচিত্রের অপার সম্ভার এই বনকে ইউনেস্কো ১৯৮৭ সালে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছে। অতুলনীয় সৌন্দর্য্যময় ল্যান্ডস্কেপ ছাড়াও এখানে রয়েছে অসংখ্য বন্যপ্রানীর সমাগম। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানান প্রজাতির হরিণ, কুমির, বানর, সাপ এবং প্রায় দু’আড়াই’শ প্রজাতির পাখি দেখার আশায় সুন্দরবন ভ্রমনে আসেন।
বলা হয়ে থাকে, বর্ষা মৌসুম এড়িয়ে যেকোন সময়ই সুন্দরবন ভ্রমনের জন্যে উপযুক্ত। বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর যা কিনা মূলত বর্ষা মৌসুম চলে। বোধকরি আমাদের ট্যুরটা হলো সবচেয়ে উপযুক্ত সময়ে, গরমের শেষ, শীত এই এলো বলে, হালকা ঠান্ডার আমেজ পুরোই উপভোগ্য কাল।সুন্দরবন ভ্রমনের ট্যুরগুলোর ব্যাপ্তী সাধারনত তিন/চার দিনের হয়ে থাকে। দিনের বেলা সুন্দরবনের ধার ঘেষে চলতে থাকে ভ্রমনকারীরা আর রাতে লঞ্চগুলো বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট স্থানে নোঙ্গর ফেলে যাত্রাবিরতি দেয়া হয়ে থাকে। দিনের চলার মূল আকর্ষন থাকে সুনির্দিষ্ট নির্জলা পথে পায় হেটে চলা, যাতে আশেপাশের শুনশান প্রকৃতির মাঝ দিয়ে চলতে চলতে অন্যান্য বন্যপ্রানী দেখার সাথে মনে থাকে অধরা-অদেখা রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখার বাসনা।
সুন্দরবন ভ্রমণে বন্যপ্রানীর দেখা পাওয়া কঠিন কিছু নয়। তবে ভ্রমন শুরুর আগেই আয়োজকরা কিছু নিয়মকানুন জানিয়েছিলেন সেসব মেনে চললে এখানে অনেক প্রানীর দেখা পাওয়া সম্ভব। দলবেধেঁ পথ চলা, বনে হাটাঁর সময় অহেতুক উচ্চস্বরে কথা না বলে সর্বোচ্চ নিরবতা পালন করা, গাইডের নির্দেশনা মানা, কেউ কোনো বন্যপ্রানী দেখলে চিৎকার না করে অন্যকে ইশারায় জানানো, নিজনিজ পানির বোতল সাথে নেয়া, বনে আবর্জনা না ফেলা – এমনি কিছু সহজ নিয়ম। সুন্দরবনের নাকি জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ –তাই সুন্দরবনের খালে নামা নাকি বিপজ্জনক, কিন্তু তটে রোদ পোহানো বন্য কুমিরের দেখা আমাদের মিলেনি। করমজলের কুমিরের খামারেই যা কিছু কুমির দেখতে পেলাম যার সাথে আমাদের চিড়িয়াখানার কুমিরের বিন্দুমাত্র অমিল নেই!
আয়োজকরা জানিয়েছিলেন যে, সুন্দরবন ভ্রমণে কিছু জিনিসপত্র সঙ্গে নিলে ভ্রমণটি বেশি উপভোগ্য হবে। দুরবীন,ক্যামেরা,নিজনিজ ফোন/ক্যামেরার চার্জার, পর্যাপ্ত মেমোরি কার্ড, হাটার সময় শ্বাসমূলের কারনে পায়ে আঘাত যেন না লাগে তাই স্পোর্টস সু, সানব্লক ক্রিম, সানগ্লাস, বড়টুপি, টর্চ, মশা নিরোধক ক্রিম,প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, ইত্যাদি। ভ্রমনকারীরা আরো কত কি যে নিয়েছেন –ল্যাপটপ, আইপ্যাড, আরো কতকি!
১৩তারিখ ভোরে খুলনা পৌঁছে সুন্দরবন যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও পরিস্থিতির কারনে আমাদের ভ্রমনসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়। বাস জার্নিতে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত সবাই লঞ্চে উঠে নিজনিজ রুমের দখল বুঝে নিয়ে চারপাশ ঘুরেফিরে দেখতে লেগে গেলাম। কেবল ঝকঝকেই নয় লঞ্চটা বেশ সুযোগ-সুবিধাপূর্নও। উপরের তলা ছাউনি দেয়া খোলা ডেক আড্ডা আর খাবারের জন্যে, এরপরের তলা ২জনের রুম সামনে টানা খোলা বারান্দা, সারেং এর ঘরের সামনে সোফা পাতা যাতে যে কেউ প্রানভরে একদম সম্মুখে বসে থেকে এগিয়ে আসা চারিপাশ দেখতে পাবে আর একদম নীচতলা ফ্যামিলি রুম ডাবলবেড এটাচড বাথসহ এই রুমগুলো জানালা খুলতেই পাওয়া যায় চওড়া কার্নিশ যাকে অনায়াসেই বারান্দা হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়। আয়োজকদের কল্যানেই জায়গা পেয়েছিলাম নীচতলার রুমে, রুমমেট স্কুলের বান্ধবী। দিনভর ঘুরাফেরা, সবার সাথে আড্ডার পর এসে দু’জনে মিলে রাত পার করে টুকটুক করে কথাবলা, সময়গুলোই কেটেছে দারুন রকমের।
বিকেল পার করে দুপুরের খাবার খেয়ে এরওর সাথে পরিচয় শেষে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যা গড়ালো। হু হু করে চারিপাশে বাতাস বইছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে যেন ছুটে চলছে লঞ্চ! সাধারনত রাতে লঞ্চ থামিয়ে রাখা হলেও আমাদের পালটে যাওয়া সময়সূচির কারনে আজ রাতভর লঞ্চ চলবে কটকা’র উদ্দেশ্যে। রাতের খাবারের সময় সবাইকে বলে দেয়া হলো যেন, পরদিন ভোর ৫টায় তৈরী থাকে জামতলায় যাবার জন্যে।
নতুন কোথাও ঘুম আসতে একটু সময়ই লাগে যে কারুরই, তাই দু’জন মিলে গল্প করে পাশেরজন ঘুমিয়ে পড়ার পরও দেখি আমার চোখে ঘুম আসে না। বিছানা লাগোয়া জানালা দিয়ে চাদেঁর আধো আলো, আধো আধাঁরে পানির উপর আমাদের বয়ে চলা দেখতে দেখতে দেখতে চোখ বুজেঁ এসেছিল, কেন যেন ঘুম ভেঙ্গে পাশ ফিরে বাইরে তাকাতেই চমকে উঠে দেখি জানালা ঘেষে হাত দিয়ে ছোয়াঁর দুরত্বে গাছের সারি! আজ রাতে তো কোথাও থামার কথা নয় তবে কেন দাঁড়িয়ে আছে আমাদের লঞ্চ এম.ভি.হাওয়ামনি!!
ফিলিং হিংসিত,
ইয়েট ফিলিং গুড ফর ইউ!
নয়া ফটুক দাও,
নাইলে কইষা মাইনাস!
ছবি তেমন তুলি নাই তো! অল্পসল্প দিবোই আর দেখি না যত কম পারি ছবি না দিয়ে লেখার মাধ্যমে ভ্রমনের আমেজটা ফুটায়ে তুলতে।
তা ঠিক!
তাইলে ফিফটি ফিফটি দিও!
সুপার ।
কেবল সুপার!! এইটা কি বললেন জনাব!
সাবাশ!
বেরেকটা সেরাম হয়েছে? চালিয়ে যান।
বেরেকটা ঠিক ঠিক হয়েচে বলচেন তো!! ডাইনে বামে প্লাস্টিক না থাকলে সুবিধা মতোন ঠিক চালিয়েই যাবোক্ষন দেখে নিয়েন!
লেখাটা পড়ে যাওয়ার জন্য লোভ হচ্ছে, কিন্তু উপায় নেই
আমারো এদ্দিন এমনি পড়ে পড়েই বুঝতে হতো, আল্লাহ'র রহমতে ভাল ভাবেই, কপাল ফেরে নিজেই ঘুরে আসতে পারলাম।
ধন্যবাদ পড়ার জন্যে
ফটু ছাড়া বেড়ানোর গপপো!!!!
আমার লেখার থেকে আপ্নে ফটু'রে মূল্য দিলেন জনাবা!!
মন্তব্য করুন