অল্পস্বল্প গল্পঃ হজ্ব ২০১৮
ধূসর- কালো-সাদা এমনি সব রঙের চঞ্চল কবুতরদের ঝাঁক দু'হাত মেলে ছুটে এসে উড়িয়ে দিতে দিতে খিলখিল করে হাসছিল শ্বেতশুভ্র পোশাকের মেয়েটা, সাদা পরীর মতোন লাগছিলো ওকে আর সেই মূহুর্তটাকে নীচু হয়ে বসে ফ্রেমবন্দি করায় ব্যস্ত ছিল সঙ্গী ছেলেটা। যদিও দূর থেকে মেয়েটার বাঁধভাঙা হাসি কানে পৌঁছাচ্ছিলো না, কিন্তু তাও খর-রোদতাপা কংক্রিট-বালুময় রুক্ষ ঐ পরিবেশের মাঝে এই সামান্য দৃশ্যটাও বেশ নজর কাড়লো। শ্রান্তক্লান্ত হয়ে হেঁটে ওদের পেরিয়ে আসতে আসতে ভাবছিলাম, এইদিকে এমন করে হাসতে দেখিনি কাউকে, আর এতোটা পরিপাটি সাজের মেয়েও চোখে পড়েনি। ঠিক তখনই মনে পড়ে গেলো, এরা নিশ্চয়ই স্থানীয় বাসিন্দা, আজ এদের সাজসজ্জাতো হবেই। কারন আজ তো এখানে ঈদ।
২০২০ঃ করোনা কালে হজ্বের তাওয়াফের ছবি। নেট কালেকটেড
কাবার এক্সটেনশন এরিয়ার পেছনদিকের কনস্ট্রাকশন চলতে থাকা একটা পথ দিয়ে প্রচন্ড ঘামে ভেজা অবস্থায় কাবা এরিয়াতে প্রবেশ করে নতুন লাগানো চোখ ধাঁধানো জৌলুসপূর্ন বিশালাকার সব ঝাড়বাতিগুলো দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, আল্লাহর কি অপার রহমতে নির্বিঘ্নে, কতো সহজেই হজ্বের মূল কাজগুলো সম্পন্ন করে ফেললাম!
হজ্ব নিয়ে সব হাজী'দের কতশত গল্প থাকে, নতুন একটা জায়গায় কতো কি করেন, দেখেন, শিখেন - সেসবের নানান রঙের গল্প কথায় কথায় চলে বহুদিন যাবত। জীবনের সেই দেড়মাসের গল্প জীবনভরই আলোড়িত করে যায় মনকে, তা সে আনন্দের কিবা পেরেশানির গল্পই হোক না কেন। সবকিছুতেই আল্লাহর অশেষ দয়ার চাদরমোড়া থাকে, ভালো কি মন্দলাগা আর সেটুকু মনে নিতে পারা যার যার দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়।
দেশের মধ্যে শুধু আব্বা-আম্মার সাথে বেড়াতে যাওয়া হয়নি এই জীবনে কোথাও। সেই একা বেড়ানো শুরু হলো মালয়শিয়া, অষ্ট্রেলিয়া যাওয়া দিয়ে, পরে হজ্ব করতে সৌদি আরব। ২০১৮ তে অবস্থাদৃষ্টে যা দাঁড়িয়েছিল মা-বাবাকে নিয়ে হজ্ব করতে এলো বাড়ির ছোটমেয়েটা! আল্লাহর অশেষ রহমত আর বোন-ভাইদের শক্ত ব্যাকআপ ছাড়া এটা সম্ভব হতোনা মোটেই।
হজ্ব সফরের সেই দিনগুলোতে নানান সমস্যার সম্মুখীন হলেও সহজেই অনেক অনেকের সাহায্যই পেয়ে এসেছি, সকলের প্রতিই অগুনিত কৃতজ্ঞতা যেটুকু পেরেছি সরাসরি জানিয়েছি, যেটুকু পারিনি আল্লাহর দরবারে পৌঁছে দিয়েছি। মানুষের প্রতি মানুষের সেসব কৃতজ্ঞতায় বাঁধা ভালোবাসার গল্প দিয়ে হজ্বের অল্পস্বল্প গল্পগুলো শুরু করবো।
যাক ব্লগে ফিরলা তাইলে
মন্তব্য করুন