সোনালি রোদের আশায়...
অভিযোগের পালা শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন অনুযোগ আর অনুশোচনার পালা, একা একা নীরবে, অশ্রুজল দিয়ে। কিছু দিন থেকে দিনগুলো বড্ড অসহ্য যাচ্ছে, কেমন যেন উল্টা পাল্টা। প্রিয় গান গুলো শুনতেও অসহ্য লাগে, সহ্য করতে কষ্ট হয়। কী হয়েছে বুঝা কঠিন। ফাল্গুন ত শেষ হয়েছে বহুদিন, চৈত্র ও গেল গেল। বসন্ত চলে যাচ্ছে তার নিয়ম বেধেই, অজস্র ফুল, রং, সৌরভ, কীট উপহার দিয়ে। সাথে কিছু ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার উপদ্রব ত রেখেই গেল। কিন্তু আফসোস মন ভাল করার কিছু পেলাম না। হতাশায় ডানায় ভর করে মাঝে মাঝে উড়াল দেই সুরের দুনিয়ায়। লতা মুঙ্গেশকরের গান গুলো আবারো প্লে লিস্টে জমা হচ্ছে। একেই হয়ত বলে ওস্তাদের খেলা শেষ রাতে। মাঝে মন দিয়েছিলাম আধুনিক শিল্পী নামক ভাইরাসদের দলে। বলা বাহুল্য, এদেশে সংগীত সাধনা হয় না কিন্তু সংগীত ব্যবসা ঠিকই হয়। তিন বছরের ক্যারিয়ার, লক্ষ্য ত্রিশ বছরের অর্থ উর্পাজন। এসব ভেবে লাভ আছে কি না তাও আপেক্ষিক বিষয়। তবে আমি যে বেঁচে আছি এটাই মুখ্য। কথায় আছে না, অতিকায় হস্তি লোপ পেয়েছে কিন্তু তেলাপোকা ঠিকিয়া আছে। অবস্থা অনেকটা এই রকমই। জীবন যাপন যেন তেলাপোকার মতই হচ্ছে। দিনে সারা দিন শুয়ে থাকা আর রাতে চায়ের দোকান, ক্যারাম খেলা, ফেসবুক চেক আর গান শুনেই শেষ। মাঝে মাঝে ভাবি, এই ভাবে আর কত দিন ? ব্যস, এইটুকুই। দৈনন্দিন রুটিন আর চেন্জ হয় না। কয়েকদিন আগেই ভালো ছিলাম, সারাদিন টিভির পর্দায় চোখ রাখতাম, খেলা দেখতাম। ঐ দিনগুলোও যেন শেষ। এখন আবার শুরু সেই বিশাল অন্ধকার যাপন। অসহ্য !
কাল রাতে আবার শেষের কবিতা বইটা পড়া শুরু করলাম। এই নিয়ে ১৬ বার চলছে। তবে এই বইয়ের বিশেষ্যত্ব হচ্ছে তা শুধু মন খারাপের দিনগুলোতেই পড়তে হবে। মন ভালো করার জন্য ! বেচারা, রবীন্দনাথ হয় ভাববে এই ছেলে ত আমায় মনের চিকিত্সক বানিয়ে ছাড়ল। আমার প্রিয় লেখক বলে বলছি না, যত বার আমি এই বইটা পড়ি তত বারই প্রেমে পড়ি লাবণ্য দেবীর। নিজেকে অনুভূত হয় সেই নিবারণ চক্রর্বতী। মনে হয়, রবি ঠাকুরের আরেকটু কাছে আসলাম। আরেকটু ভালো করে রবীন্দ্রনাথকে চিনলাম । আজব লাগতে পারে কথাগুলো, তবে যারা প্রাণের কথাগুলো নাড়া চাড়া করে আবার প্রাণের ভাষায় পরিণত করে সেইসব কথা শিল্পীদের একবার প্রাণে ঠাঁই দিয়ে তার সর্ম্পকে আজব ছাড়া অন্য কথা বলা দায়। তবে আজব করা তথ্য হচ্ছে, আমার জীবনের প্রথম পড়া বইটাই হচ্ছে শেষের কবিতা। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। র্বাষিক পরীক্ষা শেষে বেড়াতে গেলাম ঢাকায়। মামার বাসায়। স্থান মহাখালী । তিতুমীর কলেজের অভ্যন্তরে মহিলা হোস্টেলটা। মামা ছিলেন ঐ হোস্টেলের সুপার। মামা সারাদিন অফিসে আর মামি সারা দিন ঘুমায়। র্কপোরেট মামিরা যেই রকম হয় আর কী। আর পিচ্চি আমি সারাদিন টিভি দেখি আর ছাদের উপর থেকে কলেজগামী ছেলে মেয়েদের চলাচল আর ক্রিকেট খেলা দেখেই। তো একদিন আবিষ্টার করলাম বড় বইয়ের ট্রাংক। নতুন পুরানো শত বই। মনে আছে, তখন দুটো বই পড়েছিলাম ঐ দশদিনে। 'শেষের কবিতা' আর 'কিস দ্যা র্গালস'। দ্বিতীয়টি একটা ইংরেজি সাহিত্যের অনুবাদ; যৌনতা, নগ্নতা আর ভয়াবহতার রগরগে বর্ণনা। এখনো আমার বুঝতে কষ্ট হয় কেন, এসব বই আমাদের দেশের লোকেরা অনুবাদ করে। যাই হোক, ঐদিন আমি রবীন্দ্রনাথকেই বেছে নিয়ে ঐ বইটাই নিয়ে এসেছিলাম আমি। আর আজ তার ১৬তম খতম চলছে !
দিনগুলো এভাবে কেঠে গেলেও হয়ত খারাপ হত না; বই পড়ে, গান শুনে, খেলা দেখে আর আড্ডা দিয়ে। কিন্তু তাও ত হচ্ছে না। বই পড়তে বসলেও কষ্ট বোধ লাগে মনে, গানগুলোকে বেসুরা মনে হয়। মনের মাঝে যেন খট খট শব্দ হয় আয় এই শব্দে আঁতকে ওঠে অজান্তেই। এই ত কালকেও মামা শুনিয়ে গেল কতগুলা কথা। র্ভাসিটিতে চান্স পায় নি, জাতীয়তেও র্ভতি হই নি, কী চাই, কী করব ? আর কতো শত কথা। তারপর থেকেই মনে আসছে আসলে কী চাই আমি ? লক্ষ্য ও আশা ত এখনো ধোঁয়াশাতেই। তবে মনের মাঝের নিবারণ চক্রর্বতীটা যেন মাঝ রাতে ডেকে ওঠে, চিত্কার করে বলে, "আমি চাই হতে অনন্ত আকাশ, রোদেলা দিনের শেষে / কল্প প্রাণের দুঃখ মিশে সুখ হব, হেসে যাব অকারণে।" তখন নিবারণ চক্রর্বতী ডাকিয়া বলি, তুমি এইবার যাও। মধ্যরাত সঙ্গম করার জন্য যত উপযোগী হাসিবার জন্য ততটুকু নয়। এ আমাদেরই আধিক্যতা। লোকে অবশ্য আজকাল অলস, অর্কমান্য আর অকালকুষ্মান্ড ডাকতে শুরু করে দিয়েছে পাগল যে কখন থেকে ডাকা শুরু করে তা নিজেও জানি না। তবে এত সব খারাপ লাগলেও একটা বিষয় ভাবতেই ভালো লাগে যে, সবাই আমার ভালো চায়। মঙ্গল কামনা করে। আর এটা ভাবতেও খারাপ লাগে যে, এত দিনের বন্ধুগুলা বিভিন্ন জায়গায় চান্স পেয়ে ভুলিয়া গেল। আর কোথাকার কোন ফেসবুকার আর ব্লগারাই এখন সময়ের সঙ্গী। সময় কত আজব ঘটনার জন্ম দিতে পারে তা এখনো আজানাই থাকল। আর আগেই বলেছি অভিযোগের পালা শেষ। অনুশোচনার সময় এসে গেছে। হু, এখন এটাই করছি আপাতত। আশা যদি ভালো কিছু হয়। এছাড়া অবশ্য কিছু করার আছে বলেও মনে হচ্ছে না । ।
কোথায় শুরু করেছিলাম, কী নিয়ে শুরু করেছিলাম তা মনে নেই। মনে করতেও চাই না। তবে বুঝতে পারছি আমার এই ভাঙ্গা মোবাইল দিয়ে আর যাই হোক ব্লগ লিখাটা কঠিনই। হাত ব্যাথা করে। শুনেছি, এইচ এস সি পরীক্ষা নাকি শুরু হয়ে গেছে। তো র্ভতি পরীক্ষার আর দেরি নেই। পড়তে হবে, ছুটতে হবে ট্রেনে। দূর থেকে দূরে, মাঠ ঘাট পেরিয়ে দূরে সাদা দালানে ভাগ্য র্নিধারক পরীক্ষায়। এই বার ত র্ভতি হতেই হবে ! দেখি কী হয়.....
একটা গান মনে আসছে, আগুনের দিন শেষ হবে একদিন......
ইনশাল্লাহ ভর্তি হতে পারবেন। আমারও একই অবস্থা ছিল, কিন্তু আমি সেটা পার করে এসেছি। আশা করি আপনিও সফল হবেন। শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ। আমিও র্ভতি হয়ে এই অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্ত হতে চাই। শুভ কামনা আপনার জন্যও।
লেখার পর নিজে একবার পড়ে নেয়া ভাল। ভয়াবহ বানান (বিভরাট)
সব ঠিক হোক --- শুভকামনা
মন্তব্য করুন