ইউজার লগইন

মাইনুল এইচ সিরাজী'এর ব্লগ

কাপ্তাই থেকে বইমেলায়

আমার একটা বই বেরিয়েছে। বইমেলায় যেতে হবে। শুধু কি নিজের বইয়ের টানে ঢাকায় যাওয়া? কাপ্তাই থেকে ১২ ঘণ্টার জার্নি। না, অন্য কিছু টানও ছিল। শাহবাগের গণজাগরণে অংশ না নিয়ে কি থাকা যায়? তাই যেতে হলো প্রাণের টানে।
এবার কাকলী থেকে বেরিয়েছি আমার উপন্যাস 'অংক স্যার+একদল দুষ্টু ছেলে'। সৌজন্য কপি এখনো পাইনি বলে বইটা কিনতে হয়েছে। কিনেছি আরো কিছু বই। বেশিরভাগই বন্ধু-পরিচিতজনদের (বর্ণক্রমে সাজানো):
১. আখতার হুসেন: সমুদ্র অনেক বড়-প্রথমা
২. আনিসুল হক Anisul Hoque: উষার দুয়ারে-প্রথমা
৩. আনিসুল হক: যারা ভোর এনেছিল-প্রথমা
৪. আহমাদ মোস্তফা কামাল Ahmad Mostofa Kamal: অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না বলে- শুদ্ধস্বর
৫. আহসান হাবীব: একটি প্রায় ভয়ঙ্কর গল্প-তাম্রলিপি
৬. ইকবাল খন্দকার Iqbal Khondokar: তরুণী তখন ঘরে একা-রোদেলা
৭. ইমন চৌধুরী Emon Chowdhury: শুভ্রা আজ বাসায় একা-অনুপম
৮. এবিএম মূসা: মুজিব ভাই-প্রথমা
৯. জয়দীপ দে Joydip Dey Shaplu: হারকিউলিসের পাখা-শুদ্ধস্বর
১০. ফারজানা ঊর্মি Farzana Urmee: স্বপ্নসখা-কাকলী
১১. মুহম্মদ জাফর ইকবাল: ইস্টিশন-তাম্রলিপি

১৮ বছর বয়স

ছেলেটি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আদরে আদরে মানুষ হচ্ছে। গরিব মা-বাবা এই একমাত্র সন্তানের কোনো আবদারই অপূর্ণ রাখছেন না। তবে ছেলেটি লেখাপড়ায় ভালো। কিন্তু বাস্তব-জ্ঞান মোটেই ভালো নয়।
গ্রামে থেকে এসএসসি পাস করেছে জিপিএ ফাইভ নিয়ে। মা-বাবা বহু স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করালেন ঢাকার নামকরা কলেজে। এইচএসসিতেও সে জিপিএ ফাইভ পেল। বহু স্বপ্নের একটা স্বপ্ন ছিল--ছেলে বুয়েটে পড়বে। কিন্তু ইংরেজিতে এ প্লাস না থাকায় সে বুয়েটে আবেদনই করতে পারল না।
এসব কোনো ব্যাপার না। ব্যাপার অন্য। প্রাইভেট-কোচিং মিলিয়ে ২ বছরে ছেলের জন্য খরচ হয়ে গেল ৭-৮ লাখ টাকা। ছোট চাকরিজীবী বাবা-মায়ের বেতন পুরোটা তো খরচ হয়েছেই।অবধারিতভাবে ঋণও করতে হয়েছে অনেক। বেতনের পুরো টাকা ছেলের জন্য পাঠিয়ে তাঁরা কী খেয়ে-পরে কাটিয়েছেন সে এক রহস্য।
বুয়েটে আবেদন করতে পারেনি তো কী হয়েছে, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর তো ছিল। ছেলেটি সেগুলোতেও চান্স পেল না। এটাও ব্যাপর না। চুয়েট-কুয়েট-রুয়েট...তো আছে এখনো। মা-বাবা আশায় বুক বাঁধেন। ছেলেটিও।
কাহিনি এটা নয়।

আমাকে ক্ষমা করবেন

আমরা বন্ধু ব্লগের সবার প্রতি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আগে।
সোনালী ব্যাংকের জিএম আমার বড় ভাই আ ন ম মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে নিয়ে গর্ব করেছি। গর্ব করে এবি-তে লিখেছি ‌‌''হলমার্ক কেলেঙ্কারি ও একটি পরিবারের আনন্দ-বেদনার গল্প''। হাজারো পাঠক লেখাটি পড়েছেন। আমাদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্টটি স্টিকি করা হয়েছিল।

কিন্তু এখন সবকিছু মিথ্যে হয়ে গেছে।
জিএম সিরাজী নিজের জীবন ও ক্যারিয়ার বাজি রেখে এই লুটপাট ঠেকাতে চেয়েছেন এবং তাঁর কারণে উদঘাটিত হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনা। গণমাধ্যম, ব্লগ, ফেসবুকে দারুণ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। জিএম সিরাজীকে জাতীয় বীর হিসেবে পুরস্কৃত করার দাবিও উঠেছিল ফেসবুকে। হ্যাঁ, অবশেষে তিনি ‘পুরস্কার’ পেয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন ১১টি মামলায় তাঁকে আসামী করেছে। সবকটি মামলাই জামিন-অযোগ্য। ফেসবুকে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘ভেবেছি দুদক তাঁকে সংবর্ধনা দেবে। এখন দেখছি উল্টো মামলা দিল। এমন হলে তো মানুষ সৎ কাজের সাহস হারিয়ে ফেলবে।’

হলমার্ক কেলেঙ্কারী ও একটি পরিবারের আনন্দ-বেদনার গল্প

আমার আব্বা আনোয়ার উল্লাহ সিরাজী ছিলেন একজন গরিব মানুষ।
নোয়াখালীর চরে তার কয়েক একর জমি ছিল। কিন্তু জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল প্রচুর। প্রায়ই মাইজদী ছুটতে হতো তাকে। শেষে জমিটমি রেখে চলে আসেন বাড়ি। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে নজর দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু কোনো চাকরি নেই। ভিটেমাটিটুকু ছাড়া আর কোনো জায়গা-জমিও নেই। দশ ছেলেমেয়ে নিয়ে মহাসমুদ্রে পড়ে যান তিনি। নিজে খাবি খেয়েও ছেলেমেয়েদের আগলে তুলে রাখেন। পরে প্রাইমারি স্কুলে একটা চাকরি পান। কিন্তু তাতে কি আর চলে? দারিদ্র্যের সঙ্গে এক অসম যুদ্ধ শুরু হয় তার।...
আমি কেন আমাদের পরিবারের গল্প বলছি? আপনারা শুনবেনই বা কেন? না, আপনাদের শুনতে হবে। প্রতিদিন তো শুধু দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারীর কাহিনি শোনেন। আজ শুনুন একটা অন্যরকম গল্প!

সব চরিত্র কাল্পনিক

জীবনের দুই ডজন পয়লা বৈশাখ আমার কাছে ছিল একলা বৈশাখ। না, ১লাকে ভুল করে একলা বলিনি। বৈশাখ আসার কথা মহাসমারোহে। তাপস নিঃশ্বাস বায়ে, মুমূর্ষুরে উড়িয়ে দিয়ে, বৎসরের আবর্জনা দূর করে। অথচ আমার ‘কেটেছে একেলা বৈশাখের বেলা আকাশ কুসুম চয়নে’। কিংবা আমি ছিলাম একেলা গৌরী, জলকে চলেছি গঙ্গাতে।

কুশিয়ারা ও একজন লেখকের গল্প

ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হতে চলল। বইমেলায় যেতে পারিনি। চট্টগ্রাম থেকে দু’এক দিনের জন্য ঢাকা যাওয়া খুব যে কঠিন তা নয়। তার ওপর আমার একটা উপন্যাস এসেছে মেলায়। কিন্তু আমি একা তো আর যেতে পারি না। মেয়ের বায়না- সেও যাবে। মেলা থেকে বই কিনবে। আমার স্ত্রী একটা স্কুলে চাকরি করেন। তাঁর আর আমার ছুটির সময়টা মেলেনি বলে যাওয়া হয়নি।
কিন্তু মেয়েকে কী করে সামলাই? তার বই চাই। নিয়ে গেলাম আন্দরকিল্লা। লাভ কিছু হয়নি। মেয়ে বইমেলা থেকেই বই কিনবে।

এই শীতে উষ্ণপদ্য

উতল হাওয়া উড়িয়ে নিল কই আমাকে
উতল হাওয়ার আঁচল দোলে
আমারও যে পরাণ জ্বলে
বলি-
তোর আঁচলের খানেক ছায়া দে আমায় দে।

উতল হাওয়া শীতল হাতে দেয় ছুড়ে দেয়
বলে-
খানেক কেন, পুরো আঁচল নে বাবা নে।

অন্ধকারের বুকের ভেতর

আপনার নাম অবর্ণা কেন?
প্রশ্নটা শুনে অবর্ণা থতমত খায়। রাত বারোটার সময় ফোন করে, ঘুম থেকে জাগিয়ে এমন প্রশ্ন করে কেউ? মেজাজ খিঁচে যায় অবর্ণার। বিড়বিড় করে সে বলে, অপদার্থ।
কী বললেন?
যা বলার বলেছি।
আপনি আমাকে অপদার্থ বলেছেন। এটা কি ঠিক হলো?
শুনেই যখন ফেলেছেন তখন আর বেঠিক বলি কীভাবে?
দুইভাবে বেঠিক। এক-আপনার তিন বছরের সিনিয়র কাউকে আপনি এটা বলতে পারেন না। দুই-বিজ্ঞানের ছাত্রী হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই পদার্থ আর অপদার্থের পার্থক্যটুকু বোঝেন?
ও আচ্ছা আচ্ছা। ওভাবে দেখলে আমি দুঃখিত।
আমিও দুঃখিত এত রাতে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য।
ঠিক আছে। খোদা হাফেজ।
না না। আগে প্রশ্নটার উত্তর দিন।
ওটা জানতে হলে আপনাকে মরতে হবে।
মানে?

খোয়াবনামা

দুটো স্বপ্ন আমি প্রায়ই দেখি।
একই স্বপ্ন বারবার ঘুরেফিরে দেখার মানে কী- আমি জানি না। কিন্তু আমি দেখি। যেহেতু স্বপ্নদেখা বিষয়ে আমার কোনো হাত নাই।
স্বপ্ন ১: সিঁড়ি বেয়ে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ওপর তলায় উঠছি। আমার আগে আগে উঠছে আরও কয়েকজন। এক পর্যায়ে দেখি আর সিঁড়ি নাই। কিন্তু উঠতে হবে। আমি হতাশ হয়ে দেখি, অন্যরা দেয়াল বেয়ে, লাফিয়ে লুফিয়ে কীভাবে যেন উঠে যাচ্ছে। কিন্তু আমি পারছি না। তবে অনেক চেষ্টার পর অনেক দেরীতে আমি পারি। আমি তখন হাঁপিয়ে উঠি এবং জেগে যাই।
স্বপ্ন ২: সাঁতার কাটার মতো বুকে হেঁটে আমি এগিয়ে যাচ্ছি। দুহাতে ভর দিয়ে নিজের শরীরকে এভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া- উফ, কী সাংঘাতিক কষ্টকর! তবু আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আমাকে অনেক দূর যেতে হবে। আমি কি পারব? আমি হাঁপিয়ে উঠি এবং জেগে যাই।

ও বৈশাখী

সেদিন পয়লা বৈশাখ ছিল। দিনটি আমার জীবনে নতুন কোনো রং নিয়ে কখনো আসেনি। তার ওপর সেদিন আমার জ্বর ছিল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছি। জ্বর বাড়ে। একশ এক, একশ দুই। একটা ঘোর। তন্দ্রা। ছটফটানি। ঘুম, ঘোর, তন্দ্রা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এক অন্য রকম জগতে হাবুডুবু খাওয়ার মতো। যেন অনেকগুলো অন্ধকার দলা পাকিয়ে ধেয়ে আসছে আমার দিকে। বাঁচাও! বাঁচাও! কখনো যেন বা পড়ে যাচ্ছি। মাটিতে। মাটি ভেদ করে পাতালে। পতন! পতন! আবার কখনো যেন উড়ছি আকাশে। উড়তে উড়তে একেবারে সূর্যের কাছাকাছি। উফ, কত উষ্ণতা, কত আলো! চোখ ধাঁধিয়ে যায়, শরীর পুড়ে যায়। পানি চাই, পানি!...
টুংটাং। এটা কি পানির শব্দ? না তো!
সহন আছেন?

মগের মুল্লুকে আমি যখন ছাত্রলীগের ক্যাডার

আমি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করি, সেই জগৎটাকে আমি বলি মগের মুল্লুক। এখানে নিয়ম-নীতির কোনো বালাই নেই। অনিয়ম-অনৈতিকতার এ রাজ্যে কেউ নীতি দেখাতে গেলে তাকে স্রেফ গাধা বলা হয়। মগের মুল্লুকের শত বৈশিষ্ট্যের একটামাত্র বলি। এই ২০১১ সালে এসেও এখানকার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় নকল করে। বাধা দিতে গেলে শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হন। মারও খান।
তো, একদিন পরীক্ষার হলের একটি ঘটনা বলার জন্যই এই পোস্ট।

বাংলা হোক ৩৬৫ দিনের

সালাম রফিক, বরকত, সালাম...কে। সালাম আব্দুল গাফফার চৌধুরী, আব্দুল লতিফ, আলতাফ মাহমুদকে। সালাম মাহবুবুল আলম চৌধুরী, আলাউদ্দিন আল আজাদ, হাসান হাফিজুর রহমানকে। এবং সালাম ১৫ কোটি বাঙালিকে। এঁরা বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এঁরা বাংলাকে লালন করছেন। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি শুধু একদিনের জন্য নয়, ৩৬৫ দিনের জন্য।

সম্পর্কের মূল্যহ্রাস

১৯৯০ সালের দিকের একটি ঘটনা। বড় বোন আর তার নতুন বর গেছে ঢাকায়। মধুচন্দ্রিমার মতো কোনো ব্যাপার নয়; উদ্দেশ্য শুধু দুটো দিন নতুন জীবনকে একটু ভিন্নভাবে উদযাপন করা, স্বপ্নের শহর ঢাকাকে দুজন মিলে দেখা। মধুচন্দ্রিমা শব্দটা আমাদের কাছে তখন স্বল্পপরিচিত। নিম্নমধ্যবিত্তের কাছে যা এক বিলাসী স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
ঢাকায় তারা উঠেছিল বড়লোক মামার বাসায়। দুদিন পর গ্রামে এসে বড় বোনের সে কী কান্নাকাটি- লজ্জা- সংকোচ! এই অতি আপন আত্মীয়টি নতুন এই দম্পতিকে নানাভাবে অমর্যাদা দিয়েছে। মেঝেতে ঘুমাতে দিয়েছে, তাদের নেওয়া মিষ্টি পঁচা বলে উপহাস করেছে। বোনের প্রশ্ন- কেন উনারা আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করলেন? আমরা তো পর নই। ছোটবেলায় বোনকে কত্তো কোলে নিয়েছে সেই মামাটি। মেলায় নিয়ে গিয়ে চিনিবাতাসা আর ভেঁপু কিনে দিয়েছে! এখন শহরের বাসিন্দা হয়েছে, কিছু টাকাপয়সা হয়েছে, তাই কি এত পরিবর্তন?

প্রেম সাতবারই এসেছিল জীবনে- ১

রাজ্জাকের জীবনটাকে বর্ণাঢ্য বলাই যায়। এ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ প্রেম হয়েছে ৭টা। অর্ধাঙ্গ, সিকি-অঙ্গ অনেক। সেগুলো গণনার বাইরে। বেঁচে থাকলে ১৪টা পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম হবে আশা করা যায়। রাজ্জাক নিঃসন্দেহে একদিন হোমো এরশাদকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে।

তো আসুন, ৭ পর্বের প্রথম পর্বটা দেখে নিই।

ববিতা রাজ্জাকদের বাড়িতে আসত আত্মীয়তার সূত্রে। রাজের চোখ পড়ল ববির ওপর। যদিও ববি বছর দুয়েকের বড়ই হবে রাজের চেয়ে। তার ওপর মেয়েটা মারাত্মক দেমাগি। রাজ ঘুরঘুর করে। ববি পাত্তা দেয় না। এভাবে প্রতিবারই রাজের বুক খান খান করে দিয়ে ববি চলে যায়। মেওয়া ফলানোর জন্য রাজ সবুর করে। সবুর করে করে ফন্দি আঁটে।

একদিন মেয়েটা চলে যাবার পর রাজ সোজা গিয়ে হাজির হয় মেয়েটার বাড়ি। বাড়িতে শত্রু এলেও ভদ্রতা করা লাগে। ববি তাই রাজকে বসতে বলে। কথা বলতে চায়। কিন্তু আজ ঘটনা উল্টো। রাজ কথা বলে না। ববি অনুরোধ করে- কী হলো বসুন না, কী খবর বলুন?

ক্যাম্পাস-স্মৃতি: জারুলতলার ৭

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাসে অতি উৎসাহ নিয়ে ঢুকে ভাব নিয়ে বসলাম। মোটা ফ্রেমের চশমা পরে প্রবেশ করলেন ভূঁইয়া ইকবাল স্যার। তিনি পরিচিত একটি কবিতা রাশভারী গলায় আবৃত্তি শুরু করলেন- হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন...। আবৃত্তি শেষ করে স্যার বললেন, এবার অর্থ বলি- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিধ ছাত্ররা এসে বাঙলায় ভর্তি হয়। আমি নিদারুণ হতাশ, লজ্জিত। স্যার বললেন, মন খারাপ কোরো না, এই বিবিধরাই শেষ নাগাদ ভালো করে। পরের ৪৫ মিনিট জমিয়ে রেখে স্যার যখন ক্লাস শেষ করলেন, আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো বেরুলাম স্যারের পিছুপিছু।