সিনেমা সিনেমা
ব্যস্ততা বেড়েছে। অফিস আসি দুপুর ১২টিায়, যাই রাত ১২ টায়। এর মধ্যেও কিছু সময় বের করতে হয়। অনেক সিনেমা জমে আছে, নতুন নতুন সিনেমাও আসছে। গান শোনার অভ্যাস খানিকটা এখনও রয়ে গেছে। আর বই তো নিত্য সঙ্গী। এর মধ্যে আবার মাঠে যেয়ে টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপের তিনটি খেলাও দেখেছি। এই ফাঁকে বলে রাখি আমি মাঠে গেছি আর বাংলাদেশ জিতছে এমন একটা ঘটনাও কিন্তু নাই।
আজকের বিষয় কিন্তু সিনেমা। কয়টা ভাল সিনেমা দেখে ফেলছি। সেইগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে পারি।
১. অলীক সুখ: কোলকাতার সিনেমা অনেক ভাল হচ্ছে-এই কথাটি আমরা প্রায়ই বলি। অলীক সুখ দেখে মনে হল কথাটা কতটা সত্যি। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের একটা উপন্যাস অলীক সুখ। সেটি ধরেই সিনেমা। পুরো সিনেমাটা মুগ্ধ হয়ে দেখার মতো। শিবপ্রসাদ মুখার্জী ও নন্দিতা রায়ের যৌথ পরিচালনার সিনেমা। অত্যন্ত সফল এই দুই জন। বাড়তি পাওনা হচ্ছে অভিনয়। বিশেষ করে ঋতুপর্ণা অসাধারণ। সোহিনীও তাই। কয়েক মিনিটের অভিনয় করেছেন সৌমিত্র, কিন্তু ঐটুুকুই কি অসাধারণ।
মূল প্লটের কেন্দ্রে রয়েছে একটি অলীক সুখ-ভাবনা৷ কিংশুক (দেবশঙ্কর হালদার) একজন সফল গাইনোকলজিস্ট সার্জেন৷ দিনে পাঁচটা চেম্বার, তিনটে অপারেশন, পঞ্চাশটা রোগী অ্যাটেন্ড করা তার কাজ৷ পাশাপাশি বারো বছরের পুরনো স্ত্রী রম্যাণি (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) আর এক পুত্র সন্তান, বাবা-মা নিয়ে তার সুখের সংসার৷ তেরো নম্বর বিবাহ বার্ষিকীতে সে চায় তার স্ত্রীকে কোটি টাকার ফ্ল্যাট উপহার দিতে৷ একজন সফল রোজগেরে স্বামীর পক্ষে খুবই বাস্তবিক চাহিদা৷ সে বউকে সুখে রাখতে চায়৷ এই সুখ কতটা অসার, কতটা অলীক- সেই গভীর সত্য কিংশুকের জানা নেই৷ ফলে, সে নার্সিংহোমের কাছ থেকে ঘন্টা তিনেকের ছুটি নিয়ে ফ্ল্যাট বুক করতে যায়, আর এই অবসরেই মারা যায় প্রথমবার সন্তানের জন্ম দিতে আসা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে কবিতা (সোহিনী সেনগুপ্ত)৷ কবিতা কিংশুকের তত্ত্বাবধানে থাকা রোগী৷
চিকিত্সকের অনুপস্থিতিতে চিকিত্সার অভাবে মারা যায় এক রোগী৷ আঙুল ওঠে কিংশুকের দিকে৷ এবারে কিংশুক কী করবে? সে কি এই বিপর্যয় রোধ করতে পারবে? সে কি এর পরেও স্ত্রীকে এনে দিতে পারবে সেই অলীক সুখের প্রতীক কোটি টাকার ফ্ল্যাট? বেশ চমত্কার কাহিনির সেট-আপ৷ হিরো ইন ডিসট্রেস৷ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কাহিনির মোড় ঘুরে যায়৷ এসে দাঁড়ায় বিবেক৷ গল্পের সেন্ট্রাল থিম হয়ে ওঠে 'হিপোক্র্যাটিক ওথ'৷ তবু এই বিবেক জাগ্রতকারী গল্পও আমরা দেখে ফেলতে পারি শুধুমাত্র অভিনয়ের গুণে৷ ছবির জোর এইখানেই৷
এই সিনেমারই একটি গানের কথা বলি।
রাত যায় রাত যায়
অগোছালো মেঘে
দেরী হলেও এসো
আমি থাকবো জেগে
২
কেউ ভাবেনি সিনেমাটি এতো ভাল চলবে। প্রচারণাও খুব বেশি ছিল না। কিন্তু বক্স অফিসে সুপারহিট। সুপারহিট হওয়ার মতোই সিনেমা। দ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
জিৎ আর আবিরের এই ছবিটা একদমই অন্যরকম। প্রথাগত সিনেমার মতো ভাবার কোনো কারণ নেই। কিছুটা থ্রিলারধর্মী, কিন্তু শেষটায় চমক আছে।
যারা নানা ধরণের সিনেমা দেখতে চান তারা কিন্তু দেখতে পারেন।
কোনো ধরণের প্রত্যাশা ছাড়াই সিনেমাটি দেখা শুরু করেছিলোম। দেখে চমকে গেছি।
৩.
প্রথমবার দেখেছিলাম খারাপ প্রিন্ট। এখন ভাল প্রিন্ট পাওয়া যাচ্ছে, যারা এখনো দেখেননি তারা দ্রুত দেখে ফেলেন। লাঞ্চ বক্স। এরকম ছবি সহজে হয় না।
মূলত সম্পর্কের ছবি। সঙ্গে ইরফান খানের অভিনয়। স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখতে অফিসে খাবার পাঠায় বউটি। সেই খাবার চলে যায় আরেকজনের কাছে। এমনিভাবে তৈরি হয় নতুন এক সম্পর্কের।
৪.
থ্রিলার যাদের পছন্দ তাদের জন্য। খুব সাধারণ থ্রিলার না। তবে ভাল লাগবে। দেখার পর ভিন্ন ধরণের একটা অনুভূতিও হয়। প্রিজনার্স।
দুটি ছোট মেয়ে হারিয়ে যায়। অপহরণ করা হয় তাদের। খুঁজতে থাকে বাবা। লেগে থাকে পুলিশ। কিন্তু ঘটতে থাকে অদ্ভুত সব ঘটনা। দেখতে পারেন।
৫.
আমি এটাকে সাইন্স ফিকশন বলতে নারাজ। বলা যায় এটাও এক ধরণের সম্পর্ক নিয়ে ছবি। সিনেমাটির নাম হার।
সময়টা ২০২৫। থিওডরের পেশা হচ্ছে অন্যের হয়ে চিঠি লেখা। সে একা। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হচ্ছে, কিন্তু সে চায় না। ভুগছে বিষন্নতায়। একাকীত্ব কাটাতে থিওডর একটা কম্পিউটার গ্রোগ্রামের দ্বারস্থ হয়। এর নাম অস। এটি হচ্ছে একটি আর্টিফিসিয়েল ইন্টেলিজেন্স, যে কেবল কথা বলে। একদম মানুষের মতোই। সে বেছে নেয় নারী কন্ঠ, তার নাম সামান্থা। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শুরু হয় জটিলতাও।
সামান্থা কণ্ঠটি অনেক পছন্দের স্কারলেট জোহানসন। তাকে দেখা গেল না পুরো সিনেমায়, কিন্তু কন্ঠের অভিনয় দিয়েই মুগ্ধ করেছে সবাইকে। পারলে দেখে ফেলেন।
বাংলাদেশ তো জিতল না আপনারা খেলা দেখতে গেলেন বলে আর আমি যাইনি বলে
থ্রিলার ছাড়া বাকী মুভিগুলি দেখতে দিয়েন । মাঝে মাঝে লিখলে ভালো লাগে
অলীক সুখ বাদে আর কোনটাই দেখা হয় নাই। তবে সেই কবে থেকে ডাউনলোড করে রেখেছি।। বরাবরের মতো এক সিনেমাতেও ঋতুপর্নাকে আমার অসহ্য লেগেছে। ক্যান জানি ইদানিং মহিলার অভিনয় আমার কাছে অতিঅভিনয় লাগে। আর ডায়লগের সময় নিঃশ্বাসের শব্দ পাই
প্রিজনার্স দেখসি, হার মুভিটা অনেক আগেই ডালো করে রাখসিলাম, ইংরেজি সিরিয়াল আর ডকুমেন্ট্রি দেখার কারনে মুভিটা দেখা হইতেসিলো না! আজ আপনার পোস্ট দেয়া উপলক্ষে ছবিটা দেখা শুরু করবো এখনই!
আপনার সিনেমা ব্লগ পোস্ট টা রেগুলার চাই ভাইয়া
অনেক দিন পর!
তিনটে দেখছি দুটো দেখি নাই মোট পাচটা সিনেমার ভেতর থেকে!
'হার' ভাল্লাগছে,
সেম ফিলিং এবাউট সামান্থা।
'প্রিজনারস' বেশ ভালো বানাইছে,
কিন্তু একটু স্লো লাগছে আমার কাছে।
'লাঞ্চবক্স' এর জন্য অপেক্ষায় আছি বেশ অনেকদিন,
ভালো প্রিন্ট আসতে আজকাল এত দেরি হয় অনেক মুভি অদেখা থেকে যায়।
খুব ভাল লাগল, অভিনন্দন। অনেকদিন ধরে মুভি দেখা হয় না, সময় করে দেখব।
'লাঞ্চবক্স বাদে বাকী গুলা দেখি নাই। দেখে জানাবো
মন্তব্য করুন