ভিনদেশী থ্রিলার
সিনেমা জনরের মধ্যে সম্ভবত থ্রিলারের দর্শক সবচেয়ে বেশি। অবসর কাটাতে একটি জম্পেস থ্রিলার থাকলে আর কি লাগে। এই থ্রিলারগুলোর অবশ্য একটা আলাদা বিশেষত্ব আছে, সবগুলো ভিনদেশী থ্রিলার। অবশ্যই আমার দেখার মধ্য থেকে বাছাই করা।
১. টেল নো ওয়ান: ফ্রেঞ্চ মুভি। আলেক্সান্দ্রে বেক একজন ডাক্তার। ৮ বছর আগে স্ত্রী নিহত হয়েছিল। স্ত্রীর বাবা এ জন্য তাকেই সন্দেহ করে। আট বছর পরে জোড়া খুনের সন্দেহ পড়ে আলেসান্দ্রের ওপরে। ঠিক একই দিনে একটি অদ্ভুত মেইল পায় আলেক্স।
মেইলটা আসে নিহত স্ত্রীর কাছ থেকে। তবে কি বেঁচে আছে? একদিকে নতুন করে খুনের দায়ে অভিযুক্ত, পালাতে হচ্ছে, অন্যদিকে নিহত স্ত্রীর নামে আসা মেইল। শুরু হয় চোর-পুলিশ খেলা। সিনেমাটি ২০০৬ সালের। তবে তুমুল বিখ্যাত। এ নিশ্বাসে দেখে ফেলা যায়।
২. দ্য সিক্রেট ইন দেয়ার আইজ: আর্জেন্টিনার সিনেমা, ভাষা স্প্যানিশ। তুমুল বিখ্যাত সিনেমা। বেনজামিন একটি উপন্যাস লিখতে চায়, কিন্তু শুরুটা ভালো হচ্ছে না। পরামর্শ নিতে গেল এখনকার একজন জাজ আইরিনের কাছে। ২৫ বছর আগে নির্মমভাবে খুন হয়েছিল লিলিয়ানা। একজন ফেডারেল এজেন্ট হিসেবে তদন্ত করেছিল বেনজামিন, আর তখন তার ঊর্ধ্বতন পদে ছিল আইরিন। খুনি ধরাও পড়েছিল। তারপরেও ভয়ে পালিয়ে যেতে হয় বেনজামিনকে।
২৫ বছর পর সেই ঘনটা নিয়ে লেখা হবে উপন্যাস। নতুন করে খুঁজতে শুরু করল বেনজামিন। শেষটায় বিশাল চমক। অসাধারণ এই সিনেমাটি ২০০৯ সালে বিদেশি ভাষার সেরা সিনেমার অস্কার পায়।
৩. দি কিপার অফ লস্ট কজেজ: ডেনমার্কের থ্রিলার। কার্ল একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁরই ভুলে এক অভিযানে নিহত হয় সহকর্মী আর চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শান্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কার্লকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নতুন এক বিভাগে। সমাধান হয়নি এমন সব কেস নথিভুক্ত করার কাজ। সঙ্গে দেওয়া হলো একজনকে, আসাদ।
উঠতি রাজনীতিবিদ অল্পবয়সী এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৫ বছর আগে। সন্দেহ হলো কার্লের। নেমে পড়ল তদন্তে। কিন্তু কেউ সহযোগিতা করছে না। দমল না কার্ল। থ্রিলার ভক্তদের জন্য অবশ্য দেখা সিনেমা এটি।
৪. লফট-বেলজিয়ামের সিনেমা। একটি ভবনের ওপরতলা, যাকে বলা হয় লফট। পাঁচ বিবাহিত বন্ধুর গল্প। সবার কাছে এই রুমের একটা করে চাবি, গোপন অভিসারের জন্য। অন্য কেউ যেন না জানে।
ভালোই চলছিল। কিন্তু ঝামেলা বাধল একদিন। রুমে পাওয়া গেল এক লাশ। কার সঙ্গে এসেছিল, কে খুন করল? একে অপরকে সন্দেহ করা শুরু করল। বের হতে থাকল গোপন অনেক কিছু। এর হলিউড রিমকে না দেখাই ভালো্
৫. দি বডি-স্প্যানিশ থ্রিলার বরাবরই পছন্দের। শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যাবে না। মর্গ থেকে লাশ উধাও হয়ে গেল এক ধনাঢ্য মহিলার। স্বামীটির বয়স কম, ডেকে আনা হলো তাকে। লাশ গায়েব হলেও রেখে দেওয়া আছে নানা ধরনের ক্লু। সন্দেহ স্বামীর ওপরে। তদন্ত শুরু করল এক পুলিশ কর্মকর্তা।
অসাধারণ টান টান উত্তেজনার এক থ্রিলার।
৬. দি ইনভিজিবল গেস্ট-আদ্রিয়ান একজন ভালো উদ্যোক্তা। একদিন ডেকে নিয়ে গেল বান্ধবী। বউকে লুকিয়ে চলে গেল বান্ধবীর সঙ্গে দূরে এক হোটেলে। সেখানে খুন হলো সেই বান্ধবী। ফেঁসে গেল আদ্রিয়ান। তাঁর উকিল দেশে নেই। তাঁর পক্ষে এল আরেকজন। বাড়তে লাগল রহস্য। খুন এর আগেও তো হয়েছে একটি।
এটাও স্পেনের থ্রিলার, দারুণ। একের পর এক চমক।
৭. দি আনইনভাইটেড গেস্ট-আবারও স্পেনের থ্রিলার। ফেলিক্স এখন অনেক বড় এক বাসায় একাই থাকে। বউ ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু বউকে সে ভালোবাসে। একদিন মাঝবয়সী এক লোক এল টেলিফোন করবে বলে। টেলিফোন দেখিয়ে দিয়ে পাশের রুমে গেল ফেলিক্স। একটু পরে এসেই দেখে লোকটি নেই। তারপর থেকে মনে হতে থাকল লোকটি যায়নি, ঘরেই আছে। সন্দেহ আর সন্দেহ।
দ্রুত দেখে ফেলেন। ভালো লাগবে।
৮. নো মার্সি-কোরিয়ানরা সিনেমা সব সময়েই অন্যরকম। সেটা রোমান্টিক হোক বা থ্রিলার। কখনো কখনো হজম করা মুশকিল, কিন্তু ঠিক নেশার মতো। আবারও দেখতে বসে যাই। যেমন নো মার্সি।
একটা মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। হাত-পা সব বিচ্ছিন্ন। আনা হলে পোস্ট মরটেম করতে। ক্যাং মিন হো একজন ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট। তার ওপরে পড়ল দায়িত্ব। অবসর নেওয়ার আগে এটাই তার শেষ কাজ। দীর্ঘদিন পর মেয়ে আসছে। কাজ শেষ করে মেয়েকে আনতে গেল এয়ারপোর্টে। কিন্তু মেয়েকে পেল না। শুরুর খুনের জন্য একজনকে ধরা হয়েছে। সেই স্বীকার করল ক্যাং-এর মেয়েকে অপহরণের কথা। কিন্তু কোনো?
টুইস্ট দেখতে চাইলে নো মার্সি।
৯. এলে-ডাচ পরিচালক পল ভেরহোভেনের সর্বশেষ ছবি, ফরাসি ভাষার। অসাধারণ এক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। মিশেল একা থাকে। এক ভিডিও গেম কোম্পানির মালিক। ছেলে আছে, কিন্তু তেমন কোনো কাজের না, বান্ধবীকে নিয়ে থাকে। মিশেলই সব খরচ দেয়। একদিন মুখোশ পরা একজন ধর্ষণ করল মিশেলকে। পুলিশকে কিছু বলল না মিশেল, বরং নিজেই খুঁজতে লাগলে। সন্দেহের তালিকায় বেশ কয়েকজন। খুঁজতে গিয়ে মিশেল নিজেই জড়িয়ে গেল অদ্ভুত এক সম্পর্কে।
অসাধারণ এক থ্রিলার, আর অসাধারণ ইসাবেলা হুপার্টের অভিনয়।
১০. কনফেশনস: জাপানের থ্রিলার। জুনিয়ার হাই স্কুলের টিচার মরিগুচি। ক্লাসে এসে জানাল এটাই তার শেষ ক্লাস। কারণ তার চার বছরের মেয়েটি স্কুলেরই সুইমিং পুলে ডুবে মারার গেছে। আসলে ছোট্ট মেয়েটাকে খুন করেছে। আর সেটি করেছে এই ক্লাসেরই দুজন। শুরুতে ক্লাসের সবাইকে প্যাকেট দুধ খেতে দিয়েছিল। মরিগুচি জানাল ওই দুজনের দুধে এইডস-এর ভাইরাস মিশিয়ে দেওয়া ছিল। এটাই প্রতিশোধ। কারণ ১৪ বছরের কম বলে খুনের অপরাধের শাস্তি হতো না।
এরপরেই শুরু হলো আসল ঘটনা।
যেমনই অভিনয়, তেমনই নির্মাণ।
মাসুম ভাই, অন্তত মুভি পোস্ট দেয়াটা জারি রাইখেন, ভালো মুভির খবর পাই এর মাধ্যমে
আজকেই মাসুম ভাইয়ের একটা পোস্ট পড়তেছিলাম
কি এক দিন ছিল
ছবি গুলো দেখার লোভে পড়ে গেলাম! বড় একটা টিভি কিনতে হবে দেখছি! ছোট টিভিতে পোষাবে না!
মন্তব্য করুন