শওকত মাসুম'এর ব্লগ
ব্লগর ব্লগর
............................................................................................................................................................................................................................
১.
বাফড়া অবশেষে বিবাহ করলো। কোন বাফড়া?
এই বাফড়া.......
বিবাহ করলেও বাফড়া কিন্তু খুব একটা বদলায় নাই। সামান্য বদলাইছে। আগে এরম কইরা শুইতো, এখন খালি জাস্ট শোয়ার ধরণটা বদলাইছে। চিৎ পজিশন বদলে উপুর পজিশন হইছে আর কি
২.
একটা পুরানা গল্প কই। এক ছেলে খুব মিস্টি পছন্দ করতো। খালি মিস্টি খাইতো। একবার তার হইল জ্বর, গরমে গা পুইড়া যায়। ডাক্তার দিলো ট্যাবলেট। পোলাডা ট্যাবলেট খাইবো না। তখন তার মা মিস্টির মধ্যে ট্যাবলেট দিয়া তারে খাইতে দিল। কিন্তু জ্বর আর যায় না। মা জিগাইলো মিস্টি খাইছিলি। ফাজিল পোলা কয়, খাইছি, তয় বিচিটা ফালাইয়া দিছি।
ব্লগর ব্লগর
১.
কাল অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম ১২টার পরে। গাড়ি চালাতে গিয়ে দেখি এক হাতের দূরের কিছু দেখি না। কালকের মতো কুয়াসা আমি কখনো ঢাকায় দেখি নি। মনে হচ্ছিল মেঘের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। হাত বাড়ালেই ধরা যাচ্ছিল সব কিছু।
বাসায় গিয়ে বউকে বললাম, মেঘের মধ্য দিয়ে তোমার কাছে আসলাম। চলো মেঘের মধ্য দিয়ে ঘুরে আসি।
বউ অবাক হয়ে বললো-তোমার চোখেও এসব পরে?
কাল এমনই কুয়াসা ছিল চোখে না পড়ার কোনো উপায়ই ছিল না। তবে ওই দুই লাইনেই দেখলাম বউ খুশী।
২.
কাল সারাদিন রাতের ওই দু'তিনটি কথাবার্তাই ছিল ভাল কিছু। এ ছাড়া কাল সারাদিন ভাল কিছুই ঘটলো না। অথচ আগের রাতে ঘুমাতে গিয়েছিলাম সিরিজ জয়ের রেশ নিয়ে। কিন্তু সকালে উঠেই সব ভাললাগা চলে গেল টিভি খুলতেই। একাত্তর ঠিভিতে দেকলাম লাইভ গণপিটুনি। তবে ভাগ্য ভাল যে, পুলিশ উদ্ধার করায় বেঁচে গেল দুজনেই। বাঁচতে পারল না বিশ্বজিৎ দাস।
আমাদের ক্রাইম রিপোর্টার বিকেলে রিপোর্টটা লিখে দিল। সেটি অনেকটা নতুন করে লিখলাম আবার। ফেসবুকে রাসেলের লেখা স্টাটাস থেকে একটা লাইন নিয়ে লেখাটা শুরু করেছিলাম। দুই প্রত্যক্ষদর্শীর মুখ থেকে পুরোটা শুনলাম।
ইন দ্য টাইম অব দ্য বাটারফ্লাইস
চার বোনের কথা বলি।
প্যাটরিয়া, দিদি, মিনার্ভা ও মারিয়া তেরেসা। ওদের বলা হয় মিরাবল সিসটার্স। জন্ম যথাক্রমে ১৯২৪, ১৯২৫, ১৯২৬ ও ১৯৩৫ সালে, ডমিনিক রিপাবলিকের সিরাস অঞ্চলে। বাবা এনরিক মিরাবল ও মা মারিয়া মেরসিডস রিয়েস।
মিনার্ভা ও মারিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার্থে।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে তখন রাফায়েল ট্রুজিলার স্বৈরশাসন। মিরাবল বোনরা স্বৈরশাসক ট্রজিলোর বিরুদ্ধে নানা ধরনের আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। বিশেষ করে মিনার্ভা ছিল বেশি সক্রিয়। ফলে কারাগারেও যেতে হয়েছিল মিরাবল বোনদের। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর এই মিরাবল বোনদের বহনকারী মোটরগাড়ির দুর্ঘটনা ঘটে। বলা যায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের হত্যা করা হয়। বলাই বাহুল্য ট্রজিলা ছিলেন এই ঘটনার হোতা। তার নির্দেশেই হত্যাকান্ড ঘটনো হয়।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ট্রজিলোবিরোধী আন্দোলনকে উস্কে দেয়। এর এক বছরের মধ্যে ট্রজিলাও আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছিল।
এঞ্জেলিনা জলি পরিচালক, ছবির নাম ইন দ্য ল্যান্ড অব ব্লাড এন্ড হানি
আমাদের জলি আফা। কামিং হোম দেখে জন ভয়েটের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। অস্কার পাওয়া সেই জন ভয়েটের মেয়ে এঞ্জেলিনা জলি। অরিজিনাল সিনের মতো হট-হাট সিনেমা যেমন আছে, তেমনি আছে মাইটি হার্ট আর চ্যাঞ্জেলিং এর মতো সিনেমা।
সেই এঞ্জেলিনা জলি অবশেষে পরিচালকও হলেন। তিনি একটি ছবি পরিচালনা করেছেন, মুক্তিও পেয়েছে, এবং আমি দেখেও ফেলেছি।
ছবিটার নাম ইন দি ল্যান্ড অব ব্লাড এন্ড হানি। শুরুতে ছবিটা নিয়ে আমার তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না, উচ্চাসাও না। তবে দেখার পর লিখতে আগ্রহ বোধ করছি। মনে হচ্ছে সবাইকে বলি আপনারাও দেখেন।
এঞ্জেলিনা জলি জাতিসংঘে বসিনিয়ার শুভেচ্ছা দূত। সেখানে যাওয়া আসার মধ্যেই তিনি কাছ থেকে দেখেছেন বসনিয়াকে। সিনেমার পটভূমি বসনিয়ার যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। গল্পটা এঞ্জেলিনা জলির নিজের লেখা।
সেরা ছবির সেরা তালিকা
সেরা ছবির অনেকগুলো তালিকা আছে এখানে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের প্রকাশনা সাইট অ্যান্ড সাউন্ড তালিকাগুলো করেছে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, মূল তালিকার বাইরে আরেকটি তালিকা আছে। কারণ মূল তালিকায় ১৯৬৮ সালের পর আর কোনো ছবি স্থান পায়নি। ফলে ১৯৬৮ সালের পর মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো থেকে আরেকটি সেরা ছবির তালিকা করা হয়েছে।
সাইট অ্যান্ড সাউন্ড ১৯৫২ সাল থেকে প্রতি ১০ বছর পর পর বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্রের একটি জরিপ করে। এখানে ভোট নেওয়া হয় বিশ্বের বড় বড় পরিচালক ও সমালোচকদের। এ কারণে এই জরিপটির একটি গ্রহনযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। ১৯৫২ সালের প্রথম জরিপে সেরা চলচ্চিত্র হয়েছিল ভিত্তোরিও ডি সিকোর বাইসাইকেল থিভস। এরপর থেকে প্রতিবারই প্রথম স্থানে ছিল অরসেন ওয়েলস-এর সিটিজেন কেইন।
সুনীলের জন্য মন খারাপ
১. লীসা আমাদের বন্ধু, তখন আমরা স্বনন নামে একটা আবৃত্তি সংগঠন করি। রূপাদি আমাদের আবৃত্তি গুরু, কিন্তু রিয়ার্সাল করতাম শাহাজাহানপুরের লিসাদের বাসায়। ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, একদিন রিয়ার্সালে যাওয়ার আগে শাহবাগ থেকে কিনলাম সুনীলের তিন সমুদ্র সাতাশ নদী।
লীসা বইটি নিয়ে লিখলো
মাসুম ভাইয়াকে,
অনেক অনেক শুভেচ্ছা
-লীসা
তারপর বইটি নিয়ে তুষার লিখলো নিজের নাম। এরপর দুই বোন মিষ্টি ও টুম্পা লিখলো তাদের নাম। আমাদের সঙ্গে আবৃত্তি করতো অদিতী, অদিতীর মা, মানে খালাম্মা হয়তো আমাদের বিশ্বাস করতেন না, তাই সঙ্গে বুয়াকে দিয়ে দিতেন, তাই তুষার লিখলো অদিতীর বুয়ার নাম, নান্টু দা লিখে দিলেন রূপাদির জামাই চক্রেস ঘোষ ও সেই সময়ে হিট নায়িকা অঞ্জু ঘোষের নাম।
৮৮ সালের সেই বইটা এখনও আছে। এক নতুন ধরণের ট্রাভেলগ লিখতেন সুনীল। মূলত তার আমেরিকায় যাওয়া নিয়ে বইটি।
এরপরে সুনীলে আবার ডুব দেই ছবির দেশে কবিতার দেশে বইটি নিয়ে। আমার প্যারিস যাওয়ার স্বপ্ন দেখায় বইটি। বইটি পড়ে মনে হয়েছিল প্যারিস আমাকে একবার যেতেই হবে। অনেক বছর পড়ে যখন প্যারিস যাই সঙ্গী ছিল সুনীলের ছবির দেশে কবিতার দেশে।
সেই সুনীল নেই
২.
আপেল খাইতে মঞ্চায়
১.
ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল
জীবনানন্দ দাশ
ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল,-
ডালিম ফুলের মতো ঠোঁট যার রাঙা, আপেলের মতো লাল যার গাল,
চুল যার শাঙনের মেঘ, আর আঁখি গোধূলির মতো গোলাপী রঙিন,
আমি দেখিয়াছি তারে ঘুমপথে, স্বপ্নে-কত দিন!
মোর জানালার পাশে তারে দেখিয়াছি রাতের দুপুরে-
তখন শুকনবধু যেতেছিল শ্মশানের পানে উড়ে উড়ে!
মেঘের বুরুজ ভেঙে অস্তচাঁদ দিয়েছিল উঁকি
সে কোন্ বালিকা একা অন্তঃপুরে এল অধোমুখী!
পাথারের পারে মোর প্রাসাদের আঙিনার পরে
দাঁড়াল সে- বাসররাত্রির বধু-মোর তরে, যেন মোর তরে!
তখন নিভিয়া গেছে মণিদীপ-চাঁদ শুধু খেলে লুকোচুরি,-
ঘুমের শিয়রে শুধু ফুটিতেছে-ঝরিতেছে ফুলঝুরি, স্বপনের কুঁড়ি!
অলস আঢুল হাওয়া জানালায় থেকে থেকে ফুঁপায় উদাসী!
কাতর নয়ন কার হাহাকারে চাঁদিনীতে জাগে গো উপাসী!
কিঙ্খারে -গালিচা খাটে রাজবধু-ঝিয়ারীর বেশে
কভু সে দেয় নি দেখা- মোর তোরণের তলে দাঁড়াল সে এসে!
স্যালুট সাফায়াত জামিল
৩ নভেম্বর ১৯৭৫। মোশতাক-ফারুক-রশীদদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভ্যুত্থান করেছিলেন বিগ্রেডিয়ার খালেদ মোশারফ। এই অভ্যুত্থানে তাঁর প্রধান সঙ্গী ছিলেন ৪৬ ব্রিডেগের প্রধান কর্নেল সাফায়াত জামিল। এই অভ্যুত্থান না হলে বাংলাদেশের অন্যরকম হতো। ফারুক-রশীদদের হাতে থাকতো বাংলাদেশ।
৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানই সম্ভবত বাংলাদেশের একমাত্র অভ্যুত্থান, যার উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল ছিল না। মূল উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। যদিও শেষ পর্যন্ত সফল অভ্যুত্থানকে অনুকূলে আনতে পারেননি খালেদ-সাফায়াত-হাফিজ-ইকবাল-গাফফার-নাসির-লিয়াকত-তাজরা।
পালটা অভ্যুত্থান করেন কর্ণেল তাহেররা। এতে আবার বাংলাদেশ ইতিহাসের মোড় ঘুরে যায়। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে তাহেরের অভ্যুত্থানের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের।
তাঁদের সবার জন্মমাস আগস্ট
আগস্ট মাসের জন্মদিনের তালিকাটা খুব সংক্ষেপে একটু বলি। সবার আগে বলতে হয় রহস্য সিনেমা জগতের সেরা মানুষটির কথা—আলফ্রেড হিচকক। আগস্টেই জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। আরও একজন পরিচালকের নামও বলতে হয়। তিনি নিজেও অনেকবার হিচককের প্রভাবের কথা বলেছেন। একাধিক সিনেমাও বানিয়েছেন হিচককের আদলে। আলোচিত-সমালোচিত এই পরিচালক রোমান পোলানস্কি। তাঁরও জন্মমাস আগস্ট।
এবার দুজন অভিনেতার কথা বলি। এই দুজনকে ছাড়া সিনেমা জগতের ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। তাঁদেরও জন্মমাস আগস্ট। একজন হলেন রবার্ট ডি নিরো, আরেকজন রবার্ট রেডফোর্ড। মজার ব্যাপার হলো, দুজন আবার সিনেমাও বানিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে রবার্ট রেডফোর্ড অনেকটাই এগিয়ে। তিনি সেরা পরিচালকের অস্কারও পেয়েছেন। তবে অভিনয়ের দিক থেকে নিঃসন্দেহে রবার্ট ডি নিরো অনেক এগিয়ে।
পাঁচ ভাষার পাঁচ ক্লাসিক সিনেমা
পাঁচ ভাষার পাঁচ ক্লাসিক সিনেমা। ইদানীং বেছে বেছে ছবি দেখি। ফলে ভাল ভাল ছবিই দেখা হয় বেশি। দেখার তালিকা থেকে বেছে নেওয়া পাঁচ ক্লাসিক।
............................................................................................................................................................................................................................
১. এ ম্যান এসকেপড: ফ্রেঞ্চ মুভি, পরিচালক বিখ্যাত রবার্ট ব্রাসো, যিনি ভিন্নধারার ছবি করিয়েদের অন্যতম পুরোধা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ঘটনা। ফ্রান্স নাজীদের দখলে। নাজী আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে গিয়ে ধরা পরেন ফনটেইন। যেতে হয় জেলে। সেখান থেকে পালানোর কাহিনী এ ম্যান এসকেপড।
পালানো নিয়ে একবার ১০ ছবির একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা পড়ে অনেকেই বলেছিলেন, জেল পালানোর সেরা ছবিটিই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তারপর সংগ্রহ করলাম মুভিটা।
৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থান, মেজর নাসিরের বই ও অনেক অজানা কথা
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর-এই তিনটি দিন নিয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ। এ নিয়ে কিছু বইও আছে। সাফায়াত জামিল ৪৬ ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন। আবার ৩ নভেম্বরের অন্যতম অভ্যুত্থানকারী। তিনি একটি বই লিখেছেন। সেখানে তিনি অনেক ঘটনার কথা বলেছেন। কর্ণেল হামিদ কোনো অভ্যুত্থানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। তিনি পাশে থেকে বা কাছে থেকে দেখেছেন। ব্রি. সাখাওয়াতও অভ্যুত্থান কাছ থেকে দেখেছেন। তিনিও একটা বই লিখেছেন। মে.জে. মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) কিছু লিখেছেন, তবে তিনি সেসময়ে দূরেই ছিলেন। ‘সৈনিকের হাতে কলম’ লিখেছেন নায়েক সুবেদার মাহবুবর রহমান, তিনি বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সভাপতি ছিলেন। তিনি যেসব অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, তা এক কথায় ভয়াবহ। কিন্তু কোনো বইতেই আমি খালেদ মোশারফের অভ্যুত্থানের অনেক কিছুই জানা যায় না। অথচ এই অভ্যুত্থানটি সফল হলে আজ বাংলাদেশের চেহারা অন্যরতম হতো।
ব্যাংকক যাত্রা নিয়া কথাবার্তা
..........................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................
১.
আমাদের সবার বন্ধু প্রতুলের খুব সখ ব্যাংকক যাবে। সেই ছোটবেলা থেকে ব্যাংককের কত কত গল্প শুনে আসছে। এখন বড় হয়েছে, কিন্তু সখটা রয়েই গেছে। বিশেষ করে, শরীরটা একটু ম্যাজ ম্যাজ করলেই মনটা ব্যাংকক ব্যাংকক করতে থাকে।
একদিন হাতে কিছু টাকা পয়সা আসলো। প্রতুল ব্যাংকক যাওয়ার ইচ্ছা আর লুকিয়ে রাখতে পারলো না। বউকে যেয়ে একটু ভয়ে ভয়ে বলেই ফেললো ব্যাংকক যাওয়ার কথা। বউ শুনে খুশী। কাপড় গোছগাছ করতে শুরু করলো। প্রতুল এবার বললো, সে একাই যাবে, বউকে নেবে না।
প্রতুলের বই আগুনমাখা দৃষ্টিতে প্রশ্ন করলো কেন বউকে নেবে না?
প্রতুল নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে বললো, 'ইয়ে মানে, টিফিন নিয়ে কেউ কি রেস্তোরায় যায়?'
রকমারি
১.
ফেসবুকে বইপড়ুয়া নামে একটা গ্রুপ আছে। এই গ্রুপে যেতে ভয় লাগে। হীনমন্যতা জাগে। সবাই এতো এতো বই পড়ে যে নিজেকে ওখানে রাখতে অস্বস্থি হয়। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরণের বই আছে। সেসব বই অনেকেই নিয়মিত পড়েন, আলোচনাও করেন। অনেকের বিশ্লেষণ ক্ষমতা দেখেও আমার ঈর্ষা হয়। তাই পারতপক্ষে আমি ওই গ্রুপে যাই না। এর নাম যদি হতো বউপড়ুয়া গ্রুপ আমার সেখানে পড়ে থাকতে সমস্যা হতো না।
(বইপড়ুয়া গ্রুপের সঙ্গে আমার পরিচয় করে দিয়েছিল নজরুল। নজরুলরে ধিক্কার)
এরমধ্যে আবার সর্বনাশ করেছে রকমারি ডটকম। অনলাইনে বই কেনার সাইট। কোথাও যেতে হবে না, ঘরে বসেই বই। খরচ মাত্র ৩০ টাকা। গরীব মানুষের টাকা খরচের নতুন একটা জায়গা হয়েছে এই সাইটটি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী দিয়ে হাতেখড়ি। তারপর আবার রকমারিতে ঢুকি, তৃঞ্চার্তের মতো বইয়ের তালিকার দিকে তাকিয়ে থাকি, অর্ডারের তালিকায় নতুন নতুন বই যুক্ত হয়, টাকার দিকে তাকাই, তালিকা কাটছাট করি, ফাইনাল অর্ডার দিতে দেরি করি। একসময় দিয়েই দেই।
রকমারিতে অনেক আগে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যাও কম নয়। আমার আগ্রহ এখানেই। এসব বই এখন আর চোখে পড়ে না, তাই কেনাও হয় না। কিন্তু রকমারিতে ঠিকই পেয়ে গেলাম।
২.
দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার পদ্মা
কিছু করার নাই। মানিক বন্দোপাধ্যায় সেই কবে পদ্মা নদীর মাঝি লিখেছিলেন। উপন্যাসের নায়ক বা ভিলেন যাই বলেন, তার নাম হোসেন মিয়া। সেই থেকে পদ্মা নদী নিয়ে সব গল্পের নায়কের নামই হোসেন মিয়া। তবে খানিকটা আধুনিকতা দিতে এই গল্পের নায়ক হোসেনের নামের শেষে মিয়া না লিখে নামের শুরুতেই সৈয়দ লেখা যেতে পারে।
আমাদের এই হোসেন মিয়া আবার রাজনীতি করেন। তার এলাকা পদ্মা নদী থেকে একটু দূরে। ফলে ঠিক সেতু না, সাকো দিয়ে পেশা শুরু করেছিলেন তিনি। তখন দেশটি স্বাধীন হয়েছে বেশি দিন হয়নি। তাই স্থানীয় এক নির্বাচনের আগে হোসেন মিয়া একটা জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিলেন। বলা যায় পাঁচ মাইল দীর্ঘ প্রতিশ্র“তি দিলেন। সবশেষে বললেন, নির্বাচিত হলে তিনি এই এলাকায় একটি সাকো বানিয়ে দেবেন, যাতে গ্রামবাসী সহজে খাল পারাপার করতে পারেন। গ্রামের এক বোকা লোক কাচুমুচু হয়ে বললো, আমাদের এখানে তো খালই নেই, সাকো বানাবেন কেমনে? আমাদের গল্পের হোসেন মিয়া এবার গলা ফুলিয়ে বললো, প্রয়োজনে খাল বানানো হবে আগে, তারপর সেই খালের উপর হবে সাকো।
কে এই আবুল
তিনি একসময় টিসিবির একজন সামান্য কর্মচারী ছিলেন। ১৯৭৪ সালের ঘটনা। তখন সব কিছু রাষ্ট্রায়াত্ব, টিসিবি ছিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সব ধরণের পণ্য আমদানি করতো এই সংস্থাটি, রপ্তানিও করতে হত টিসিবির মাধ্যমে।
দুর্নীতিটি ছিল গম নিয়ে। দুর্নীতির ব্যাপকতা এতোটাই বেশি ছিল যে, শেষ পর্যন্ত চাকরি চলে যায় তার। বঙ্গবন্ধুর সময় সরকারি চাকরি হারানো এই লোকটির নাম ছিল সৈয়দ আবুল হোসেন। চাকরি চলে গেলেও লোকটির কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছিলেন টিসিবিতে চাকরি করতেই। সেই টাকা দিয়ে একটা প্রতিষ্ঠান চালু করলেন। নিজের নামেই প্রতিষ্ঠান। নাম-সৈয়দ আবুল হোসেন কোম্পানি লিমিটেড-সংক্ষেপে এসএএইচসিও বা সাকো। ১৯৭৫ সালে এর প্রতিষ্ঠা।