প্রিয়তমেষু - ২
"এই বরফপথ, এই কঠিন রাত ,
তোমার পুরোনো অজুহাত...
এই আলোর নিচে কাঁপতে থাকা
ছায়ার শিকড় ছিঁড়তে চাই!
এই উল্কাপাত, এই বিশ্রী রাত,
আচমকা এই গোপন আঁতাত...
সব ধ্বংস হওয়ার আগেই আমি
তোমার চোখে ভিজতে চাই!
আর কেউ তোমার ভাষাতে,
সমুদ্রের ভালোবাসাতে
ফিরিয়ে নিয়ে গেলো তোমায়,
আহত ঝিনুক সৈকতে।
আর চিরাচরিত জীর্ণতায়,
আবার প্রেমের তীক্ষ্ণতায়....
সব রেকর্ড করা থাকবে তোমার
অন্তর্বর্তী শূণ্যতায় !!
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও,
সেটাই সত্যি ....
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও,
সেটাই সত্যি!!"
প্রিয়তমেষু ,
ভালো আছো তো? আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখে লাভ নেই
অবশ্য। ওই নামে এখানে কেউ থাকে না। তুমি বরং দুপুরের
খটখটে রোদের কাছে চিঠি লিখতে পারতে।
অথবা .. তুলসী তলে জ্বালানো সাঁঝবাতির কাছে।
ডাকপিয়নদের আলসেমির কল্যাণে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েই নাহয়
পৌঁছে যেতো আমার কাছে!
ভালো আছি.... আমাদের পাশ
কাটিয়ে যাওয়া আমি ভালো থাকাকেই ঠিক মনে করতাম,
এখনো সে তত্ত্বে ব্যতিক্রম হবার মতো ঘটেনি কিছু।
বারান্দায় রাখা গাছগুলো অতিরিক্ত যত্নের
ধকল সামলাতে না পেরে মরে গেছে বোধহয়।
দিনগুলো ভয়ানক ব্যস্ততার...
আমি প্রাণপণে ব্যস্ততাকে ওভারটেক করতে গিয়ে গাড়ি ছাড়াই
খাদে পড়ে যাচ্ছি!
অক্টোপাসের মতো সবকিছু আঁকড়ে ধরে রাখছে আমাকে,
আজকাল অক্টোপাস খেতে দেখি অনেককে।
আমি চেষ্টা করে দেখিনি অবশ্য!
শীত যাই যাই করছে...তবু চাদরটা আরেকটু
টেনে দেবার মতো কুয়াশাটা গায়েব হয়নি এখনো..
আমি খালি হয়ে যাওয়া চায়ের কাপ হাতে ভোরের অপেক্ষায়
আছি....
ভ্রান্তিবিহীন ভোর!
প্রিয়তমেষু,
একটা দিন তো 'অপ্রিয়' হয়ে থাকতেই পারো!
একটা দিন কষ্ট হয়ে থাকো,
নৈরাশ্যের গল্প হয়ে থাকো অথবা অবাঞ্চিত অপেক্ষা!
একটা দিন শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়ায় পঞ্চমীর চাঁদ
ডুবে যাক.....
প্রদীপের নিচে জমা থাকুক, কয়েক জন্মের আধাঁরের
অভিমান!
প্রিয়তমেষু ,
এই ঝগড়াটে শহরটার তাপমান আচমকাই কমে গেছে জানো!
ইনসমনিয়াকগুলো সব রাস্তার বেওয়ারিশ
কুকুরগুলোকে গালাগাল দিতে দিতে ঘুমের ওষুধের পাতা শেষ
করার বদলে লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমের শহরে নিরুদ্দেশ।
মোড়ের চায়ের দোকানে ভীড়টা বেড়ে গেছে খুব...
আমি অবশ্য চা খেতে গিয়ে এখনো ঠোঁট পুড়িয়ে ফেলি!
এবার শীতের পাখি দেখতে যাওয়া হয়নি। ভোরের কুয়াশায়
হারিয়ে যেতে পারিনি বলেই নক্ষত্রবিহীন রাতটা পড়ার
কিংবা গল্পের বইয়ের পাতা উল্টানো ছাড়া আমার বিশেষ
কোনও ব্যস্ততা নেই।
আটপৌরে শাড়ির মতো আমার হাতের লেখাও খারাপ
হয়ে গেছে জানো!
আচ্ছা , আমার জন্য রাখা কাঁচের
জারভর্তি জোনাকি পোকারা ভালো আছে?
প্রিয়তমেষু,
এতো আলোর ভীড়ে ঘুমোও কী করে বলো তো!
তোমার জানালার কাঁচে জমে থাকা শিশির ,
দেয়ালে ডাকতে থাকা একঘেয়ে তক্ষক
অথবা পাঁচ মিনিটকে তিনশো সেকেন্ড
করে দেয়া ঘড়ির কাটাগুলো ঘুমুতে যাক!
তুমি অতন্দ্র থাকো, অব্যাখ্যনীয় থাকো!
পরিশিষ্টঃ তোমার জানালার ভাঙা কাঁচটা সারিয়ে নিও। শীতের
ভোরে কুয়াশারা অনাহূত অতিথি হয়ে যায় খুব!
চমৎকার চিঠি, ভালো লাগলো অনেক।
গানটা অনেক সুন্দর, মুভিটাও দেখে নিয়েন সময় পেলে। অসাধারন।
অনেক ধন্যবাদ দাদা
অনেক ধন্যবাদ দাদা
অসাধারণ চিঠি!
মন্তব্য করুন