ভ্যাট দেব না,গুলি কর
৬ টাকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। ক্লাস ৯:৩০ এ। বাস ভাড়া ৭
টাকা, রিক্সা ভাড়া ৩০। সকালের কড়া রোদে ৪৫ মিনিট
হেটে মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গিয়েছিলো। ঢাকায় সাধারনত
কেউ সাপ্লাই পানি খায়না। সেদিন টেপের পানিই
খেয়েছিলাম। বাকি দিনের কথা বলা বাহুল্য। গায়ে দিতাম
এডিডাসের টি শার্ট, প্রবাসী বোনের কল্যানে।
বাবার প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা প্রায় অর্ধেক শেষ।
প্রতিদিন হিসাব করতাম আর কত সেমিস্টার লাগবে, কত
টাকা লাগবে। স্ট্যাটিস্টিকসে পেলাম "ডি+"। মাথায় হাত।
রিটেক করতে গেলে আরো ১২ হাজার টাকার মামলা। এক
সাবজেক্টেই সি জি পি এ নেমে গেল। উপায় নেই। করা
যাবেনা রিটেক।
অনেক রাত কেটেছে সস্তা মেসের বুয়ার রান্না খেতে না
পেরে উপোস থাকা।
২০১০ হঠাৎ ৪% ভ্যাটের নোটিস, নেমে গেলাম বড় ভাইদের
সাথে, বড় ভাইরা মার খেলেন, জেল খাটলেন, সাসপেন্ড
হলেন। আমরা মিছিলের পিছনে থেকে কোনমতে লাঠিচার্জ
থেকে রক্ষা। বড় ভয় ছিলো আমিতো ঢাকায় একা। মহাখালি
অবরোধ হলো, ভ্যাট বাতিল হলো। বড় ভাইরা ছাড়া পেলেন,
পেলেন সম্মান। সবাই গত পাঁচ বছর কষ্টে, বা বাঁচিয়ে চলে
চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অাবার আবার হাজারো ছেলে
সারাদিন না খেয়ে কাটিয়ে দিবে। পেনশনের টাকা-কত
সেমিস্টার- কত ক্রেডিট- কত মাসের থাকা খাওয়া খরচ-৭.৫%
ভ্যাট। ব্যাচেলরটা শেষ হবেতো? হবেতো স্বপ্ন দেখা -
বাঁচার? হবেতো দশ হাজার বেতনের চাকরি? এসব ভেবে
আবারো নর্ঘুম কাটাবে হাজারো ছেলে মেয়ে।
স্বপ্নচারী যৌবন প্রদীপ তোমরা, জ্বালিয়ে যাও অালো।
থেমানা। রক্ত ঝরেছে ২০১০ এ, রক্ত ঝরবে ২০১৫ তেও। তবু
মাথা নোয়াবার নয়। ব্যাচেলর শেষ করতে না পারার
গ্লানিতে মরার চাইতে, গুলি খেয়ে মরা ভালো। তবেই তুমি
বেঁচে যাবে। বাঁচবে আমার মত।
.
.
.
০১- ভ্যাটের টাকা ছাত্রদের কাছ থেকে ১ পয়সাও নেয়া
যাবে না। আগের সকল ভ্যাটের টাকা ফেরত দিতে হবে।
.
০২- আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর কোন আইন
নেই। তারা নিজেরাই আইন বানায়! UGC নামক একটা কিছু
আছে যারা কি কাজে লাগে এটা আমাদের বোধগম্য নয়!
কোন আইন না থাকার ফলে প্রতি নতুন সেমিস্টারে একটা
মোটা অংকের টাকা বাড়িয়ে নেয়া হয়! কোন কারন ছাড়াই
বাড়ানো হয়। আইন করে নিদিষ্ট একটা টাকার অংক ফিক্সড
করতে হবে।এর বেশি টাকা নেয়া যাবে না।
.
০৩- কোন হিডেন চার্জ, অমুক ফি,তমুক ফি নেয়া যাবে না।
একমত...
ঠিকাছে
মন্তব্য করুন