গল্প: সেদিনও কিভাবে কিভাবে যেন ঠিকই
১.
লিফটের ঝকঝকে কাঁচে নিজের চেহারাটা নিবিড়ভাবে একটু পর্যবেক্ষণ করে নিই। সঙ্গের মানুষগুলোকে খানিকটা উপেক্ষা করেই গালের মাঝ বরাবর উঁকি দিতে থাকা ব্রণটাকে একটু টিপে দেখি। নাহ্ এখনো শক্ত হয়ে আছে। কিছু বলা যাবে না। বললে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যাবে। অবশ্য আমি জানি, ব্রণগুলো ঠিক ইন্টারভিউয়ের দিন ছাড়া আর কোনোদিন ওঠে না। তাই এ নিয়ে আফসোস করে লাভ নেই। স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে মেনে নিয়ে অগ্রসর হতে হয়।
চুলগুলোও একটু দেখে দেখে ঠিক করে নিলাম। এরপরে হয়তো আর সে সুযোগ মিলবে না। এসব কর্পোরেট হাউজের ভাবগতিক সবসময়ই আমার কাছে বড় দুর্বোধ্য। হয়তো কোনো মিটিং রুমের মতো জায়গায় ঘন্টাখানেক সটান বসে থাকার পর ডাক আসবে জনাকয়েক লোকের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার। আরেকবার চুল ঠিক করার সুযোগ না পাওয়াই স্বাভাবিক।
যাচ্ছিলাম বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানীর (বিআইএফসি) অফিসে, চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে। অবশ্য অর্থনীতি নিয়ে আমার কোনো উচ্চতর পড়াশোনা নেই। কাজ করারও নেই কোনো পূর্বাভিজ্ঞতা। ওরা এইচআর/পিআর বিভিন্ন শাখায় এক্সিকিউটিভ/ অফিসার/ ম্যনেজার নানানরকম পোস্টে লোক চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো। সেখান থেকে দেখে দেখে যেটায় যেটায় ক্রাইটেরিয়া মেলে এ্যপ্লাই করে দিয়েছিলাম। এরপর সেটা ভুলে-খেয়ে-হজম করে-বের করে দেয়ার পর একদিন সকালে যখন বেলা করে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছি তখন ফোন বাজলো ক্রিং ক্রিং।
২.
-হ্যলো।
-হ্যাঁ?
-আপনার নাম আজাদ?
-হ্যাঁ।
-আপনি কি বিআইএফসিতে কোনো চাকুরীর জন্য এ্যপ্লাই করেছিলেন?
-না।
-তাহলে আপনার সিভি আমাদের কাছে এসেছে কিভাবে?
-চিন্তার কথা। এখন কি সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে নাকি ফোন রাখবো?
-আমি বিআইএফসি থেকে মালতী বলছি। আপনাকে আগামী মঙ্গলবার আমাদের অফিসে আসতে হবে, সকাল ১১ টায়। ইন্টারভিউ দেবার জন্য।
-এটা কোনো কথা? সকাল ১১টাকে ধরা হয়, মানুষের গাঢ় ঘুম পরবর্তী আরামপূর্ণ নিবিড় ঘুমের সময়। অনেকটা পানি থেকে ডুব দিয়ে ওঠার ঠিক আগ মূহুর্তের মতো। যখন মানুষের শরীর নিঃসাড় পড়ে থাকে কিন্তু সূর্যালোকময় নতুন একটি দিনে নতুন করে আরেকবার উদ্ভাসিত হয়ে উঠবার জন্য ধীরে ধীরে প্রস্তুত হয়। আচমকা একদিন সে সময় ঘুম বাদ দিয়ে ইন্টারভিউ দিতে চলে যাওয়া কি ঠিক হবে? নিয়ম-রুটিন বলেও তো একটা ব্যপার আছে, না কি?
-হুম। সেজন্য এখন তাহলে আমাকে কি করতে হবে?
-একটু পেছানো যায় ইন্টারভিউটা? ধরেন বিকাল পাঁচটা।
-তারচে' আপনি নাহয় না-ই এলেন। এত কষ্ট যখন।
-হুম্, বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি শুধু আমাকে বলেন আমার আগে কয়জনের ইন্টারভিউ হবে। তাহলেও আমি বুঝতে পারবো আসলে ক'টায় উপস্থিত হতে হবে।
-ঠিক ১১টায় উপস্থিত হলে তবেই আপনার ইন্টারভিউ নেয়া হবে। নাহলে কিছু করার নেই।
-এত কড়াকড়ি? তাহলে আর কেমনে হয়? আচ্ছা, আমি নাহয় একদিন ইন্টারভিউ দিয়ে সটকে পড়লাম। আর গেলাম না। কিন্তু আপনারা যারা প্রতিদিন সকালে রুটি-রুজির জন্য এ কষ্ট স্বীকার করছেন বাধ্য হয়ে, তাদের কিভাবে চলবে?
-কি আর করা বলেন। আপনিই কেবল বুঝলেন। এমনকি যারা এখানে নিত্যদিন এ কষ্ট করছে তারাও কেউ কোনোদিন বুঝলো না। যাক্ মঙ্গলবার আসছেন তো, না কি?
-ফিফটি ফিফটি চান্স। ঘুমের ওপর নির্ভর করছে সবকিছু।
ওকে, আশা করি দেখা হবে। বাই।
-টা টা।
কিন্তু আমি খুব ভালো করেই জানি ভাব-ভঙ্গি ধরে লাভ নেই। চাকুরী একটা সত্যিই দরকার। ফ্রি অভ কস্ট বাপের হোটেলে গড়াগড়ি দিয়ে আর কতদিন? মঙ্গলবার সকালে তাই খানিকটা পেরেশানি নিয়েই ঢুকলাম ৬৩ নং দিলকুশার অফিসটায়। এবং ঢুকেই চমকে যেতে হলো। অনেক দিন পর অর্নিলাকে দেখলাম। প্রায় দুই বছর হবে।
৩.
মাঝে মাঝে একটা ব্যপার হয়। ঝিলিক দিয়ে জীবনের পুরোনো সব স্মৃতি মনে পড়ে যায়। এক মুহূর্তের ভেতরে।
অর্নিলাকে দেখে আমার দিনে-দুপুরে হঠাৎ সেরকম হলো। মনে পড়ে গেল, আমার বিশ্ববিদ্যালয় বেলার হারানো সেই জীবনের কথা। একদিন ঠিক করেছিলাম যে যাই ভাবুক, আমরা বিয়ে করবো। সে সিদ্ধান্তটা নিতে পেরে সেদিন ওর সে কি খুশি!
আসলে একজন মানুষের সঙ্গে একটানা পাঁচ বছর, প্রতিটি মূহুর্তে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকা খুব সহজ কথা নয়। কাজটি আমরা দু'জন এত যত্নসহ করতাম, যে পৃথিবীর আর সব ভালবাসাকেই তুচ্ছ মনে হতো। মনে হতো কেউ জানেই না কিভাবে ভালবাসতে হয়। আমরা ঠিক করেছিলাম; শুধু বিয়ের আগের অনিশ্চিত সময়ে প্রেম করলেই চলবে না, বিয়ের পরেও প্রেম করতে হবে। অটুট নিশ্চয়তার মুখে দিনে-দুপুরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে প্রেম করতে, সত্যি সত্যি একজনের ভেতর আরেকজন ডুবে থাকতে কেমন লাগে সেটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
আমি বয়সে বছর দুয়েকের ছোট হওয়ায় ওর বাসায় মানলো না কোনভাবেই। দুর্ভাগ্যবশত সেই সালের শুরুর দিকে আমার ঈর্ষণীয় পত্রিকার চাকুরীটাও ছুটে গেল হাত থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে বেরিয়ে বেকার হয়ে পড়লাম। ও আগে থেকেই চাকুরী করতো। আমার চাকুরী চলে যাওয়ার পর থেকে হঠাৎ করে ওর চাকুরীর ব্যস্ততা বেশ খানিকটা বেড়ে গেল। অনেক দিন ধরেই আমরা আর আগের মতো প্রতিদিন দুপুরে ভাত খেয়ে আইবিএর দেয়ালে হেলান দিয়ে সামনের দিকে দুই পা মেলে বসে থাকতাম না। ধীরে ধীরে এক সময় সেটা বন্ধই হয়ে গেল।
এরমধ্যে শেয়ার বাজারে ভয়ংকর এক কেলেংকারী ঘটে যাওয়ায় আমার মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই ধরাশায়ী হয়ে পড়লেন। আমার এর-ওর কাছ থেকে ধার-দেনা করে যোগানো পাঁচ লাখ টাকা তো স্রেফ উবে গেল প্রথম তিনদিনের ধাক্কায়। কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই একদিন দেখলাম যৎসামান্য লাভ আর অনেক কষ্টার্জিত মূলধন, দুইটাই গায়েব। একদম ভোঁ ভোঁ।
এ খবরটা যেদিন মেয়েটিকে আমি দিই, সেদিন সে খুব স্বাভাবিক ব্যবহার করেছিলো। আমরা একসঙ্গে বেইলী রোডে এসে ফুচকা খেয়েছিলাম। বেশ খানিকক্ষণ রিকশায় মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার এলাকায় ঘুরাঘুরি করে ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে এসেছিলাম। এরপর থেকে আস্তে আস্তে আমাদের মোবাইলে কথা বলাও কমে যেতে থাকে।
সে সময় অকারণেই আমাকেও খুব অভিমান পেয়ে বসে। নিজেকে সবার কাছে অপাংক্তেয় মনে হওয়া শুরু হয়। শুধুমাত্র অর্নিলার নির্লিপ্ত আচরণ আমার কাছে সারা পৃথিবীর সম্মিলিত নিরাসক্তি হয়ে ধরা দিলো। অনেকদিন অভিমান করে থাকলাম। আট-ন' মাস তো হবেই। তারপর একদিন ঠিক করলাম, অনেক হয়েছে এবার ফিরে যাই।
৪.
বেশ ক'দিন অর্নিলার পুরোনো নাম্বারটায় খুঁজে না পেয়ে, একদিন ওর বাসায় ফোন করলাম। জানলাম ওরা নাকি সেগুনবাগিচা ছেড়ে জিগাতলা চলে গেছে। ঠিকানা পেলাম না। ফেসবুকে ঢু দিই না অনেকদিন। সেখানে গিয়ে দেখলাম মেয়েটির প্রোফাইলই নেই। আস্তে আস্তে চারিদিক থেকে একটা শীতল আতংক চেপে ধরা শুরু করে আমাকে।
পরদিন ভরসকালে ওর অফিসে দৌড়ালাম। ততদিনে উন্মাদনার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছি। বার বার মনে হচ্ছে, এ জীবন থেকে কিছু একটা হারিয়ে গেছে। অফিসটায় ওরই পূর্ব পরিচিত এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পেলাম, বহু আগেই চাকুরি ছেড়ে চলে গেছে সে। তবে সে কলিগ মহাখালীর এক অফিসের ঠিকানা দিয়ে বললো, সেখানে অর্নিলাকে পাওয়া যেতে পারে।
এবার দেখা হলো। দীর্ঘ এগার মাস পর। ওর মধ্যে কোনো ধরনের ভাবান্তর চোখে পড়লো না। আমরা বনানীর একটা ফাস্টফুডের দোকানে বসলাম।
সে আমাকে ওর বাসা পাল্টানো আর নতুন চাকুরী পাওয়ার ঘটনা বিস্তারিত বললো। তার বাবার সাম্প্রতিক পাগলামির বিষয় নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ হাসাহাসি করলো। অফিসের কলিগদের অনেকগুলো গল্প বললো এবং খাওয়া শেষ করে খুব সুন্দর করে বিদায় বলে চলে গেল। আমাকে বিলটা পর্যন্ত দেবার সুযোগ দিলো না। অবশ্য সুযোগ পেলেও সেদিন বিল দিতে আমি পারতাম কি না, জানি না।
অবাক হয়ে দেখলাম, মেয়েটির জীবনে যেন কোনকিছুই হয় নি। কুঞ্জবনের কোথাও একটি সবুজ পাতার বিচ্যূতিও ঘটে নি। একটা ছেলের সঙ্গে যে ও একবার পাঁচ বছর প্রেম করে বিয়ের পর আরো পাঁচ বছর প্রেমের প্রতিজ্ঞা করেছিলো, সেটা যেন বেমালুম ভুলে গেছে। এমনকি আমি কেমন আছি সেটাও জানতে চায় নি; শুধু একবার বলেছিলো, তুমি এত ভয়ানক রোগা হয়ে গেছ কিভাবে? খাওনা নাকি?
৫.
এরপরে মেয়েটির সঙ্গে এতদিন আর কোথাও দেখা হয় নি আমার। ইতোমধ্যে চাকুরী আর ব্যবসার প্যঁচপেচে পঙ্কিল পথে বার বার হোঁচট খেয়ে আমি প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সে সময় বন্ধুর মতো হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো যাদের চিরটাকাল উপেক্ষা করেছি, আমার সেই পরিবারের সদস্যরা। আস্তে আস্তে নিজের ভেতর থিতু হওয়া শুরু করি আবার।
খবর পেয়েছিলাম যেদিন ওর বিয়ে হয়ে যায়। সে যে নিজ উদ্যোগে আমাকে তার বিয়ের খবর পাঠায় নি- তাতে আমি খুশিও হয়েছিলাম। প্রাক্তনের বিয়ের দাওয়াত গ্রহণ করার মতো মানসিক শক্তি হয়তো আমার কখনোই ছিল না।
তবে সেদিন তার বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল জেনেও আমার কেন যেন খুব বেশি খারাপ লাগছিল না। খারাপ লাগাটা বোধহয় মনের কোনো এক গহীন অতলে চাপা পড়ে গিয়েছিলো। ওটাকে তুলে এনে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দেবার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু চেষ্টা হয়েই রয়ে গিয়েছিল সেটি। কোন কাজ হয় নি। মাঝখান দিয়ে কেরু কোম্পানি আমার কাছে প্রায় আড়াই হাজার টাকার বিস্বাদ হুইস্কি বিক্রি করে লাভবান হয়েছিল।
তারপর পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় অনেক জল গড়িয়েছে। গড়াতে গড়াতে তো সেদিন এসেই গেল যেদিন বিআইএফসিতে অর্নিলার সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হয়ে গেল।
৬.
সেদিন আমাকে দেখে অর্নিলা ভুত দেখার মতো চমকে গিয়েছিল। সম্ভবত আমার উচুঁ হয়ে যাওয়া গালের হনু দেখে। কিংবা দীর্ঘদিনের অযত্নে ভেঙ্গে পড়া শরীর দেখে। বেশ খানিকটা সময় দু'জন দু'জনকে প্রায় কিছুই বলতে পারি নি আমরা। তারপর একটু সম্বিত ফিরতে অর্নিলাই প্রথম কথা বলেছিল।
-কেমন আছ?
-ভালো।
-একি অবস্থা হয়েছে তোমার?
অর্নিলার এ কথার জবাবে প্রথমে কিছু বলি নি আমি। উত্তর না পেয়ে সে আবার একই কথা জিজ্ঞেস করেছিল, একি অবস্থা হয়েছে তোমার আজাদ?
প্রশ্নটা করার সময় ওর গলা দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল ছোট্ট একটা হাহাকার, আর গাল দু'টো দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিলো দু'ফোঁটা অশ্রুজল। দেখে-শুনে আমার বুকটা ভীষণ মুচড়ে উঠেছিল সেদিন।
আগে ওর বিয়ের খবর শুনে আমার খুব বেশি কষ্ট হয় নি, কিন্তু সেদিনের ওর দু'ফোঁটা চোখের জল আমার ভেতরকার সবকিছুকে একেবারে গুড়িয়ে রেখে গিয়েছিল।
সেদিনও কিভাবে কিভাবে যেন ঠিকই এক বুক ভর্তি হু হু করা বাতাস সঙ্গে নিয়ে আমি দিনশেষে বাসায় ফিরে আসতে পেরেছিলাম। জীবনটা খুবই দুর্বোধ্য, তাই না?
---
(প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের 'একজন ক্রীতদাস' গল্পের ছায়া অবলম্বনে।)
মীর, একটা কথা। প্রায় এ গল্পটার কাছাকাছি একটা গল্প আমি একটা আবৃত্তির ক্যাসেটে শুনেছি।
বুঝতে পারলাম না, এতো মিল হলো কি করে দুটোতে। এমনকি বিয়ের কার্ডের কথাটাও সেটাতে ছিল।
রাগ করেননিতো?
কান্ট মাইন্ড অন ইয় হানি, নেভারেভা্
। হতেই পারে। বিষয়বস্তু বা গল্পের কোনোকিছুই এক্সক্লুসিভ নয়। পৃথিবীতে এ ধরনের ঘটনা অসংখ্যবার ঘটেছে। তবে বিয়ের কার্ডের কথাটা কোন্ লেখায় পড়েছিলাম মনে করতে পারছি না।
বিয়ের কার্ডের বিষয়টা হুমায়ুন আহমেদের কোনো এক লেখায় পড়েছিলাম, সেটা মনের ভেতরে থেকে গিয়েছিলো এবং সচেতনভাবে ব্যবহার করেছি। কথাটা সুন্দর তাই।
এবং কাছাকাছি হয়ে যাবার জন্য দুঃখিত নই
আর ইয়ে, "রাগ করোনিতো?" হবে মনে হয়।
'যদিও জেনেছি বিচ্ছেদে ভালোবাসা থাকে অমলিন', কিন্তু হ্যাপি এন্ডিং দেখতে ভালো লাগে।
)এর মনের কথা। মিয়াভাইয়ের লেখা ভালু পাইলাম
শুভেচ্ছা থাকলো।
এইটা এই ব্লগের সবচে' দুব্বল লেখক(চামে নিজেরে লেখক কয়া নিলাম
শুভেচ্ছা ধইন্যাপাতা সহকারে গৃহীত হইলো।

টেস করি আমিও দিতারি নাকি :ধইন্যা পাতা:
মিলে গেল ভীষন ভাবে মিলে গেল।
সুন্দরী বান্ধবীও?
খুব খুশি, হ্যাঁ?
আরো দিবো
গল্পটা পড়ে অবাক হলাম । হুমায়ুন আহমেদের হুবহু এইরকম একটা গল্প আছে।
একদম হুবহু বলে দেয়া বোধহয় ঠিক হচ্ছে না আপু। আইডিয়াটা ইউনিক না, এরকম লেখা আমিও পড়েছি। আর কিছু কিছু বিষয় কোথা থেকে নেয়া হয়েছে, সেটা তানবীরা'পুকে বলেছি।
আপনি কি অভিনেত্রী ফারহানা রহমান মিলি? হলে তো বটেই, না হলেও শুভেচ্ছা রইলো।
মিলি আপা, কাহিনীর মিল থাকতেই পারে। শিবরামের একটা গল্প স্বয়ং মার্ক টোয়েনের টম সয়্যার থেকে নেওয়া। জাফর ইকবাল "মাটিল্ডা"র কাহিনীকেই মলাটবন্দী করেছেন বাংলায়। যেটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তা হল "কী লিখছেন" ও "কিভাবে লিখছেন" এর মাঝে মেলবন্ধন।
হাসির ইমো বাদ। এবার একটি কমেন্ট করি-
কেম্নে লেখেন এত সুন্দর? সত্যিই ফান না, কিভাবে পারেন এত সুন্দর লিখতে?
কারণ একজন হাতুড়িটা ফিরিয়ে দিচ্ছে না।
হুমম
ওকে, সামঝ গ্যয়া।
স্যাড
আমার মনে হয় না ততটা স্যাড হয়েছে।
খেলা দেখার চাপে দেখে গেলাম মাত্র। পরে পড়ে নিব!
খেলা ভালো লেগেছে। বাংলাদেশ দল বাঘের বাচ্চার মতো খেলেছে। সব ম্যাচে এরকম ব্যটিং করতে পারলে আমরা অনেকদূর যাবো।
ইন্টারভিউগুলা দিতে যাবার আগে আসলেইও এমনভাব বেড়ে যায়... দিয়ে আসবার পরেই না শুরু হয় গুড়্গুড়ানি...
জেবীন আপু কেমন আছেন? নতুন লেখা পাচ্ছি না কিন্তু।
ইন্টারভিউ নিয়ে এমন অনেক গল্প আছে। একবার একটা জায়গায় ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম। ৪০ মিনিটের যুদ্ধ। চারজন লোক একসাথে তীর নিক্ষেপ শুরু করেছে আর একজন চেষ্টা করছে বাঁচানোর। যখনই কোনো একটা তর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠা শুরু করে, তখনই ভিন্ন একটা প্রশ্ন তুলে পরিস্থিতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। আমি অনেকক্ষণ তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করলাম। তারপর এক সময় মনে হল; যথেষ্ট হয়েছে, যুদ্ধ করার জন্য সকালবেলা আরামের ঘুম বাদ দিয়ে একটা জায়গায় আসি নি। ইচ্ছে ছিলো ভালো কিছু প্রাপ্তিযোগ ঘটাবার। সেটা যদি না হয়, তাহলে কেন অযথা পন্ডশ্রম করছি? একটা প্রশ্নের মাঝামাঝি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, খোদা হাফেজ সবাই।
পরে জেনেছিলাম, ওই পোস্টে আগে থেকেই লোক ঠিক করা ছিলো। ইন্টারভিউএর আয়োজনটা শুধুই প্রসেস মেন্টেইনিং। কি নিপীড়ন, চিন্তা করেন।
চারজন!!... এরা কষ্ট করে নাটক করতে নামে যে কেন...বুঝিনা... :|
আমার একসাথে ২জনের বেশি ফেস করতে হয় নাই...
সবাই আগে পড়া গল্পের সাথে মিলের কথা বলছে... আমি ওইগুলা পড়িনাই, কিন্তু মূল অংশটুকু আমার অনেক চেনা, আমি রিয়েল লাইফের ঘটনা শুনেছি এইরকমের... আসলেই গল্পতো তৈরী হয় আমাদের জীবনেরই কিছু না কিছুর মিশেল নিয়ে...
তবে আপনার লেখার ধরন, উপস্থাপনার ভঙ্গী সব মিলিয়েই এই গল্পটা অনন্য হয়ে উঠেছে...
আবার উল্টো ঘটনাও আছে। ইন্টারভিউ দিই নাই, কারো কাছে কোনে আবেদন দাখিল করি নাই; শুধু মেইলে সিভি+ছবি এটাচ করে পাঠিয়ে দিয়েছি। সপ্তাহ না ঘুরতে ডাক এসেছে এ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে যাওয়ার জন্য। সত্যি সত্যি পরদিন কাঁধে ঝোলা ঝুলিয়ে গিয়ে নির্বাহী সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতেই, কোনো প্রশ্ন নয়; হাসিমুখে চিঠি বের করে দিলেন। রিসিভড্ কপিতে স্বাক্ষর করে নিলেন। আমি খুশি-টুশি হয়ে হাত মিলিয়ে চলে আসলাম, অথচ একটা প্রশ্নও শুনতে হলো না।
গল্প সম্পর্কে অনিরপেক্ষ ও বন্ধুবৎসল মন্তব্য হয়েছে।
তাই!!... মজাইতো তাহলে... :D হায়!... সবই কোপাল!!
আপনার অবগতির জন্যে জানানো হচ্ছে উপরোক্ত মন্তব্যটি মোটেই অনিরপেক্ষ ও বন্ধুবৎসল হয়নি, যতদূর নিজেকে জানি ওমন ধাচেঁর মন্তব্য করতে গেলে, আপনার= আপ্নের, অথবা "ধুরো! মিয়া, করছো, খাইছো "এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করতাম...
আরেকটা ব্যাপার, ... থাক কইলাম না, কইলেই কইবেন কইছে!!
না কইলে আমিও ইন্টারভিউএর আরেকটা কাহিনী কমু না। এক মহিলা জাপানী কিমানো পইরা ইন্টারভিউ নিছিলো।
মীর, এই গল্পটা কিন্তু আমি একদম বুঝি নাই। মনে হয়েছে খুব উদাস মনে লেখা হয়েছে। আনমনে নিজের সাথে কথা বলার মতো। ফলে ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন হয়েছে কোথাও কোথাও। প্রথম পেজগী লাগলো মালতি আর অর্ণিলাকে নিয়ে। দুজন কী একই ব্যক্তি? তারপর অর্নিলা। অর্নিলার সাথে কি দুইবার ছাড়াছাড়ি? মাথায় ভজঘট লেগে গেছে আমার দ্বিতীয়বার পড়ার পরও।
তবে শেষ প্যারাটা এত পছন্দ হয়েছে যেন এটা জীবন থেকে নেয়া।

আর সবচেয়ে অপছন্দ হয়েছে উৎসর্গপত্রটি। নিজেকে এখন 'শক্তিমান' অভিনেতা ওয়াসিমের মতো লাগছে।
মালতী এবং অর্নিলা চরিত্র দু'টো সম্পূর্ণ আলাদা। এবং প্রথম ফোনালাপের অংশটুকু ছাড়া গল্পের আর কোথাও মালতীর সম্পৃক্ততা নেই। জিনিসটা লেখায় পরিস্কার হয় নি, তার কারণ আমার দুর্বলতা। মাঝে মাঝে যে নীড়দা' আপনাকে আমি বলার চেষ্টা করি; আসলে আমার লেখা-লেখির অপচেষ্টা কিছুই হয় না, সেটা তো বিশ্বাস করেন না। এইবেলা হাতে-নাতে প্রমাণ হলো কি না?
শক্তিমান কথাটা শুনে তো আমারো একটা হিন্দী সিরিয়ালের কথা মনে পড়ে গেল, যেটার নামই ছিলো শক্তিমান। ওটার নায়কটা ওয়াসিমের চেয়েও খতরনাক ছিলো। কখনো সিরিয়ালটা দেখা হয় নি, বিজ্ঞাপন দেখেই যা বোঝার বুঝে নিতাম।
তবে আমি কিন্তু শক্তিশালী বলেছিলাম ভিন্ন একটা কারণে। ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে কেমিস্ট্রি পড়তাম কবীর স্যারের কাছে। তিনি মফস্বলের একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। বই পড়তেন প্রচুর। তার বইয়ের আলমারিতে প্রথম দেখেছিলাম, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বই। শক্তি চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আমার স্যারের মনোভাব ছিলো, একজন শক্তিশালী লেখক।
উৎসর্গপত্রটি লেখার সময় সেই কথাটা মাথার ভেতর ঘুরছিলো মানে এই নয় যে, আমি আপনার ওপর শক্তি চট্টোপাধ্যায়সম বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছি। আপনি যা লিখছেন, যেভাবে লিখছেন; তাই অসাধারণ হচ্ছে। আপনার অনবদ্য লেখনী যেন শতফুল হয়ে ফোটে। বরাদ্দ রইলো শুভেচ্ছা নিরন্তর।
আপনার লেখালেখির 'অপচেষ্টা'র মধ্যে আমি যে নাগরিক বাউন্ডুলে জীবনটা খুজে পাই, সেটা আমার অরণ্য বাউন্ডুলে চরিত্রের সাথে খুব মিলে যায়। সুতরাং আপনার লেখালেখির 'অপচেষ্টা' আমাদের মুখ উজ্জ্বল করুক।
অফিসে কোন ঝামেলা লাগলে আপনার একটা বাক্য আমার মাথায় উঁকি দেয়- "মাথার ভেতরে সিরিয়াস জ্যাম লেগে আছে"
অর্নিলাকে আলাদা করার পর গল্পটা স্পষ্ট হলো এবার
ভাষাহীন হয়ে গেলাম। আসলেই, মানুষ যে কত ভাবে কত নিষ্ঠুর হতে পারে তা সে নিজেও জানেনা
অসম্ভব ভালো লাগলো। শেষ প্যারাটা অসাধারন....
এতখানি প্রশংসা আমার প্রাপ্য নয়। কিছুটা কাট-ছাট করে আবার দেন।
চুপ
কাটছাট কইরা দিলাম, এবার বুঝেন, পুরা লেখাটাই ডটডট লাগছে... খুশি?...
স্যাড
গল্প ভাল্লাগসে।
জানতে পেরে
আমারো ভাল্লাগসে।
প্রিয় মীর ভাই,
আপনার গল্পের সাথে হুমায়ুন আহমেদের ছোটগল্প "একজন ক্রীতদাস" এর কাহিনী ও ভাষার অদ্ভুত মিল।
গল্পের কিছু জায়গায় মিলটুকু অস্বস্তিকর। বিশেষ করে কার্ডের লাইন ও উপসংহার।
সূত্রঃ হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের গল্প, পৃষ্ঠা - ৯১ - ৯৫
কখনো কখনো কোন গল্প আমাদের অবচেতন মনে তীব্র ছাপ ফেলে। পরে লেখার সময় তা টের পাওয়া যায় না। কিন্তু সার্থক পুনরাবৃত্তি না হলে এটাকে পরবর্তীতে লেখকের দুর্বলতা হিসেবেই ধরা হয়। আমি আন্তরিকভাবেই চাই না আপনাকে কেউ plagiarist ট্যাগ করুক।
তাই অনুরোধ করবো লেখাটা আপনার সংশোধনী প্যানেল ঘুরে আসু্ক। একটু ম্যারিনেট করলেই মনে হয় স্বাদ খুলবে।
আপনার নতুন লেখা কি-বোর্ডে ঝড় তুলুক।
শুভেচ্ছা।
সবার আগে বোধহয় আপনিই ট্যাগ করলেন। এবং আমি মেনে নিলাম। ধন্যবাদ।
ভুল বুঝলেন। আমি বলতে চাইছি যে কার্ডের আর উপসংহারের অংশটুকু বাদ দিলে লেখাটাটির ব্যাপারে কেউ plaigiarism এর অভিযোগ আনতে পারবে না। উপরে মিলি আপার উত্তরে আমার মন্তব্য পড়লে বুঝতে পারবেন। একই কাহিনীকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো লেখা থাকতেই পারে। এটা আলোচ্য বিষয় না।
শুভেচ্ছা।
plaigiarism > plagiarism
i একটা বেশি পড়ে গেছিল।
ভাই আমার/লেখার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনলে আপত্তি করবো, এমন কি কখনো কোথাও বলেছি? কেন বার বার কে কি অভিযোগ আনলো/আনতে পারে সেটা নিয়ে চিন্তিত হচ্ছেন, আসলেই বুঝতে পারলাম না। যাক শুভেচ্ছা আপনাকেও।
না বলেন নাই।
আর চিন্তিত হব না। উপযাচক হিসেবে মন্তব্য করার জন্য দুঃখিত।
স্যরি ভাইয়া। আসলে ভুলটা বয়সের দোষে হয়ে গিয়েছিল। প্ল্যাজিয়ারিজম সম্পর্কে আমাদের দেশে খুব বেশি কিছু শেখানো হয় না, তাও একটা কারন।
লেখাটি বর্তমানে সংশোধন করেছি। পাশাপাশি গল্পের শেষে লিখেও দিয়েছি হুমায়ুন আহমেদের গল্পটির কথা।
আবারও ধন্যবাদ আপনাকে। নিরন্তর শুভকামনা।
মীর রাকীব-উন-নবী
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ইং
আপনার হাতুড়ি ফিরে না পান। খুব ভালো লাগলো, খুব, খুব।

BIFC র সামনে সেদিন কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম, কাউকে দেখলাম না।
মিস্ত্রি মানুষ, হাতুড়ি ছাড়া চলতেসে না। আপনের বন্ধুকে একটু বলবেন, প্লীজ...
না বলুম না। হাতুড়িটা আমি নিমু। তারপর আপনের অথবা অন্য কারো মাথায় চান্স পাইলে দিমু বাড়ি।আমার ভাল্লাগতাছে না।
এই এখানে কি হচ্ছে
(কপি রাইট মাসুম ভাই)
মারামারি ভালু না
গলাগলি ভালু্ কিন্তু রায়হান ভাই আর মাসুম ভাই তো........................
রায়হান ভাই আর মাসুম ভাই হচ্ছেন জেনুইন ভালো মানুষ। নট লাইক য়ু পিপল।
নট লাইক য়ু পিপল।মানে কি?কি কইতে চান?

মীর কিতা কয়, এই কে আছিস কামান আন
মীর পীর'রে
আপনারা কায়েম করে রেখেছেন সন্ত্রাসের রাজত্ব। সে তুলনায় ঐ দু'জন তো ঋষি।
বলনাচের একটা ইমো থাকলে দিতাম। বইমলোয় সাবধানে ঘুইরেন মাথায় হালকা ঠুয়া খাইতে পারেন কিন্তুক।
মাথায় ঠুয়া দেওনের সাহস রায়হান ভাই ছাড়া কারো নাই। আজকাল উনি মারামারি করেন।
উনার কথাই বলসি

আমি মাইনষের মাথায় ঠুয়া দিই না।
মন্তব্য করুন