সুদীর্ঘ ছাইপাশ
এখন একটা কনক্লুসন লিখতে হবে। একটা ক্রস কালচারাল ক্রাইসিস কমিউনিকেশন পেপারের কনক্লুসন। আমি প্রোক্রেস্টিনেট করতে করতে জিনিসটাকে সফলভাবে শেষ মুহূর্তে ড্র্যাগ করে আনতে সফল হয়েছি। ডার্ক সাইড সাহায্য করেছে ব্যাপকভাবে।
তবে আর দেরি করার সুযোগ নেই। এর মধ্যে দেখা একটা বাংলা নাটকে একজন মানুষ তার নিজের মৃত্যুকে ফেক করে আরেকজনের মন জয় করে দেখালো। দেখে বুঝলাম না বিষয়টা মেনে নেয়া যায় কিনা। টিভি নাটকে আজকের পৃথিবী যে জায়গায় পৌঁছেছে, বাংলাদেশ কি তার ধারে-কাছে কোথাও আছে কিনা, বোঝার একটা স্বল্প স্কেলের প্রচেষ্টা চালালাম। মনে হলো বাংলাদেশের অবস্থান খুব একটা ভাল জায়গায় নেই।
যেমনটা নেই ক্রিকেটের কমেন্টারীতেও। কমেন্টররা প্রায়শই ভুল কমেন্ট পাস করছেন প্রচারমাধ্যমে। সঠিক বললেও সেটার মধ্যে সেই মাধুর্য বা কাব্যময়তা থাকে না, যেটা ইংলিশ, বা অস্ট্রেলিয়ান কমেন্টরদের কমেন্টারীতে থাকে।
ক্রস কালচারাল কম্পেরিজন মস্তিষ্কের বেশিরভাগ অংশ দখল করে থাকলে যা হয়, সবকিছুকে নিয়ে তুলনা করছি। কি হবে তুলনা করে? জীবন তো একটা রেস নয়, জার্নি। আমরা সবাই মিলে পাড়ি দিচ্ছি এক অসীম পথ।
অবশ্য পশ্চিমা বিশ্ব কথাটা বোঝে না। কিংবা না বোঝার ভাব ধরে রোবটের মতো থাকতেই পছন্দ করে। মানুষের অনুভূতির প্রকাশগুলো সেখানে এতো সুক্ষ্ণ যে, হিসাবে সামান্য গরমিল হলেই ঘ্যাচাং।
লেখাটা কেমন যেন অবনক্সাস হয়ে উঠতে চাচ্ছে। এটাতে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত আনঅকুপাইড নিউরণও নেই যে কিছু একটা করবো। অনেকটা এভাবেই চলছে সবকিছু বলা যায়। কোথায় যেন এক কৃষ্ণগহ্বর দেখা দিয়েছে, ড্রেন হয়ে যাচ্ছে সবকিছুই। লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ মিলছে সামান্য।
আমার মাঝে মাঝে ওই কৃষ্ণগহ্বরের ঘুলঘুলি দিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে, ওটার অপরপাশে কি আছে। সম্ভবত বাবুই পাখিদের বাসা ঝুলতে দেখা যাবে অনেকগুলো। সম্ভবত আমরা সবাই-ই ঝুলছি বাবুই পাখির বাসায়। লক্ষ লক্ষ বিশ্বব্রহ্মান্ড ঝুলছে একেকটা বাসায়।
এর ভেতরে কি অন্য একটা বাবুই পাখির বাসা থেকে উঁকি দেয়া কারও সাথে চোখাচোখি হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে? তার চুল ছোট করে কাটা থাকার কি দূরতম কোনো সম্ভাবনাও আছে? সুযোগ থাকলে জিজ্ঞেস করতাম প্রশ্নটা। স্টিফেন হকিংকে।
পৃথিবীতে বন্দুক আইন পাশ করে সব মারণাস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে নিলে হয় না? আর যাই করো, খুন করা যাবে না কাউকে। নাকি মানুষের জিন থেকে খুনোখুনির ম্যানুয়াল মুছে দিয়ে সেখানে নিঃস্বার্থ ভালবাসার ম্যানুয়াল লিখে দিতে হবে? নিঃস্বার্থ ভালবাসার ম্যানুয়ালটা মানবজাতির মধ্যে এসেছে শুধু মা'দের জিন বয়ে। অন্যান্য সম্পর্কগুলোর জেনেটিক বিবর্তনে নিঃস্বার্থ ভালবাসা বেশিদূর পথ পাড়ি দিতে পারে নি। ওটাকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার মনে হয় পরের আইডিয়াটা বেটার। অস্ত্রগুলো থাকলে ইন্টার-গ্যালাকটিক সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজে লাগানো যাবে।
যাহোক অনেকক্ষণ সময়ক্ষেপণ করলাম। লেখা পড়তে খুব বেশি সময় লাগে না, কিন্তু লিখতে সময় লাগে অনেক। লেখালেখির আনন্দটা ওখানেই পাই। লেখার সময়টাতে। মাথার ভেতর কথার পিঠে কথা গাঁথতে। কেননা কথাগুলোর বেশিরভাগই তো না-বলা থেকে যায়। আর সময়ের বিস্তারে বেড়ে চলে নক্ষত্রকণাদের মাঝে দুরত্ব।
যে অসীম পথ আমরা সবাই মিলে পাড়ি দিচ্ছি, তার শেষে গিয়ে হয়তো দেখবো আমরা একেকজন একেকজনের কাছ থেকে সরে গেছি লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে। মহীনের ঘোড়াগুলির কল্যাণে তথ্যটা আমাদের জানা আজ অনেক বছর ধরে। তাও একবারের জন্যও একটু সময় নিয়ে বসে ভেবে দেখা হয় নি কখনো। তুমি আর আমি গিয়েছিই শুধু দূরে সরে। কাছে আসার কোনো সুযোগ হয় নি এখনও।
---
শেষের অংশ টুকু অসাধারণ
"শত আলোকবর্ষ দূরে. .
এইবার ক্লাসিকাল মিউজিক ফেস্টের সময় আইসা ঘুইরা যাও, কাছে আসা ভালো। ভালো হও!
মন্তব্য করুন