ইউজার লগইন

গল্প: ফ্রাউ ভের্নার আর ফর্কলিফটের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিটা

১.
ইয়াকুলিন ভের্নার ছিল তার নাম। জার্মানিতে স্বল্প পরিচিত কিংবা অফিসের কলিগ পর্যায়ের পরিচিতি পর্যন্ত মেয়েদেরকে মিস্ বলে সম্বোধন করার নিয়ম। আর মিস্ শব্দের জার্মান প্রতিশব্দ হচ্ছে ফ্রাউ। আমি তাকে ফ্রাউ ভের্নার বলে ডাকতাম। যে সময়টার কথা বলছি তখন আমি একটা ছোট্ট দোকানে পার্ট-টাইম করতাম। সব ধরনের টুকটাক কাজ। দোকানের মেঝে পরিস্কার রাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন তাকে জিনিসপত্র তুলে-সাজিয়ে রাখা, খেয়াল রাখা কোথাও কমতি পড়লো কিনা, খদ্দেরদের যেকোন প্রশ্নের জবাব দেয়া- মোট কথা একটা ছোটখাটো সুপার শপে যতো রকম কাজ থাকতে পারে, তার প্রায় সবই করতাম। আমাদের কর্মীবাহিনীটাও খুব বেশি বড় ছিল না। সবাইকেই ঘুরে ঘুরে সবার কাজ করতে হতো। সেখানেই আমার প্রথম ফ্রাউ ভের্নারের সাথে পরিচয়। প্রথমদিকে কথাবার্তা হতো না তেমন, পরে একটা দুর্ঘটনা থেকে আমাদের বন্ধুত্ব্ হয়ে যায়। সেই বন্ধুত্বের গল্পই বলার উদ্দেশ্যে এই লেখার জন্ম।

যে দোকানটিতে কাজের কথা বলছি, ওখানে একের সাথে অপরের পরিচয় করিয়ে দেয়ার তেমন কোনো রীতি ছিল না। তাই প্রথমদিন কেউ আমাকে কারও সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ও নি। আমি নিজেই সবাইকে গিয়ে গিয়ে নিজের নাম-ধাম আগ বাড়িয়ে বলে পরিচিত হয়েছিলাম।

আমার স্বল্প অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এই স্ট্র্যাটেজি মোটামুটি কখনোই ব্যর্থ হয় না। অনেক ভাল ভাল মানুষের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে এই জীবনে শুধুমাত্র আমি সবসময় কৌতূহলী ছিলাম বলে। ওই দোকানটাতেই যেমন, কিছু দারুণ সহকর্মীর সাথে পরিচয় হয়ে গেল অল্প ক'টা দিনের মধ্যেই। একেক জনের একেক রকম চিন্তা-ভাবনা, কাজের ধরন, হিউমার। সময় কাটতে লাগলো দ্রুত।

নতুন নতুন অনেক বিষয় শিখতে হয়েছিল সেই দোকানটাতে কাজ করতে গিয়ে। ফর্ক-লিফট চালানো তার মধ্যে একটা। আমার কাজের একটা অংশ ছিল যাবতীয় বিয়ার, কোলা, অন্যান্য সোডা, নানাপ্রকারের পানি, দই, দুধ, ক্রীম- ইত্যাদি যা কিছু বোতলে বাজারজাতকরণ সম্ভব, সেগুলোর খালি বোতল ফিরে আসলে তা যার যার বাক্সে ভরে কাঠের পাটাতনে একটার ওপর আরেকটা সাজানো। এভাবে ৪০টা করে বাক্স দিয়ে একেকটা পাটাতন ভরতে হতো। তারপর সেগুলোকে একটার 'পর আরেকটা বসিয়ে উল্লম্ব সারি তৈরি করতে হতো। প্রতিটি পাটাতনে একই ধরনের বোতল থাকতে হবে, যাতে কোম্পানীর লোকজন যখন বোতল নিতে আসবে, তখন শুধু পাটাতনটা তুলে নিয়ে গেলেই হয়। এই কাজটির জন্য ফর্কলিফটের ব্যবহার জানতে হতো। আমি প্রথম দিকে জিনিসটা চালাতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম না। বরং প্রায়ই এখানে-সেখানে ধাক্কা খেয়ে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ফেলতাম।

তবে সবচেয়ে বড় যে দুর্ঘটনাটির বিনিময়ে আমি ফর্কলিফট চালানো শিখে গিয়েছিলাম সেটি হচ্ছে- একবার ৩৩০ মিলিলিটার সাইজের বিয়ারের বোতলের পাটাতন পড়ে গেল আমার লিফটের ফর্ক থেকে।

ফর্কলিফট মূলত একটা ছোট্ট গাড়ির মতো বাহন, যেটার সামনে দুইটা কাঁটা থাকে যেগুলোকে পাটাতনের নিচে ঢুকিয়ে সেটাকে মাটি থেকে উপরে উঠিয়ে ফেলা যায়। মাটি থেকে দেড়-দুই মিটার উচুঁতে ৪০ টি বাক্সসমেত একেকটা পাটাতন উঠিয়ে সেগুলোকে ঠাসাঠাসি করে- অাগে থেকে সাজিয়ে রাখা অন্যান্য সারিগুলোর মধ্যে যেখানে ফাঁক আছে, সেখানে ঢুকিয়ে- তারপর আবার কাঁটাগুলো বের করে ফিরে আসা- খুব একটা সহজ লাগে না প্রথম প্রথম। পরের দিকে যদিও কাজটা খুব ইন্টারেস্টিং হয়ে ওঠে।

বলেছি ইতোমধ্যে যে, একেকটা পাটাতনে ৪০ টি বাক্স থাকে। ৩৩০ মিলিলিটারের বিয়ারের একেকটা বাক্সে বোতল ধরে ২৪ টা করে। তার মানে একটা পাটাতনে থাকে সর্বমোট ৯৬০ টা বোতল। পাটাতন পড়ে যাওয়া মানে সবগুলো পড়ে যাওয়া এবং কাঁচের বোতল হলে- সব ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো হয়ে যাওয়া। সেটাই ঘটেছিল সেদিন আমার দ্বারা।

দুই মিটার উঁচু থেকে পড়ার মাঝপথে পাটাতনটা আমার চোখের সামনে একবার উল্টে গেল!

আমি স্পষ্ট দেখলাম ৯৬০ টি জড়পদার্থ একমুহূর্তে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে প্রতিটি টুকরা আমাদের ওই দোকানটার ছোট্ট গোডাউনের সর্বত্র অবলীলায় ছড়িয়ে পড়ল!!

সে সময় এক সেকেন্ডের জন্য নিজেকে দারুণ ভাগ্যবান মনে হচ্ছিল। এমন একটা ঘটনা চোখের সামনে ঘটতে দেখার জন্য। তারপর দৃশ্যটা ভিডিও করার কোনো উপায় ছিল না বলে খানিকক্ষণ খারাপ লাগলো। তবে এই সব সাময়িক অনুভূতি কেটে যেতে সময় লাগলো না। তারপর বুঝতে পারলাম ৯৬০ টা বোতল একসাথে ভেঙ্গে ফেলা আসলে একটা বিশাল ব্যাপার। সাধারণত ওই দোকানটায় ঈদে-চাঁদেও এমন ঘটনা ঘটে না।

ধীরে ধীরে আমার সহকর্মীরা জড়ো হওয়া শুরু করলো। সবাই খানিকটা হতভম্ব। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো আমার ফ্রাউ ভের্নারের সাথে কথা হলো। আমি খানিকটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সে এসে জিজ্ঞেস করলো,
-তুমি ঠিক আছো?
-হ্যাঁ।
-কি হয়েছিল? ফর্কলিফটে সমস্যা?
-না, আসলে আমি এখনও ফর্কলিফটে স্বাচ্ছন্দ্য না।
-ওহ, তাহলে তো ভালোই হলো। এই ঘটনার পর আর জড়তা থাকার প্রশ্নই আসে না।

ফ্রাউ ভের্নারের কথাটা শুনে উপস্থিত অন্যরাও হেসে দিয়েছিল সে মুহূর্তে। দোকানের ম্যানেজার সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন কিভাবে দ্রুততম সময়ের ভেতর ভাঙা কাঁচের বোতলের টুকরোগুলো পরিস্কার করে ফেলা সম্ভব। আমরা সবাই ঝাপিয়ে পড়লাম সেই কাজে। সবগুলো ভাঙা কাঁচের টুকরো ঝাঁট দিয়ে ফেলে দেয়া হলো। মেঝেতে চললো একদফা ফিনাইল-ক্ষেপণ পূর্বক ধোয়ামোছার পালা। তারপর যখন সব শেষ হলো তখন গোডাউনটাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিস্কার দেখাচ্ছিল। এটা নিয়েও সবাই মিলে ঠাট্টা-তামাশা করলাম। সেদিন বোতলগুলো ভাঙার জন্যই নাকি গোডাউনের মেঝের প্রকৃত চেহারা আমরা গত কয়েক বছরে প্রথমবারের মতো দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। পুরোনো সহকর্মীরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এ ধরনের ঘটনা আর যেগুলো আছে- সেগুলো বের করে আনলেন। শুনতে শুনতে সময় গড়িয়ে গেল।

২.
ফ্রাউ ভের্নারকে সেদিন সন্ধ্যায় ভাগ্যক্রমে দোকানের বাইরে পেয়ে গিয়েছিলাম। আসলে আমাদের সবার কাজ শুরুর আর শেষের সময়গুলো ভিন্ন ছিল বলে, কাজ শেষে সাধারণত কারো সাথে কারো দেখা হতো না। সেদিনটা ভিন্ন ছিল প্রথম থেকেই। তাই কাজ সেরে আমি যখন কানে হেডফোন দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য পা বাড়িয়েছি, তখনই দেখি ফ্রাউ ভের্নারও বের হচ্ছে কাজ সেরে।

ভাবলাম এই-ই সময়। তখন পরিস্থিতিটাকে সুন্দরভাবে সামাল দিয়ে আমাকে বিব্রতকর একটা অবস্থা থেকে বাঁচানোর জন্য একটা যথযাথ ধন্যবাদ দেয়ার। তাই ভেবেই এগিয়ে গেলাম। ফ্রাউ ভের্নারের সুন্দর হাসিটা অবশ্য এগিয়ে যাওয়ার আরেকটা কারণ ছিল। গিয়ে বললাম,
-ফ্রাউ ভের্নার, তখন তুমি যেভাবে আমাকে সাহায্য করেছিল সেটা দারুণ ছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
-অবশ্যই। কোনো সমস্যা নেই। আমি যা করেছি তা সামান্যই।
-হলে কি হবে, আমি তখন খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।
-তাই? দেখে তো মনে হচ্ছিল তুমি কাঁচের বোতল ভাঙা দেখে মজাই পেয়েছিলে!
-কিছুটা পেয়েছিলাম ঠিকই। বিশেষ করে যখন পাটাতনটা উপর থেকে নিচে পড়ছিল- ওই মুহূর্তটা দারুণ ছিল।
-ওহ মাই গড! এরকম দারুণ মুহূর্ত আর কয়েকবার আসলেই দোকানে লালবাতি জ্বলবে।
-হাহাহা, তা যা বলেছো। এরকম মুহূর্ত আর না আসাই ভাল।

সেদিন আমাদের কথা হয়েছিল এতটুকুই। আমার ভেতর সেটার রেশই রয়ে গিয়েছিল অনেকক্ষণ পর্যন্ত। একজন মানুষ তার হাসিখুশি আচরণের মাধ্যমে কত দ্রুত আরেকজনের চিন্তাধারার মধ্যে ঢুকে যেতে পারে ভাবছিলাম। আর আমার পেনি-বোর্ডে চেপে বাড়ি ফিরছিলাম। পেনি-বোর্ড চালাতাম কারণ বড় কিংবা মাঝারি আকৃতির স্কেটিং-বোর্ডগুলো এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার কাজে ব্যবহারের চাইতে, বিভিন্ন কলা-কৌশলের কাজে বেশি উপযোগী। আর আমার দরকার ছিল একটা চাকাওয়ালা বাহন যা আমাকে বাসা থেকে দোকান আর দোকান থেকে বাসায় আনা-নেয়ার কাজটি করে দেবে। তাই পেনি-বোর্ডটাই আমার জন্য বেশি কার্যকরী ছিল।

যাহোক সেদিনের পর থেকে ফ্রাউ ভের্নারের সাথে দেখা হলে কুশল বিনিময় করতাম নিয়ম করে। আমাদের দোকানটা ছোট হলেও কাজের চাপের কোনো সীমা ছিল না। বিষয়টা একইসাথে উপভোগ্য ও ক্লান্তিকর ছিল। তবে ক্লান্তিটা ছিল খুব আরাধ্য। একটানা আট ঘন্টা বোতল, পাটাতন, সারি ইত্যাদি সাজানোর পর রাতে বাড়ি ফিরে আমি প্রতিদিন লক্ষ ইউরো মূল্যের ঘুম দিতাম। স্বপ্নে মাঝে মাঝে আমার স্বজনেরা এসে দেখে যেতো। একটা ছোট্ট কিন্তু মূল্যবান সময়ের জন্য জীবনটা ছিল 'সুইট'। বেড়ে লঙ্কা দেয়া মুরগি কিংবা ডিমের সালুনের পর ঘরে বানানো রসমালাই মুখে পড়ার মতো মিষ্টি।

প্রতিদিন সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় জানতাম আগামীকাল আবার সকালে উঠে কাজে যেতে হবে। দোকানের ম্যানেজার এবং অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে দেখা হবে। অবশ্যই একবার কিংবা তার চেয়ে বেশিবার ফ্রাউ ভের্নারের দিকে হাসি বিনিময় হবে। হয়তো কাছাকাছি কাজ পড়লে আমরা একে অপরের সবকিছু ঠিক আছে কিনা জানতে চাইবো। তারপর যখন কাজ শেষ হবে, তখন সেই সব সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি সঙ্গে নিয়ে আমি আবারও আমার ১২ দশমিক চার বর্গমিটারের কুঠুরিতে ফিরে যাবো।

তারপর মিগোস, কার্ডি বি, নিকি মিনাজ, ড্রেক, ম্যাকলামোর, বিবি রেক্সহা- সবাই মিলে আমার সময়টাকে আনন্দে ভরিয়ে দিতে নিজেদের গানের ডালি নিয়ে হাজির হবে। শুধু স্পটিফাইটাকে চালু করে দেয়ার দুরত্বে তাদের অবস্থান। সবকিছুর মাঝে খাওয়ার জন্য কিছু একটা বানিয়ে নিলেই হলো যেকোন এক সময়। তারপর কোনো একটা সিনেমা বা টিভি-সিরিয়াল দেখতে দেখতে এক সময় দিনটাকে শুভ বিদায় জানানো। ঘুমের রাজ্য ভ্রমণে যাওয়া।

একদিন ফ্রাউ ভের্নারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কি খবর তোমার হুবশ্?

জার্মান ভাষায় হুবশ্ অর্থ সুন্দরী। বাংলাদেশের 'রাস্তার ছেলেরা' নাকি এভাবে চেনা-অচেনা মেয়েদেরকে মাঝে মাঝে সম্বোধন করে। এটা অবশ্য আমার এক ছেলেবেলার এক বন্ধু বলেছিল। আমি সেদিন একটু ফ্লার্ট করার মুডে ছিলাম বলেই সম্বোধনটা ব্যবহার করেছিলাম। ফ্রাউ ভের্নার খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বলেছিল,
-সব ঠিকঠাক। তোমার কি খবর?
-দূর্দান্ত। সবসময়ের মতোই।
-ভাল তো। তা কি মনে করে আজ আমাকে হুবশ্ মনে হলো?
-হুম। ভাল প্রশ্ন। আমার তোমাকে প্রায় সময়ই হুবশ্ মনে হয়। বিশেষ করে ওই দিন বোতলগুলো ভাঙার পর থেকে।
-ও ওইটা থেকে এখনও বের হতে পারো নাই। আরেকদিন আর কয়েকটা বোতল ভাঙ্গো। তারপর দেখবে আমি হুবশ্ নাকি পেত্নী।
-তাই নাকি? কি করবে? বকবে?
-না না বকবো কেন? কানে মল্টি দেবো।
-হাহাহ কানে মল্টি দেয়া মানে কি?
-সময় হলেই দেখতে পাবে।

এই পর্যন্ত কথাবার্তার পর সেদিন আমরা দু'জন কাজ নিয়ে যার যার পথের দিকে চলে গিয়েছিলাম। তারপর আবার দেখা হয়েছিল সন্ধ্যায়। সেদিনও তার কাজ আমার সাথে একই সময়ে শেষ হয়েছিল। বের হওয়ার পথে দেখা হতেই জানতে চাইলো, তোমার আজ সন্ধ্যার পরিকল্পনা কি?

আমার তো পরিকল্পনা প্রায় প্রতিদিনই এক। পেনি-বোর্ডে চেপে বাড়ি ফেরা। তারপর গান শুনতে শুনতে রান্না করা, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম। সেটাই বললাম তাকে। শুনে সে বললো, সুন্দর প্ল্যান তো। আমারও যদি এমন সিম্পল কাটানোর সুযোগ থাকতো! জানতে চাইলাম- কেন সুযোগ নেই? বললো না মেয়েটা। শুধু বললো- সে অনেক লম্বা গল্প। আরেকদিন বলবো।

এই পর্যন্ত কথাবার্তার পর ফ্রাউ ভের্নার হাত নেড়ে বিদায় জানিয়ে চলে গেল। আমি ভাবতে লাগলাম আমার সন্ধ্যার প্ল্যানটাকে আমি ছাড়া এর আগে কেউ ইন্টারেস্টিং বলে নি। আজই প্রথম কেউ বললো যে সেও ঠিক একইরকম প্ল্যান পছন্দ করে। ভাবনাটা অনেকক্ষণ পর্যন্ত আমায় সঙ্গ দিয়েছিল।

সেদিন কোনো একটা কারণে আমার সবকিছুই ভাল লাগছিল। বাসায় ফিরে স্পটিফাইয়ে নিজের প্লে-লিস্ট না চালিয়ে ইউটিউবে র‍্যান্ডম গান চালিয়ে দিলাম। এক ফাঁকে টেইলর সুইফ্টও একটা গান গেয়ে চলে গেল কিন্তু খারাপ লাগলো না। সাধারণত টেইলর সুইফ্টের গান আমি এড়িয়ে চলি। কথাবার্তায় প্রচণ্ড উন্নাসিক ভাবের জন্য। সেদিন মনে হচ্ছিল, ওর মতো সফল একজন মানুষের মনেও কোথায় যেন কষ্টের একটা স্রোত বয়ে চলছে।

এরপরের দিন সকালে কাজে গিয়ে প্রথমেই ফ্রাউ ভের্নারকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি আজ সন্ধ্যায় আমার সাথে ডিনার করবে। আমি খুব খুশি হবো।

দুর্ভাগ্যবশত সেদিন আমাদের কাজ শেষ হওয়ার ভিন্ন ভিন্ন সময় আগে থেকে নির্ধারণ করা ছিল। সে কারণে আমার আমন্ত্রণটা তার পক্ষে রক্ষা করা সম্ভব ছিল না। তবে সে আমাকে সপ্তাহান্তে কিছু একটা করার আইডিয়া দিয়ে চলে গেল নিজের কাজে। আমি ভেবে দেখলাম সেটাই ভাল। সপ্তাহান্তে সময়ের কোনো টানাটানি থাকে না। ধীরে-সুস্থে আয়োজন করে সবকিছু করা যায়।

৩.
এইবার ধীরে ধীরে আমার ভেতর জন্ম নেয়া শুরু করলো সেই অনিন্দ্য-অস্থিরতা। আমি জানি এই অনুভূতির জন্ম হয়, যখন একজন মানুষের আরেকজনকে পছন্দ হতে শুরু করে। অথচ আমি ফ্রাউ ভের্নার সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানি না তখনও। হয়তো তার বয়ফ্রেন্ড থাকতে পারে কিংবা অন্য যেকোন কিছু হয়ে থাকতে পারে। একেবারে শূন্যের ওপর ভরসা করে অস্থির সময়ের দিকে এগিয়ে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ না- ব্যপারটা আমাকে বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়ে জানতে হয়েছে। সুতরাং নিজেকে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করতেই হলো। সেটাও আসলে ভালোই হয়েছিল। অস্থিরতাকে সুযোগ দিলেই সেটা মাঝে মাঝে স্ট্রেস্ হয়ে দাঁড়াতে চায়। আমি কোনো রকম স্ট্রেস্-কেই সুযোগ দেয়ার পক্ষপাতী না। তাই সবকিছুকে তাদের নিজেদের মতো চলতে দিয়ে শুধু নিজের নৌকার হালটা শক্ত করে ধরে বসে থাকলাম।

যদিও মাঝে মাঝে ভাবনার রাজ্যের দরজার তালা শুধু আমার আগ্রহের জোরেই খুলে যেতো। আর একটা ঝাপটা অন্তর্মুখী হাওয়া আমাকে প্রায় উড়িয়ে সে রাজ্যের ভেতর নিয়ে যেতো।

কল্পনার সে জগতের কথা কি আর বলবো! যেখানে আমি আলাদিনের ম্যাজিক কার্পেটের মতো একটা কার্পেটে চড়ে উড়ে উড়ে রাজকন্যা ইয়াসমিনের কাছে যাচ্ছি। পথে বন্ধু আবু আমায় দেখে একটা সুউচ্চ মিনারের চূড়া থেকে হাত নেড়েছে। নিচে প্রাচীন মিসরীয় কায়দায় বাজার বসেছে। মাথার ওপর পাতলা কাপড়ের শামিয়ানা টাঙিয়ে ব্যপারীরা তাদের তৈজসপত্র, মৃৎপণ্য, মূলবান অলংকার কিংবা মুখরোচক মিষ্টান্ন নিয়ে বসে আছে। আর আমি তাদের সবার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি। একটু পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে ধূ ধূ মরুভূমি কিন্তু আমি যে রাজ্যে আছি সেটা মরুর বুকে এক সাজানো বাগান। যার শেষ প্রান্তে রয়েছে বিশাল রাজপ্রাসাদ। আমার গন্তব্য সেখানেই। রাজকন্যা ইয়াসমিনের সাথে আমাকে দেখা করতেই হবে। বলতে হবে, আমার ছেলেবেলাটা কেটেছে প্রতিদিন ডিজনী স্টুডিওর কার্টুন দেখে। তখন থেকেই আমার বুকের একটা পাশ রাজকন্যা ইয়াসমিনের জন্য লিখে দিয়েছি। অবশ্য আরেকটা পাশ যে জলের দেশের রাজকন্যা এরিয়েলের জন্য বরাদ্দ সেই কথাটা চেপে যেতে হবে।

এইসব আগপাশ ভাবতে ভাবতে যখন আমি রাজপ্রাসাদে পৌঁছাই তখন ইয়াসমিনকে দেখলাম তার বন্ধু রাজাহ্'র সাথে দৌড়ঝাপে ব্যস্ত। আমি পেছন থেকে গিয়ে চমকে দেবো ভেবে আগাচ্ছিলাম। রাজাহ টের পেয়ে গড়গড় করে উঠলো। পেছন থেকে কেউ একজন আসছে বুঝতে পেরে রাজকুমারী যখন ঘুরে দাঁড়ালো তখন আমি চমকে বাস্তবে ফিরে এলাম। প্রথমে দেখে নিলাম আশেপাশে সব ঠিক আছে কিনা। ঘর-দোর-বারান্দা সব ঠিকই ছিল। কোথাও কোনো ব্যতিক্রম ছিল না। আমি রাজকুমারীকে দেখে চমকে গিয়েছিলাম কেননা- সে ছিল ফ্রাউ ভের্নার, আর কেউ না।

কল্পনার রাজ্যেও যখন ফ্রাউ ভের্নারের আনাগোনা শুরু হয়ে গেল, তখন ভেবে ঠিক করলাম যে- একদিন ওকে সামনে বসিয়ে খুব যত্ন আর আগ্রহ নিয়ে আমার কথাগুলো তাকে বলতে হবে। কি বলা যায় সেটাও ভেবে রেখেছিলাম। উইকেন্ড এগিয়ে আসছিল দ্রুত বলে বেশি ভাবার সুযোগও ছিল না। পাশাপাশি অস্থিরতাকে সুযোগ দিলে সেটা যে স্ট্রেস্-এ রূপান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করে- সেই ভাবনাটাতো মাথায় ছিলই। সবকিছুর পরও যতোটুকু ভাবা সম্ভব ভেবে রেখেছিলাম। তা থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে- প্রথম ডিনারে আমার কথাগুলো বলবো না বরং তার কথাগুলো শুনবো শুধু।

নাহলে সেই প্রথম সন্ধ্যায় আমি তাকে বলতাম, ফ্রাউ ভের্নার, প্রথম যেদিন তোমার সাথে কথা হয়, ওই বোতল ভাঙার দিনে- সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত তোমার কথা আমার যতোবার মনে হয়েছে, ততোবার আমার মন ভাল হয়ে গেছে। মন ভাল হয়ে গেছে যতোবার তোমার সাথে দেখা হয়েছে ততোবারও। কাউকে দেখলে, কিংবা তার কথা ভাবলেই ভাল লাগতে শুরু হওয়ার এই অনুভূতির সাথে আমার পরিচয় আছে। জানি ভেতর থেকে আমি তোমার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করি। মিথ্যে বলবো না, আমি কখনো জেনে, কখনো না জেনে নিজেকে তোমার কাছাকাছি রাখার চেষ্টাও করেছি। আমি জানি না তুমিও আমার প্রতি কোনোরকম আকর্ষণ বোধ করো কিনা। যদি না করে থাকো, কোনো সমস্যা নেই কিন্তু যদি করে থাকো তাহলে তোমাকে বলি- আমি এই প্রক্রিয়াটা চালু রাখতে চাই। তোমার সাথে আরও অনেকবার ডিনার করতে চাই। অন্যান্য কাজও করতে চাই। কি বলো তুমি? সম্ভব আমাদের একে অপরের সাথে এভাবে আরও দেখা করা?

অমন একটা বিরাট মনোলগ আমার একার পক্ষে চালিয়ে নেয়া কতোটা সম্ভব তা জানা ছিল না। তবে চেষ্টা করলে যে পারবো সেটা জানতাম। আমি সবকিছুকে তাদের নিজেদের চলতে দিয়েছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম আসলেই কোনভাবে আমাদের আলোচনা ওই মনোলগটাকে আমার ভেতর থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বের করে আনতে পারে কিনা।

ফ্রাউ ভের্নার ডিনার উপলক্ষে একটা দারুণ স্বাদু চীজ-কেক বানিয়ে এনেছিল। বেকিং করা নাকি তার হবি। আমি আগে জানতাম না। সেদিনই প্রথম জানার সুযোগ হয়েছিল। আমি অল্প জ্বালে দীর্ঘ সময় ধরে গরুর মাংস রেঁধেছিলাম। হ্যাঁ, জার্মানীতে আসার পর আমাকে রান্না করা শিখতে হয়েছে এবং শেখার পর জানতে পেরেছি যে, রান্না একটা কাজ যেটাকে আমি পছন্দ করি অনেক।

আমরা নিজেদের স্কুল-কলেজের নানান ঘটনা নিয়ে সেদিন কথা বলেছিলাম। পুরোনো বন্ধুদেরকে নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছিল। আমার জার্মানীতে আসা, পড়াশোনা এবং চাকুরী পাওয়ার যুদ্ধ নিয়ে কথা হয়েছিল। ফ্রাউ ভের্নার তার স্কুল ড্রপ-আউটের গল্পটা বলেছিল। কিভাবে ড্রপ-আউটটা তার জন্য একটা ভাল ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিলা সেটা শোনার সময় আমি সত্যিকারের শিহরণ অনুভব করছিলাম। কারণ ছেলেবেলা থেকে আমি স্টিভ জবস্-এর ভক্ত। তার গল্পটাও একদম এক। স্টিভ জবস্ তার ইউনিভার্সিটির পড়াশোনা মাঝ পথে ছেড়ে না দিলে আমরা হয়তো আজও কম্পিউটারে টাইপ করার ফন্ট পেতাম না। কে জানে!

ডিনার শেষে আমরা হাঁটতে বের হয়েছিলাম। আমাদের ছোট্ট শহরটাতে আধাঘন্টা হাঁটলেই এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায়। আমি জানতাম না ফ্রাউ ভের্নার আর আমার বাসার দুরত্ব ছিল হাঁটা পথে মাত্র ১০ মিনিট। ওদের বাসার সামনে যখন পৌঁছালাম তখন ভাবছিলাম কথাগুলো তোলা থাক। অন্য কোনো এক সময়ের জন্য। আজকের সময়টা ইতোমধ্যেই আমরা যতোটুকু আশা করেছিলাম তার চেয়ে অনেকগুণ ভাল কেটেছে। দু'জনেই বুঝতে পারছি আমরা একসাথে সময় কাটাতে পছন্দ করি। দেখা যাক সামনে কি অপেক্ষা করে আছে।

৪.
পরের কয়েকটা দিন আমাদের দু'জনেরই অসামান্য কেটেছিল। প্রায় প্রতিদিনই কাজ সেরে আমরা কেউ একজন আরেকজনের জন্য অপেক্ষা করতাম। তারপর কিছুটা সময় একসাথে কাটিয়ে বাড়ি ফিরতাম। একসাথে কাটানো সেই সময়ে আমাদের নানান বিষয় নিয়ে কথা হতো। সেসব থেকেই আমি জানতে পেরেছিলাম, ফ্রাউ ভের্নার কখনো কারো প্রেমে পড়ে নি জীবনে। সত্যি বলতে কি, স্কুল থেকে ড্রপ-আউটের পর সবসময়ই ছোটখাটো কাজের ভেতর থাকার কারণে তার আসলে নগরীর উঠতি বয়েসীদের সাথে চলাফেরার সুযোগই হয় নি খুব বেশি। আর কাজের জায়গায় তো সাধারণত সহকর্মীদের সাথে খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা হয় না কখনোই।

আমাদের দু'জনের ব্যপারটা একটা ব্যতিক্রম ছিল সত্য, কিন্তু আমাদের শুরুটাও তো ছিল ৯৬০ টা কাঁচের বোতল ভাঙার মধ্য দিয়ে! ব্যতিক্রম হওয়াই স্বাভাবিক।

আমাদের সময়টা গড়াতে গড়াতে ঠিক যখন মধ্যগগনে পৌঁছালো, তখন একদিন আমরা দু'জনই দু'জনকে দেখে বলেছিলাম, আমার তোমার সাথে একটা কথা আছে।

বিষয়টা কাকতালীয়ও ছিল। আমি তো জানতাম নিজের কথা। সেটা নিয়ে যথেষ্ট সময় নিয়ে ভেবেছিও। তারপর যেদিন সকালে নিজের মনকে প্রস্তুত করে নিয়ে গিয়েছিলাম এই ভেবে যে, আজ আমার কথাটা তাকে বলবো- সেদিন সে-ও কিনা বলছে যে তার একটা কথা আছে আমাকে বলার জন্য! তার চোখ আর মুখের চাপা হাসি বলে দিচ্ছে কথাটা সে আমাকে বলার জন্য অপেক্ষা করে ছিল এবং এখন যখন বলার সুযোগটা এসেছে তখন সে খুব আনন্দিত। আমি ভাললাগার ডালপালাকে একটু আগলে নিয়ে বললাম, বলো।
সে বললো, না আগে তোমারটা বলো, শুনি, তারপর আমারটা বলবো।
-উহু, আমি লেডিজ ফার্স্ট নীতিতে বিশ্বাসী।
-এইটা কোনো কথা। আমি তো আমার সব কথার আগে তোমার কথা শুনতে আগ্রহী।
-খুব সুইট। থ্যাংক ইউ। আমার কথাটা তো অবশ্যই বলবো, কিন্তু তোমারটা শোনার আগ্রহের কারণে আমি যদি আগে বলি তাহলে তাড়াহুড়ো করা হয়ে যাবে। সেজন্যও তোমার আগে বলা উচিত।
-ঠিক আছে। আমারটাই বলছি তাহলে আগে। আজ আমার অনেকদিনের একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি হ্যামবুর্গের প্রাণকেন্দ্রে আমাদের সুপারশপের যে শাখাটা আছে সেখানে ম্যানেজার হিসেবে অফার পেয়েছি।

হ্যামবুর্গ থেকে আমার শহরের দুরত্ব নূন্যতম চারশত কিলোমিটার। এই পরিমাণ দুরত্ব কারো পক্ষেই অতিক্রম করা সহজ নয়- এ কথাটাই প্রথম আমার মনে এসেছিল ওর সুখবরটা শুনে।

তবে সেটা সেকেন্ডের একটা ভগ্নাংশের জন্যই। পরপরই মনে পড়েছিল ওকে কংগ্রাচুলেট করার কথা। দু'হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিয়েছিলাম তাকে সেদিন। জার্মানীতে দু'হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে শুভেচ্ছা জানানোর রীতি অনেক পুরোনো। তবে ২০২০ সালের করোনা মহামারীর পর সেটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সেদিন ওর জন্য আমি উইশ করেছিলাম যে, নতুন চাকুরীর পাশাপাশি ওর যেন সুন্দর একটা জীবনও গড়ে ওঠে হ্যামবুর্গে। আর ওকে বলেছিলাম, কখনো সময় পেলে অবশ্যই যেন যোগাযোগ করে।

ফ্রাউ ভের্নার চলে যাওয়ার পরও আমি কয়েকদিন কাজ করেছিলাম ওই ছোট্ট দোকানটাতে। তারপর আমারও ডাক চলে এসেছিল জীবনের পরের পর্যায় থেকে। তবে জীবনের যে সময়ের গল্পটা বললাম, সে সময়টা আমাকে যেসব স্মৃতি উপহার দিয়ে গেছে সেগুলোর সাথে কোনোকিছুর মূল্যবিনিময় হয় না। সেসব অমূল্য স্মৃতি সাজিয়ে রাখার প্রয়াস থেকেই এ গল্পের অবতারণা। সে সময়ে আমি আরও একটি জিনিস খেয়াল করেছিলাম। একজন মানুষ যখন আরেকজন মানুষকে নিয়ে গভীরভাবে ভাবে তখন সে নিজের অজান্তেই নিজের যত্ন নেয়া শুরু করে, এবং সেটি করে অপর মানুষটির জন্য। নিজেকে যখন কেউ মনে মনে আরেকজনের উপহার হিসেবে ভাবা শুরু করে, তখন আমাদের ভেতর থেকে নিজেকে সুন্দর কারে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার প্রবণতা দেখা দেয়। নিজের যত্ন নেয়ার মধ্যে কিন্তু কোনো লজ্জা নেই। এটা আমরা অনেকেই বুঝি না।

---

পোস্টটি ১১ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

মীর's picture

নিজের সম্পর্কে

স্বাগতম। আমার নাম মীর রাকীব-উন-নবী। জীবিকার তাগিদে পরবাসী। মাঝে মাঝে টুকটাক গল্প-কবিতা-আত্মজীবনী ইত্যাদি লিখি। সেসব প্রধানত এই ব্লগেই প্রকাশ করে থাকি। এই ব্লগে আমার সব লেখার কপিরাইট আমার নিজেরই। অনুগ্রহ করে সূ্ত্র উল্লেখ না করে লেখাগুলো কেউ ব্যবহার করবেন না। যেকোন যোগাযোগের জন্য ই-মেইল করুন: bd.mir13@gmail.com.
ধন্যবাদ। হ্যাপি রিডিং!