ইউজার লগইন

বলতে পারি না কেউ আমরা

দিকে দিকে কত রঙ্গই না ঘটে চলেছে! দেশে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে আবারও খড়্গহস্ত হয়েছে সরকার। রুচির পুলিশেরা মাঠে নেমেছে গণমানুষকে রুচিশীলতার ট্যাবলেট গেলাতে। যারা মাঠে নেমেছে, তারা নিজ নিজ সংস্থা, সংগঠনের উপরের পদে উঠতে কি কি অরুচিকর কাজ করেছে জীবনে, তার হিসেব বেমালুম গাপ করা! আমার আজকের লেখার বিষয়বস্তুও এটা। মানুষে মানুষে বিভেদ এবং তার কারণে সৃষ্ট অনিবার্য পশ্চাৎপদতা।

আমার জীবনে কখনো দেখলাম না, মৌলবাদী মানুষজন কিংবা ক্ষমতাসীন সরকার ছাড়া আর কাউকে অন্য কারো ব্যাক্তিগত ব্যাপারে কিংবা মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে কখনো খড়্গহস্ত হতে। ছেলেবেলায় আমার নিজেরও, অন্য কারো কোন কথা ভাল না লাগলে, প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু সেই ব্যক্তির ব্যাক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর আমার নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছা চাপিয়ে দেয়ার জন্য না কিংবা সেই ব্যাক্তির কথা বলা বন্ধ করে দেয়ার জন্য না। বরং আমার যে কথাটা ভাল লাগে নি, সে ব্যাপারটা জানান দেয়ার জন্য। কথাটাকে খন্ডন করার জন্য। যাক আমার ছেলেবেলা হচ্ছে হালের ইন্টারনেট এমনকি টিভির রমরমা অবস্থারও আগের কথা! আমার অনেক বড়বেলা পর্যন্ত বাংলাদেশে শুধু বিটিভি চলতো। আর সিএনএন, দুরদর্শনের মতো কিছু বিদেশি চ্যানেল।

গত শতকের আশির দশক থেকে বর্তমান শতকের বিশের দশক পর্যন্ত আমাদের জীবন কতবার "আগাপাশতলা" পাল্টে আজকের অবস্থায় এসেছে, মনে আছে? আজও যে অবস্থায় এসেছে, তা মূলত কোন স্থায়ী অবস্থা না। অন্তত প্রতিদিন নতুন নতুন জ্ঞানের দ্বারা পুরোনো জ্ঞান প্রতিস্থাপিত হতে দেখে তাই তো মনে হয়।

আগে জ্ঞান আহরণও সহজ ছিল না। সামান্য উচ্চ-মাধ্যমিকের উচ্চতর গণিত কিংবা পদার্থ বিজ্ঞান বোঝার জন্যও আমাদের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের সাহায্য নেয়া লাগতো। অভিভাবকদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা রোজগারের একটা বড় অংশ চলে যেতো ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট টিউশনির পেছনে।

আর আজকাল পাইথন, জাভা, এইচটিএমএল, সিপ্লাসপ্লাস সবকিছু বিনামূল্যে শেখা যায়। শিক্ষকেরা যে পর্যন্ত স্কুল, কলেজ কিংবা প্রাইভেটের গন্ডিতে শেখাতে পারতেন, তার চেয়ে বেশি শেখা যায়। একজন নয়, একাধিক জনের কাছ থেকে শেখা যায়। নতুন, পুরোনো সব ইতিহাস ঘেঁটে বের করে ফেলা যায়।

আবিস্কার? আবিস্কারের জগতে তো নিত্যই সাড়া পড়ছে আজকাল। হালআমলের "এ-আই" টুল সম্পর্কে নাহয় একটু দেরিতেই আসছি। জাস্ট তার কয়টা বছর আগের কথাই ভাবি। মানুষের আবিস্কারের তালিকায় তখন কিভাবে পরিবেশবান্ধব উতপাদন বাড়ানো সম্ভব (ইন্ডাস্ট্রি ৪.০), কিভাবে মানুষের পেশিশক্তির কাজকে মেশিনের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব (অটোমাইজেশন), কিভাবে পুনর্ব্যাবহারযোগ্য শক্তির উৎপাদন বাড়ানো যায় (রিনিউয়েবল এনার্জি)- এসবের জয়জয়কার। আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ-আই প্রযুক্তি) সবকিছুকে সমন্বয় করে আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে এক নতুন পৃথিবী।

কিন্তু তারও আগে পৃথিবীতে হয়ে গেছে নানাবিধ বিভাজন। এই পৃথিবীতেই এক শ্রেণীর মানুষ আজও শীতে আর ক্ষুধায় কাতরায়। প্রতিদিনের ঘানিপেষা জীবন থেকে শুধুই পরের দিন খেয়ে পড়ে বাঁচার জন্য যা প্রয়োজন, তা উপার্জন করে। কেননা এর চেয়ে বেশি কিছু করার সব পথ উন্নয়নের মাধ্যমে সুচারুরূপে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, আরেক শ্রেণীর মানুষের স্বার্থে। সেই মানুষদের স্বার্থে, যারা এই একই পৃথিবীতে বাস করে মঙ্গলে বসতি স্থাপনের স্বপ্ন দেখে। আকাশ-প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা, বিমান-সুরক্ষা অথবা জীবনবিধ্বংসী ট্যাংক ইত্যাদিকে আরও কত মানব-সংহারী করে গড়ে তোলা যায়, তাই ভেবে দিনরাত অশুভ শক্তির কল্যাণ কামনায় ইবাদত করে যায়।

এসব না করে, যদি আসলেই পৃথিবীর সকল ক্ষুধার্থ, দুর্ভাগ্যপীড়িত মানুষের মুখে খাদ্য আর পানির জোগান দেয়ার জন্য সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারতো, তাহলে কি চমৎকারই না হতো! কিন্তু তা আর সম্ভব না।

কেন জানেন? আমরা ক্রমাগত উন্নয়নের জালে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে তলিয়ে গিয়েছি। আর আমাদের ভেতরের বিভেদ ক্রমে ক্রমে বেড়েছে। আজ আর পৃথিবীর সবাই এক রকম মানুষ নই আমরা। কেউ কেউ বড় মানুষ, যারা মঙ্গলে জমি কিনছে নিজেদের উত্তরসূরীদের জন্য।

আবার কেউ কেউ আছে মৌলবাদী, যার অর্থ হলো, তারা নিজেদের মতবাদের পুলিশ। নিজেদের কথামতো কিছু না হলেই তারা মানুষকে ডান্ডা দিয়ে মেরে ঠান্ডা করে দেয়ার জন্য মাঠে নামতে উদগ্রীব, সবসময়। কারণ তার বিশ্বাস, তার কথাই সর্বত্তোম, অন্য আর সকল কথাই ব্যর্থ!

কেউ কেউ আবার শুধু "চামে দিয়ে বামে মারে" (এ কথার অর্থ না জানলে আপনার আশপাশের কাউকে জিজ্ঞেস করুন, স্থানীয় ভাষায় দক্ষ এমন কেউ হলে ভাল হয়)। আর কেউ কেউ আছে, যারা সবকিছু থেকে বঞ্চিত।

এই বঞ্চিতদের নিয়ে তাও গত শতকের মাঝামাঝি সময়কাল পর্যন্ত একটা আশা ছিল। আসলে গত শতকের মাঝের দিকে, শুরুর দিকে, তার আগের শতকের শেষের দিকে, কিংবা তার আগের সময়কালের একটা ব্যাপার ছিল। কার্ল মার্ক্স যাকে বেশ গ্রহণযোগ্য করে ব্যাখ্যা করতে পেরেছিলেন তার Das Kapital বইয়ে।

যেখানে বলা হয়েছিল, বঞ্চিতরা বঞ্চিত হতে হতে একসময় যখন তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন তারা ঘুরে দাঁড়ায়। তাদের এ ঘুরে দাঁড়ানোর মাধ্যমে সমাজ ভেঙ্গেচুরে এক নতুন রূপ পায়। পুরোনো কদর্যতাগুলো ধুয়ে-মুছে সেই নতুন রূপ নিয়ে আসে নতুন সম্ভাবনার সম্ভার। সঙ্গে নতুন কদর্যতাও আসে। যা আবারও সেই গড়ে ওঠা-ভেঙ্গে পড়ার পুরোনো চক্রকে সমাজে প্রতিস্থাপিত করে। এই চক্রের মাধ্যমে মানুষের জীবনের ও জীবনবোধের উন্নতি ঘটে।

তবে এ ঘটনা ঘটার জন্য বঞ্চিতদের আসলেই বঞ্চনার স্বীকার হতে হয়। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানে শুধু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নয়, শুধু বাকস্বাধীনতা হারিয়ে ফেলা নয় কিংবা নয় শুধু সামাজিক নিরাপত্তা হারিয়ে ফেলা। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানে হতাশায় তলিয়ে যাওয়া। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানে ভেতরের সব লোভ খোলায় ফেলে রাখা কর্পূরের মতো উবে যাওয়া। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানে এমনভাবে চোখে অন্ধকার দেখা যা কেবল রূপকার্থে অন্ধ হয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই সম্ভব। আর নাহয় সম্ভব সূর্যসহ পৃথিবীর আশপাশের সব নক্ষত্র থেকে আলো আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। তা কি আর আজকাল ঘটে? এখানেই তো পূর্বে উল্লেখকৃত বড় বড় মানুষদের এবং তাদের অনুসারীদের কারিকুরি! উন্নত দেশগুলোর ফন্দিফিকির!

উন্নত বিশ্বের উন্নত মানুষেরা কিন্তু এটা খুব ভাল করে জানে, কার্ল মার্ক্স মিথ্যে বলেন নি। আসলেই কেউ সত্যি সত্যি মরিয়া হয়ে উঠলে তাকে ঠেকানো দায়। প্রায় অসম্ভবই বলা যায়। তাই গরীব-গুর্বোরা যেন বিপ্লবী হয়ে উঠতে না পারে, তাই তাদের নিয়ম করে আফিম খাওয়ায় উন্নত বিশ্বের উন্নত মানুষেরা। এই আফিম এখন কত রকমের মোড়কে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, কি করে বছরের পর বছর ধরে গরীবদের এই আফিম গেলানো হয়েছে, তাদের পেছনে পড়ে থাকা নিশ্চিত করা হয়েছে, তা আমাদের সবারই কম-বেশি জানা। ঠিক না?

আজ থেকে ২৫-৩০ বছর আগেও কি আমরা অভাবের দিন শেষে, রাতে সবাই মিলে টিভির সামনে গিয়ে বসতাম না একটু? কোনরকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই গণহারে বিনোদন উপভোগ করতাম না সবাই বসে একসাথে? আফিম ঢুকেছিল সেখান দিয়ে। খবরের কাগজের চটকদার সংবাদ পড়তে পড়তে ভুলে যেতাম না, আমি বা আমরা আদার ব্যাপারী? উঠতে-বসতে হারিয়ে ফেলতাম নিজের ফোকাস। মিলিয়ে যেতাম চটকদার সংবাদের যে চটকদার উদ্দেশ্য, তার সঙ্গে। মিশিয়ে দিয়ে আসতাম নিজের মনন, চিন্তাভাবনার উন্নয়নের সম্ভাবনাগুলোকে জলের সঙ্গে। আফিম ঢোকা শুরু হয়েছিল সে সময়।

শুধু উপরোক্ত দু'টি উপায়ে নয়, একই রকম আরও নানাবিধ উপায়ে। আফিম নিতে নিতে আসক্ত হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত আমরা টের পাই নি। এখন আর খবরের কাগজের রমরমা দিন নেই। বিনোদনের জগতে টিভি চ্যানেলও হালআমলের ওটিটির প্রসারে পিছিয়ে গেছে অনেকাংশেই। কিন্তু আসক্তির মায়াজাল থেকে আমাদের কোন নির্বাণ জোটে নি। আমাদের আসক্তি ছোট মাদক থেকে বড় মাদক, তা থেকে আরও বড় মাদকের পানে ক্রমাগত ধাবিত হয়েছে। হতে হতে সেই গণ-আসক্তির চেহারা এত কদর্য হয়েছে যে চোখ মেলে দেখা যায় না। গরীবের গরীবও আজ টিকটকে তার পেট আর কোমর খোলা দু'টো দোল-দোল-দুলুনী নাচ দিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকে, তার ঘরে একদিন বস্তা বস্তা টাকা উঠবে!

এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে সে হতাশা ভুলে যায়। না পাওয়া ভুলে যায়। নিজেকে প্রয়োজনের চেয়ে "ইতিবাচক" মানুষ হিসেবে ভাবার চর্চা শুরু করে। জীবনে একটা কোনকিছু যার ইতিবাচক নয়, সেও অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে কোন কাজ না করে দিনভর বসে ভাবতে থাকে "সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন, এভাবেই।" এই ঘটনাগুলোই কি মদ, হেরোইন, কোকেন, এলএসডি-র মতো মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারেও ঘটে না?

পৃথিবীর কোন ব্যাক্তির বা জাতির কি আজ অবধি রক্তপাত, আত্মত্যাগ কিংবা অন্ধকারের ভেতরে হাতড়ে মরা অধ্যবসায় ছাড়া সত্যিকারের টেকসই উন্নতি হয়েছে? কোন নজির আছে কোথাও? এখন যে টেকসই উন্নতি খুব একটা দেখা যায় না, তার জন্য কি বিশ্বব্যাপী উল্লিখিত "আসক্তি" ছড়িয়ে দেয়া গোষ্ঠী বা জাতিগুলো দায়ী নয়? লাভের গুড়টা যে সেই গোষ্ঠী আর জাতিগুলোই খাচ্ছে, তা কিন্তু খোলাচোখেই দেখা যায়। বিগত তিন দশকে ধনী যে দিন দিন আরও ধনী আর গরীব যে দিন দিন আরও গরীব হয়েছে, তা পৃথিবীর কোন দেশের জন্যই মিথ্যে নয়।

বলছিলাম গণ-আসক্তির বর্তমান কদর্য চেহারার কথা। ইদানীং আমাদের জীবনে যত কষ্টই থাক, ফেসবুকে নিজের কোন পোস্ট-এ কয়েকটা লাইক আর কমেন্ট দেখলে সেই কষ্ট কমে যায়। জীবনের প্রকৃত কোন সমস্যার সমাধান না হলেও, নিজের টিকটক প্রোফাইলে কয়েকটা ভিউ পড়তে দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। আর এটাই চেয়েছিল উন্নত বিশ্বের উন্নত মানুষেরা। গরীবেরা সামান্য সোশ্যাল লাইক, কমেন্ট আর ভিউ নিয়ে পড়ে থাকুক। বড় বড় সামাজিক ইস্যু, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ইত্যাদির প্রতিবাদ শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই জানাক। রাজপথে নেমে কারো গদি ধরে টান না দিক।

হীরক রাজার দেশে'র মতো কেউ যাতে আর "দড়ি ধরে টান মেরে রাজাকে খান খান" করে ফেলতে না পারে সেটাই ছিল তাদের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে, কিংবা আশপাশের অন্যান্য অনুন্নত দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে এ পরিকল্পনার সফল ও দৃষ্টান্তমূলক বাস্তবায়ন কি দেখা যায় না?

প্রকৃতপক্ষে আমাদের ভবিষ্যত যে কতোটা অন্ধকার, তা কি বলতে পারি আমরা কেউ?
---

পোস্টটি ২ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

মীর's picture

নিজের সম্পর্কে

স্বাগতম। আমার নাম মীর রাকীব-উন-নবী। জীবিকার তাগিদে পরবাসী। মাঝে মাঝে টুকটাক গল্প-কবিতা-আত্মজীবনী ইত্যাদি লিখি। সেসব প্রধানত এই ব্লগেই প্রকাশ করে থাকি। এই ব্লগে আমার সব লেখার কপিরাইট আমার নিজেরই। অনুগ্রহ করে সূ্ত্র উল্লেখ না করে লেখাগুলো কেউ ব্যবহার করবেন না। যেকোন যোগাযোগের জন্য ই-মেইল করুন: bd.mir13@gmail.com.
ধন্যবাদ। হ্যাপি রিডিং!