মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম'এর ব্লগ
হিমুর শোকে লক্ষ হিমু কাঁদে
হলদে রঙের পাঞ্জাবিটা গায়ে
ভর দুপুরে হাটে খালি পায়ে,
পার্কে বসে কাটে সারাবেলা-
হিমুটা না দারুন আত্মভোলা!
সবকিছুতে বেদম রসিকতা-
খেলার ছলে বলে গভীর কথা,
দাড়ির ফাঁকে হাসে মিটিমিটি-
চাঁদনী রাতে পড়ে রূপার চিঠি।
রাস্তা ঘাটে ঘোরে মহাপুরুষ
হৃদয় পটে আঁকে কাতর মানুষ!
বাসে ভালো জোস্না এবং কাক-
থাক সে কথা, গল্প হয়েই থাক।
হিমুর এখন মেঘের ওপর বাড়ি,
জোস্না ধোয়া চাঁদের সাথে আড়ি;
হিমু কি ঐ ধুসর জগত থেকে
এই নগরের খাঁ খাঁ দুপুর দ্যাখে!
কত্তো মানুষ এই শহরে থাকে-
হিমুর স্মৃতি কেইবা মনে রাখে!
কেউ কি জানে হলদে সোনা রোদে
হিমুর শোকে লক্ষ হিমু কাঁদে!
মায়া জালে বন্দী
মায়া জালে বন্দী হইয়া সাধের জীবন গেল বইয়া
একদিন যা ছিল আপন সবই হইব পর
ও আমার রঙিলা কইতর (২)
সোনার ময়না খুঁইজা খুঁইজা কাটাইলা দিন চক্ষু বুইজা
মাটির ময়না কাইন্দা মরে অন্তরের ভিতর
ও আমার রঙিলা কইতর (২)
যেইদিন পাখি যাইব উইড়া সোনার শিকল রইব পইড়া
আপন কইরা নিব তোমায় সাড়ে তিন হাত ঘর
ও আমার রঙিলা কইতর (২)
সেইদিন তোমার চক্ষু দিয়া দুখের নদী যাইব বইয়া
নিঠুর খাঁচায় পরান ভইরা কাইন্দো জনমভর
ও আমার রঙিলা কইতর (২)
আর কতকাল তুমি বেদনায় নীল হয়ে সব ব্যথা যাবে সয়ে
আধারের বুক চিরে শ্যামলী ব-দ্বীপ ঘিরে প্রত্যয়ী সূর্য ওঠে
শিশির কনার হাসি ফুটে ওঠে রাশি রাশি ঐ দেখ সোনার মাঠে
আর কতকাল তুমি বেদনায় নীল হয়ে সব ব্যথা যাবে সয়ে
জেগে ওঠো বাংলাদেশ আগুনের ফুল হয়ে
বেজে ওঠো বাংলাদেশ দীপ্ত শপথ লয়ে
মানুষের এই শোক যাতনায় ভাঙ্গা বুক বারবার দেখেছ তুমি
বেদনার মেঘমালা বৃষ্টি হওয়ার পালা হে আমার জন্মভুমি
আর কতকাল তুমি দুখের দহন সয়ে তিলে তিলে যাবে ক্ষয়ে
জেগে ওঠো বাংলাদেশ আগুনের ফুল হয়ে
বেজে ওঠো বাংলাদেশ দীপ্ত শপথ লয়ে
মানুষের ভেজা চোখে উষ্ণ সতেজ বুকে মুক্তির সেই বারতা
মুক্ত বাঁধনহারা সংগ্রামী জনতারা হে আমার স্বাধীনতা
আর কতকাল তুমি কাঁদবে একাকী একা সোনালী স্মৃতি বয়ে
জেগে ওঠো বাংলাদেশ আগুনের ফুল হয়ে
বেজে ওঠো বাংলাদেশ দীপ্ত শপথ লয়ে
আমার মাথার পরে মমতার ডালা ভরে হাত রাখো হে জননী
কোন এক কাক-ভোরে রাখালি বাঁশির সুরে বেজে ওঠো বঙ্গভুমি
লাল-সবুজের এই পতাকাটা উড়বেই এভারেস্ট চূড়া ছুঁয়ে
জেগে ওঠো বাংলাদেশ আগুনের ফুল হয়ে
বেজে ওঠো বাংলাদেশ দীপ্ত শপথ লয়ে
সোনার হরিন
নিঠুর বনে ঘুরে ঘুরে সোনার হরিন খুঁজে মরে
প্রান জুড়াতে চাও কী শীতল পাটি
সোনার খাঁচা একদিন হবে মাটি
দুখ পাখিটার নয়ন জলে সময় নদী বয়ে চলে
কোন সুখেতে নাড়ো কলকাঠি
সোনার খাঁচা একদিন হবে মাটি
আশায় আশায় জনম যাবে দেহঘড়ি দম ফুরাবে
পাবে তুমি পরপারের চিঠি
সোনার খাঁচা একদিন হবে মাটি
শোক যাতনা সকল ভুলে সাজবে জগত ফুলে ফলে
তোমার তখন চিরকালের ছুটি
সোনার খাঁচা একদিন হবে মাটি
নূতন বউ গো মারিস না গো
ফারলু (বি.এ) করল বিয়ে
পঞ্চাশে।
বউটি পুঁটি বয়েস ঊনিশ
(কাঞ্চা সে)।
বাসর রাতে ধুসর দাঁতে
পান খেয়ে,
বউকে বশের চৌকা রসের
গান গেয়ে;
ফারলু ভাবে যাবেই যাবে
পার পেয়ে।
ফোকলা বরাত! কাটল সে রাত
মার খেয়ে।
থাবড়া খেয়ে ফারলু (বি.এ)
গাল খোটে;
‘নূতন বউ গো মারিস না গো’-
বোল ফোটে।
‘টুনটুনিরে অফ যা ওরে
আজ রাতে;
কাল সকালে যাস গে চলে
বজরাতে’।
মিষ্টি পুঁটি চালায় লাঠি
তার পিঠে;
মারের চোটে ফুটল পিঠে
কালসিটে।
কাঞ্চা পুঁটি বলল উঠি
(চালাক সে),
‘খামোশ বুড়া করব খোঁড়া
তালাক দে’।
হেঁচকি তুলে ফারলু বলে,
‘এক তালাক’।
‘কাবিন নামার ছ’ লাখ টাকার
চেকটা লেখ্’।
পুঁটির মুখে খাতির দেখে,
চেক লেখা!
চোখের ভুলে, নাকের জলে
মুচলেকা।