মর্ম'এর ব্লগ
কালো কার্বন ফাইবার ফ্রেমের চশমা
কালো কার্বন ফাইবার ফ্রেমের চশমাটার গায়ে আলো পড়ে না সহজে। কালো গায়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার চেপে থাকে কখনো, কখনো এক চিলতে আলো ছুঁয়ে যায় ধুলো জমা কাঁচে। কখনো মানে যখন যেখানে চশমাটার বাস- ড্রয়ারটা খোলে।
নিজে থেকে তো আর হয় না- কেউ খোলে যখন, তখন। আলো আসে, ধুলোজমা কাঁচে আবছা প্রতিচ্ছবি ভাসে। কখনো কোন হাত, কখনো কপাল, কখনো দুটো চোখ- কখনো কাছাকাছি আসতে থাকা হাত।
শেষবারের হাতের স্পর্শে চশমাটা সরে গেছিল একটু, ওর নিয়মের জায়গা থেকে। মাঝারি আকারের খাতা একটা, বাঁধাই করা, পেপারব্যাক বাঁধাই- অত শক্ত কিছু না, আবার চট করে ছিঁড়ে যায় অমনও না।
উপরে সুন্দর করে লেখা- “লেখার খাতা”। সেটা লেখা না অবশ্য- ছাপা। কিন্তু ছাপাটা আবার লেখার মত দেখতে, কী একটা ঝঞ্ঝাট, বোঝানোও তো মুশকিল।
শিখিয়ে কথন - পর্ব ১
[প্রাক-কথনঃ
বন্ধু Reajul Alam Chowdhury'র সাথে কথা হচ্ছিল 'অভিজ্ঞতা' নিয়ে। তার মতামত হল, শুধু 'অভিজ্ঞতা' অর্জন করলেই হয় না, কখনো কখনো একটু দূর থেকে চড়ে-আসা-সময়ে নজর দেয়াটাও জরুরি, তাতে অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার আরো ঋদ্ধ হয়।
সময় মিলেছে এখন, কাজেই করছি সে কাজ। নিজের এবং আরো অনেকের কর্মযজ্ঞ মনে করছি, কী-হলে-কী-হতে-পারত'র হিসাব নিকাশ করার চেষ্টা করছি- ক্রিকেটের "হক-আই" পদ্ধতিতে! যা হয় তা তো হয়ই, সে 'হয়ে যাওয়া'টুকু থেকে 'শেখা'র কিছু আছে কি না সেটা দেখতে পাওয়াটাও 'অভিজ্ঞতা' বৈকি!
পেশাজীবনে প্রায় চার হাজার দিন কেটে গেছে, 'শেখা' কিছু কম হয়নি। ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়, চেষ্টায়, শেষটায় কিছু না কিছু শেখা তো হয়েইছে কারো না কারো হাত ধরে; কখনো আলাদা করে বলা হয়নি, করা হয়নি সে গল্প। জানানো হয়নি কৃতজ্ঞতা। কেউ হয়ত জানেনও না যে তিনি শ্রদ্ধাভাজন হয়ে আছেন, কিছু একটা শিখিয়ে।
নানা আর নানা'র নাতি
লিখছি। আর ব্যাকস্পেসে মুছে নিচ্ছি। আবার লিখছি। আবার মুছে নিচ্ছি।
আগেই ভাল ছিল হয়ত- কাগজে, কলমে লেখা। একবার লিখে ফেললে মুছে ফেলার উপায় বড় কম, অত কষ্ট করতেও বিরক্ত লাগে। কাটাকুটি ভাল লাগে না দেখতে, আর রবীন্দ্রনাথের কাটাকুটির কারুকার্য তো আর সবার জন্য না। কাজেই কাটাকুটি না করাই শ্রেয় লাগত সে সময়টায়।
২০০২/০৩। কলেজে পড়ি। কী হল হঠাৎ, মনে হল লিখতে হবে। লিখতে হলে জানতে হবে, বুঝতে হবে, প্রকাশভঙ্গি নিয়ে ভাবতে হবে এরপর লিখে প্রকাশ করতে হবে, সেও নিজে বার বার বার বার পড়ে তার পর আরো ঠিকঠাক করতে হবে- অত কিছু বোঝার বোধ হয়নি বোধ হয় তখনো- আমি তখন অনেএএএক বুঝি!
সব ফুরোবে
সব ফুরোবে।
সকাল সকাল অনিচ্ছাতে ঘুমকাতুড়ে ঘুম তাড়ানো,
ইচ্ছেবিহীন, শরীর টেনে নিত্যদিনের পথ মাড়ানো,
অপেক্ষাতে পথের পাশে চোখ ফেলা আর চুপ দাঁড়ানো,
কানের কাছে গান জড়িয়ে হঠাত করে মন হারানো।
সব ফুরোবে।
ব্যস্ততা। আর বিরক্তিভর রুটিনমাফিক ট্রাফিক ঠেলা,
সুড়কিবোঝাই পথের তোড়ে রিকশা এবং ঝাঁকনি খেলা,
স্কুল ছুটিতে, রাস্তাজুড়ে, তিড়িং বিড়িং হাঁটার মেলা,
ভরকুয়াশায় রোদ পোহানোর তৃপ্তিটানা সকালবেলা!
সব ফুরোবে।
চেষ্টা নামের মুলোর দিকে নিরুদ্দিশে ছোটার তাড়া,
ভুল হল কী খোঁজার নামে আঙ্গুল তাক আর বলার ধারা,
ভুল করে তা চাপার তাকিদ, আর অকারন সঙ্গছাড়া,
বিশ্বাসে ভর করার আগেই অবিশ্বাসে দৃষ্টিহারা।
সব ফুরোবে।
স্বার্থ বুঝে দায় এড়ানো, পাশ কাটানোর চেষ্টা,
দোষ গেয়ে খুব শুকনো গলা, তাই মেটাতে তেষ্টা
শুরুর শুরু বোঝার আগেই গপ্পে টানা শেষটা,
এক চুমুকের চায়ের সাথের দুরন্ত সন্দেশটা!
সব ফুরোবে।
প্রাত্যাহিক
সকাল সকাল বাইরে বেরোই রোজ,
দিন কেটে যায়, আবার ফিরি রাতে,
দিন কেটে দিন এমন দিনও আসে,
হয় না দেখা ঘরের সবার সাথে।
ব্যস্ত ভারি, দিনের কাজের ভীড়ে,
হয় না কথা, আড়াল খোঁজে মনও,
দিন কেটে যায় এমন দিনও আসে,
বেদম ভুলি বিশেষ কোন ক্ষণও।
হঠাত যদি কিছু'র অজুহাতে
মুঠোফোনে কন্ঠ শুনি কারো,
দিন কেটে যায় এমন দিনও আসে,
খুব চেনাদের অচিন লাগে আরো।
চলুক যেমন, যন্ত্রসম 'আমি',
কিংবা আমায় হজম করা 'তাঁরা'-
দিন কেটে যায় এমন দিনও আসে
একের ডাকে দেয় না আরেক সাড়া।
তাও তো ফিরি, নিজের ঠিকানাতে,
আশায় বাঁচি দেখব কেবল ভাল,
জানব সবাই শান্তি নিয়ে আছে,
খুশির চাদর ঢাকছে যত কাল।
অমনি করে হয়ত 'তাঁরা'ও ভাবেন,
দিন প্রতিদিন অপেক্ষাতেই পার,
"সুস্থ থাকুক, ফিরুক নিরাপদে,
এর চে বেশি চাই না কিছু আর।"
লক্ষ মানুষ, হয় 'আমি' বা 'তাঁরা',
এইটুকুনই হয়ত দিনে চাওয়া,
দিন প্রতিদিন এমন দিনও আসে,
অবসন্ন ছন্দ
মগজের ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে মরি ছন্দ,
ঘুরে মরা চিন্তায় মেশা ভাল মন্দ,
খুঁজি কিছু স্বস্তি আর কিছু শান্তি,
কেবল ছিটকে আসে জমে থাকা ক্লান্তি!
বিব্রত নিউরন দ্রোহ গুঁজে পকেটে,
নির্দেশে জুড়ে যায় চিন্তার সকেটে,
ইচ্ছারা ধুয়ে যায়, হয়ে যায় অন্য,
ভুলে যায়, ডুবে হয় অবসাদ-ধন্য!
বিশ্রাম, বিশ্রাম, আহাজারি যুঝতে,
সময় পেরোয় অত আর্তিও বুঝতে,
থেমে যায় চিন্তা, হরতালে শব্দ,
নিজের নিজের কাছে সকাতর জব্দ!
ছুটি নেই, বিরামেও, তাই শত শর্ত,
শান্তি দিতেই পারে, চেনা এই মর্ত্য,
তবে দুশ্চিন্তার দায়সারা কর্ম,
শান্তি মোচনই বুঝি শুধু তার ধর্ম!
কবে শেষ? কবে শেষ! জিজ্ঞাসে নিঃশ্বাস,
যত দিন, তত দিন, থেমে থাক বিশ্বাস!
ঝিম ধরা মগজে ঘুমে থাক ছন্দ,
জেগে নয় উঠবে, আগে যাক মন্দ!
বৈশাখী
সকাল থেকে এক দুয়ে সব গুণে রাত্তিরে সব হিসেব কষার কাল,
কী হল ঠিক? ভুল বা হল কীসে? কী হলে বেশ খুশির হত হাল!
হয়নি কী? বা কী-ই বা করা যেত? কার কী গেছে কিসের অভিলাসে?
সহজ নাকি কঠিন সময় সময় গেল? কে গিয়েছে? রইল কে বা পাশে!?
এত্ত হিসেব করার চেয়ে যদি মুহূর্তটা কাটত যদি ঠিক,
যখন যেথায় যার পাশটায় আছি 'ভাল'র ঘরে পড়ত যদি 'টিক',
মানুষগুলো কিংবা মানুষ কোন, এক্কেবারে কাছেই, যে বা যাঁরা,
ছোট্ট কতক স্বপ্ন নিয়ে আছে, এই তাকানোয়, কথায় নতুন ধারা,
ঘুরঘুরিয়ে কেবল ফিরে এসে 'কেমন আছ'র পরশ গায়ে'র 'পরে,
'করছ কী বা' শব্দবিহীন ঠোঁটে 'এইত আছি'র জানান দেয়া ঘরে,
কেবল যদি সেই সে সময়টুকু একটু হাসি শব্দে সেজে দিয়ে,
অব্যক্ত সব 'চাইছি-ভাল-শুধু'র শুভেচ্ছাতে মুখর করে নিয়ে,
যায় জানানো 'এইখানেতেই আছি' কিংবা 'আসি! নতুন কোন কাজ?,
'সাগর সেনের গান শুনে গে বরং' কিংবা 'হুকুম! হে জাঁহাপন! আজ-!'
বর্ণময়
এ-তে 'এসো' এবার সবাই বসি,
ত-তে 'তাতে' অনেক মজা হবে,
ব'র 'বর্ণ' বাক্যে যাবে মিশে,
শ'র 'শব্দ' তায় লুকিয়ে র'বে!
স'র 'সকালে' ঘুমটা ভেঙ্গে যেতেই,
দ-তে 'দাঁতে' ব্রাশ করবার চোটে,
হ-তে 'হাতে' সাবান দিয়ে ধুতেই
জ'র 'জীবানু' প্রাণ নিয়ে সব ছোটে!
ঝ'য় 'ঝলমল' মুখের হাসির সাথে,
ন'য় 'নাস্তা' প্রতিদিনের মত,
ল'য় 'লক্ষ্মী' সবাই পা'বে হত,
ক-তে 'কথা' মানবে সবার যত!
প-তে 'পড়া' সময়মত হবে,
খ-এ 'খেলা'ও, যত্ত পড়ার ফাঁকে,
র-তে 'রেজাল্ট' দারুন হবেই হবে,
খ-তে 'খুশি'র আর কী বাকি থাকে!
অ-তে 'অসুখ' থাকবে দূরে দূরে,
ন-তে 'নিয়ম' মানতে হবে তাতে,
ব-তে 'বড়', ওঁদের কথা শুনেই
আ-তে 'আদর' মিলবে কিছু সাথে!
ছ-তে 'ছুটি'র দিনগুলোতে খুশি,
গ-তে 'গেম' আর 'গল্প-বই'ও কাছে,
ক-য় 'কার্টুন'- ঘ-তে 'ঘোরাঘুরি'-
অ-তে 'অনেক' আনন্দরা আছে!!
উনারা
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
আমরা সবাই খাচায় থাকি বসে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
উন্নয়নের গাল দিয়ে যাই কষে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
চোখ বুজে নেই, উধাও দেখার জ্বালা,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
ঠোট চেপে দেই মুখের মুখর তালা,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
কান ছেড়ে দেই, নিক না দু'খান চিলে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
নর্দমাতে জল খাবে সব মিলে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
মানবদুখে কপোল যাবে ভেসে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
হেচকি গিলে শেষ হবে সব হেসে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
ঝুলবে মুখে বিজ্ঞাপনের হাসি,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
ইদুর হবে সিংঘমামার মাসি,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
পুতুল শত নাচবে পথের ধারে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
রদ্দা এসে পড়বে ঘাড়ে ঘাড়ে,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
ফুটবে মুখে কাকাতুয়ার বুলি,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
পথের কাকড় পাল্টে হবে ধুলি,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
ফেলব জাল আর নিজেই দেব ধরা,
ঐ উনাদের ইচ্ছে হলেই হল
আমার তোমার এইটুকুনই করা!!
(অনিচ্ছাকৃত কিছু বানান ভুল রয়ে গেল, কোনভাবেই ঠিক করা যাচ্ছে, প্রথম সুযোগেই ঠিকঠাক করে দেবার প্রতিশ্রুতি রইল)
শারামারা
নরসুন্দরে হস্তে ধরিয়া একখানি দিয়া কাঁচি,
কহিয়াছে কেহ, "কাটিয়া দেহ, এইবেলা তবে বাঁচি!"
কুন্তলে তার দৃষ্টি পড়িতে হা হা করি শত মানা-
"ঐখানি নহে, কাটিতে হইবে মগজের ফোঁড়াখানা!"
নরসুন্দর হাসিয়া কহে, "উহা কি পারিব আমি?
মুন্ডু ভেদিয়া উঠিয়াছে যাহা তাঁদেরে ছাটিয়া থামি,
কী ফোঁড়া রহিছে মগজেরি তলে, উহারে আনিব কাটিয়া?
জানিনেকো, খুলি নারকোল বুঝি? ধরিলে যাইবে ফাটিয়া!"
"তাহা কেন বাপু? অত কেন কথা? বড্ড বকিছো দেখি?
পারিবে না কেন? হইয়াছ ভারি আমড়া কাঠের ঢেঁকি!
ডাক্তারে কাটে ছুরি কাঁচি দিয়া, বিদ্যা তোমারো তাতে,
কতজনে কত দূর হতে আসি নতশির তব হাতে,
সেই ডাক্তারে পারিতেছে যদি হইবে তোমারে দিয়া,
আজ হতে তুমি ইহাও করিবে,আস তব কাঁচি নিয়া!"
যাহারা জগতে ভাবিছে বসিয়া কাঁচি দিয়া দিলে কর-এ,
নরসুন্দর দন্ত বিকাশি উহারে যদি বা ধরে,
লাগিবে না আর ডাক্তার আর বাঁচিবে কাজের ধারা-
উহাদেরি কহে 'বুদ্ধিজীবী', আরো কহে 'শারামারা'!!!
কোরবানী
কোরবানী হোক লোক দেখানোর দায়,
কোরবানী হোক মিথ্যেটুকুর সায়,
কোরবানী হোক অহম জেদ আর ক্রোধ,
কোরবানী হোক অ-সমতার বোধ,
কোরবানী হোক হামলে নেয়া দ্যুতি,
কোরবানী হোক মিথ্যে প্রতিশ্রুতি,
কোরবানী হোক অনড় ইগোর চাওয়া,
কোরবানী হোক দুর্নীতিতে পাওয়া,
কোরবানী হোক দেখায় বিভেদ যত,
কোরবানী হোক কোরবানীরই মত,
কোরবানী হোক 'অসত্য' আর 'দামী',
কোরবানী হোক আস্ফালনের 'আমি',
কোরবানী হোক 'অনাচারের সাধ',
কোরবানী দিক কোরবানীরই স্বাদ!!
ঈদ মুবারক!!!
ইশকুলে
লাল ইটে গাঁথা গেট- তার দুই ধারে,
আমাদের আমরা দেখি বারে বারে,
ঐপারে স্কুল আর দালানের পারে,
ঐ পিটি চলে আর ঐ দেখি কারে-
আমাদের স্কুল, আমাদের সময় গাঁথা,
স্মৃতি অন্নদা, শত স্মৃতি বাঁধা-
সাদা আর নীলে, বুকে স্কুলের ছাপটা,
ক্লাশে পড়া করা নয় ঝড় আর ঝাপটা,
লেইজারে হাওয়া- নয় ছোট পাপটা,
পেছনের ওয়ালে- আর শেষের ধাপটা,
আমাদের স্কুল, আমাদের সময় গাঁথা,
স্মৃতি অন্নদা, শত স্মৃতি বাঁধা-
সালাম ভাইয়ের সেই ছুটির ঘন্টায়,
রমজান ভাই গেটে, খুশি মনটায়,
ক্লাশে হাসাহাসি কত বোঝার ক্ষণটায়,
এল টি’র পেছনের সিগারেট-লনটায়,
আমাদের স্কুল, আমাদের সময় গাঁথা,
স্মৃতি অন্নদা, শত স্মৃতি বাঁধা-
নিঃস্বার্থ সেই দিনের শেষে,
যেতে যেতে পথে কত ভালবেসে,
যত দূরে থাকি, ফের ফিরে এসে,
বন্ধুরা যত, সেই আগের বেশে,
আমাদের স্কুল, আমাদের সময় গাঁথা,
স্মৃতি অন্নদা, শত স্মৃতি বাঁধা।।
[ব্রাহ্মণবাড়িয়া'র অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়- স্কুলটির জন্ম ১৮৭৫-এ এবং বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিদ্যাপিঠসমূহের একটি। ১৩৮ বছর বয়সী স্কুলটিতে এককালে পড়েছি, পড়েছে আমার মত আরো অনেকে-
পড়া-পর : বিমল কর-এর 'দেওয়াল'
['বইপড়ুয়া' নামে একটা গ্রুপ আছে 'ফেসবুক'-এ। সে এক আজব জায়গা। হাজার পেরিয়ে তার সদস্য। একেকজন একেকরকম, তবে একটা জায়গায় ভারি মিল, তাঁরা হয় বই নিয়ে বলতে ভালবাসেন নয় শুনতে ভালবাসেন। আবার ওরাই লেখেন, বই নিয়ে। কেমন লাগল, কেন কেমন লাগল- এই সব! অনেক অনেক শুনতে শুনতে আর পড়তে পড়তে কেমন উশুখুশ লাগতে থাকে- তখন মাঝে মাঝে কিছু বলা হয়েই যায়! সে কথাগুলো এখানেও থাকে যদি, মন্দ হয় না বোধ হয়!
এ লেখাটা 'বিমল কর'-এর 'দেওয়াল' নিয়ে।]
স্কুলে বা কলেজে পড়ি তখন, পড়ছি পড়ছি (পাঠ্য বই ছাড়া আর কি!)- হঠাৎ কী হত, ঘড়ির দিকে কড়া নজরে তাকাতাম, ক'মিনিট হল আর কট্টুক পড়লাম তা দেখার সাধ! অংকে কাঁচা তাতে কী, ঐকিক নিয়মে বের করে ফেলা যেত ঘন্টায় গতিবেগ কত! ৫০ পৃষ্ঠা, ৬০না পৃষ্ঠা না পুরো সেঞ্চুরি?!
সে দিন ও গেছে, ঘড়ি দেখাও! ব্লগ পড়ে পড়ে কী অভ্যাস হয়েছে, আধপাতা পড়েই মনে হয় অনেক হল! বই পড়া! সময় কোথায় অত?!
হঠাৎ সময় মিলল। মোটা বই হাতে তুলতে ভয়, লেখকের নামেও অস্বস্তি, তবু দুঃসাহস করা গেল!
দায়শোধ- পর্ব ৫
এমনি করে প্রহসনের খেলা
না হলেও কাটত সবার বেলা
না হলেও ঘুরক ঘড়ির কাঁটা
আর বাঙ্গালীর থাকত কপাল ফাটা
ঘুরত ঠিকই রাজনীতিকের কল
থাকত বেঁচে শাষক শোষক দল
থাকত যত নর্দমা আর কীট
কিছু লোকের থাকত মাথার ছিট
থাকত মানুষ রক্ত ভেজা হাতে
স্বপ্ন কিছু মরত প্রতি রাতে
প্রহসনই করতে যদি হবে
আর কিছুতে পড়লো না চোখ কারো!
বিচার করে আমরা খুনীর পায়ে
সালাম কুটি! বেশ মেরেছো! মারো!
প্রাণের স্বদেশ, যাঁদের প্রানে কেনা
এই অপমান, না হলে কী হত!
আর কতকাল? আর কতকাল খেলা?
আর কতকাল চলবে অবিরত!?!
অন্যজগত
গুমোট দিনে একটুখানি বাতাস
পাওয়ার আশা,
আবেগঢালা নিত্যনতুন আলাপ-ছবির
বাসা,
খবর দেওয়া খবর
নেওয়া ঠাট্টা হাসির লহর
একটু চেনা আর অচেনায় ছোট্ট কথার
বহর,
অস্থিরতা অপ্রাপ্তিদের একটু
দূরে ঠেলে
এক জগতে বেশ সয়ে যায়
আরেকটাতে পেলে-
সেই জগতেও লোভ-কামনা, ক্রোধের
ছড়াছড়ি
আবেগ নিয়ে ব্যবসা এবং কারোর
হাতে ছড়ি,
নিয়ন্ত্রনের লালচে চোখে শব্দ
ছোঁড়া বারণ
আর জগতের শতেক ঢিলে ঢেউ
তোলাটাই কারণ,
বাক্স খুলে অশান্তি আর কুমন্ত্রনার
ডাক,
কী প্রয়োজন? একটা জগত, থাক না!
বেঁচে থাক!
একটা জগত- গড়ার আগেই, হয়ত
ভাঙ্গার পথে,
হাজার হাজার জগত হবে হাজার
হাজার মতে!!