ইউজার লগইন

আত্নার কাটা-কুটি

আমার বাবা খুব সাধারণ একজন মানুষ। অনেক কিছু শিখেছি আমি আমার বাবার কাছ থেকে। বাবাকে নিয়ে কখনো গল্প করা হয় নি। এখন একটা কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। ছোটবেলা থেকেই বাবার কাছ থেকে সৎ থাকা, নির্ভেজাল থাকা আর অহংকার না করার শিক্ষা পেয়ে পেয়ে বড় হয়েছি। আমি তাই জোর গলায় বলতে পারি আমার বাবাকে কখনো অসৎ কোনো কাজ করতে দেখিনি। বাবারও দোষ আছে, তবে দোষ-গুণের পাল্লায় আমি ভালোকেই বেশী চিনেছি। আমি বাবাকে আদর্শ মানি, অনেক কারণেই মানি। বাবাকে আমি অনেকটা ভেতর থেকে দেখতে পারি, পড়তে পারি।

আমি পুরুষদের যতটা ভেতর থেকে দেখতে পারি, নারীদের ততটা পারিনা। কিছু আমার জীবনে নানান রুপে আসা নারীরা যারা আমার কাছে এসেছে, সুখ-দুঃখের কথা বলেছে, বিপদে পরামর্শ চেয়েছে, করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছে- গুটি কয়েক বাদে সবারই মন্তব্য ছিলো আমাকে তুষ্ট করার মতো। আমি সবাইকেই পড়তে ভালোবাসি। এটার শিক্ষা পেয়েছি বাবার কাছ থেকে। আমি বা আমার বাবা- পারি আর না পারি, অন্যকে পড়তে ভালোবাসি, পড়তে চাই। এর জন্য আমি অনেক খুশী- আমার বাবার প্রতি।

আমি অনেক বড় একটা অর্জন হারিয়েছি, আমি যা ভাবিনি আগে। আশ্বস্ত ছিলাম, তাই বিপরীতের রূপ নিয়ে ভাবিনি। আজ তার সামনে দাঁড়িয়ে। সময় আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, বদলে দিয়েছে, নষ্ট করেছে, পূনরায় গড়েছে, স্বপ্নও দেখিয়েছে, দেখতে বাধ্য করেছে। স্বভাবজাত কিছু দোষ থেকে মানুষের সহজে মুক্তি মেলে না। তবে চাইতে হয়। আমারও অনেক দোষ মুক্তি পায়নি, তবে আমি চেয়েছি- বার বার চেয়েছি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি মুক্তির জন্য এসব কাঁটাকে ভাঙ্গতেই থাকবো, যতবারই গজাক- মাথা চাড়া দিয়ে উঠুক, ভাঙ্গতেই থাকবো।। এই তো আমি!

আমি কাঊকে কষ্ট দিতে চাই না। দিলে আমিও কষ্ট পাই, হয়তো যাকে দিলাম সে প্রতিশোধের আগুনে পুড়তে থাকে, রাগে অভিসম্পাতের ঝুলি নিয়ে বসে, কষ্টে উলটা পথ ধরে; কিন্তু আমার পাল্টা কষ্ট পাওয়া দেখে না কেউ কেউ। আমি ভালোর স্বপ্ন দেখতে অভ্যস্ত, খারাপকে ভালো করে বানিয়ে কল্পলোকে হলেও দেখে অভ্যস্ত। হয়তো তাই আমার মাঝে হতাশার বীজ কখনো চারা গজাতে পারে না, গজানোর আগেই নষ্ট হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু হতাশা আর ব্যর্থতা জীবনকে দংশন করে যেতে থাকে, পদে পদে পেছনটাকে সামনে নিয়ে আসে। বার বার মনে করিয়ে দিতে থাকে কেনো করেছ এটা, কী করেছ এটা, না করলে কী হতো না?? - আমি নিরুত্তর। সামনের দিকে চেয়ে সোনালি ভবিষ্যত বানাতে ব্যস্ত থাকি, পেছনের অভিশপ্ত অতীত ছুড়ে ফেলে দেই বার বার, সোনালী অতীত সামনে আনায় যদি শান্তি মেলে- কেনো তবে কুৎসিতের কলরব ??

- হ্যা, সবাই তো একভাবে ভাবে না। সবাই এক হলে তো আলাদা করে "ভিন্ন" শব্দই দরকার পড়ত না। আজ আমি এক কথা বলছি, নিজের স্বার্থেই আমি কাল অন্য সুরে গাইবো। এইতো মানুষ, ভুলের পাহাড়ে শুদ্ধ খুঁজতে আমাদেরই কিছু অনন্য আরোহীর অনিন্দ্য শীর্ষ-যাত্রা !
কেঊ কেঊ তো শীর্ষে ঠিকই পৌঁছায়। অনেক হৃদয়ে ঠাই করে নেয়; কিন্তু, কজন'ই বা সেটা চায় !! কজন'ই বা সেটা বুঝে !!!

পোস্টটি ১১ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মীর's picture


আত্মার কাটাকুটি ভাল হয়েছে। চালু থাকুক Smile

তানবীরা's picture


পড়লাম Laughing out loud

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

মৃধা সাইফুল's picture

নিজের সম্পর্কে

লিখতে ভালোবাসি, সেই সাথে ভালোবাসি অন্যের লিখিত কথা পড়তে। ব্লগে আমার যাত্রা সবে শুরু, তবে আমার ফেসবুকই ২০০৮ থেকে আমার ব্লগ হয়ে ছিলো, তাই হয়তো এখানে নিজেকে মেলে ধরতে তেমন কষ্ট হবে না।

ইতিবাচক ধ্যান-ধারনাপুষ্ট মন গড়েছি অনেক সময় নিয়ে; এক্ষেত্রে চিন্তার বিকাশ বড্ড সহায়তা করেছে বলা যায়। এই বিকাশ আপনাদের লেখায় আরো বিকশিত হবে, এখানে সেই প্রত্যাশা নিয়ে আমার পদযাত্রার শুভ কামনা নিজেই করছি।