চন্দ্রাবতীর গুণাবলী
“আমি তোমাকে ভালবাসি”। “এই ফুলটা খুব সুন্দর”। “এই বইটা খুব ভালো”। তোমাকে আমি কেন ভালবাসি, কেন এই ফুলটা সুন্দর, বইটা কেন ভালো, এ সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্য খুবই কঠিন । অনেকেই এ সকল প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে দিতে পারবেন হয়তো, কিন্তু আমার মত স্বল্পজ্ঞান সম্পন্ন মানুষের জন্য তা সহজ নয় । তা’ছাড়া, সকলের ভালো-লাগা মন্দ-লাগা কখনোই একই রকম হওয়ার সম্ভাবনা সমান হয়না । ‘আমার চোখে চন্দ্রাবতী’র দু’জায়গায় আমি বলেছি, “ভালো কিছুর মধ্যেকার মন্দ আমাকে বড্ড বেশী কষ্ট দেয়”। এ কথা দিয়ে আমি বুঝাতে চেয়েছি যে বইটি আমার ভালো লেগেছে । আরিফ জেবতিকের ফ্লাপের লেখাটার প্রতি আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম, যদিও আমি সেটার সাথে একমত তা পোষ্টে সরাসরি বলা হয়নি । ঐ লেখাটার সাথে একমত পোষণ করে চন্দ্রাবতীর চোখে কাজল রংয়ের ভালো কিছু দিক নিয়ে আরিফ জেবিতিক যা বলেছেন তা আমি এখানে উদ্ধৃত করবো ।
আরিফ জেবতিক লিখেছেন, “মজিদ হাজীর বাড়ির ছাদে প্রতি পূর্ণিমায় কি একটা ঘোড়া হেঁটে যায় ? কেন যায় ? এক কিশোরীর একান্ত ব্যক্তিগত বোধগুলোর সঙ্গে মোবাইল ফোনের মিসডকল, নিপীড়নকারী শিক্ষক আর ছাদে হেঁটে যাওয়া পূর্ণিমার ঘোড়ার যোগসূত্র কোথায় ? এরকম অনেকগুলো রহস্য মিলিয়েই এই উপন্যাস । তারপর মুহূর্তেই আবিষ্ট করে ফেলে পাঠককে । একজন কিশোরী চন্দ্রাবতী যখন ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় – তখন তার বাস্তবতা, তাকে ঘিরে থাকা মুখোশপরা মানুষের উন্মোচিত প্রতিকৃতি, একান্ত আপনজনের ব্যবহার এসব নিয়ে রুদ্ধশ্বাস এর প্রতিটি পৃষ্ঠা ।
ইভটিজিং নিয়ে সমাজপতিরা যখন ভাবনাই শুরু করেননি, মিডিয়া যখন সমাজের এই অন্ধ নির্যাতনের গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হয়নি, তখনই এই উপন্যাসের শুরু হয় আবদুর রাজ্জাক শিপনের কলমে । অন্তর্জালের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য পাঠক এই উপন্যাসের ধারাবাহিক প্রকাশ প্রত্যক্ষ করেছেন, দেখেছেন প্রতি মুহূর্তের বাঁকবদল ।
এই গল্প আমাদের নাগরিক পাঠকের অভ্যস্ততার বাইরে । এই গল্প এক কিশোরীর একান্ত অনুভবের গল্প, এই আখ্যান আমাদের একটা না গ্রাম, না শহরের মেয়ে চন্দ্রাবতীর জীবনের নিজস্ব বোধ, তাকে ঘিরে থাকা অসংখ্য মানুষ, তাদের প্রচেষ্টা ও স্বপ্নের গল্প ।
পাঠ করলেই বুঝা যায় আবদুর রাজ্জাক শিপন অপরিসীম দরদ দিয়ে এই উপন্যাস লিখেছেন, তার মমত্ববোধ এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় । শিপন যে মমতায় চন্দ্রাবতীকে ছুঁয়েছেন, সেই স্পর্শ পাঠকও অনুভব করবেন, এমনটাই বিশ্বাস ।”
সত্যি বলতে কি শিপনের সেই মমত্ব আমাকে আবিষ্ট করেছে । ‘আমার চোখে চন্দ্রাবতী’তে আমার সেই অনুভূতির কথা আমি বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি তা করতে পারিনি কিছুটা আমার মনের ভাব প্রকাশের ক্ষমতার স্বল্পতার জন্য, আর কিছুটা দ্বিধার কারণে । দ্বিধা এজন্য যে, অনেকেই তা’হলে ভাবতে পারেন যে আমি সেটা লিখেছি পাঠককে বইটা কিনতে উৎসাহিত করবার জন্য, অর্থাৎ সেটা হয়ে উঠতে পারতো বিজ্ঞাপনের মত । আর আমার এই ক্ষুদ্র মানসিকতার জন্যই নিজে ভালো কিছু না-বলে আরিফ জেবতিকের লেখাটা পড়বার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম ।
আর বইটার ত্রুটি নির্দেশ করেছি আমার পান্ডিত্য জাহির করবার জন্য নয়, নেহাতই দায়িত্ববোধ থেকে । আমার একজন বন্ধু, একজন সহব্লগার, একজন সিনিয়র ব্লগারের ত্রুটিনির্দেশ করে তাকে ভবিষ্যতে আরও ভালো করবার প্রয়াসে আমি তা করেছি এবং যদি আমার সামর্থে কুলায় তবে এরপরও আমি তা করব । যদি কেউ এটাকে ভাবেন যে, এর মধ্যে আমার কোন অসৎ উদ্দেশ্য আছে তাতে আমার কিছুই করার নেই ।
পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, অনেক নামী-দামী লেখকের বইয়ে গল্প ছাড়া সমাজ চেতনার কোন ছাপ থাকে না, তা নেহাতই হয় সময় কাটাবার সুখপাঠ্য একটা গল্প । কিন্তু শিপন তার চন্দ্রাবতীকে সামনে রেখে অত্যন্ত বাস্তব ও সময়োপযোগী একটা বই পাঠকদের উপহার দিয়েছেন । পাঠককে আনন্দ প্রদানই এখানে একমাত্র লক্ষ্য নয়, সচেতন করে তুলবার প্রয়াসই বরং প্রাধান্য পেয়েছে । একই সাথে এটা একটা সুখপাঠ্য বই এবং লেখকের আন্তরিকতার ছাপ এতে সুস্পষ্ট । পুরো বইটি পড়বার সময় পাঠককে আবিষ্ট করে রাখবার মত একটি বই ‘চন্দ্রাবতীর চোখে কাজল রং’।
বাহ্। নাজমুল ভাই, আপনার লেখাটাও দারুণ হয়েছে। বইটা কিনতেই হবে।
খুশী হলাম, ধন্যবাদ মীর ।
চন্দ্রবতী আগেই আগ্রহ তৈরি করেছিলো এই পোষ্ট তাকে আরো উস্কে্ দিলো
ধন্যবাদ হুদাভাইকে।
ধন্যবাদ বাতিঘর ।
বাহ্। নাজমুল ভাই, আপনার লেখাটাও দারুণ হয়েছে। বইটা সংগ্রহ করে পড়ার চেষ্টা করবো
প্রশংসা ভালো লাগলো । সাথে সহানুভূতি থাকলে আরও খুশী হতাম ।
বইটা এখনো হাতে পাইনি, পেলে মন্তব্য করতে সুবিধা হতো। তবে আপনার দুটো পর্ব একসাথে করে দিতে পারলে আরো ভালো লাগতো। একই বইয়ের একই ব্লগারের আলোচনা/সমালোচনা একটা পোষ্টেই আসা উচিত।
দু'টো পোস্টকে জোড়া লাগানোর মত আঠা আমার কাছে নাই ।
হুদা ভাই, আপনি ঠিক পথেই আছেন। আপনার কথা গুলো জেনে ভাল লাগল। আমার মনে হয় না যে লেখক শিপন আপনাকে কিছু বলবেন। আমার মনে হয় লেখক আরো প্রেরনা পেয়ে এগিয়ে যাবেন। আমরা আশা করি লেখক আগামীতে আমাদের আরো ভাল লেখা উপহার দিবেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ । আমি অন্ধ, কোন পথই আমার ঠিক পথ নয়; আমার খাঁচার দরজা বন্ধ, মুক্ত আকাশ তাই আমার জন্য নয় ।
নাজমুল ভাই, এই কৈফিয়ত-দেয়া পোস্টের আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল কি??!! আজ না বুঝলে দুইমাস পর বুঝবেন যে "গুণাবলী" শিরোনামের এই পোস্ট পুরো বিষয়টাকে এবং আগের পোস্ট কে পুরোপুরি খেলো বানিয়ে ফেলেছে।
আর আপনার পাঠক আপনাকে "ভিন্ডিকটিভ" ভাবছে এইরকমের একতি ধারণা থেকে যখন আপনি কৈফিয়ত পোস্ট লিখেন তখন তা আসলে আপনার পাঠক কে "ক্সুদ্রমনস্ক" বলে অপমান করার শামিল। আপনার আগের পোস্টে কারো কমেন্ট দেখে মনে হয়নি যে কেউ আপনাকে ত্রুটি নির্দেশ করা নিয়ে কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছে.. এহেন পরিসথি্তিতে এই পোস্ট শুধুই স্পেসের অপচয়!!
আর "মনোভাব" প্রকাশে আপনি দক্স নন তা আপনি একবার বলাই যথেস্ট। বারবার বলা মানে হয় আপনি স হানুভূতি চা্ছেন, নয়তো প্রশংসা চা্ছেন।
ষবশেষে বলা যায়, এই পোস্টের কোন প্রয়োজন ছিল না.
এই অপ্রয়োজনীয় পোস্টে আপনার মন্তব্যের কোনই প্রয়োজন ছিলনা ।
আমার কোন পোস্ট খেলো হয়ে গেলো কিনা সেটা আমি দেখবো, কারোর ভাল না লাগলে তার পড়ার দরকার নাই ।
যদি কোন পাঠক 'ক্ষুদ্রমনস্ক' মনে করেন নিজেকে, তাকে 'বৃহৎমনস্ক' করে তুলবার দায় আমার নয় ।
হ্যাঁ ভাই, আমি আপনাদের সহানুভূতি এবং প্রশংসা দুটোরই কাঙাল ।
এই পোস্টটিকে স্পেসের অপচয় বলে মনে হলে 'আমরা বন্ধু' মডারেটর প্যানেল এটাকে সরিয়ে দিলেইতো ঝামেলা চুঁকে যায় ।
উপস... সামবডি গট হার্ট
..
..
তবু ভালো যে ''খেলো'' হয়ে গেলো কি না তা দেখার দায়িত্বটাও এবি'র মডু প্যানেল কে দেননি...
যাউগ্গা, আপনার রিপ্লাইয়ের সব কথাই স্টেটমেন্ট (সেটা ভুল হোক আর শুদ্ব হোক
) তাই এইখানে আর্গুমেন্টের কোন অবকাশ নেই.. আমি বরং অন্য কথা বলি।
আপনার চাছাছোলা কমেন্ট দেখে ভালো লাগলো।
;)। আপনার ব্লগিং-ও আনন্দময় হোক :)। খোদা হাফেঝ
আগে শুনেছিলাম আপনি শুধুই মনোভাব পোষণ করেন, কিন্তু তার প্রকাশে কেমন জানি অসুবিধা হয় আপনার। রিপ্লাই পড়ে দেখছি আপনি মনোভাব প্রকাশেও বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছেন। আমার এক কমেন্টেই আপনার এহেন উন্নতি দেখে আনন্দ পেলাম এই যে চ্যারিটি ওয়ার্ক বৃথা যায়নি
বইটা হাতে আছে। পড়বো খুব শিগগিরই
বাহ। খুব ভালো লাগলো পোষ্ট পড়ে। আরো বেশী আগ্রহ তৈরী হলো বইটি পড়ার।পড়বো।
হুদা ভাই, দুঃখিত পোস্টটি আগে দেখিনি ।
ধন্যবাদ ভাব প্রকাশের জন্য ।
আপনার আগের পোস্টে আমার মন্তব্যগুলো ছিলো পয়েন্ট ধরে আলোচনার একটা প্রয়াস, অন্য কিছুনা ।
ওক্কে শিপন!
মন্তব্য করুন