পড়া-লেখা-জোকা-ব্লগা বিষয়ক আড্ডাফাইয়িং পোষ্ট
লেখার চাইতে পড়তেই বেশী ভালো লাগে আমার। যা পাই তা-ই গিলি। মজা পেলেই পড়ি। সে চটি হোক আর চেখভ হোক। খুব ছেলেবেলায় বাবার হাত ধরে যখন নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারতাম, তখন থেকেই এই ঝোঁকটা তৈরী হয়েছে।
অনেক বছর আগে চট্টগ্রাম নিউমার্কেটে 'বইঘর' নামে একটা দোকান ছিল। ওটার শান্ত নীরব পবিত্র ভাবটা আমার ভীষন ভালো লাগতো। এখন বোধহয় ওটা স্বর্নের দোকান হয়ে গেছে। নিউমার্কেটে গেলেই বাবা আমাকে ওখানে নিয়ে যেতেন। খুব যে বই কিনতাম তা নয়। তবু ঘুরে ঘুরে বই দেখার আনন্দটা ছিল দারুন। দোকানদার বাবার পরিচিত ছিল। বাবা ওনার সাথে গল্পে মাতলে আমি সারাটা দোকান ঘুরে ঘুরে বইয়ের ঘ্রান নিতাম। এখনো মনে পড়ে অন্য সব বইয়ের দোকান থেকে ওটা ছিল সম্পূর্ন আলাদা। অত বড় জায়গা নিয়ে বইগুলো তাকে তাকে সুন্দর সাজানো থাকতো। প্রিয় কয়েকটা বই কিনেছিলাম যা পরে আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম। প্রিয় দুটো বই "নানান দেশের ছেলেমেয়ে" আর "আবিষ্কারের কাহিনী" এখনও মিস করি। অবাক লাগে সেই ৬/৭ বছর বয়সেই বইয়ের প্রতি একটা লোভ তৈরী করে দিয়েছিল আমার বাবা।
শুরুটা বাবাই করে দিয়েছিলেন, তারপর বয়সের সাথে বন্ধু-বান্ধবের কল্যানে বনহুর, কুয়াশার সাথে পরিচয়। ক্লাস টেনে উঠে মাসুদ রানা এবং সেবা প্রকাশনীর বইতে বুঁদ হয়ে গেলাম। সংক্ষেপে বলতে গেলে আমার পড়াশোনার ভিত্তিটা বাবার তৈরী আর আমাকে নির্মান করেছে সেবা প্রকাশনী। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেয়ার সময় থেকে আগ্রহের বিস্তৃতি ঘটতে থাকে 'সেবা' ছাড়িয়ে আরো বহুদুরে। যতই পড়তাম ততই বুঝতাম কত কম জানি, কত কম পড়া হয়েছে! জানার কত কী বাকী রয়ে গেছে পৃথিবীতে। তৃঞ্চা আরো বেড়ে যেতো। ভার্সিটিতে পড়ার সময় পাঠ্য বইয়ের দ্বিগুন সময় ব্যয় করেছি অন্য বইয়ে।
তবে এই পড়াটা বিদ্বান হবার জন্য ছিল না মোটেও। এটা ছিল এক ধরনের নেশা। প্রত্যেক মানুষের এক বা একাধিক নেশা থাকে। আমার অনেক নেশার মধ্যে এটি একটা। মজার ব্যাপার হলো, পড়ার নেশা থাকলেও আমি পড়ুয়া বা আঁতেল বন্ধুদের সাথে কখনো আড্ডা দিতাম না। তাই আমার আতেঁল বন্ধু নাই বললেই চলে। যাদের সাথে আড্ডা দিতাম তাদের কারও আগ্রহ ছিল না এইসব আজাইরা বইপত্রের প্রতি। আমার অনেক রকমের বন্ধুর গ্রুপ ছিল। কেউ খেলাধুলা, কেউ তাস বা জুয়া, আর কেউবা ডাইল নাহয় গাঁজায় বুঁদ। তবে ডাইল-গাজা-তাস-জুয়া বাদে যেসব আড্ডা ছিল সেখানে বিবিধ বিষয়ে আড্ডা হলেও দেখা যেতো, যে বিষয়ই আলাপ করি না কেন এক পর্যায়ে সেটা মেয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে এসে শেষ হতো।
বই পড়ার নেশার সাথে ১৯৯৭ সাল থেকে নতুন একটা সংযোজন হলো। ইন্টারনেট। দেখলাম এটা আরেক নেশার জগত। প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু ঘটছে। নানা আবিষ্কার। হটমেইল, ইয়াহু, স্কাইপে, জিমেইলের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লেগে থাকা। গুগল আর উইকিপিডিয়ার কল্যানে আমার সব পড়াশোনা কম্পিউটারে ঢুকে গেল। আগে কোন তথ্য জানার জন্য বইয়ের রেফারেন্স খুজতাম। এখন গুগল করি। এমনকি শব্দের বানানটা পর্যন্ত গুগলে যাচাই করি। টেকনোলজির উপর এমন নির্ভরশীল হলাম যে ইলেক্টিসিটি চলে গেলে মনে হয় অক্সিজেনের অভাব পড়েছে। কারন ইন্টারনেট বন্ধ।
পড়াশোনা যতই বেশী হোক লেখালেখিটা ছিল একেবারে কম। একমাত্র ডায়েরী লিখতাম মাঝে মাঝে। ডায়েরী লেখা হতো কেবল মন খারাপ করলেই। ইয়াহুগ্রুপে কিছু লেখালেখি করতাম এক সময় দেশী ফোরামগুলোতে, তবে বাংলা ব্লগ সাইটে খুব কমই লিখা হতো। বাংলা লিখতে না পারা একটা কারন ছিল। এক সময় ইংরেজীতেও লেখালেখি বন্ধ করে দিলাম। বাংলা শিখতে না পারার জন্য বিজয়কে দায়ী করি আমি। কারন এরা জটিল একটা কীবোর্ড তৈরী করেছে। হয়তো বেশীরভাগ মানুষ আমার চেয়ে অনেক বেশী ধৈর্যশীল বলে এটা ব্যবহার করে। একেবারে বাজে মাল বিজয়।
হঠাৎ একদিন 'অভ্র' কীবোর্ডের সন্ধান পেলাম। এত চমৎকৃত হলাম যে সেদিন যেন আমার নবজন্ম হলো। অবাক ব্যাপার, যে আমি মাসের পর মাস চেষ্টা করেও 'বিজয়' শিখতে পারিনি, সেই আমি ৭ দিনের মধ্যে 'অভ্র' দিয়ে লিখতে পারলাম। শিখে উঠলাম ঠিকই কিন্তু লেখার জায়গা কই? আমার যাদের সাথে কাজ করতে হয় ওখানে বাংলা অচল। তাই বাংলা মেইল লেখার সুযোগও নেই। তাছাড়া এমনি এমনি আমার কিছু লিখতে ইচ্ছে করেনা। লেখার জন্য একটু ইয়ে মানে চুলকানি লাগে আমার। একদিন ব্লগ নামক বস্তুটার সন্ধান পেলাম। আরে আজীব এখানে তো প্রচুর লোক বাংলায় আড্ডা জমাচ্ছে।
কয়েকদিন চুপচাপ দেখলাম এবং জানলাম এখানে আমজনতাও লিখতে পারে। নানান রকম মজার মজার লেখা পড়ে পুলকিত হলাম। বৈচিত্রে ভরপুর বিষয়। যার যেমন খুশী। বুঝলাম এইটা আম জনতার জায়গা। আঁতেলদের রাজত্ব নেই জেনে স্বস্তি পেলাম। ক'দিন পর আমারও চুলকানি শুরু হলো নানান ইস্যুতে। সরাসরি বললে বলতে হয় কেবল চুলকালেই আমার লেখা আসে, অন্য কোন ভাব বা প্রেরনা নেই আমার লেখার পেছনে। ভালো মন্দ সব রকম লেখার যোগান আসে চুলকানি থেকে। শুরু করলাম ফ্রী-ষ্টাইলে। কোনরকম গুনবিচার ছাড়াই। অনেকটা নিজের জন্যই লেখা। বাংলা টাইপে ভালো স্পীড এসেছে ব্লগ লিখে লিখে।
শুরু হলো আমার কাকস্য ব্লগার জীবন। আমারব্লগ, নির্মানব্লগ, সচলায়তন এই তিন ব্লগে ঘুরতে ঘুরতে ব্লগীয় বন্ধু হয়ে গেল বেশ কয়েকজনের সাথে। আমারব্লগের বন্ধুই বেশী। তাদের ভার্চুয়াল আন্তরিকতার প্রানবন্ত স্পর্শ পেলাম এই ব্লগে এসেও। ভাবতে ভালো লাগে কাকস্য সমাজ ছড়িয়ে আছে নানা ব্লগে।
হেফী ব্লগিং, হেফী আড্ডাফাইয়িং!!
[হাওয়া থেকে সংগৃহীত]
মাইরি......চুলকানি আইলেই লেকতে পারেন? আমার পড়া শুরুর ইতিহাস আপনার মতই ছেম কেছ। বাট কোনোদিন চুলকানি দিয়াও এইরম একটা লেখা লেখতারমু বইলা মনে হয়না। আপ্নেরে অশেষ ধইন্না ......
আপনাকেও ধন্যা.......আপনার লেখা দেন না কেন?
লিখতে পারলেনা দিমু ?
আপন_আধার | ডিসেম্বর ২৩, ২০০৯ - ৮:৪৪ অপরাহ্ন
মাইরি......চুলকানি আইলেই লেকতে পারেন? আমার পড়া শুরুর ইতিহাস আপনার মতই ছেম কেছ। বাট কোনোদিন চুলকানি দিয়াও এইরম একটা লেখা লেখতারমু বইলা মনে হয়না। আপ্নেরে অশেষ ধইন্না ......
:-S
আপনারে ধন্যা উইথ পুদিনা :)
আপনার এসব কথার সাথে নিজের অনেক মিল খুঁজে পেলাম। আমি এখনো ছাত্র, সারদিন ইংরেজীর প্যানপ্যানের অসয্যতা থেকেই আমার ব্লগিং শুরু। অভ্রতে লিখা অনেক আগেই শিখেছিলাম কিন্তু এরকম বাংলাব্লগ সাইট যে আছে তা জানলাম এই তো সেদিন।
অটঃ আমারব্লগে আপনার নিক কি জানতে পারি?
আত্তদ্বীপভাই, উনার আমার ব্লগের নিক নীড়-সন্ধানী ।
আমার ব্লগের ৫ টা প্রান ব্লগার থাকলে উনি একজন !!
আমার কাছে তা-ই মনে হয় !!
একটা মুভি দেখতে দেখতে কমেন্ট করেছি তাই ভুল হয়ে গেছে। আমি এটা মাসরুর ভাইয়ের লিখা ভেবে কমেন্ট করেছি। আর নীর দার লিখা আমি অল্প হলেও পড়েছি তাই সরি আছি।
আরে ব্যাপার না ।।
দুই একটা লেখা ছাড়েন পড়ি।
একই নিক :)
[হাওয়া থেকে সংগৃহীত]
আমার বই পড়ার অভ্যাটা এখনো করতে পারলাম না !! কেনো জানি মোটা মোটা বই দেখলে বিরক্ত লাগে ।
এই পুরা লাইফে হু আর কয়েকটা বই পড়েছি নেটে । ধৈর্য আছে আপনাদের !!
বই পড়া নিয়ে অন্য ব্লগে আগে একটা লেখা লিখেছিলাম। এখানে একটা সিরিজ করে দিবো...
ভালো লাগলো লেখা
আপনার লেখা সিরিজের অপেক্ষায় থাকলাম :)
নীড়দা, আপনার নামটার সাথে আমার নামটা জুড়ে দিবেন, প্লীজ। আপনার এই পোষ্টের সবগুলো কথাই আমার কথা। আড্ডা কিংবা বিজয় থেকে শুরু করে ব্লগ অব্ধি।
তাইলে তো চিমটি!!! :)
আপনার বইয়ের কালেকশন আমি দেখছি। আমি হিংসিতো
তুমার হিংসায় আমি আতংকিত !!!
ছোট বেলায় বাবাকে খুব বেশী একটা পাইনি , তাঁর বিদেশ থাকার কারনে। যতটুকু সময় তাঁকে কাছে পেতাম , তিনি দুপুরের খাবারের পর আমাকে আর বড় আপু কে দুই পাশে শুইয়ে মাঝে তিনি শুয়ে বই নিয়ে শুরু করতেন গল্প। নানা মনীষি দের জীবনি দিয়েই শুরু। এক প্যারা পড়তেন আবার সেটা গল্পাকারে আমাদের বুঝিয়ে দিতেন। পরে আবার আমাদের পড়তে দিতেন সেই বই। এভাবে হাতে খড়ি।
তারপর একই ইতিহাস - তিন গোয়েন্দা - ওয়েস্টার্ন - হুমায়ুন আহমেদ । এস এস সি পাশ করে ঢুকলাম ভারতীয় লেখক দের ভুবনে। তাদের লেখায় ডুব মেরে থাকতাম দিনের পর দিন। সমরেশ এর কালপুরুষ পড়ে এক সময় নিজেকে অর্ক ভাবতে ভালো লাগতো।
একসময় লেখা লেখি চলতো ডায়েরী তে, আবার কিছু দিন পর পর ডায়েরী পুড়িয়ে বেদনা-উৎসব করতাম।
এখনও পড়ি তবে সেটা এই আন্তর্জাল এই। বই নিয়ে বসি না কারন বইনিয়ে বসলে সেই রাতে ঘুম নষ্ট করে বই শেষ করে তারপর না উঠে পারিনা। এত এনার্জি কই এখন ? বয়স হইছে না !!!!
এখনও পড়ি তবে সেটা এই আন্তর্জাল...
##########################
আমারও এই অবস্থা এখন :)
আমার অনেক নেশার মধ্যে এটি একটা। মজার ব্যাপার হলো, পড়ার নেশা থাকলেও আমি পড়ুয়া বা আঁতেল বন্ধুদের সাথে কখনো আড্ডা দিতাম না। তাই আমার আতেঁল বন্ধু নাই বললেই চলে। যাদের সাথে আড্ডা দিতাম তাদের কারও আগ্রহ ছিল না এইসব আজাইরা বইপত্রের প্রতি
আমারো সেম কেইস নীড়দা................এখনো প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে চেষ্টা করি একটা কইরা বই পড়তে না:গঞ্জ সুধীজন পাঠাগারের সদস্য গত ৭ বছর যাবত। তবে আমার বই পড়ার নেশাটা দিয়েছে আমার মেজ ভাই_ও বিভিন্ন বই কিনে দিত যখন মাত্র সিক্সে পড়ি_আমার বই পড়া শুরু হইছে শরৎ, রবীন্দ্রনাথ এর বই দিয়ে। শরতের শ্রীকান্ত এখনো আমার লাইফে পড়া শ্রেষ্ঠ বই।
হাঃহাঃহাঃ অনেক কিছুই কমন পড়লো। আমার আউট!বই পড়া শুরু ঠাকুরমার ঝুলির শাকচুন্নি আর রাজপুত্রদের কাহীনি দিয়ে+গোপালভাড়+কালীদাসের স্লোক দিয়ে।

(জ্বর নিয়ে পরীক্ষার হলে গিয়েছিলাম)
ক্লাস ফোরে ৭০০ পৃষ্ঠার আরব্য রজনী পড়ে ফেলেছিলাম
তারপর সেবা প্রকাশনীর কিশোর থ্রীলার, শিকার কাহীনি, সবশেষে মাসুদ রানা।
দ্রষ্টব্যঃ SSC পরীক্ষার আগেরদিন পর্যন্ত কিশোর থ্রীলার গভীর অরন্য পার্ট ১,২ (প্রায় আটশ পৃষ্ঠার মত) নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম। ছোট খালা সেটা দেখে আমাকে দারুন আদর করেন
তার পর শিকার কাহীনি+ওয়েষ্টার্ন+অনুবাদ+সাইফাই+ শরতচন্দ্র পড়তাম। মিলইন্যা জনপ্রীয় হলেও তার বই ভালো লাগতনা কেন জানি।
সব শেষে পড়েছি সাইকোলজিকাল ষ্টাডি নিয়ে চমতকার কিছু আর্টিকেল আংরেজীতে
আর এখন হুমায়ুন ছাড়া আর কারো বই পড়তে ইচ্ছে করেনা। তবে মাঝে মাঝে শীর্ষেন্দু পড়ি। (একটা বাংলা বইয়ের সাইটের কো এডমিন ছিলাম
কিছুদিন)
আর আড্ডায় ছিলো বারোপ্রকার বন্ধু, কোটিপতি থেকে রিক্সাওয়ালা।
গাঞ্জুটি থেকে হিরুঞ্চি + মাম্মিডেডি টাইপ পোলাপাইন। কয়েকটা কিরিমিনালো বেশ কিছু দিন আড্ডার সঙ্গী ছিলো।
টাইপিংয়ের ক্ষেত্রে ১০০ কমন, যারা বিজয় জানতো তাদের কেঞ্জানি আঁতেল মনে হইতো (আহেম আহেম)

লেখা অতীব উপাদেয় হইছে
সেই জন্যই তোমার লেখায় হুঃআঃ এর ছায়া পাওয়া যায়।
আরেনাহ, কই আলীবর্দী খাঁন আর কই খিলিপান।
বিজয় যারা জানেন, তাদের আমার এখনো বিদ্বান মনে হয়। কেমনে যে পারে........তয় টাইপ স্পীডে কমিপিটিশান দিলে আমাদের সাথে পারবে না :)
লেখা পইড়া আমিও আমার বই পড়ার কিছু কথা বলব ভাবছিলাম। কিন্তু মনে হইল লেখাটা আগেও পড়ছি। যদি তাই হয় , নো অসুবিধা, বাট নতুন লেখা চাই। ফাঁকি দিলে খাইয়ালামু। ;)
আপ্নের সিপিউর পাওয়ার দুর্দান্ত!!! :)
তয় নীচে কিন্তুক বইলা দিছি হাওয়া থেকে পাওয়া ;)
নীড়কাতর করে দিলেন, নীড় সন্ধানী।
বইঘর নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি এসে কার্ড আর শোপিসের জন্য জায়গা বরাদ্দ করলো, কয়েক বছর বাদে স্রেফ নেই হয়ে গেলো। বিপণি বিতান বা নিউমার্কেটেরই দোতলা অথবা তিনতলার বইয়ের দোকান বুকম্যান স্কুলব্যাগ পেন্সিলবক্সে ভরে গেলো। একতলায় বইঘরের কাছেই উজালা বুক সেন্টার ছিলো, এখন আছে কি? উল্টোদিকে জলসা সিনেমা(?)র নীচে কারেন্ট বুক স্টোর চিত্রতারকার পোস্টারে ছেয়ে গেলো। আচ্ছা, নুপূর মার্কেটের অমর বইঘর কি এখনও আছে? অনেক ভালো ভালো পুরনো বইয়ের সংগ্রহ ছিলো ওদের। ডিসিহিলের উল্টোদিকে নন্দনকাননের ডিরোজিও অনেকদিন পর্যন্ত ক্লাসিক ছিলো (আশা করি এখনও আছে)। এ বছরের গোড়ার দিকে চট্টগ্রামে গিয়ে আন্দরকিল্লায় একটা বইয়ের দোকানে গিয়ে সংগ্রহ দেখে ভালো লেগেছে (নামটাও সুন্দর; যদিও এখন মনে পড়ছে না )। তবে অভাব বোধ করেছি সেরকম কোন বিক্রয়-সহকারীর যে নিজেই হবে চলমান রেফারেন্সবুক...
বইয়ের দোকানগুলো শাড়ী ঘড়ি অলংকারের কাছে হেরে গেছে। একটা বইয়ের দোকানকে তিনটা স্বর্নের দোকান করা যায়। নিউমার্কেটে বইঘরের পর গেছে গুলিস্তান বুকষ্টোর। উজালা, মনীষা, বুকম্যান এখন খাতা পেন্সিল স্টেশনারী কার্ড ফ্যাশানের দোকান। কারেন্ট বুক সেন্টার কোন মতে টিকে আছে এখনো শাহীন ভাইয়ের হাতে। এই মানুষটার বইপ্রেম তাঁর বাবার মতো। টাকার দিকে না তাকিয়ে চোখবুঝে বই নিয়ে পড়ে আছে। কারেন্ট বুক সেন্টারের ইতিহাস নিয়ে আস্ত একটা বই লিখে ফেলা যায় অনায়াসে। অমর বই ঘরে যাইনা বহুদিন, শুনেছি ওখানে গাইড বইয়ে ছেয়ে গেছে। আন্দরকিল্লার বইয়ের দোকানগুলো তো অনেক আগেই গাইডবই হয়ে গেছে, কথাকলিটা এখনো আছে। গত বিশ বছরে সব কিছু বেড়েছে চট্টগ্রামে, বাড়েনি কেবল একটাও বইয়ের দোকান। সংকোচনই যেন তার পরিণতি।
টেকনোলজির উপর এমন নির্ভরশীল হলাম যে ইলেক্টিসিটি চলে গেলে মনে হয় অক্সিজেনের অভাব পড়েছে। কারন ইন্টারনেট বন্ধ।
এত বেশী ডিপেন্ডবল হইছি ... বইলা শেষ করা যাপে না :( ... দুইদিন পর নিজের জিনিসপত্র খুজতেও গুগুল্রে জিগাইতে হপে :(
আমার আড্ডা শুন্তে ভাল্লাগে :)
মন্তব্য করুন