ধরাশায়ী
ধরা কাহিনী সবারই আছে। জীবন মাত্রেই মরণশীল, মানুষ মাত্রেই ধরাশীল। ধরা খাওয়ার মধ্যে কোন লজ্জা নাই, কোলেষ্টেরোলও নাই। তবে ধরা কাহিনী নগদের চেয়ে বাসীই মজাদার। তাই গতকাল যে ধরাটা খেয়েছি সেটা এখন না বলে পুরোনো গুলিই বলছি।
মোবাইল 'ধরা': একটেল
দশ-বারো বছর আগেও ভোররাত থেকে লাইন ধরে হুড়োহুড়ি ধাক্কাধাক্কি করে ত্রিশ চল্লিশ হাজার টাকা খরচ করে মিনিটে ৭ টাকায় কথা বলার সুবর্ণ সুযোগ পাবার জন্য যে কোম্পানীর কানেকশান কিনতো মানুষ, তার নাম গ্রামীণ ফোন। ক্রেতা সামলানোর জন্য পুলিশ ডাকতে হয়েছে সেরকম কোম্পানী পৃথিবীতে খুব বেশী নেই। গ্রামীণের ক্রেতাভাগ্য ঈর্ষনীয় ছিল।
আমি গ্রামীনের লাইনে দাঁড়াইনি কখনো। মোবাইল ফোন বড়লোকের জিনিস, বাসার ল্যান্ডফোনই যথেষ্ট, এই ধারনাটা এক বন্ধু এসে নাড়িয়ে দেয় যখন সে বিদেশ যাবার আগে তার একেটেল মোবাইলটা আমাকে বন্ধুসুলভ দামে 'উপহার' দিয়ে যেতে চাইল।
'উপহারে' আমার আপত্তি নেই জেনে 'মাত্র' আট হাজার টাকায় দূর্লভ একটেল পোষ্টপেইড সিম আর সাথে বোনাস হিসেবে সাড়ে তিন হাজার টাকার দুমাসের বকেয়া বিল বুঝিয়ে দিয়ে সে বিদেশে চলে গেল। একটেলের ওই সিমটা তখন মহার্ঘ ছিল 'ইনকামিং ফ্রি' ছিল বলে।
কিছুদিন পরে এক প্রতিবেশী আমার কাছে সীমটা 'মাত্র' দশ হাজার টাকায় কিনতে চাইলে আমি ঝাপটা দিয়ে উড়িয়ে বললাম, 'বেকুব পাইছো আমাকে? ওই সিমের দাম শেয়ার বাজারের মতো বাড়তেছে, ছমাস পর বিশ হাজার টাকায় উঠবে'। বুদ্ধিমান হলাম, সিমটা যত্ন করে রেখে দিলাম।
কিন্তু মাত্র ১১ মাসেই সিমের দাম মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। ৫০০ টাকায়ও কেউ মুলোয় না দশ হাজার টাকার সিম। উল্টা বেহুদা মাসিক কানমলা আড়াইশো টাকার লাইন রেন্ট। সিমটা নর্দমায় ফেলেও দিতে পারছি না কারণ বাসার ঠিকানায় বিল আসে, সিম ফেলে দিলেও খেলাপী বিলের জন্য কোনদিন আবার পুলিশ আসে । পরে পাড়ার এক ছোটভাই দয়া করে বিনে পয়সায় সীমটা 'উপহার' নিয়ে আমাকে উদ্ধার করলো।
========================================
মোবাইল 'ধরা': টেলিটক
গ্রামীনের সিম নিয়ে মারামারি, কাড়াকাড়ি থেমে গেলেও টেলিটক নামের সোনার হরিণের জন্য ঢাকায় কয়েক দফা মারামারি হয়ে গেছে তখন।
বাঙালীর ধর্ম নতুন কিছু পাবার জন্য দাঙ্গাদাঙ্গি করতেই হয়। সেই সময় ঘোষনা এলো ঝামেলা এড়াতে টেলিটক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভাগ্যবানদের নির্বাচিত করবে। চট্টগ্রামে বসেই আবেদন করা যাবে।
নিয়ম হলো জনপ্রতি মাত্র একটা আবেদন। বললেই হলো? দিলাম দুটো এপ্লাই করে, একটা নিজের নামে,আরেকটা বউয়ের নামে। আইন ভাঙার মজাই আলাদা। কিন্তু লটারীভাগ্য খারাপ আমার, বউয়ের নামটাই জিতলো। তবু খুশী কারন আইন অমান্য করার নগদ ফজিলত পেলাম।
২৭০০ টাকা জমা দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যাংক থেকে সীম নেবার জন্য বলা হলো। সেই ব্যাংকটা অফিস থেকে অন্তত দশ বারো কিলোমিটার দুরে জঘন্য যানজট এলাকা খাতুনগঞ্জে। পরদিন আমি খাতুন গঞ্জের নির্দিষ্ট ব্যাংকে গেলাম সিম তুলতে।
দুপুর পেরিয়ে গেছে তখন। ব্যাংক থেকে বলা হলো যার সিম তাকেই তুলতে হবে। যদি সে আসতে না পারে তাহলে আমাকে অথরাইজ করে দিতে হবে, সাথে ফটো জাতীয়তা আর মেট্রিকের সার্টিফিকেট লাগবে। এক ঘন্টার মধ্যে না দিতে পারলে আজকে বন্ধ, আগামীদিন আবার আসতে হবে। মাথা খারাপ? একটা সিম নিতে দুদিন গচ্ছা দেবো? আজকেই নেবো। টেক্সী নিয়ে সোজা বাসায় গিয়ে বউয়ের স্বাক্ষর, ছবি, সার্টিফিকেট নিয়ে সেই অতি দুর্লভ সিমটা সংগ্রহ করলাম।
অবশেষে টেলিটক নামের সোনার হরিনের মালিক। সস্তায় কথা বলা, ইনকামিং ফ্রী, লাইন রেন্ট নাই, টিএন্ডটিতে ফোন করলে এক্সট্রা বিল নেই, মাত্র ২৭০০ টাকায় কত্তো সুবিধা! গর্বে বুক টানটান।
মাসখানেক পর।
পাশের টেবিলের রাশেদ জানালো সে এইমাত্র দুটো টেলিটক সিম কিনছে আগ্রাবাদ থেকে। আমি চোখ তুলে তাকালাম।
-টেলিটক? কেমনে? আবার দিচ্ছে নাকি? লটারীতে?
- আরেন্না, রাস্তা থেকে।
-আহা, রাস্তা থেকে কিনলা? দাম বেশী নিছে নিশ্চয়ই
-বেশী নিবে কেন?
-আমরা তো ব্যাংক থেকে বেসিক প্রাইসে কিনছি, বাইরের লোক তো প্রফিট যোগ করে বিক্রি করবে। তা কতো নিল তোমার কাছে, তিন হাজার নাকি চার?
-প্রতিটা বিশ টাকা
-কি????
-বিশ
-মশকরা করো?
-কসম
-তোমার কসমের গুল্লি মারি, সত্যি বলো কত খসলো
-সত্যিই বিশ টাকা। কেউ কেউ নাকি বিশ টাকায় দুটো সিমও পেয়েছে, আমার চল্লিশ গেল দুটোতে।
-কী?????
ফিট না খেলেও গুম হয়ে বসে থাকি। ২৭০০ টাকার সিম ২০ টাকায় ফুটপাতে নেমে আসবে কে জানতো। আর কটা দিন অপেক্ষা করলেই হতো।
========================================
আন্তর্জাতিক ধরা
এক দশক আগের কথা। অফিসের কাজে পূর্ব এশিয়ার একটা দেশে গিয়েছি ৭ দিনের জন্য। হোটেলের থাকা খাওয়ার সমস্ত খরচ কোম্পানীর। রাতে শোবার আগে বিছানার পাশে রাখা টেলিফোনটা দেখে ইচ্ছে হলো দেশে ফোন করি। কিন্তু লাভ নাই। হোটেলের রুমে সাধারনত লোকাল ফোনই থাকে। তবু বেনিফিট অব ডাউট চিন্তা করে ফোনটা কানে লাগাতেই দেখি টোঁ টোঁ করছে আইএসডি টোন। বোতাম টিপতেই সাঁ করে লাইন বাংলাদেশে চলে গেল। মজা তো!
প্রত্যেকদিন রাতে হোটেলে ফিরে দেশের খোঁজ খবর করি। ফোন ফ্রী পেলে বাঙালীর খোঁজ খবরের কাজ বেড়ে যায়। ফ্রী না হলেও দুচারশো টাকার বিল আসলে ক্ষতি কি। কোম্পানী দেবে নতুবা আমিই দিয়ে দেবো। কিন্তু হোটেল ছাড়ার সময় কেউ বিল খুঁজলো না ফোনের। আমিও অফিসকে জানালাম না ব্যাপারটা।
দেশে ফিরে আসলাম নিরুপদ্রপেই। দশ পনেরোদিন পর অফিসের কাজটাজ গুছিয়ে বেরুচ্ছি, এমন সময় একটা মেইল এলো আমার হেড অফিস থেকে। সাথে একটা এটাচ ফাইল। সেই হোটেলের বিলের কপি। ওটায় লেখা আছে, ৫ দিনে ৩৫ মিনিট কথা বলা বাবদ আমার কাছে পাওনা হয়েছে ১১৫ ডলার! কল নাম্বারের লগ সহ দেয়া আছে।
ওই দেশের আন্তর্জাতিক কল রেট যে আমাদের প্রায় দশগুন ছিল কে জানতো!
========================================
শেয়ার বাজার ১৯৯৬
শেষে বললেও আসলে এটাই ছিল জীবনের প্রথম ধরা।
শেয়ার বাজারে চরম চাঙ্গা ভাব দেখে বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে দুটো কোম্পানীর সেকেন্ডারি শেয়ার কিনে ট্রান্সফার করে ভদ্রলোক হয়ে বসে ছিলাম। ভেবেছি এটা ভদ্রলোকদের ব্যবসা, এত বেচাবিক্রি কার্ভ মার্কেট ইত্যাদি নিয়ে অস্থির হবার কি আছে। শেয়ারের দাম আস্তে আস্তে বাড়ুক। কয়েক বছর পরে মোটা লাভ নিয়ে বিক্রি করবো।
এক লাখ টাকার বিনিয়োগ যখন দুমাসের ব্যবধানে দুলাখে উঠলো তখন অনেকে বললো বিক্রি করে লাভ উঠিয়ে নিতে। বন্ধুদের কেউ কেউ কিনতেও চাইল ভালো দামে। আমি তাদের গম্ভীর হয়ে বললাম, আমি ফটকা কারবারী না। একদিনে সব লাভ খেয়ে ফেলতে চাই না। কারো কথায় কান না দিয়ে শেয়ার সার্টিফিকেটগুলো আলমারীতে তুলে রাখলাম ভবিষ্যতের রিজার্ভ সম্পদ হিসেবে এবং চাকরীতে মনোযোগ দিলাম।
কিন্তু অন্ধ হলে তো প্রলয় বন্ধ থাকে না। তিন-চার মাস পরেই শেয়ার বাজারের পাহাড়টা পতেঙ্গা সৈকতের বালিতে মিশে গিয়ে আমার দু'লাখ টাকাকে দশ হাজার টাকা বানিয়ে চলে গেল।
সেই ক্ষতির একটা উপকার পেলাম পনেরো বছর পর। ন্যাড়া আর বেলতলায় যায়নি বলে ২০১১ সালের শেয়ার ধ্বসে কোন আঘাত লাগেনি তার।
.
[উৎসর্গঃ সকল ধরাশায়ী ব্লগার]





গ্রামীণের প্রথম দিককার চারটা জিরো দিয়ে শুরু নাম্বার ছিলো, দেশ ছাড়ার আগে কাকে যে দিয়ে গেছিলাম আর উদ্ধার করতে পারি নাই।
টেলিটকের সিম দিছিলো সরকার থেকে, খুব ভাব নিয়ে মাকে দিয়ে গেছিলাম, যেন এমন উপহার সে জীবনে পায় নাই। মা এখন উঠতে-বসতে বলে কী যন্ত্রণা দিয়ে গেলি, না নেটওয়ার্ক থাকে, না কথা শোনা যায়
শেয়ারের ধরা খাইতে হয় নাই
এরকম ধরার বিরুদ্ধে মামলা করার কোন বিধান জানা থাকলে বইলেন, আগের কাষ্টমার দুনিয়ার ঝামেলা করে পয়সা বেশী দিয়ে কিনবে, পরের কাষ্টমার কিনবে মাগনা, কিরাম আনফেয়ার ব্যাপার!
অ.ট.- সেই চেরমেনের খোঁজ নিছি, ওইটা নাকি পুরান চিড়িয়া। বিস্তারিত বলবো পরে
আলবাত আছে, মানহানির মামলা করেই দেখেন কী হয়
অ.ট. বিস্তারিত শোনার অপেক্ষায়। চেরমেনের ফোন রিসিভ করবো ভাবতেছি
উন্নয়ন বিষয়ে চেরমেনের একটা লাইভ সাক্ষাতকার জাতিকে পচুর পেরনা দিতে পারে বলে বিশ্বাস।
চেরমেন চরিতের ব্যাপারে পরের আড্ডায় আলোচনা করবো।
ডট না দিলেও তো স্পেস হয়।
তাই তো? এই উন্নয়ন কবে হইলো। ডট তুলে দিলাম।
মোবিল নিয়া কোনো ধরা খাই নাই কারণ ইন্টারেস্ট ছিলনা। দুনিয়ার সবার হাতে মোবাইল খালি আমার নাই। না আরেক জনের নাই। মোঃ আলী, আমাদের অফিসের পিওন। পরে অফিস থেকে দেওয়াতে বাধ্য হয়ে ব্যাভার করছি।
অফিসে অন্যদের দেখাদেখি টেলিটকে এপ্লাই করছিলাম। ভাগ্যিস লাগে নাই।
দুনিয়ার লোকজন বড়লোক হইয়া যাইতেছে। রাস্তায় মাস্তায় ঘুরতে দেখছি দুইদিন আগে, এখন পনের বিশ লাখ টাকা দামের গাড়ি নিয়া ঘুরে। টুটুল কইল নামেন। আমি চিন্তা কইরা দেখলাম বড় লোক হইতে হইলে শেয়ার বাজার ছাড়া উপায় নাই। যদিও এইটাতে আমার কেন জানি কোনো দিন আগ্রহ হয় নাই। ছিয়ানব্বইএর আগে মহল্লার মুদি দোকান্দার দোকান বন্ধ কইরা শেয়ার মার্কেটে ঝাপাইছে সেই সময়ও। বাট এইবার টুটুলের কথায় নামলাম। কিছু লাভটাভও হইল। বাট, কিন্তু ছয় মাসের মাথায় কি তুফান আইলো। বাজার খুলতেই পারে না। খুললেই ঝপাস। এনিওয়ে, পুণ্জি লয়া টান দেয় নাই এখোনো। জয় মা তারা।
আগামীদিন থেকে তো আবারো ঝপাস। সূচকের কারিগরী নিয়া সরকারের কাছে একটা পেমপত্র লিখবো কিনা ভাবতেছি।
ধরাই জীবন!
আমি শুধু সেবা'র সিম কিনেছিলাম ১৫ হাজার দিয়ে, ইঙ্কামিং ফ্রী! ৫০০ টাকা মাসিক লাইন রেন্ট!
আমার কমলা পুরের বন্ধু গ্রামীন ৫০০ টাকা লাইন রেন্টএর সিম বিক্রয় করেছিল ৪৫ হাজার টাকায়! আমি সাক্ষী ছিলাম!
যে কিনছে তার হার্ট অক্ষত আছে এখনো?

ধরাই জীবন!
আমি শুধু সেবা'র সিম কিনেছিলাম ১৫ হাজার দিয়ে, ইঙ্কামিং ফ্রী! ৫০০ টাকা মাসিক লাইন রেন্ট!
আমার কমলা পুরের বন্ধু গ্রামীন ৫০০ টাকা লাইন রেন্টএর সিম বিক্রয় করেছিল ৪৫ হাজার টাকায়! আমি সাক্ষী ছিলাম!
আমার প্রথম মোবাইল, স্যমসাং এ-৮০০ সঙ্গে গ্রামীণের পাঁচ হাজার টাকার সিম, নেয়ার দ্বিতীয়দিনে হারিয়ে ধরাশায়ী হয়েছিলাম। তখন ধানমন্ডির উইমেন কমপ্লেক্সে জুনুনের কনসার্ট হচ্ছে, দোস্তো ইয়েহি জিন্দেগি হ্যয়...

দ্বিতীয় দিনেই হাপিস?
ঐজন্যই তো ধরাশায়ী হইসিলাম।
পরে আর হই নাই।
দাদা কেমন আছেন?
আমি ভালো আছি। আপনি চাটগাঁ কবে আসবেন? এবার এলে দেখা করবেন, আরেকটা আড্ডার আয়োজন করবো।
আড্ডা দিতে হবে?
নিশ্চয়ই। আড্ডা দিতে আপত্তি আছে নাকি?
হালকা পেচ্ছাপেচ্ছি কর্লাম মাত্র
অনারার লাই আড্ডাইত্তাম চাই।
বদ্দারে এক্কানা বড় চাই ধইন্যবাদ।
প্রথম সিম কিনেছি একটেল ৪২০০ টাকা দিয়ে। টেলিকট কিনলাম ৩০০০ টাকা দিয়ে। সটিসেল, ওয়ারিদ কোনটাই বাদ যায় নাই। শেষমেষ গ্রামীণ।
শেযারে ধরা খাই নাই জীবনেও।এনশাল্লাহ।
আগে দেখতাম ছেলেদের অনেক সিম থাকতো। সেগুলা মেয়েদের দৃষ্টাপ করার কাজে লাগতো। আপ্নে এত সিম কিনছিলেন ক্যান? কারে দৃষ্টাপ করতেন? @জয়িতা'পু
সেই ১৯৫৩ সালে সেই মটোরোলা সেট এর সাথে টি এন্ড টি ইনকামিং একটেল মুফাইল কিনলাম। তখনও আমি স্টুডেন্ট। কোচিং সেন্টারে পড়াই, সেই টাকায় মুফাইলের বিল দিতে কিরাম বুক কাঁপে।এক মিনিট ৭ টাকা। :(। টি এন্ড টি ইনকামিং সম্ভবত ৩ টাকা ছিলো। তার তুলনায় সিটিসেলে কম। সেটও সুন্দর। দিলাম ফালাইয়া একটেল।কিন্তু টেলিটকে যখন পাইলাম লটারিতে সিম, ওইটা কিনে সিটিসেল ফালাইলাম কারণ টি এনড টি ইনকামিং ফ্রি।তারপর------------। একসময় অতিষ্ঠ হইলাম উটকো ফোনের যন্ত্রণায়। শুধুই কথা বলতে চায়।কথা শুনতে চায়।
। সত্যি একদিন ঢিল দিয়ে সিমটা খুলে ফেলে দিলাম।ওয়ারিদ ব্যবহার শুরু করলাম। সমস্যা হলো আমি বাড়ি গেলেই কেউ আমাকে খুঁজে পায় না। এইটাতে শান্তিই লাগছিলো কিন্তু লোকজনের কমপ্লেইন।তাই আবারো চেন্জ।

তবে .......
জীবনে এত্ত বড় কমেন্ট আমি লিখি নাই। আমার মতো আইলসারে দিয়া মীর এত্ত বড় কমেন্ট লেখাইলো!
১৯৫৩ সালে ? ? ? ?
প্রথম সীম গ্রামীণের ৫০০০ টাকায়। তখন ভাব ছিলো একটা। পরে ডিজিট বাড়ায় হলো ০১৭১১, ডবল ১ এ ইজ্জত আরো বেশি।
বৈদেশে আসার আগে আপাকে দিয়া আসছিলাম, আপা তার নিজের গ্রামীনের চালু নম্বরটাই ওয়ারিদের কাছে দেউলিয়া করছে, আমারটা আর কোন ছাড়। আমার মর্মবেদনা বুইঝা আব্বায় আমার সীমটা আমার নামে রেজি কৈরা রাখছে, দেশে ফিরলে যেনো সেইটা ব্যভার করতে পারি।
বৈবাহের আগে ডিজুসের রাত১২টার পরের গোপন আলাপের সীম (২০০৫ এর রোজার ঈদের আগের ক্রেজ) কিনছিলাম একটা কমদামী একটা সেট সহ, মাত্র ৩০০০ টাকায়। ঐ সেট আর সীম বুঝছে এনগেজমেন্ট হওয়া হবু কাপল মাত্র দুইটাকায় বদৌলতে সারারাত কেমনে নেটওয়ার্ক বিজি রাখতে পারে, আর অর্থহীন আলাপ করতে পারে। কসম! ঐটা ভাবলে নিজেও এখন টাস্কি খাই। তয় সীম আর সেটের দাম ওঁসুল হৈছে বিবাহপুর্ব রাতজাগা আলাপেই।
টেলিটকের লটারী জিতি নাই, লটারীতে সর্বোচ্চ জিতসি ফটো এলব্যাম, পিকনিকে। ভাগ্যিস জিতি নাই। গরীবের টাকা আল্লায় বাচায়।
গ্রামিন ব্যাংকের নীচ তলায় ভোর বেলায় যুদ্ধ কৈরা একটা মুফাইল কিনলাম
ইয়া গাম্বুইশ্যা সেট.. তাও ম্যালা দাম
সে এক সময় ছিল
মুবিযুদ্ধের সৈনিকরে স্যালুট! সেই মোটোরোলা ওয়ারলেস সেটটা নাকি? জটিল চেহারা আছিল একখান
তখন সিটিসেলের যুগ। সেই ৯৭-৯৮ এর ঘটনা হবে। তারা একটা প্যাকেজ ছাড়লো-সাংবাদিক প্যাকেজ। খরচ ১১ হাজার টাকা। নিপ্পন সেট ছিল। ওরা মনে হয় একবারই সেট বানাইছিল।
একদিন রাইত একটায় বুক ফুলাইয়া বাসায় যাওয়ার গলিতে ঢুকলাম। মাঝপথে ছুরি-চাকু ও ক্ষুর। সেট গায়েব।
দুইদিন পর গেলাম সিটিসেলে। তখন তো সেটসহ কিনতে হইতো। কয় তাদের কাছে একটাই সেট আছে দাম ২২ হাজার টাকা। কম দামের সেট আসতে ৩/৪ মাস লাগবে। কিনলাম। যেদিন আমার বউ আমার মেয়ে আনতে হাসপাতালে গেল সেইদিন দেখি সেট কথা কয় না। কিন্তু সেট ছাড়া উপায় নাই। আবার গেলাম সিটিসেল অফিসে। আবার কিনলাম ১২ হাজার টাকায় একটা সেট। সেইটা টিকছিল ১০ মাস.......
আপনার অবস্থা দেখি আমার চেয়েও খারাপ। এক মোবাইলে রিভলভিং ইনভেষ্টমেন্ট করে ফেলেছেন ৪৫ হাজার টাকা!!

আমার ধরাশায়ী হবার মতো অবস্থা হয় নাই। কারন টাকাই ছিলো না মোবাইল কিনার
বিচক্ষণ মানুষেরা নিরাপদেই থাকে
দোকান থেকে অল্প কিছু টাকা দিয়া টেলিটক কিনছিলাম। এখনও চালাইতাছি
মানে আপনার ধরা খাওয়ার সুযোগ এখনো আসেনি
সেদিন দেখলাম এক মেয়ে সিম-আকৃতির কানপাশা পইরা হাঁটতেছে
কানপাশা বস্তুটা কি সিরাজী ভাই? দুল টাইপের কিছু নাকি?
দুলের মতোই। তবে কানপাশা কানের নিচে ঝুলতে থাকে। ঝুমকা বলে বোধহয়
ছোটবেলায় মা নাকি আমাকে একটা সোনার চেইন কিনে দিয়েছিলেন। তিনি সেই চেইন শখ করে বাপের বাড়ি পড়ে গিয়ে নিজেই হারিয়ে এসেছেন
আমরা বাড়ি বদলানোর সময় আমি প্রথম মোবাইল কিনি, নানাবিধ প্রয়োজন লাগতে পারে ভেবে। মোবাইল কিনে অন করে চার্জ করে সবাইরে আমার নাম্বার মেইল করেছি। তিনি বললেন সবাই তোমার নাম্বারটাই জানে, ঐটাই দাও, বাইরে লাগবে। তিনি বাইরে গিয়ে হারিয়ে এসেছেন সাথে সাথে। মোবাইলের সাথে একটা মিল্ক সেক বানানোর মেশিন ফ্রী পেয়েছিলাম, সেটাই ছিল তখন সান্ত্বনা।
হাহাহাহা, এটাই আসল কথা
মোবাইলের সাথে একটা মিল্ক সেক বানানোর মেশিন ফ্রী পেয়েছিলাম, সেটাই ছিল তখন সান্ত্বনা
টেলিটক দিয়া ধরা কাহিনী মিল্লা গেছে।। ...
একটেল দিয়া উসুল দিছিলাম ।।। কোনো একটা কম্পিউটার মেলায় গেলাম, গিয়া দেখি ৩০০ টাকার প্রি-পেইড কার্ড কিনলেই দুইটা এক্টেল সিম ফ্রি ঃD দুই বন্ধু পকেট হাতাইয়া ৩০০ টাকা দিয়া লইলাম প্রি-পেইড কার্ড আর সিম ।। সিম আছে মাগার বাড়তি মুবাইল'তো নাই, থুইলাম ফালাইয়া । কয়েকমাস পর একটেল ঘোষনা দিল নতুন সিম অ্যাক্টিভেট করলেই ৫০০ টাকা টক টাইম ফ্রি ঃD করলাম অ্যাক্টিভেট ।, ফ্রি টকটাইম শেষ কইরা পরে সিম দুইটা ৩০০ টাকা কইরা বেইচ্চা দিছিলাম ঃD
আপনার বাণিজ্যবুদ্ধি রীতিমত ঈর্ষনীয়
গ্রামীণ মনে হয় এখনও সবার উপরে । সিটিসেল কিনে ধরা খেয়েছি । ছেলেকে কোন রকমে সেটা গছিয়ে দিয়ে গিফট পাওয়া গ্রামীণ (পল্লীফোন) ব্যবহার করছি । কেউ তো এখন আমাকে ফোন করেনা, আমিই মাঝেমধ্যে এদিক সেদিক খুঁজে বেড়াই ।
শেয়ার করিনা, শেয়ার করতে ভালো লাগেনা, শেয়ারে ধরাও খাইনা । নো গেইন, নো লস ।
মন্তব্য করুন