" বড় শকুন এখন খাঁচায়" ধন্যবাদ এই সরকারকে, বাংলাদেশীদের মান ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে
বয়েস আমার ত্রিশ পাড় হয়েছে বছর তিনেক আগে, তাই বলতে পারছি না চল্লিশ বছর আগে থেকে অপেক্ষায় আছি। বয়েস যখন আট কি দশ, তখন একটা ছবি দেখতাম প্রায় সময়ই, প্রথম দেখতান সাদা কালো পোস্টারে, তারপর কিছুদিন পরে কালো আর লাল। ছবিটা ছিলো হাতে আঁকা। আমার দেখা আমার এই ত্রিশোর্ধ জীবনে সবচেয়ে সহজ, দারুন হাতে আঁকা, ভয়ংকর এক হায়েনার ছবি। পাঁচ আঙ্গুলের একটা হাত ছিল যাতে ছিল হায়েনার নখর। আধ হাত জিব দেখে মনে হতো এই বুঝি কারো রক্ত খেয়ে এলো,মুখের দুপাশে দুটু বড় বড় দাঁত যার থেকে রক্ত ঝরছে । চোখে ছিল মোটা ফ্রেমের চশমা। মাথায় কালো টুপি তাতে চাঁদ তারা। প্রথম বয়সে মনে হতো কোন এক দানবের ছবি, ভয় পেতাম বেশ। কিন্তু আরেকটু বড় হয়ে বুঝলাম এই দানবতো ইহজগতে বিদ্যমান। নাম জানলাম গোলাম আযম। আস্তে আস্তে তার দানবীয় কির্তিকলাপের সাথে পরিচিত হতে থাকলাম কিছু বই পড়ে আর মায়ের কাছে শুনে। প্রথম বয়সে ওই ছবি দেখে পাওয়া ভয় আমার ক্রোধে রুপ নেয় সে সময় । ঠিক তখন থেকে আমার মাঝে একটা ইচ্ছে জাগে, কবে ওই লোকটার গলা টিপে দিতে পারব। তখন মুক্তিযুদ্ধের নাটক, সিনেমার কাহিনীর আদলে ফ্যান্টাসি রচনা করে কিশোর মন। কিন্তু বাস্তব জ্ঞান হওয়ার পর সেই নিজ হাতে প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছে রুপ নেয় হায়েনার রুপী গু আযমের বিচারের।
সেই থেকে আমার মনে সন্দেহ হত আসলে আমরা বাংলাদেশী মানুষ আসলে কতটুকু মানুষ? একজন দ্বি পদি জন্তুকে মানুষ বলতে গেলে তার কিছু সাধারণ চরিত্র থাকতে হয়। আমার দাদা বলতেন মান এবং হুশ থাকলেই তবে মানুষ হওয়া যায়। সে অর্থে আমরা বাংলাদেশী মানুষদের মান থাকলে কিভাবে যখন আমরা ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তে রাঙ্গা, ৪ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে ১৯৭১-এর রাজাকার সম্রাট গু আযমকে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে দেই! “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযম ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়" এই সাধারণ কথা কেন বাংলাদেশের মানুষ মনে রাখতে পারে না !! শুধু ১৯৭১ –ই নয় এর পরবর্তি সময়েও এই খুনি রাজাকার বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। যার কারনে সে বিভিন্ন ইসলামিক রাষ্ট্র গুলুকে বিভিন্ন ইসলামিক সম্মেলনে বাংলাদেশ-কে স্বীকৃতি না দিতে অনুরোধ করে। সে আরব দেশ গুলোর কাছে “ বাংলাদেশ না মঞ্জুর” দাবি তুলে যা সে ১৯৮০ পর্যন্ত চালিয়ে যায়। আমাদের ততা কথিত স্বাধিনতার গোষক দাবিকারী জেড ফোর্সের অধিনায়ক মেজর জিয়া কিভাবে বাংলাদেশে তাকে আসার অনুমতি দেয় ( এই একটি কারনে তার যুদ্ধকালীন বীরত্ব কি ম্লান হয়ে যায় না!!) মেজর সাহেবের এই ঘৃণিত কাজ আমার জন্মের আগে বলে তা আমার স্বপ্নের উপর কোন প্রভাব ফেলেনি কিন্তু আমার অবাক লাগে কিভাবে এক জন অ-বাংলাদেশী কিভাবে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে মুক্তভাবে ঘুরা ফেরা করে আবার রাজনীতিতেও জড়ায়। স্বপ্ন ভঙ্গের আশংকায় সবচেয়ে বেশী হতাশ আর অবাক হয় যখন এই আত্মস্বীকৃত রাজাকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পায় ১৯৯৪ সালে। তখন আমাদের ভাবি ম্যাডাম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার পরবর্তি ১ম গনতন্ত্রের সরকার। মনে ধাঁধা লেগেছিলো “ এর চেয়ে কি স্বৈরাচারী এরশাদ ভালো ছিল না? ১৯৯৬ সালে বজ্রাঘাতের স্বাদ পেলাম যখন বাতাসে ভাসতে থাকে আমাদের আপা শেখের বেটি, হাসিনা স্বয়ং অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে সাক্ষাত করে তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে জামায়াতের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। জানিনা তা সত্যি না মিথ্যা। কিন্তু মনে হচ্ছিল আমার গু আযমের বিচারের স্বপ্নের বাতিতে সলতের পরিমান খুবই কম।
কিন্তু ২০১০ সালে সেই শেখের বেটি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে তখন আমার স্বপ্নের বাতি আবার প্রবলভাবে জ্বলে উঠে। মনে হতে থাকে সেই বাতি আজ মশালে রূপান্তরিত হয়েছে। এই মশাল নেভবার নয়। তারপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকারী ট্রাইব্যুনালের অনেক বিতর্ক, গু আযমের অভিযোগ এলোমেলোভাবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন সবই মনকে অনেক খারাপ করেছে কিন্তু হতাশ করতে পারেনি, পারেনি আমাকে আশাহত করতে । বারবার মনকে বলেছি “দেখিস একদিন গু আযমও যাবে”।
আজ আমার অনেক গুলো স্বপ্নের একটা বরং বলে যায় সুস্বপ্নের একটা পূরণ হয়েছে। আমার মন আমাকে আর মিথ্যুক বলতে পারবে না। পারবেনা “বাংলাদেশীরা কি মানুষ” এর মতো চরম অপমান কর প্রশ্ন করতে। আজ আমি বুক উঁচিয়ে, উঁচু গলায় যত সব রাজাকারের বাচ্চাদের বলতে পারি –
“ আমরাও পারি। তোদের সব পৃষ্টপোষক হায়েনার ক্ষুর ধার দাঁত উপেক্ষা করে তোদের বাবা গোলাম আযমের বিচার করতে, এতে আল্লাহ্র আরশও কাঁপে না, সৌরজগত্ বেহুঁশ হয় না।”
ধন্যবাদ এই সরকারকে, আমাদের বাংলাদেশীদের এই মান ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্যে।
---------------------------------তোমাদের অভিনন্দন-------------------------------------------
এখন কোনোরকম তালবাহানা ছাড়া গোআ-র বিচার, ফাঁসির রায় এবং সে রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
এখন কোনোরকম তালবাহানা ছাড়া গোআ-র বিচার, ফাঁসির রায় এবং সে রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
এখন কোনোরকম তালবাহানা ছাড়া গোআ-র বিচার, ফাঁসির রায় এবং সে রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
ফাঁসির রায় এবং সে রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
ধন্যবাদ এই সরকারকে, আমাদের বাংলাদেশীদের এই মান ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্যে।
---------------------------------তোমাদের অভিনন্দন-----
ফাঁসির রায় এবং সে রায়ের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
কিন্তু কথা হলো ফাঁসি তার জন্য কম হয়ে যায় না কি!!!
তাকে উলঙ্গ করে একপাল কার্তিক আক্রান্ত কুকুরের খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে।
মন্তব্য করুন