ইউজার লগইন

হাসান রায়হান'এর ব্লগ

বৃষ্টি অথবা যৌনতায় হাটা

তারাগুলি জোনাকি হয়ে গন্ধরাজের কাছে আসে, তখন ফুল গুলি নদী হয়ে সাপের মত চলে যায়
ফুল গুলি নদী হয়ে গেলে, জ্বলন্ত সিগারেট থেকে দুই ক্যান ধোঁয়া ছুটে যায় অনির্দিষ্ট গন্তব্যে...
ধেয়ে আসে কার্লসবাগের ফেনা যেন স্বপ্নীল কোন কংক্রীট
পানপাত্রে চেনা অচেনা সুন্দরীদের কন্ঠ জমে, আরো জমে থাকে স্মৃতি...
রঙিন সুর নিভে যায় সাদা দেয়ালের ছন্দে বাজে বিসুভিয়াসের কান্না
লাভার রাস্তা ধরে রিকশা মগ্ন রাত ভেসে যায় গভীর থেকে আরো গভীরের দিকে...
এবং মিশে যেতে থাকে নীলিমার আধারে, খুবই চেনা তরুনীদ্বয় অমৃত পরিবেশন করে
মুহুর্তের ব্যবধানে পরিচয় ঘুচে যায়, বেঁচে থাকে সোনালী তরলে টুংটাং সুর তোলা বরফের চাঁই আর অলঙ্ঘনীয় পাঁচিলের বাধা...
শহরের প্রাচীন দালানেরা ভীড় করে চারপাশে, শুয়ে থাকে ধৌরিতকের মত। তখন ভালোবাসারা আসে স্বপ্নের কাছে
স্বপ্নেরা দলে পিষে যায় বাস্তবতার ঘোরটোপে ঢাকা ফিটন গাড়িতে, চাবুক হাঁকে বেপরোয়া সহিস...
ঘোর ভাঙে নৈশব্দের ডাকে, সাকী বাজায় পাখোয়াজ
ভৈরবীর রক্ত ঝরে আকাশের বুকে আর এপারে রাতজাগা কেউ প্রতিদিন খুন হয়ে যায়...
হাঁসফাঁস শহরে নিশ্বাস , বিশ্বাস সব বেদনায় কাটা হতে থাকে

বিরিশিরি ভ্রমন : কুমুদিনী হাজং এর সাথে সাক্ষাত

দুই একজন কে জিজ্ঞাস করলাম কিন্তু বলল চিনেনা। তবে একজন মধ্য বয়স্ক বাঙালি চিনলেন। তিনি রিক্সা চালকদের বলে দিলেন কুমুদিনী হাজং এর বাড়ির কিভাবে পৌছান যাবে। ধন্যবাদ দিয়ে চললাম ওনার নির্দেশিত পথে।

কুমুদিনী হাজং টংক আন্দোলনের নেত্রী। এটা ছিল ১৯৪৬-৫০ সাল এ নেত্রকোনা অঞ্চলের কৃষকদের পরিচালিত একটিআন্দোলন। টংক প্রথা হলো উৎপন্ন ফসল দ্বারা জমিদারদের খাজনা পরিশোধ করা। যেটা টাকায় খাজনা পরিশোধের চেয়ে বেশি ছিল। হাজং সম্প্রদায় এ ব্যাবস্থায় দিনে দিনে নিঃস্ব হয়ে পরে। এ সময় সুসং দুর্গাপুরের জমিদারদের ভাগ্নে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ-এর নেতৃত্বে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে টংক প্রথা উচ্ছেদ, টংক জমির খাজনা স্বত্ব, জোত স্বত্ব, নিরিখ মতো টংক জমির খাজনা ধার্য, বকেয়া টংক মওকুফ, জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ ইত্যাদি দাবি নিয়ে টংক আন্দোলন শুরু হয়। হাজং সম্প্রদায় নিজেদের স্বার্থেই টংক আন্দোলনের সংগে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। সে সূত্রেই কুমুদিনী হাজং এর স্বামী লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর তিন ভাই টংক আন্দোলনের সংগে জড়িয়ে পড়েন।

ঝলমলিয়ায় সনাতন মেলায় - ৪ : লালদা স্পেশাল

আগেই বলেছি ঝলমলিয়ায় যাওয়া হয় লালদার শ্যুটিং এর ছবি তোলার ইচ্ছা থেকে। যদিও এবার তিনি খুব বেশি শ্যুটিং করেন নাই। এবার তিনি মেইনলি পানির নিচের শ্যুটিং করেছেন । এটা করতে গিয়ে আরেক কান্ড। আমরা যখন ঝলমলিয়া যাই তখন শৈতপ্রবাহ চলছে। প্রচন্ড শীত। পানির ধারে কাছে যাই না। যে কাপড়ে গিয়েছি সেটা আর খুলিনা। এমন অবস্থায় লালদা পানির নিচের শট নিতে গিয়া ফুলপ্যান্ট ভিজিয়ে এসেছে কাপতে কাপতে। এক্স্ট্রা কাপড়ও নেন নাই। পরে অন্যজনের থেকে ট্রাউজার নিয়ে পড়তে হয়েছে।

আজকের পর্বের বিষয় লালদার সেইসব শ্যুটিংয়ের ছবি ।
lal 1
lal 2
lal 3

ঝলমলিয়ায় সনাতন মেলায় - ৩

মাতম করা মানে বিলাপ করা এইটা জানা ছিল। কিন্তু এর জন্য যে একটা দলই থাকে এবং ওরা অনুষ্ঠানে মাতমে অংশ নেয় জানা ছিলনা। সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে প্রথমেই ছিল সনাতনের স্মরণে মাতম। সন্ধ্যা হতেই ঢাক ঢোল শিঙ্গা ইত্যাদি নিয়ে মাতম দল হাজির। সনাতনের পরিবার ও মাতম দল বাদ্য বাজনা বাজিয়ে সনাতনের সমাধির চারপাশ ঘুরে ঘুরে প্রদক্ষিণ করে। কয়েকবার করার পর পরিবারের মহিলারা পারিবারিক গুরুর ছবির সামনে না অর্ঘ্য দিয়ে পূজা করে। আর মাতম দল বাজাতে থাকে ঢাক বাদ্য। যার যেটা সাথে আছে। সে এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। আলো আধারি, মোমের আলো তার মধ্যে মাতম বাজনা লিখে প্রকাশ করার মত ভাষা আমার নাই। ছবিতেও আসলে ঠিক রূপটা প্রকাশ সম্ভব না । একমাত্র উপষ্থিত থাকলেই সেই সময়ের পরিবেশ বোঝা সম্ভব। মাতম পর্ব শেষ হয় সনাতনের মার মন্ত্র পড়ার মাধ্যমে।
sanaton 1

ঝলমলিয়ায় সনাতন মেলায় - ২

সনাতন বিশ্বাস ঢাকার চারুকলা থেকে পাশ করা অকাল প্রয়াত প্রতিভাবান চিত্রশিল্পী। অবাক লাগে এই অজ পাড়া গাঁর সাধারণ বাড়ি থেকে একজন রাজধানীর চিত্রশিল্পের অঙ্গনে নাম লিখিয়েছিলেন। তার থেকেও অবাক লাগে মৃত্যুর পরও বন্ধুরা বছরের বছর কী চমক্প্রদ আয়োজন করে যাচ্ছে বন্ধু স্মরণে। সনাতন মেলা মূলতঃ সানতনের চিত্রশিল্পী বন্ধুদের উদ্যোগে প্রতি বছর হয়ে থেকে ঝলমলিয়ায় সনাতনের বাড়িতে। সনাতন স্মরণে র‌্যালি, গ্রামের ছোট ছোট শিশুদের রং তুলিতে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, সনাতনের চিত্র প্রদর্শনী, মাতম, গানের আসর এসব নিয়েই সনাতন মেলা। আর এই সব আয়োজন তার বন্ধুরা করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। কী অসাধারণ বন্ধুত্ব!
sanaton 1

ঝলমলিয়ায় সনাতন মেলায় - ১

জানা ছিলনা অথবা জেনে থাকলেও ভুলে গেছিলাম সনাতন মেলা জিনিসটা কী। বাগেরহাটের রামপালের ঝলমলিয়া গ্রামে অনুষ্ঠান এইটুকুন মাথায় রেখেই আমি আর বিমা এক দলের সাথে জুড়ে গেছি। আসলে একদিন হে-লালদাকে বলি সারাদিন আপনার স্যুটিংয়ে থাকতে চাই আপনার একশনের ছবি তোলার জন্য। হেলালদা বলে তাইলে ঝলমলিয়া চলেননা সেইখানে সনাতন মেলা নিয়া একটা ডকুমেন্টারি বানাইতেছি। আমি সাথে সাথে রাজি এবং বিমাও। কাউয়া বাপকে পাহারা দেয়ার জন্য যেতে পারেনা ইচ্ছা থাকা সত্বেও।

ধারণা করছিলাম লালদার সাথে চার পাঁচ জন যাবে। বাসে দেখি ৪৫ জনের দল। ঢোল, টোল ইত্যদি নানা বাদ্যযন্ত্র দিয়ে বাস চলার শুরু থেকে গান। গান গাওয়া প্রায় বিরামহীন ভাবে গন্তব্যে পৌছানো পর্য্যন্ত চলল। সবথেকে জমেছিল রাতে ফেরিতে পদ্মা পার হওয়ার সময় মাঝনদীতে উদাত্ত গলায় সবার নাচ গান। অন্য যাত্রিরা ভেবেছে বিয়ে বাড়ির দল।

ছবি ব্লগ: বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

ছবি তোলা শিখছি। তাই প্রায়ই দলবেধে কোথাও যাই ছবি তুলতে। সেদিন গেলাম মানিকগঞ্জের বলিহাটি জমিদার বাড়িতে। বিশাল জমিদার বাড়ি। সেই বাড়ির কয়েকটা ছবি।
Image Hosted by ImageShack.us

Image Hosted by ImageShack.us

Image Hosted by ImageShack.us

Image Hosted by ImageShack.us

Image Hosted by ImageShack.us

Image Hosted by ImageShack.us

দুইটা ছবি

টঙ্গি ফ্লাইওভারের কাছে এক বন্ধু নিয়ে যায় ছবি তোলার জন্য। কিন্তু যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় ছবি তুলতে পারি নাই তেমন। সেখানের দুইটা ছবি।
2

ss
এই ছবিটা তুলেছিলাম তিনটা বাশের পাশে বিশ্রামরত ফিঙেকে সবাজেক্ট করে সাথে ব্যাকগ্রাউন্ডে তিনটা বিদ্যুতের খুটি রেখে। কিন্তু আরেকজন ফটোগ্রাফার ছবিটা দেখে চমৎকার আইডিয়া দেয়। তার কমেন্ট -
Mahmudur Rahman: ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে...আমি আমার দৃষ্টকোন থেকে একটা আইডিয়া দেব...ছবি্তে বাঁশ সহ পাখিটিকে ডানদিকে রাখলে কেমন হত...পাখিটির দৃষ্টি বাম দিকে তাই আমার কাছে মনে হচ্ছে ফোকাস জিনিসগুলকে ডানদিকে রেখে বামদিকে ফাকা জাইগা রেখে যদি ফ্রেমটা তৈরি করা যেত তাহলে কেমন হত??

মাওলা আলীর অভিষেকে প্রাচ্য ভাবগীত ও লালনের কালাম

আমি অবাক। এইটা কবে হল কিছুই জানিনা। অথচ এর আশে পাশে কত আড্ডা দিয়েছি। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের ভিতর এই এম্ফি থিয়েটার বানানো হয়েছে জানতামইনা। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল চারটায়। বাঙালের সময়ে কাজ শুরু নিয়া আবার ধরা। পোনে পাঁচটায় আমি আর তৈমুর পৌছলাম তখন শুরুর কোনো লক্ষণ ই নাই। আমরা আসছি বিশ্ব লালন পরিষদের প্রাচ্য ভাবসংগীতের অনুষ্ঠান শুনতে। খবর পেয়েছি পোস্টার দেখে। যদিও এরা কারা, কী করে কিছু জানিনা। তবে স্টেজের ব্যাকগ্রাউনড দেখে ভিরমি খেলাম। মাওলা আলীর অভিষেক। মানে কী কে এই আলী? তারপরে লালনের নবি নিয়ে এক গানের কয় লাইন। লালনকেও মুসলমান বানাবে নাকি ওরা! মেজাজ খারাপ। তবে জায়গাটা ভাল। অগ্রাহায়নের বিকালের হালকা ঠান্ডায় বেশ একটা ভাল লাগা ছিল।

প্রান্তিক এক লেখকের যাপিত কষ্ট-গাথা

বছর দুই আগে বগুড়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে বেহুলার বাসর ঘর বলে কথিত ভিটা দেখতে গেলে এক যুবকের পিড়াপিড়িতে একটা চটি বই কিনি। নাম 'বেহুলার বাসর ঘরের ইতিহাস'। লেখক তবিবুর রহমান। তবিবুর রহমান পেশায় ছিলে পোস্ট মাস্টার। জন্ম ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ মৃত্যু ১৪০২ বঙ্গাব্দ। তিনি মোট বিশটি বই লিখে গেছেন ধর্ম, ইতিহাস, উপন্যাস, কাব্য ইত্যাদি নিয়ে।

খুচরা পোস্ট ৪ : টিম ও নেলা'র উপহার

জোনাল প্রোবলেম
মৌসুমের বাসা সারাদিনব্যাপি আড্ডা দিয়া রাতের বেলা বারাইলাম। অন্যরা যার যার মত চইলা গেল আমি আর বিলাই হাটা ধরলাম একসাথে। আমাদের দুইজনের বাসা একইদিকে। হাটতেছি আর ভাবতেছি কেমনে যামু। আমাদের ঐদিকে যাওয়ার জন্য সাধারণত কিছু পাওয়া যায় না। কয়টা রিক্সা দেইখা বিলাই জিগাইল। একজন উত্তর দিল 'আমি ঐদিকে যাই না।' আরেকজন বলল ভাল্লাগতেছেনা। আমি বিলাইরে বললাম, দেখছ জোনের বাইরে থাকার প্রোবলেম? পরে কপালগুনে সিএনজি পেয়ে আসতে আসতে আমরা একমত হইলাম যে পরের আড্ডা বেইলি রোড থিকা রামপুরা পর্যন্ত জোনের মধ্যে করা উচিত।

টিম ও নেলা

বাংলাদেশের ক্রিকেট: শুধুই হতাশা?

বাংলাদেশ প্র্যাকটিস ম্যাচ সহ পরপর পাঁচ ম্যাচ জিম্বাবুয়ের মাটিতে হেরে গেছে। সমানে ৫-০ তে হোয়াইট ওয়াশের আতংক। দেশের লাখ লাখ ক্রিকেট সমর্থক দলের এ দুরবস্থায় হতাশাগ্রস্ত। এই ব্লগেও দুইজন ব্লগার ইতিমধ্যে এ নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। আমি আগেই ভাবছিলাম এ নিয়ে লিখব। নানা কারণে লেখা হয়ে উঠেনি। এখন ওদের সাথে সাথে ক্রিকেট ভক্ত আমিও দুইটা কথা লিখে রাখি।
mushfiq

হটল্যান্ড থেকে ফ্রিজল্যান্ড ৪ : অফিসে প্রথম দিন

নেদারল্যান্ডের বারটা প্রদেশের একটা, ফ্রিসল্যান্ডের (Friesland) শহর বোলসওয়ার্ড। এই ফ্রিসল্যান্ড থেকেই আমার এই কাহিনীর শিরোনাম। বোলসওয়ার্ড শহরে যেখানে আমার থাকার ব্যাবস্থা হয়েছে সেটার নাম, অল মেন হুজ। ইংরেজি অল মেন হাউজ। শহরের বিশাল গির্জার পাশে। বোলসওয়ার্ড শহরটা খুবই ছোট ছিমছাম। জনসংখ্যা দশ হাজারেরও কম। এত টিপটপ পরিস্কার যে ছবির মত সুন্দর। রাস্তায় সিগারেটের ছাই ফেলতেও খারাপ লাগত। আরো খারাপ লাগত নিজের শহরের কথা ভেবে। সুন্দর পরিচ্ছন্ন শহর, মানুষের নিরাপদ শান্তিময় জীবন এসব দেখে আমার আসলে মন ভার হত। আমাদের সাথে তুলনায় ওরা যেন বেহেশ্তে আছে।
bolswardcity
বোলসওয়ার্ড শহরের প্রধান কেন্দ্র।

হটল্যান্ড থেকে ফ্রিজল্যান্ড ৩ : বোলসওয়ার্ডে

bolsward

বাড়ির কাছে আর্শিনগর

এক
মুকুলের বৌভাতে মাইজদী গিয়ে একটা ভুল ভাঙলো। সৈয়দ ওয়ালিউল্লার লাল সালু থেকে ধারণা ছিল শস্যের চেয়ে টুপি বেশি ওখানে। সেরকম চোখে পড়লনা। সাধারণ দশটা মফস্বল শহরের মতই। তবে যে বৃষ্টি পড়ছিল, লোকজন বাইরে ছিল কম। তত্ত্ব পুরাপুরি যাচাই করা যায় নাই।

দুই
এখনকার হরতাল আমার জন্য ভালো। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে। গাড়ি বাস পাওয়া যায়। তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়া যায়। কিন্তু দুইদিন হরতাল থাকলে একদিন অফিসে যাই না। ক্যামেরা নিয়ে বের হই। সেদিন গেলাম বছিলা।
aa