ঝলমলিয়ায় সনাতন মেলায় - ১
জানা ছিলনা অথবা জেনে থাকলেও ভুলে গেছিলাম সনাতন মেলা জিনিসটা কী। বাগেরহাটের রামপালের ঝলমলিয়া গ্রামে অনুষ্ঠান এইটুকুন মাথায় রেখেই আমি আর বিমা এক দলের সাথে জুড়ে গেছি। আসলে একদিন হে-লালদাকে বলি সারাদিন আপনার স্যুটিংয়ে থাকতে চাই আপনার একশনের ছবি তোলার জন্য। হেলালদা বলে তাইলে ঝলমলিয়া চলেননা সেইখানে সনাতন মেলা নিয়া একটা ডকুমেন্টারি বানাইতেছি। আমি সাথে সাথে রাজি এবং বিমাও। কাউয়া বাপকে পাহারা দেয়ার জন্য যেতে পারেনা ইচ্ছা থাকা সত্বেও।
ধারণা করছিলাম লালদার সাথে চার পাঁচ জন যাবে। বাসে দেখি ৪৫ জনের দল। ঢোল, টোল ইত্যদি নানা বাদ্যযন্ত্র দিয়ে বাস চলার শুরু থেকে গান। গান গাওয়া প্রায় বিরামহীন ভাবে গন্তব্যে পৌছানো পর্য্যন্ত চলল। সবথেকে জমেছিল রাতে ফেরিতে পদ্মা পার হওয়ার সময় মাঝনদীতে উদাত্ত গলায় সবার নাচ গান। অন্য যাত্রিরা ভেবেছে বিয়ে বাড়ির দল।
মাঝরাতে বাস পৌছায় রামপাল। এরপর হাড়কাঁপানো শীতে নসিমনে করে ঝলমলিয়া সনাতনের বাড়ি। থাকার ব্যাবস্থা হল বড় দুইটা ঘরে মেঝেতে পাটি বিছয়ে। সাথে কম্বল। বাড়ির লোকজন সেই মাঝরাতে আমাদের জন্য ভাত নিরামিশ ডাল রান্না করে রেখেছে। মজাদার রান্না খেয়ে তৃপ্ত আমরা বিছানায়। লালদা আমাদের সাথে আড্ডায় কথাবার্তা কম বলে। ফেসবুকের থ্রেডেও কোনো আলোচনায় তেমন খলবলিয়ে উঠেন না। যাস্ট প্রয়োজনীয় কথাটা বলেই চুপ মেরে থাকেন। একবার যেমন বললেন, এইবার পিকনিকে পোলাপাইনের দ্রাক্ষার ভার আমার, বাকিটা আল্লা জানেন..। এইটুকুতেই আমরা বুঝে নিই। কিন্তু ঝলমলিয়া দেখলাম তার অন্য রূপ। একটার পর একটা মজার কথা বলে জমায় রাখছেন। এর আগের বার নাকি সারা রাত লোকজনকে ঘুমাতে দেন নাই। আমি অবশ্য শোয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ি। প্যাচাল অনেক হল, এইবার ছবি;
সকালে ঘুম থেকে উঠে দিঘি দেখে আমি চমকৃত। বিশাল দিঘিতে শাপলা ফুটে আছে। চার পাশে বড় বড় প্রাচীন বটগাছ। তার নীচে একটা নৌকা। শীতের সকালের কুয়াশা ঘিরে রাখা দিঘিটাকে অপার্থিব মনে হয়।
সৌন্দর্য্যর চেয়ে দিঘিটার অনেক বড় সিগনিফিক্যান্ট হল এর প্রয়োজনীয়তা। সমূদ্রের পাশে হওয়ায় সেখানকার পুকুর নদীর পানি লবনাক্ত। আশে পাশের দশ গ্রামের মধ্যে এইটাই উপ হার দেয় সুপেয় মিস্টি পানি। তাই লোকজন খাবার পানি নেয়া ছাড়া আর কোনো কাজে ব্যাবহার করেনা এটাকে। এমনকি মুখ ধোয়ার জন্য ও না। দিঘিটা যেমন পরম মমতায় দান করে যাচ্ছে পানীয় জল , লোকজনও অসীম কৃতজ্ঞতায়, ভালবাসায়, শ্রদ্ধায় ইশ্বরের পবিত্র দান সংরক্ষণ করছে।
চলবে..
আপনে চলবে কইলে ডর লাগে।পরে আর খবর থাকে না। যেমন হল্যান্ডেরটা শেষ করেন নাই।
================
প্রথম ছবিটা অসাম।
ধন্যবাদ। আল্লা চাহেতো এইবার শেষ করিব।
আইলসামি করে সনাতন মেলায় না যাওয়াটা বিশাল ভুল হইসে!
আর প্লিজ চলবে বলে বন্ধ করবেননা। খুব খ্রাপ!
ধন্যবাদ। আল্লা চাহেতো এইবার শেষ করিব।
পোষ্ট পড়া শুরু করতেই শেষ
অনেক মজা করেছেন বাসের ছবি দেখেই বুঝতে পেরেছি।
পরের পর্ব দ্রুত দেন।
আগামীকল্য পরের পর্ব ইনশাল্লাহ্ ।
আমার যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অন্য প্রায়োরিটি থাকায় যেতে পারি নাই। এবারের সনাতন মেলায় সম্ভবত অনেকেই এরকম শ্যুটিং করেছে। ফকিরহাটের এক স্কুলে গেলাম, প্রধান শিক্ষিকা বলেন- তার ভাই সনাতন মেলায় শ্যুটিং করতে গেছেন।
আমিও অল্পের জন্য সুন্দরবন মিস করেছি খেজুরের রসের লোভে।
দিঘিটা তো অসাধারণ
ঝলমলিয়াটাই অসাধারণ।
আসলেই অপার্থিব দিঘি! এবং যথারীতি একলা একটি নৌকা...
হায়, মনে হয় আমি একলাই। কিন্তু প্রভু কৃষ্ণ কিন্তু একলা না বস।
কৃষ্ণ একলা হবেন কেন? তাঁর তো আটশ' গোপিনী। আপনি মাত্র কয়েকজনের ছবি তুলে প্রকৃত সত্যকে আড়াল ও নিজের ব্যর্থতাকে গোপন করার অপপ্রয়াস পেয়েছেন! এভাবে কি আর নিজের একলাত্ব ঘোচানো যায়?
আমি সেই আপ্নের স্ট্যাটাস থিকা শুরু করছি, নেক্সট পর্ব পর্যন্ত চালায়া যাবো ইনশাল্লা
দেয়ার ইজ অলওয়েজ নেক্সট টাইম।
অপার্থিব দীঘি, শাপলা ভরা ! আর একলা একটা নাও । হাল নাই , মাঝিও নাই ! ঠিক আমার ছেলেবেলার স্বপ্নটির মতো !
শৈশবে রোজই একটা স্বপ্ন দেখতাম ! বিরাট বড় একটা দীঘি, কাক চক্ষু জল ! টইটম্বুর ! লাল লাল শাপলায় ঘেরা চার ধার ! ঠিক মাঝখানে ছোট একটা নাও ! মন পবনের ! না রবি ঠাকুরের সোনার তরী ঠিক ধরতে পারতাম না । প্রবল ইচ্ছা নাওটিকে আপন করে পাবার । কিন্তু উপায় ছিলনা কোন । অনেক উঁচু পাড় বেয়ে নীচে নামার কোন সিঁড়ি ছিলনা ! হতাশ আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো পুরো রাত !
লেখককে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে ছেলেবেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য !
আপনাকেও ধন্যবাদ।
দীঘিটা খুবই সুন্দর । আর কৃষ্ণ দেখি গার্লফ্রেন্ডদের নিয়ে রাধার সাথে পেম করছে । লগান সিনেমার সেই গানটা মনে পইড়া গেলো ( রাধা ক্যায়ছে না জ্বলে )
ছবি-লেখা সবদিকেই দেখি সৌন্দর্যের সমাহার। দিঘীর ছবিটা সবগুলার চেয়ে ভালো। আর কৃষ্ণের ছবি সম্পর্কে কামাল ভাইয়ের ব্যাখ্যাটা চ্রম।
অ.ট.: ভাইজান আপনারে আমি প্রচুর হিংসাই।
কও কী!!!
হ, আপনার মতোন ছবি তুলার গুণ যদি আমারো থাকতো
নৌকাসমেত দীঘিটা অসহ্য সুন্দর লাগতেছে! কি শান্তির নিস্তব্ধতা যেন সারাটা ছবি জুড়ে!
অনেক মজার হইছে বাস জার্নিটা পড়তেই লাগছে। এত্তোজনে মিলে কোথাও গেলে মজাতো হবেই। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
মেসবাহভাই শুনলাম সূর্য উৎসব করে ঢাকা ফিরছেন, ব্লগে কবে আসবেন কাহিনী জানাইতে?
ধন্যবাদ জেবীন। আমি তোমার মত সুন্দর করে লিখতে পারিনা।
এত সুন্দর দিঘী আমি আর দেখিনি। আসলেই অসহ্য সুন্দর।
ব্যপক হিংসা দিয়ে গেলাম।
হিংসুটিয়া
কৃঞ্চ দেখি বড়ই অলস। অলওয়েজ খালি গায় থাকে
অলস না টাইম নাই।
সামনের বছর যাবো। শাপলা দেখলেই খাইতে ইচ্ছা করে। অনেকদিন খাইনা।
শাপলার সাথে পনিফল ও আছে।
পানিফল আমার ব্যাপক পছন্দ। কখনো এইটার গাছ দেখিনাই। সামনেরবার যাইতেই হবে।
চলুক। দেখি সামনে কি আছে?
সবগুলা ছবিই সুন্দর কিন্তু ৩ নাম্বার ছবিটা চরম। ওইখানে যাইতে ইচ্ছা করতেসে।
ঝলমলে ঝলমলিয়া। মনটাও ঝলমল করে উঠলো।
সবগুলা ছবিই সুন্দর কিন্তু ৩ নাম্বার ছবিটা চরম। ওইখানে যাইতে ইচ্ছা করতেসে।
ছবিগুলি দারুন। তৃতীয় ছবিটি চমৎকার।
রায়হান ভাই আপনি তো প্রায় ফটোগ্রাফার হইয়া গেলেন।
মন্তব্য করুন