দেশকে জানো দেশকে জানাও..
সাম্প্রতিককালে ভারতভ্রমণ থেকে পাওয়া কিছু আলাপ বাংলায় তুলে দিচ্ছি হুবুহু। বিশ্বাস করুন এক ফোঁটাও বানোয়াট নয়।
কথোপত্থন-১
রাজধানী ট্রেন।দিল্লী থেকে জম্মু। আমি, আমার বর। মুখোমুখি জম্মুবাসী সোনালি কৌড় আর আকাশ। সোনালি আইটি প্রফেশনাল। ব্যাঙ্গালোরে পড়ালেখা করে মৌসুরিতে চাকরী করছে। এই আলাপ সেই আলাপে বললাম আমরা বাংলাদেশি। শুরু হলো আলাপ। আলাপের একাংশ-
সোনালি: আপনারা মুসলিম?
আমরা: হ্যা..
সোনালি: তাহলে তো আপনাদের ভাষা উর্দু .. তাই না?
আমরা: ক্যানো? নোপ আমাদের ভাষা বাংলা..
সোনালি: মজা করছেন? ক্যানো বাংলা হবে? আপনারা মুসলিম, উর্দুই হওয়া উচিৎ..মানে পাকিস্তানেও তো ভাষা উর্দু...
আমরা: মানে সোনালি, আমরা তো পাকিস্তানের সাখে যুক্ত না..আমাদের দেশে বাংলাভাষা নিয়ে ভাষা আন্দোলন পযর্ন্ত হয়েছে..আমাদের দেশের নাম আমাদের ভাষার নামে.. সো উর্দু হওয়ার কোন কারণ নাই..
সোনালি: ও তোমরা বাঙালি তাহলে!! নিশ্চয়ই দূর্গা পূজা করো সবাই মিলে?
আমরা: আমরা সবাই সবার ধর্মীয় অনুষ্টানে অংশ নেই..কিন্তু মুসলিমরা পূজা করেনা..
সোনালি: না, আমি তো জানি বাঙালিরা সবাই দূর্গা পূজা করে...
........................................................................(এরপর তিন ঘণ্টা ধরে তাকে বাংলাদেশের পরিচয় গুছিয়ে বলা হলো)
কথোপত্থন-২
কাশ্মীর। ঈফতারের ঠিক আগে ওড়নার দোকান। গুলফাম সাহেব বিক্রেতা। ওড়না পছন্দ করার ফাঁকে হাঁচি দিয়ে স্বভাববশত বলে উঠলাম "আলহামদুলিল্লাহ"
গুলফাম: আপনারা মুসলিম?
আমরা: জি..
গুলফাম: কোথাকার মুসলিম?
আমরা: বাংলাদেশ
গুলফাম: ওহে আপনারা তো তাহলে আধা পাকিস্তানি...(হাসি হাসিমুখে)
আমরা: জি না। আমরা পাকিস্তানি না, বাংলাদেশি..
গুলফাম: কি যে বলেন! মুসলিম হলে অবশ্যই পাকিস্তানি..আমরাও পাকিস্তানি, এখানে সবাই নিজেকে পাকিস্তানি মনে করে, কারণ আমরা মুসলিম বুঝলে..(ভাবটা এমন যে কড়া একখানা যুক্তি দিতে পেরেছে)
আমরা: না রে ভাই..(আমাদের কণ্ঠে হতাশা..)
গুলফাম: আমরা মুসলিমরা ভাই ভাই আর পাকিস্তানি..
...........................................................(এরপর সেই ভদ্রলোক আধাঘণ্টা ধরে লেকচার দিল ইতিহাস নিয়ে..বিরক্তি নিয়ে দোকান থেকে বের হলাম..এই হলো তাদের যুক্তি..)
কথোপত্থন-৩
হায়দ্রাবাদি স্মার্ট তরুন। নামটা জানা হয়নি। আমাদের দুজনের কথা শুনে নিজে থেকে আলাপে এগিয়ে এলো।
অজ্ঞতার ভাণ্ডার: আপনারা কোলকাতা থেকে?
আমরা: নোপ। বাংলাদেশ থেকে..
অজ্ঞতার ভাণ্ডার: বাংলাদেশ? সেটা কোথায়, ইন্ডিয়ার কোন রাজ্যে?
আমরা: ইন্ডিয়ার কোন রাজ্যে নয় ভাই। এটা একটা আলাদা স্বাধীন দেশ।
অজ্ঞতার ভাণ্ডার: তাহলে বাংলায় কথা বলছো যে? এটা তো কোলকাতার ভাষা।
আমরা: বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা। আপনি ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন।
অজ্ঞতার ভাণ্ডার: হ্যা হ্যা.. দেখতে হবে বাংলাদেশ সম্বন্ধে কি কি আছে..
.....................................................(হতাশ হয়ে ভাবলাম, অজ্ঞতার ভাণ্ডার অন্তর্জালে সার্চ দিলে দেখবে একটা প্লেন গোত্তা খেয়ে আছে, আর ভিক্ষুকের মিছিল--হাহ খুব চিনবে বাংলাদেশকে!!)
কথোপত্থন-৪
ভদ্রলোক যথেষ্ট বয়ষ্ক। স্বামী-স্ত্রী ভ্রমণে বেড়িয়েছে। দেখতেই ভালো লাগছিল মাশাল্লাহ। রেস্টুরেন্টে খেতে বসে আলাপের সুত্রপাত ঘটে অনেকটা একই ভাবে..কিন্তু এর শেষটা ছিল অন্যরকম।...
তিনি: কোলকাতা থেকে?
আমরা: জি না।বাংলাদেশ..
তিনি: বাংলাদেশ? খুব ভালো লাগলো তোমাদের দেখে..তোমাদের ক্রিকেট তো এখন অনেকভালো করছে..
আমরা: জি জি ..(নিজের দেশের সুনাম শুনে এক কথায় গদগদ হয়ে গেলাম)
তিনি: তোমাদের ক্যাপ্টেন..কি যেন নাম, নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার..
আমরা: জি সাকিব আল হাসান..কিন্তু সে এখন আর ক্যাপ্টেন নেই। ক্যাপ্টেন হলো মুশফিকুর রহিম। (আকর্ণ বিস্তৃত হাসি টেনে বললাম)
তিনি: তাই নাকি।এনিওয়ে সাকিব ইজ গুড। এবার শাহরুখের টিমে ভালো খেলেছে। ভেরি ব্রাইট প্লেয়ার। ভালো লাগছে আজ বাংলাদেশের কারো সাথে দেখা হওয়ায়। ..
আমরা: ধন্যবাদ স্যার..
...........(বাংলাদেশের জান- সাকিব আল হাসান গাইতে গাইতে ফিরে এলাম)
পরিশিষ্ট: সাব কন্টিনেন্টের দেশ বাংলাদেশ বলে এখনো আমরা অর্থনৈতিকভাবে হয়তো পিছিয়ে..কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বলে, আমাদের জ্ঞানের পরিধি বিশাল। অন্তত আশেপাশের দেশগুলো সম্বন্ধে জানি বা জানার চেষ্টা করি। সকলের কাছে অনুরোধ, শত ত্রুটির মাঝেও দেশটা কিন্তু আমাদেরই। দেশের ব্র্যান্ডিং আমাদেরই করতে হবে।আমাদের দরিদ্রতা নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছু নাই। সাব কন্টিনেন্টের কোন দেশ এর উর্ধ্বে নয়। সাকিব তো আছেই, আসুন গর্বের সাথে নেই আকরাম খান, মুসা ইব্রহীম, নিশাত মজুমদারদের নাম। নেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার এবং জাফর ইকবাল স্যারের নাম। দেই বাংলা ভাষার মহান লেখক হুমায়ূন আহমেদের নাম।বীরশ্রেষ্ঠদের নাম স্মরণ করি বাংলাদেশের পরিচয় দেয়ার কালে..যেন কেউ কখনো না বলে "ও তোমরা তো ইন্ডিয়াই!" বা "পাকিস্তানের অংশ"..আমরা যদি না জাগি..ক্যামনে সকাল হবে?
ভালো লাগলো.. এই জাতীয় সমস্যার মুখমুখি আমরা প্রায়ই হই.. তাই খিটপিট খচোমচো সব দেশের মানুষজনের সাথেই হ্য়। পাকিগুলা তো জন্মের হারামী .. সুযোগ পাইলেই বল-সাবান দিয়ে ধুয়ে ফালাই.. সব ইংরেজী বলা অজ্ঞতার ভাণ্ডার
আমি তো ঠিক করেছি বিরক্ত না হয়ে লেকচার দিয়ে দিবো.. এটলিস্ট ট্রাই করবো..দেশ আমার- দেশকে তুলে ধরার দ্বায়িত্বও আমার..এরপর তেড়িবেড়ি করলে ---------- উপর কথা নাই..
হায়দ্রাবাদের সেই স্মার্ট তরুণের মতো অনেক বলদ আছে ভারতে। আমার এখানে এক পোস্ট ডক আছে সেই তামিল হিন্দী ভাষা জানে না সাথে বাংলাদেশ কোথায় সেটাও জানে না। আমাদের ভাষা সম্পর্কে ওর ও একই ধারণা আমরা উর্দুতে কথা বলি । একদিন আচ্ছা মতো ঝেড়েছি।
শেষের কথা অনুযায়ী বলতে হয় আমরা যদি না জাগি..ক্যামনে সকাল হবে?
সেটাই ভাই.."না জানা" আর "ভুল জানা"র মধ্যে পার্থক্য আছে..এরা আগেই একটা মাইন্ড সেট করে রাখে..সেটাই বিরক্তির কারণ...
এরকম অনেক দু:খ মনে আছে
কিনতু মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশেও আজকাল এই টাইপ ইংলিশ মিডিয়া পড়ুয়া চিজ আছে যারা নিজের দেশ সমনধেও অনেকটা এরকমই জানে
শিকড় ছাড়া গাছ বেশি দিন বাঁচে না..এটা যেদিন বাবা-মা বুঝবে সেদিন তাদের বাচ্চারা ঠিকই দেশকে চিনবে..আমার স্বল্প অভিজ্ঞতা বলে, পরদেশীকে কোন দেশ আপন করে না..ওদের কাছে পরদেশী মানেই আশ্রিত..
আজকে হানিফ সংকেত খুব ভালো একটা বলেছেন,"এদেশের সাধারণ মানুষরাই অসাধারণ"..অতএব আমাদেরকেই জেগে থাকতে হবে..কেউ আমাদের হয়ে আমাদের কাজ করে দিবে না..
ভাল প্রস্তাব। তার আগে আমাদের গর্বের ব্যক্তিদেরকে নিজেরা সম্মান করে, ভালবেসে তাদের প্রাপ্য স্থানটুকু দিতে হবে। এই কথা বলার কারণ, শেষ প্যারায় উল্লেখিত নামগুলির অনেককেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে এ দেশেই হেনস্থা হতে হয়েছে। আমাদের নিজেদের মানুষদের আমরা সম্মান না করলে বিদেশীরা তাদের সম্মান করার কথা না, তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং সম্ভব নয়। তাই দেশ-সেরা মানুষদের উপযুক্ত সম্মান দিয়েই শুরু হোক...
~
আমরা যারা সমমনা- অন্তত তারা ব্র্যান্ডিং করি নিজ নিজ অবস্থান থেকে.. শুরুটা হোক..
বিরক্তিকর। ইন্ডিয়া কোনোমতেই প্রতিবেশি হওয়ার যোগ্য একটা দেশ না। আর পাকিস্তানতো ফুটেই যাইতেসে। আর বড়জোর ১০ বছর। এরপর মানচিত্রে ওদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে বলে মনে হয় না।
প্রতিবেশী হওয়ার যোগ্যতা? সেতো বরাবরই প্রশ্নের সম্মুখিন...সাধারণ জ্ঞান বলেও তো একটা বিষয় আছে- সেটাই তো অনুপস্থিত এখানে..
অন্যের অজ্ঞানতায় না যায়...দোষ আসলে আমাদের,আমরা আমাদেরকে promote করার চেষ্টা করি না,করতেও পারিনা...
..Shame on us!

অনেক কষ্ট না ঠিক ঘেন্না লাগছে প্রতিবেশী দেশের উচ্চ শিক্ষিত মানুষের ভাবনা চিন্তা দেখে,শুনে , যারা এখনও মুসলমান মাত্র পাকিস্তানী মনে করে ....Shame on them !
ইন্ডিয়া গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা হয় নাই এমন লোক কমই পাওয়া যাবে। তবে নিজেদের অবস্থান থেকে নিজেদের ব্র্যান্ডিং শুরু করতে হবে এটাই আসল কথা
আমার অভিজ্ঞতা হল, ইউরোপের লোকজন চেনে ইউনূসের দেশ হিসাবে
বছর আটেক আগে, ব্যাঙ্গালোরের এক দোকান্দারে জিগাইছিলো আম্রা কি আসাম থিকা আসছি নাকি। তখনকার বাস্তবতায় যতটা সম্ভব বাংলাদেশ নিয়া জ্ঞান দিসিলাম বলে মনে পড়ে।
আমিও ভাবছি, এবারের মতো সবসময়ই জ্ঞান দিবো.. তাতে তিনটা বিষয় অন্তত পরিষ্কার হবে,

১. আমরা পাকিস্তান না
২. মুসলিম হলেও উর্দূতে কথা বলি না
৩. আমরা ইংরেজি জানি
আফসোসের সাথেই বলতে হয় যাদের ব্র্যান্ডিং-এর দায়িত্ব নেয়া উচিৎ তারাই সমস্যা গুলো তৈরি করছি, মানে আমরাই! সাকিবের কথা এসেছে, সাকিব আজ ক্যাপ্টেইন নাই, এটি কি আমাদের কারনেই নয়? আশরাফুলের মত একটি খেলোয়াড় ঝড়ে যাচ্ছে, এই দায় কি আমাদের নয়? ইউনুস স্যার কে নিয়ে যা হচ্ছে এতে ব্র্যান্ডিং টাতো আমরাই নষ্ট করছি, এড়াতে পারবো এই দায়? পার্শ্ববর্তী দেশের মানুষ আমাদের কে নিয়ে কি ভাবে তা আমি একদম চিন্তা করিনা তবে আমাদের নিজেদের চিন্তা গুলো খুবই হতাশা করে!
যাই হউক, হতাশা নয়, কে কি করছে "আই ডোন কেয়ার"! আমি আমার স্থান থেকে সঠিক ভাবে আমার দেশকে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাবো, আপনার মতই
একদম ঠিক কথা রন...আজ ইউনূস সাহেবকে নিয়ে যতই কথা হোক- ভদ্রলোক নোবেল প্রাইজ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের মানুষেন কাছে, হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত জীবন যেমনই হোক- তার মতো লেখক দুষ্প্রাপ্য, সাকিব আমাদের একটাই..এগুলো ব্র্যান্ডিং করতে হবে। আমরা মানুষ হিসেবে অসাধারণ- এটার ব্র্যান্ডিং করতে হবে-এবং সেটা নিজেদেরই। অন্যেরা যা খুশি করুক..জানো তো- উপরের দিকে থু থু দিলে নিজের গায়েই পড়বে..
নিজের মান নিজেরেই রাখতে হইব।
কাছাকাছি অভিজ্ঞতা আমারও।
আই হেট ইন্ডিয়া।
হেট বা লাভ-এর তুলনায় যাবো না। যেটা প্রয়োজন নিজের দেশকে নিয়ে গর্ববোধ করা, অন্তত উপলব্ধি করা এবং জানা..
আমরা যে পরিমাণ বিদেশ চর্চা করি সম্ভবত পৃথিবীর অন্য দেশগুলো সে পরিমাণ বিদেশ চর্চা করে না। ছোটোবেলা জ্ঞান,মেধা প্রমাণের জন্য আমরা ১৪০ দেশের নাম, ভাষা, রাজধানী মুখস্ত করে বসে থাকি। সেটা আমাদের অক্লান্ত জ্ঞানতৃষ্ণার প্রমাণ না বরং এইসব জানলে ভবিষ্যত উজ্জল হলে হতেও পারে এমন একটা অবচেতন ধারণা আছে
সমস্যাটা আরও বেশী কারণ আমাদের দেশে প্রায় বিনামূল্যেই বিদেশী সব চ্যানেল দেখা যায়, ৩০০ টাকায় ৮০টা স্যাটেলাইট চ্যানেল, রাস্তায় হিন্দি,উর্দু, ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ সিনেমা, গান, বিনোদনের জগত এবং একই সময়ে আমাদের বিনোদনের জগতে শূন্যতা কিংবা অপদার্থে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় আমরা পার্থিব এবং মানসিক সকল প্রয়োজন পুরণে বিদেশমুখাপেক্ষী। । সুতরাং আমরা বিদেশীদের খরবাখবর বেশী রাখি।
যদি স্যাটেলাইট চ্যানেল, ভিসিডি,ডিভিডি,সিডিতে হিন্দি গান না থাকতো, যদি ভারত নিয়মিত বিরতিতে সীমান্তে গুলি করে মানুষ না মারতো, যদি উলঙ্গ করে এ দেশের নাগরিক না পেটাতো তাহলে আমাদের পাশের দেশ হিসেবে ভারতের নাম আমরা জানতাম কিন্তু সেখানে যে এত বিচিত্র সংস্কৃতি আছে সেটা জানতাম না।
আমাদের পাশের দেশ আরো একটা আছে, বার্মা, সেটা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান কতটুকু, রাজধানী ইয়াঙ্গুন, নেত্রী অং সাং সুচি, সাম্প্রতিক অন্তর্জাল ও পত্রিকা বিতর্কে জানি ওরা রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। কিন্তু ওদের ভাষা আমরা জানি না। কারণ ওদের তেমন নামকরা অভিনেত্রী নেই, তেমন বিশ্বকাঁপানো ক্লিপিংস নেই, ওদের দুর্ভাগ্য ওরা তেমন কোনো সানি লিওনের জন্ম দিতে পারে নি।
আমরা হলিউড চিনি, আমাদের প্রয়োজনে, সিনেমা না দেখলে আমেরিকা সম্পর্কে একটা ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতো না, কিন্তু সেই হলিউডের নায়ক নায়িকাদের খবর নিয়মিত পত্রিকায় আসে , সেসবের সংবাদমূল্য আমাদের পাঠকদের কাছে আছে।
ভারতে হাজার ধরণের সমস্যা, ওদের নিজস্ব একটা বিশাল দেশ আছে, আমরা বাংলাদেশীরা খুব সীমিত পর্যায়ে আলোচিত হয়েছি দিল্লীতে বোমা হামলার অভিযুক্ত হিসেবে ধরা পরে। এর বাইরে ভারতের ক্রিকেট পাগল মানুষদের কাছে বাংলাদেশের পরিচিতি আছে। সেইসব দর্শক যারা ক্রিকেট দেখে তাদের বাইরে আসলে ভারতে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব নেই। আমাদের প্রতিবেশী হিসেবে যেমন বার্মার অস্তিত্ব সীমিত তেমনই ভারতে আমাদের অস্তিত্ব সীমিত।
আমার ধারণা আপনি তাদের নেপাল বললেও তাদের তেমন পরিবর্তন হতো না। নেপালের মনীষা কৈরালা ছাড়া আর কাউকে ভারত চিনে না, আমরাও যে চিনি তাও না। ভুটান সম্পর্কে আমাদের সাধারণজ্ঞান বার্মার চেয়ে কম।
তারপরও আমার দেশকে ভারত চিনবে না কেনো এইসব বলার ভেতরে একধরণের দেশপ্রেম আর আত্মমর্যাদার প্রশ্ন আছে। সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর ১০ বছর পরে আমার ধারণা শাহরুখ, অক্ষয় এরা এত বেশি পরিচিত হবে, হিন্দি এত বেশী প্রচলিত হবে, দিল্লী কোলকাতা যেতে যে আমাদের ভিসা লাগে এটাই ভুলে যাবে মানুষ, তারা সীমান্তে কাঁটাতারে ধাক্কা খেয়ে বরং অবাক বিস্ময়ে বিএসএফ দেখবে।
আমাদের মাঝে পড়ালেখার প্রবণতা বেশি.. কথা সত্য.. বাকী আর কিছু বলবো না, আপনি ইতিমধ্যেই আপনার ব্লগে মন্তব্যের সম্প্রসারণ করেছেন। ধন্যবাদ।

তবে, আমি বিশ্বাস করি, অন্যকে, অন্যদেশকে জানার পাশাপাশি নিজের দেশ সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যেন কেউ না জেনে থাকলে তাকে অন্তত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পরিচিত করানো যায়।
মন্তব্য করুন