ভূত
কাল রাত ৮ টার দিকে আমার একটা বন্ধু ফোন দিয়ে বলছে আমার আরেকটা বন্ধুর সাথে ভুত সাক্ষাৎ করেছে । ছোটবেলা থেকেই ভূতের উপর একটু দুর্বলতা মানে ভয় ছিল আর কি
। তাই ফ্রেন্ডরা চান্স পেলেই আমাকে ভূতের গল্প শোনায়ে । আমি বিশেষ করে রাতের বেলায়ে এইসব গল্প শুনতে পারি না এর উপর যদি এইরকম গল্প হয়ে , সেই রাতে তো ঘুমই গায়েব
(
। তাই কাল রাতে গুমাতে গুমাতে ৪ টা বেজেছে ( মানে ফজরের আযান দেবার পর ) । এক্ষেত্রে আমার একটা বিশ্বাস হল আযান দেওয়ার পর কোনও কিছুর ভয়ে থাকে না ।
অনেক হয়েছে আমার কথা এখন আসল কথা বলি, কাল ফোন দিয়ে যেই কথা শোনাল তা হল ... আমাদের এক ফ্রেন্ড তাদের নতুন বাসায়ে গিয়েছে যেই জায়গাটি কালিতলি ছিল আগে... হিন্দুরা আগে এখানে এসে
" বলি"
দিত ...তো বুঝতেই পারছেন কি সাঙ্ঘাতিক স্থান । এখানে বলে রাখা ভালো ওরা যেই স্থানে থাকে সেটি আগে হিন্দুদের শ্মশান ঘাট এন্ড আসের পাশের এলাকা ছিল। আর যেই বন্ধুর বাড়িতে নতুন যাওয়া হয়েছে , তাদের আগের বাড়িতেও নাকি আগে এই ধরনের সমস্যা ছিল । তাই ওই বন্ধুটির এই ধরনের কোনও ভয়ে নেই । তারা কাল রাত ৬ টায়ে তাদের নতুন বাড়িতে গেছে প্রায় ৮ - ১০ জন বন্ধু মিলে । অনেক গল্প গুজব করে সবাই গেছে অই বাড়ির ছাদে , নিচের রুমে ছিল মাত্র ৪ জন , কারন এর মধ্যে একজনের টয়লেটের ডাক পরেছে । তারা যখন বাড়িটি বানাতে গিয়েছে তখন নাকি বাধা পেয়েছিল, তাই হুজুর ডেকে সব বদ্ধ করাতে বাড়ি করতে আর সমস্যা হয়ে নি । তাই তারা ভাবেনি এরকম কিছু হবে , ... । তাদের মধ্যে একজন ফ্রেন্ড টয়লেটে যাওয়ায় বাকিরা ছাদে চলে গিয়েছিল , আড্ডা দিতে । যেই ফ্রেন্ডটি টয়লেটে ছিল , টয়লেট করে পেন্টের বেল্ট বেঁধে যেই সামনে তাকিয়েছে , সেই দেখে তাদের বয়সের একটি ছেলে তাঁর সামনে ( টয়লেটের মধ্যে) ... আমার ফ্রেন্ডটি সামনে তাকাতেই তাকে বলে " তোরা এখানে কেন এসেছিস" , এই কথা শুনে বন্ধুটি তাঁর পেন্টের পকেট থেকে গ্যাস লাইট বের করার জন্য যখন পেন্টের পকেটে হাত দিয়েছে , তখনি অই ছেলেটি ওর হাত ধরে ফেলেছে... তারপর ওঁ জোরে চিৎকার দিয়ে টয়লেটের দরজা খুলে বাইরে এসে এক্কেবারে চুপ , কোনও কথাই বলতে পারছিল না , সবাই যখন ছাদ থেকে আসে , তখন সে টয়লেটের সামনে মূর্তির মত দারিয়ে...
নতুন বাড়ির ভূত ধরার অভিযান
এই ঘটনার পর আমার ৪ টা বন্ধু রাতে ঠিক করেছে ওই বাড়িতে যাবে এবং দেখবে কি আছে , ( তাদের অবশ্যই সাবাশি দিতে হয়ে, কারন আমি হলে তো আগেই কুপকাত, যদিও তারা নিজেরাই আর অখানে যাবে না, আজ সকালে তাদের সিদ্ধান্ত ছিল এই রকম আর কি ) । ওরা ৪ জন রাত ১০ টার দিকে এক প্যাকেট কার্ড নিয়ে ওই বাড়ির উদ্দেশ্য করে রওনা হল , এক বন্ধু যাওয়ার সময়ে আমাকে ফোন দিয়ে সব কাহিনি বলছিল, আমি আর কি বলব , এমনি ভিতুর ডিম , আর ওদের ভয়েও বাঁড়াতে চায় নি , তাই চুপ করেন শান্ত মেয়ের মত শুনে গিয়েছি, ...
রাত ১১ টা ... ওদের এক জনের সাথে কথা হল , জার মর্ম কথা এই রকম ... চারিদিকে অনেক আওয়াজ হচ্ছে ( বেজি , বিড়ালের ডাক আর কিছুক্ষন পর আমার কথা বলার সময়ে কুকুরের ডাক যুক্ত হল, যা আমি শুনতে পাচ্ছিলাম অনেক জোরে জোরে কান্নার শব্দে) । জানালা , দরজা সেই অবধি খোলা ছিল , ওরা সবাই বসে কার্ড খেলছিল।
রাত ১১.৩৫ মিনিট , ফোনে রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ ধরছে না , আমি তো ভয়ে একাকার , এর পর খুব টেনশন হচ্ছে , কারও কিছু আবার...
তিনবারে ফোন পিক করল , তখন আমিতো চরম ভয়ে আছি, যেই ফ্রেন্ডটা ফোন পিক করল , সে একটু এগুলুতে কম ভয়ে পায় , আর সেই আমাকে বলল , দোস্তো কেমন জানি ভয়ে ভয়ে লাগছে... আমিতো এই কথা শুনে শেষ , বেটা বলে কি? আর চারিদিকে অনেক শব্দ আমার ফোনের মধ্যে দিয়ে কর্ণ গুহে প্রবেশ করছিল ... যখন এই কথা বলল ... আমি ঘড়ি দেখলাম ... ১২ টা বাজতে ১০ মিনিট বাকি । আমি বললাম , বেটা বাড়ি চলে যা , আমাকে উত্তরে বললে , " মাথা খারাপ নাকি, এই সময়ে ঘরের বাহির হওয়া যাবে না ( একটু বলে রাখি , ওরা আবার এই বেপার গুলতে ভালো বুঝে , কখন কি করতে হবে , আমি তো পুরাই অজ্ঞ ) , তাই যা বলল চুপ চাপ মেনে নিলাম, কিন্তু জিজ্ঞেস করলাম এখন কি করবি? , আমাকে বলল... " বসে থাকা ছাড়া আর উপায় নাই" । তখন ওদের দরজা জানালা বন্ধ আর এর মধ্যে এক বন্ধু বলছে খুব টয়লেট পেয়েছে... এ কি অবস্থা... সব একসাথে... । আমি কি করব ফোন কেটে দিলাম, কারন আম্মু ডাকছিল
১২ টা ... ওদের একজন অনেক জোরে গান গাচ্ছিল, জাতে ভয়ে কম লাগে এবং কার্ড খেলছিল, এর মধ্যে ২ তলা হতে অনেক শব্দ করে কি জানি পরল, কি করবে সবাই মিলে দরজা খুলে ২ তলায় দেখতে গেল কি হয়েছে ... কিন্তু সেখানে কিছুই ছিল না... তারপর তারা নিচে ওই রুমে ফিরে এসে দেখে ওদের কার্ড গুলো সব এলোমেলো করে এবং বিছানার নিচে উপরে ছড়ানো । আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না...
তখন ওদের উপর খুব রাগ হল , এতো পণ্ডিতি করর কি দরকার ছিল... ফাজিল গুলা, জেখনে সন্ধান পায় সেখানেই দউর... মেজাজ টা চরম গরম হচ্ছিল ওদের উপর, কিছুই ভাবতে পারছিলাম না, কেমন একটা ভয় কাজ করছিল ওদের জন্য, মনে হচ্ছিল সবগুলকে ধরে ধরে মারি
আর অনেক কান্না টাইপ পাচ্ছিল (
রাত ১ টা ... ফোন দিলাম, বন্ধ, ৩-৪ বার বন্ধ...কি ধরনের উৎকণ্ঠা হচ্ছিল বুঝাতে পারব না, যদি কিছু হয়
(
(
৫ বারে লাইন পেলাম, যেই ফ্রেন্ডকে ফোন দিলাম ওঁ তখন শুয়ে পরেছে, আর সবাই বসে বসে জোরে জোরে আওয়াজ করে কথা বলছে, ওই ফ্রেন্ডটি ফোন পিক করে অবস্থার কথা জানাল, কথা বলতে থাকলাম সবাই মিলে...
এক পর্যায় দেখি যেই ফ্রেন্ডকে ফোন দিয়েছিলাম ওঁ গুমাচ্ছে...কারু ঘুম পাচ্ছে না , কিন্তু ওঁ নাক ডাকছে , মনের মধ্যে এক উৎকণ্ঠা কাজ করল, আইতা আবার কোনও মোহো নাতো ( খুব ভুতুরে টাইপ নাটক দেখতাম আগে হিন্দি চ্যানেল গুলতে... অখানে দেখেছিলাম যে গুম পারিয়ে ঘাড় মটকিয়ে খায়ে চান্স পেলেই ), আমার ভয় আরও বেড়ে গেল। কি করব বুঝতে পারছিলাম না, ফোন কেটে আবার ফোন দিলাম, আর বললাম উঠতে ,
প্রায় ৫ বার এভাবে ফোন কেটে আবার ফোন দিয়ে কন্থ শুনতে পেলাম, ( তখন শুধু মনে বাজছিল আমার ৪ বন্ধুর ১ বধুর যদি কিছু হয়, যদি কিছু হয় )
ফোন দিয়ে কথা বলছি, এর মাঝে দরজায়ে আওয়াজ শুনতে পেলাম, কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই বলল আমাদের ৩ টা ফ্রেন্ড পুরো বাড়িটা দেখতে গেছে , সব ঠিক আছে কি না, আর ওরা যেই ঘরে ছিল, ওই ঘরে বলে আবদ্ধ একটা গরম, জাই হক আমার তো চোখ কপালে, এই অবস্থায়ে , একজনকে একা রেখে যাওয়া মটেই নিরাপদ নয় , আমি ওদের ফোন দিয়ে বললাম... বলল... আমার ওই ফ্রেন্ডকে অনেক উথানর চেষ্টা করেছে, কিন্তু উতছে না , এর মধ্যে হঠাৎ করে লাইন কেটে গেলো...
আমিতো ভঁয়ে সোফার উপর পা তুলে বসে ছিলাম আর ভাবছিলাম কি অবস্থা তাদের... অনেক বার ট্রাই করার পর যখন লাইন পেলাম তখন রাত ২ টা ৩০ মিনিট , আমি শুয়ে পড়েছি, কিন্তু গুমাতে পারছি না, আমার ঘরের লাইট জ্বালানো , এই সময়ে ওই ঘুমন্ত বন্ধুটিকে জাগানোর চেষ্টা করছি, এক পজায়ে খুব কান্না পেল যে আমার বন্ধুদের কি হবে ? (
(
(
৩ টার দিকে আবার লাইন কেটে গেলো, আর লাইন পাইনি
৬ টায় হঠাৎ করে লাফিয়ে উঠলাম , ফোনে পেলাম না। কি করব? কারও ফোন লাগছে না, চরম উৎকণ্ঠায়ে আছি, কি করব?
শুধু মনে অজানা ভয়???
সকাল ১০ টায় আমার এক বন্ধু ফোন দিয়ে বলছে...
সব ঠিক আছে,
ওরা সকালের দিকে ঘুমিয়ে পরেছিল, ৬ টা ৩০ মিনিটে ওই বাড়ি হতে বের হয়ে এসেছে ...
তখন ভাবছিলাম ... এই আধুনিক যুগে এরকম একটা কাহিনী হবে চিন্তাই করতে পারছি না...
কিন্তু খুব খুশি লাগছে... অজানা ভয় নেই ... এবার প্রম উপলব্ধি করলাম আমার বন্ধুদের, তাদের আমি কখনও হারাতে চাই না... কখনও না...
এত্ত ডরাইলে চলে?
গুমাতে গুমাতে চাট্টা বেজেছে? আহারে
জি ভাইয়া , সকালে উঠতে হয়েছে ৫ টা ৩০ মিনিটে , যার ফল হল ঠাণ্ডা , সর্দি ... অবস্থাই কাহিল
নতুন বাড়ির ভূত ধরার অভিযান
সুখে থাকতে ভূতে কিলায়...
ভুতের গল্প কইয়েন না। ভয় লাগে।
akhon Kar Dana Asob But Tut Asa Nake Ame To Agolo Bissa a Korina
নিজে পরলে বুজতেন, কত ধানে কত চাল
Hase Pailo
হাইসা ফেলেন

ভাল লিখেছেন
আমিও ভয় পাইলাম
মন্তব্য করুন