খারাপ দিনের কথা
সোমবার।
একটা খারাপ দিন শুরু করার জন্য সকালে দেরি করে ওঠাই যথেষ্ট। একটা ক্লাসের অর্ধেকেরও বেশি মিস করার পরও কোনো রকম ব্রেকফাস্ট করে ক্লাসে ঢুকলাম।
দেখি যে এক্স গেট অ্যান্ড গেট পড়াচ্ছে। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের জীবনে একটাই দিন থাকে যেদিন ক্লাসে প্রথম বার গেইট পড়ানো হয়। আর আমি সেইটা মিস করলাম। বেটার লেট দ্যান নেভার। সেই জন্য ক্লাসে গেসিলাম, গিয়ে দেখি সব শেষ।
কিন্ত আরও খারাপ ঘটনা ঘটতে হলো। এর পরে প্রোগ্রামিংয়ের ক্লাসটা সবকিছু আরও খারাপ করে দেবার সংকেত দিতে লাগলো, কিন্ত সেই সিগ্নাল আমি ধরতে পারি নাই।
বিকেল বেলা ম্যাথ টিউটোরিয়ালে টিউটর ছোকরা একগাদা কমপ্লেক্স ম্যাথ নিয়ে হাজির। প্রফেসর এতো কঠিন ম্যাথ করায় না, তবু সে এইসব ম্যাথ সামনে নিয়ে আসতে চায়। প্রফেসর শিখাইসে কেম্নে একটা বীজগানিতিক ফাংশনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান বের করতে হয়, যেইটা খুব একটা জটিল প্রক্রিয়া নয়, কিন্ত এই
ইন্ডিয়ান ছোকরা কোনো এক ইন্ডিয়ান বই থেকে খুঁজে নিয়ে আসছে ত্রিকোনোমিতিক ফাংশনের উদাহরণ। আমি কিছুই বুঝলাম না। প্রফেসরের কথা হলো কীভাবে একটা সিম্পল ফাংশনের এক্ট্রিমাম বের করতে হয় সেইটা শেখা। এই ছেলে সেই লারনিংটাকে আরও ঝামেলাপূর্ণ করে শেখাচ্ছে, যেখানে তার দায়িত্ত ছিলো সহজ করে শিখানো। আমি বললাম, আমাদের কি এতো কঠিন জিনিস শেখার দরকার আছে? এই প্রশ্নের কোনো সৎ উত্তর পাইলাম না। বরং শুনতে হলো যে আমি ক্লাসের সবচেয়ে স্লো ছাত্র, যার কারণে ক্লাসের গতি বাধা প্রাপ্ত হয়। তাও এই কথাটা সে সরাসরি না বলে কেমিস্ট্রির নেগেটিভ ক্যাটালিস্টের ভুমিকা টেনে এনে তারপর বললো।
তারপর আরও বিকেলে হুদাই বসে থাকলাম দুই ক্লাসমেটের সাথে ল্যাব রিপোর্ট করবো বলে। ওরা দুইজন সফটওয়্যার নিয়ে গুতোগুতি করলো আর আমি বসেই থাকলাম খারাপ দিনের আমেজ ধরে রেখে।
এরপর সন্ধেয় লিডেলে গেলাম শাক সবজি কিনতে আর বাজারে ঘুরে একটু ভালো বোধ করবো বলে। বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছি এর মাঝে বাসা থেকে ফোন আসলো, আর তারপর কোনোমতে পাশ করসি শুনে সেই বকাঝকা।
সুতরাং এটা প্রমাণিত যে, এইসবের পিছনে সকালে দেরি করে ওঠার ব্যাপক ভুমিকা ছিলো।
মন্তব্য করুন