ফিস্টারভেল্ট
একটা কুকুর খুব প্রেম করছিলো আমার সাথে। খালি গা বেয়ে উঠছিলো আল্লাদে। আমি বলি ছাড় ছাড়, এসব করিস নে। ওমা! ও ঠিক মানুষের মত গলা করে কইলো, এ্যামন বেরসিকের মত করছো ক্যানো? আমি খালি একটু আমার পা টা দিয়ে তোমার গায় পরশ বুলিয়ে দেখতে চাই ক্যামন লাগে। বলেই জিভ ঝুলিয়ে দিয়ে হাসতে লাগলো। আমি আর কী করবো। জবুথবু হয়ে বসে রইলাম। ও আমার ঘাড় থেকে পাছা অব্দি ওর নখশুদ্ধু পা টা ঘসে দিয়ে খুব শান্তি পেয়েছে এ্যামন ভাব করতে লাগলো। আমি আর কী করবো। বসেই রইলাম। এই কুকুর, তাও মদ্দা না মায়া কিছুই জানি না। ক্যানই বা আমার সাথে পিরিতি করতে এলো, কোথা থেকেই বা এলো কিছুই জানতে পারলাম না। যতই মানুষের মত কথা বলুক, কুকুরই তো। আর আমি হলাম গিয়ে দুপেয়ে মানুষ, সরীসৃপও তো নই। হলে হয়তো ওর সাথে একটা ফন্দিফিকির করার কথা ভাবতাম। আমি হলাম মানুষ, আমার এই ঝামেলা, সেই ঝামেলা। এইতো সেদিনই ম্যাথ এক্সাম দিতে গিয়ে কী ঝক্কিঝামেলাটাই না পোহালাম! কেউ ভাবতে পারে? এক্সাম শুরু হয়ে গেছে আর আমি কিনা প্রেমিকার বিয়ে নিয়ে হুড়োহুড়ি করে বেড়াচ্ছি এপাড়া থেকে ওপাড়া। পরীক্ষা ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে। আমি ওর বুকে মাথা রেখে কী সব যেন বলছি। একটা স্লীভলেস নীল জামা পরে ও বসে আছে। ওর যোনিতেও হাত রাখলাম একটু। এরপর কী মনে করে পরীক্ষা দিতে ছুটলাম। দেখি যে আমার আশেপাশে সব দ্যাখাদেখি করার ওস্তাদরা বসেছে। মনটা ভরে গেলো। ওদিকে পরীক্ষার গার্ডরাও সব মনের মত। দ্যাখাদেখি করে সব লিখে দিয়ে আসবো। ওমা! একটু পরেই পানসি নৌকাটা এ্যামন দুলতে লাগলো! জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ঝড় উঠেছে। বাহ! একেই বলে আনন্দ! পরীক্ষা লাটে উঠলো। সজীব ডেস্ক বাজিয়ে গান ধরলো, আর আমি জামিল জয় সবাই মিলে হইহই করতে লাগলাম। গার্ড স্যারেরা ঝড় সামলাতে খাবি খাচ্ছে নৌকোর এমাথা ওমাথা। চেয়ার টেবিল এলোপাথাড়ি নড়ছে। আহ! সব পরীক্ষার সময়ে এ্যামন তুফান যে ক্যানো আসে না! কুকুরটা একটা মানুষ হলে এসব সুখদুঃখ ওরে কওয়া যেত।
মন্তব্য করুন