একজন ফরহাদ মজহার এবং অনৈসলামিক রাজনীতি - দুই
স্বয়ং বুদ্ধিবৃত্তিক রাজাকার ফরহাদ মজহার
ফরহাদ মজহার পরিকল্পিতভাবে বলে, একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে বাঙালিরা গৃহযুদ্ধ করেছিল, স্বাধীনতাযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ নয়। সেখানে বাঙালিরাই যুদ্ধ করেছে, বাঙালি মুসলমানরা নয় (বাঙালি হিন্দু, বাঙালি খৃষ্টান, বাঙালি বৌদ্ধ - এরা তো দুধ-ভাত। এদের কথা না বলাই উচিত।)।/ সে বলছে, আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদ আমাদের গৃহযুদ্ধের উসকানিদাতা। হায়, সে তো দেখছি স্বাধীনতাবিরোধী, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই স্বীকার করছে না। তবে এই দেশে তার এতো বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা কেন? নাকি জামায়াতীদের মত রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে, তার মতে, বাঙালি জাতি যে ভুল করেছে একাত্তরে, সে ভুল শোধরানোর মিশনে নেমেছেন বৃদ্ধিভিত্তিক মৌলবাদীতার দাসত্ব দ্বারা? একটা জাতিকে যখন তার জাতিগত পরিচয় 'বাঙালি' বলে পশ্চিম পাকিস্তানীরা নিষ্পেষিত করছে, নির্বাচনে জয়ী হবার পর দেশ শাসনে বঞ্চিত করছে, রাতের অন্ধকারে গণহত্যার জন্ম দিয়েছে, তখন তাদের কাছে বাঙালি মুসলমানদের যে 'মুসলিম' পরিচয় রয়েছে, সেটার প্রতি সন্মান কোথায় গেল? মুসলিম হয়ে মুসলিম ভাইকে হত্যা করার লাইসেন্স পশ্চিম পাকিস্তানীদের কে দিল? খুব সুন্দরভাবেই ইতিহাসকে বিকৃত করার, দালালী করার লাইসেন্স নিয়ে বসেছে, বুদ্ধিবৃত্তিক মৌলবাদী ফরহাদ মজহার ও তার চ্যালা-চামুন্ডারা। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা। শুধু একটা কথা, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সব মুসলমানেরা যুদ্ধে গিয়েছেন, তারা আল্লাহ্কে স্মরণ করেছেন, তারা আল্লাহ্-র নাম হৃদয়ে-মনে রেখেই যুদ্ধ করেছেন, এবং যুদ্ধে জীবন দান করেছেন। তারা দেশপ্রেমিক সাচ্চা মুসলমানই ছিলেন, রাজাকার-আলবদর-আল শামস ছিলেন না।
"...... বাংলাদেশের প্রথম গৃহযুদ্ধের কথা ভাবুন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ কি বাংলাদেশের প্রথম গৃহযুদ্ধের উসকানিদাতা হিসেবে হাজির হয়নি? বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি? কিন্তু এরাই আবার ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা যাবে না—দাবি তোলে; ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।"
(ফরহাদ মজহার, বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পরিণতি, আমার দেশ, মার্চ ৪, ২০১৩)
ইসলাম ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে সে সময়ের রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের পয়দাকারী প্রধানতঃ জামায়াতে ইসলামী এবং সেই সাথে মুসলিমলীগ এই পূর্ববঙ্গে কী অবস্থা তৈরি করেছিল, তা কারো অজানা নয়। বাঙালি জাতির সাথে, বাংলা মায়ের সাথে যে চরম বেঈমানী এবং বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়েছিলো, সেটা আবার নতুন করে বুদ্ধিবৃত্তিক মৌলবাদী ফরহাদ মজহারের মতো লোককে শেখাতে হয়! সুতরাং বাংলাদেশের স্বাধীনতা উত্তর ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে কথা উঠা খুবই স্বাভাবিক। সেই ধর্মব্যবসায়ীদের ইসলামভিত্তিক রাজনীতিকে নিষিদ্ধ না করলে খোদ ইসলামেরই যে অপমান, সেটা কি নতুন করে শিখিয়ে দিতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক মৌলবাদী ফরহাদকে? সে কি অশিক্ষিত, মূর্খ, আবাল? না কি বড় মাপের ভন্ড? ভন্ডামীর শেষ থাকা চাই। জ্বী ফরহাদ, তোমার লেখা পড়েই তোমাকে গালি গালাজ করছি, যেমন তোমরা জাতির দুঃসময়ে দেশমাতৃকা 'মা'-কে অপমান করতে কম যাওনি, তাকে গলা টিপে মেরে ফেলতে তোমাদের হাত কাঁপেনি!!!
ও-হ্যাঁ, তোমাকে জেনেশুনেই 'স্বীয় বুদ্ধিবৃত্তিক রাজাকার' বলা হচ্ছে।
লুঙ্গি মাজার আপাদত হিজবুত তাহেরির উপদেষ্টা পদে আছেন। জঙ্গি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছেন।
মতিকনঠ পড়া দরকার
মন্তব্য করুন