ক্যাফেকথন
আমি সাধারনত চকচকে-ঝকঝকে জায়গা একটু এড়িয়ে চলি। বড়লোক, মিডিয়া পার্সোনালিটি, সমাজ সংস্কারক, আর্ট-সমালোচক, সংস্কৃতি-বোদ্ধা, সুন্দরী সোসালাইট—এই গ্রুপের লোকজন দেখলে আমার কেন জানি একটা টেনশন তৈরী হতে থাকে। তাদের নানারকম ভাঁজের আলাপ শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে সেটা পরিনত হয় হীনমন্যতায়। যতক্ষন তাঁরা সামনে থাকেন আমার মনে অদ্ভুত সব চিন্তা ঘুরতে থাকে (আচ্ছা, আজ কি চুলে শ্যাম্পু করেছিলাম?/ মুনীর চৌধুরী যেন শেষ কোন নাটক লিখেছিলেন?/ বামদলগুলো কি আবার দেশ গেলো, দেশ গেলো রব তুলেছে?/ পিকাসো’র ব্লু-পিরিয়ডের ত্বাত্তিক মাহাত্ব্য নিয়ে সবাই এত চিন্তিত কেন?/ নাহ, এবার বুনুয়েলের ছবিগুলো দেখতেই হবে)। মোটের উপরে, আমি কি কি জানিনা, কি কি বুঝিনা, কি কি দেখিনাই, কি কি করিনাই—জীবনের সেই সবগুলো ব্যার্থতাগুলোকে জোর করে ইনারা আমার ঘাড়ে সিন্দাবাদের বুড়োর মত চাপিয়ে দ্যান। আমি হাঁসফাঁস করতে থাকি দিনের পর দিন। বন্ধুদের সাথে বসে ঐ লোকগুলোর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করলে তবে শান্তি।
গত গ্রীষ্মে এক বন্ধু ঠিক করলো তার সাথে দেখা হবে ধানমন্ডির বেঙ্গল গ্যালারিতে। সেখানে নাকি সুন্দর একটা ক্যাফেটেরিয়া আছে, ছবি-টবি দেখা শেষ হলে শান্ত পরিবেশে চা খাওয়ার সুব্যবস্থা। বন্ধু আমেরিকান, ফলে তার শীতাতপ নিয়ন্ত্রন পছন্দ, আর লোকজন নাকি ওখানে খুব কম থাকে ফলে আমার ভীত হবার কারন নাই বলেও সে আশ্বস্ত করলো। আমি ভোদাই বাঙ্গালী তাই হালকা গাইগুই করে রাজী হয়ে বললাম, আচ্ছা, ঠিক আছে, তবে আমাকে যদি কেউ জ্ঞান দিতে আসে, আমি কিন্তু পত্রপাঠ বিদায় নিব। সে রাজী। কি আর করা। গত জুলাইয়ের কোন এক বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় সিএনজি করে হাজির হলাম বেঙ্গল গ্যালারিতে।
বিশাল কারুকাজ করা দরজার একটা ছোট অংশ খোলা। সেটি আগলিয়ে উর্দিপড়া দারোয়ান দাঁড়ানো, আমি ঢুকতে গেলে জিজ্ঞেস করলেন, “কোথায় যাচ্ছেন?” আমি শান্ত ভঙ্গীতে বললাম, “ভিতরে।” উনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, “দাওয়াত আছে?” আমাকে তো একরকম দাওয়াত দিয়েই আনা হয়েছে, ভেবে বললাম, “জ্বি, আছে।” যাইহোক ঢুকে দেখি বেশ ফাঁকা একটা উঠানের মত জায়গা, কিছু চেয়ার-টেয়ার সাজানো আছে। একজন লোক দাঁড়ানো আছে, আমাকে দেখে একগাল হাসি দিয়ে বললেন, “আপা, বেশী তাড়াতাড়ি চলে আসছেন।” আমি কিছুটা কাঁচুমাচু হয়ে জিজ্ঞেশ করলাম, “ইয়ে, মানে, জ্বি, ক্যাফেটা কোনদিকে?" উনি বাম হাতে একটা মোচড় দিয়ে দিক দেখায়ে দিলেন। আমি ধন্যবাদ বলে ক্যাফেতে যেয়ে বসলাম। সাথে সাথে মার্কিনী বন্ধুর টেক্সটমেসেজ পেলাম ফোনে- স্যরি শর্মি, শ্যাওড়া পাড়া থেকে ধানমন্ডি পুরা রাস্তা জ্যাম, আমার মনেহয় দেরী হবে। ক্যাফেতে আমি একা, আর কেউ নাই। কাঁচের জানলার পাশে একটা চেয়ারে বসে ব্যাগ থেকে বই বের করে পড়া শুরু করলাম। বন্ধুগন, মোটেও ভেবে বসবেন না যে আমি সাংঘাতিক পড়ুয়া প্রকৃতির লোক যে কিনা একটু সুযোগ পেলেই জ্ঞানসাধনা করে নেয়। ব্যাগে একটা বই রাখলে জ্যামে বসে মেজাজ খারাপ করতে হয়না, তাই এই ব্যবস্থা।
কিছুক্ষন কাটার পর কাউন্টারে যেয়ে এক কাপ চা চাইলাম।
ওয়েটার গম্ভীর মুখে বললো “চা দেয়া যাবেনা।”
আমি জিজ্ঞেশ করলাম, “তাহলে কি দেয়া যাবে?”
“আপাতত কিছুই না”
কি অদ্ভুত জায়গারে বাবা, নাম ক্যাফে অথচ খেতে দিবেনা। কোন পত্রিকায় সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়ে নালিশ জানানো দরকার ইত্যাদি ভাবতে ভাবতে ঠিক করলাম বের হয়ে মার্কিনীকে ফোন দিবো। বের হতে গিয়ে দেখি, দরজা বন্ধ। কি যন্ত্রনা! আবার ফিরে গিয়ে বললাম। “ভাই চা চাইনা, বাইরে যাব।”
আবারও গম্ভীর উত্তর, এখন বের হতে পারবেন না।
“কেন?”
“দরজা বাইরে থেকে বন্ধ”
এতো মহা বিপদ। টেবিলে ফেরার সময় মাথায় ঘুরা শুরু করলো ঈগলস এর হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া গানটা (You can check out any time you like, but can never leave). যাই হোক, বন্ধু এসে মার্কিনী উদ্ধার তৎপরতা শুরু করবে এই আশায় বুক বেঁধে ফিরে গেলাম টেবিলে।
কিছুক্ষন পরে দেখি, আস্তে আস্তে ঘরে লোকজন ভরতে শুরু করেছে। একটু খেয়াল করে দেখি এরা কিন্তু যে-সে লোক না, ঢাকা শহরের সমস্ত রথী-মহারথী। চিত্রশিল্পী
শাহাবুদ্দিনকে দেখলাম প্রথমে। এরপরে আস্তে আস্তে সেলিনা হোসেন, ফারুক চৌধুরী, শমী কায়সার, ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২-৩ জন মিডিয়াবাজ ডাকসাঁইটে অধ্যাপক (নামগুলো মনে আসছেনা এই মূহুর্তে), কিছু মাঝারিগোছের রাজনীতিবিদ বিভিন্ন টেবিল দখল করতে শুরু করলেন। আমি তখনো হতভম্ব হয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি, ব্যাপক অবস্থা। হটাৎ দেখি আমার টেবিলে চা চলে এসেছে, সাথে সিঙ্গারা আর কেক। আমি ওয়েটারকে বললাম “আমি কিন্তু এইদলের সাথে না, ভাই", উনি বললেন “সমস্যা নাই, আপা, খান।" কিছুক্ষন পরে সাবেক মন্ত্রী (বর্তমানে সংসদ উপনেতা) সাজেদা চৌধুরী এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা বাথরুমটা কোনদিকে জানেন নাকি।” আমি এদিক ওদিকে তাকিয়ে বললাম, “ঠিক জানিনা, তবে খুঁজে দিচ্ছি।” বয়সের ভারে কিছুটা স্লথ উপনেতা বাথরুম থেকে বের হয়ে আমাকে আবার জিজ্ঞেশ করলেন, “আপনি কোথায় থাকেন? কি করেন?” আমি উত্তর দিতে শুরু করতেই কেউ একজন দৌড়ে এসে উনাকে অন্যদিকে টেনে নিয়ে গেল। আমি আবার নির্বাক দর্শক হয়ে দেখতে শুরু করলাম তারকাদের কান্ডকারখানা। একপর্যায়ে মনে হল আমি বুঝি অশরীরী, কেউ আমাকে দেখছেনা, অথচ আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি দেশে সবচেয়ে কেউকেটাদের অন্দরমহলে। অদ্ভুত একটা নিঃসঙ্গ উপভোগ। নিজেকে গার্সিয়া-মার্কেজের উপন্যাসের চরিত্র মনে হচ্ছিল প্রায়, ঘোর ভাঙ্গালেন ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিনী, “আপনি চা খেয়েছেন?”
-“জ্বি।”
-“কোন পত্রিকার সাথে আছেন আপনি”
-“কোন পত্রিকায় তো নাই”
-“ও আচ্ছা।”
- “তাহলে কি কোনো চ্যানেলে?”
-“জ্বি না”
উনি এবার অবাক হয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, আমি দেখলাম দরজায় আমার মার্কিনী বন্ধু উঁকি দিচ্ছে। আমি প্রিয়ভাষিনী কে বিদায় বলে ঐদিকে গেলাম। গেটরক্ষক কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেননাই, তবে শ্বেতাঙ্গিনী বন্ধুকে বিশেষ বিবেচনায় এলাউ করেছেন বলে শুনলাম। আমি বললাম, “এই ক্যাফে অতিরিক্ত স্টার-স্টাডেড। বিরানী খাবো, চল ফকরুদ্দিনে যাই।”
- “আমি ২ ঘন্টা জ্যামে ছিলাম, আমি ১৫ মিনিট রেস্ট না নিয়ে যাবো না।”
যাইহোক বসলাম আবার। কিন্তু আমার ইনভিজিবিলিটি এবার মাঠে মারা গেল। বিদেশীর কল্যানে সব ফটোসাংবাদিক/ টিভি রিপোর্টারদের করুনা এদিকেই মোড় নিলো।
আমার আর ভাল লাগছে না। নিঃসঙ্গতার মৃত্যুতে মেজাজ খারাপ। "তুমি থাকো এখানে, আমি ছবি দেখে আসি।" বন্ধুকে বলে বের হয়ে গেলাম।
ওয়েলকাম ব্যাক
।
পুরা/হাফ/ওয়ানাবি ইনটেলেকচুয়ালদের কিছু কিছু যায়গায় যাওয়ার সৌভাগ্য হইছিল কয়েকবার। যতক্ষণ ঐখানে থাকা হয় ততক্ষণ একটা দম আটকানো ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সের মধ্যে বসে হাসফাস করি। তারপর যখন ঐখান থেকে বের হই, ওদের থেকে কম ইনটেলেকচুয়াল বলে যে কত ভাল আছি গোছের একটা আনন্দ হয়, সেইটা আবার কিছুক্ষণের মধ্যেই সুপিরিয়রিটি কমপ্লক্সে টার্ন নেয়। দুইদিকে বিপদ আর কি!
তো আপনেরে অনেকদিন পর দেইখা ভাল লাগল। ক্যামন আছেন টাছেন?
আমি তো আপ্নেরে ঐ "পুরা/হাফ/ওয়ানাবি ইন্টেলেকচুয়াল" দের একজন ভেবে নিসিলাম মীরের কাছে গল্প শুনে। ভালো লাগলো যে আপনিও তাদের মধ্যে হাঁসফাস করেন। তবে সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্সও কিন্তু ভাল না, ভাই।
আছি ভালই। আপনের খবর কি?
আচ্ছা গান শুনেন একটা
শুনলাম।
দূর্দান্ত লাগলো আপনার ক্যাফেকথন। আপনি মৌসুম এরা আসলেই চমতকার লেখেন।
অনেক ধন্যবাদ।
তবে, মৌসুম বেশী ভাল লেখে।
হুমম...
হুমাইলেন ক্যান?
একটু ওয়ানাবি ইন্টেলেকচ্যুয়াল ভাব নিলাম...
আপনের গদ্য বেশ ভালো...
ধন্যবাদ মামা। পদ্য তো পারিনা, তাই গদ্যেই যতটুক।
আপনার লেখার হাত দেখলে বোঝা যায় আপনি চাইলে পদ্যও লিখতে পারবেন...
উরে খাইসে!
মামা, এত ভাবের উপ্রে আছেন যে? কাহিনী কি?
আরে!!!! দেশী বহিনের ম্যালাদিন পর লেখা পাইলাম।যদিও প্রতিদিন সকালে দেখি এবিতে।
লেখাটা পড়ে ক্যান জানি মনে হইলো আমার চোখের সামনে ঘটনা ঘটলো। আর একটু কারেকশন করে দিবেন আমাগো সাজেদা চৌধুরী মন্ত্রী নয় সংসদ উপনেতা।

দেশীভাই, কেমন আছেন? অনেকদিন থেকে লিখতে চাচ্ছি, কিছু আসেনা মাথায়। আর আমি তো জানতাম উনি মন্ত্রী। সংসদ উপনেতা হলেন কবে? তবে আপনার কথা আস্থাশীল আমি, এডিট করে দিচ্ছি।
হাসিনা বুবু এইবার তারে মন্ত্রী বানায় নাই সংসদ উপনেতা বানায়ছে।
আগের টার্মে বন মন্ত্রী ছিলেন।
গরীবের আর থাকা।
ওহ আচ্ছা, আমি আগের টার্মের কথাই ভাবতেসিলাম। খিয়াল নাই যে টার্ম পরিবর্তন হইসে যে।
গরীবেরই তো থাকা ভাই। বড়লুকের শুধু ভাব।
জব্বর ক্যাফেকথন
ধন্যবাদ।
আপনি এতো মানুষকেও চিনেন
আমি হলে অবশ্য বুঝতামও না যে ইন্টেলেকচুয়ালদের সাথে আছি। ইন্টেলেকদের সাথে আছি এটা বুঝতেও কিসুটা ইণ্টেলেক হওয়া লাগে মনে হয় 
আয়-হায় কন কি, এনাদের তো সবাই চিনে!
দারুন রোমাঞ্চকর ।
ধন্যবাদ, আপু।
অনেকদিন পরে দেখলাম
আছেন কেমন? এত কম লিখেন কেন? ই-বুকে লেখা নাই কেন? 
ঐ বেয়াদপ, তুই লিখিস না ক্যান? বড়দের মুখে মুখে কথা!
হু, আর ভালই আছি। তুই কেমন?
আমি কি লিখতে পারি?
কিছু লিখলে সেটা লোকজনকে জোর করে দেখাই, না দেখাইলে শান্তি লাগে না .... এতে লোকজন হয় বিরক্ত .... ভাবে খালি পাবলিসিটি খুঁজি .... এইজন্য কয়দিন খেমা দিছি 
লেখালেখিতে খেমা দেয়ার দরকার নাই। খালি পাবলিসিটি করিসনা। ঐটা আসলেও বিরক্তিকর।
কি অবস্থা?

বেঙ্গল গ্যলারী নিয়া ক্যান লিখলেন? আজব
আরেকটা আছে, ঢাকা আর্ট সেন্টার। ওইখানে যান না?
আমি মাঝে মাঝে যাই। দুইটা জায়গার একটা ব্যপক মিল হচ্ছে বাঁশঝাড়। শহরের মধ্যে এরকম হুট করে চারটা বাঁশগাছ লাগিয়ে দেয়ার মধ্যে আসলে যে কি উঁচুদরের রসিকতা নিহিত, আমি আজও ধরতে পারি নাই। এমনটা শহরের আর কোথাও দেখি নি।
যাউক্গা, আপনার সেদিনের মতো প্রদর্শনী উদ্বোধনের দিনে এ সেন্টারগুলোয় গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকলে অনেক মজার মজার কাহিনী পাওয়া যায়। সেইদিন একটা অনুষ্ঠান হচ্ছিলো। প্রদর্শনীর নাম পটের গান, বাংলার বাঘ। বিষয়বস্তু ছিলো কিছুটা ঘোলাটে। ছবিতে দেয়া হলো বাঘ আর মানুষের সহচর জীবনের ইঙ্গিত। তাও কেমন; যে বউ যাচ্ছে পালকিতে করে, দুই পাশে দুই বেহারা হচ্ছে বাঘ। আবার ছেলের মাথায় বাংলাদেশের ফ্ল্যাগ বাঁধা, সে কান চুলকাচ্ছে একটা ভদ্রবেশী বাঘের লেজ দিয়ে।
অনুষ্ঠানে অনেক বড়মাপের শিল্পী আছেন একজন। তিনি প্রধান অতিথি এবং তিনি প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন ফিতা কেটে। আরো কয়েকজন গুণী ব্যক্তি আছেন। সবাই বাঘ আর মানুষের সহাবস্থানের আইডিয়ার উপর খুব লেকচার দিচ্ছিলেন। একজন যখন সাম্যবাদ বলে একটা শব্দও উচ্চারণ করে বসলেন, তখন বেদম হাসিও পেল। কিন্তু প্রধান অতিথি মাইক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভরা মজলিসে একদম সত্য একটা ভাষন দিয়ে বসলেন।
'অনেকে আইডিয়ার তারিফ করেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, এ আইডিয়া আমার কাছে আইসিসি বিশ্বকাপ'১১ থেকে নেয়া বলে মনে হয়েছে। সে সময় ছেলেপিলেরা প্রচুর বাংলাদেশের ফ্ল্যাগ মাথায় বাঁধতো। বিশেষ করে বাংলাদেশের খেলার দিনগুলোয় তো পতাকা পাওয়াই যেতো না। আর বাঘের সঙ্গে তুলনা করা হয় আমাদের ক্রিকেট দলকে। ক্রিকেট সংক্রান্ত নানা সুভ্যেনির বা পুতুলে এই প্রাণীটাকে দেখা যায়। এ দু'টো আইডিয়া মিশিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে একটা প্রায়-পেশাদার চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। বাংলাদেশটার আসলে কি হবে? আমাদের তরুণেরা আজকাল অনেক কম পড়াশোনা আর চিন্তাভাবনা করে। ভাবে আর কেউ হয়তো তার মতো করে ভাবতে পারবে না। যদি পড়াশোনা করতো তাহলে জানতো, এর চেয়েও মারাত্মক সব আইডিয়া দেয়ার মতো মানুষ আমাদের দেশে আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেই হাজারে-বিজারে জন্মেছে।'
এটা হচ্ছে তার বক্তব্যের চুম্বক অংশ। শুনে আমি পুরা পিনিকে চলে গেলাম..
হা হা হা হা। সেইরকম জ্বালাময়ী বক্তব্য দেখা যায়। হাহাপগে।
হু এই ঘটনার পরে বের হয়ে জানতে পারসি যে ঐদিন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষীনি'র প্রদর্শনী উদবোধন হচ্ছিলো। আর আমি ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম মানে কি? জানলে জীবনেও যাইতাম না ভাই, মায়ের কসম। এইসব ঢংয়ের জায়গা অসহ্য। ঢাকা আর্ট সেন্টারের কথাও শুনসি। আমি দেশত্যাগী হবার পরে খুলসে। তাই ঐটার বাঁশঝাড় দেখার সৌভাগ্য হয়নাই এখনো। আশা করি আগামীবার গেলে ঐটাও দেখা হবে।
আমি মাঝে মাঝে কাজের জন্য যাই। গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকি। মার্কিনী উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য কারো আসার কথা থাকে না যদিও। কিন্তু বেশ ক'দিন ধরে যাওয়া হচ্ছে না। একটা ছবি পাইলাম, আপ্নারে দেখাই.. রাতে তুলা তো, ওইজন্য একটু ঝিরঝিরি আসছে
গলা কাঁপানো বক্তৃতা শুরু হইসে মনেহয়! বাঁচাওওওওওওওও!
আপনের খবর কি? শবে বরাতের নামায পড়সেন?
কবে শবেবরাত?
পার হয়ে গেসে। এখন আর খবর নিয়ে লাভ নাই।
আমি হালুয়া খাইতে চাই, পিলিজ!
একজন প্রো-পিক চেঞ্জ কর্সে, দেখসেন?
হু, দেখলাম। লুকটার কার্যবিধি সন্দেহজনক।
এতদিন ধরে নাম না বললে কি হইসে, ছবি দেখে ঠিকই চিন্নাল্চি।

তবে কার্যবিধি সন্দজনক- এইটা ঠিক না। শুধু নতুন প্রো-পিকের মিলাদটা এখনো দিলো না- এই যা। আপ্নারে গুন্নাইত'
উমা, কন কি? চিন্নালাইলেন?
আমি তো চিন্ত্যেপার্লাম্না। এটা কে?
এই মাইয়াটার নাম হৈল চিহিরো। একটা বয়ফ্রেন্ড আছে, তার নাম হাক্কু।
অবশ্য দুনিয়ায় একই রকম চেহারার অনেক মানুষ আছে। অনুমান নাও মিলতে পারে। তয় চিহিরো'র মতোই লাগতেসে।
এগ্লা কে বস?
আসলে এইটা স্বাভাবিক। কারো কাছে যদি ৩৫ ডিস্কের মিয়াযাকি-কালেকশন থাকে, আর সে সেগুলা বন্ধুবান্ধবদের না দেয়; তাইলে বন্ধুরা তো মিয়াযাকিরে ভুলবেই।
বলেন কি? এতো দেখি ভয়ানক পুঁজিবাদী মানসিকতার লোক। দুখ পাইলাম।
আর কি আপনের ঘটনাটা কি? নতুন লেখা কই? বললাম যে কিছু ছবি দিতে, সেটার কি হলো?
কবে ছবি দিতে বলসেন?
ও দিতে বলি নাই, আর তাই আপ্নে দেনও নাই?? বাবাহ্ বেশ! আপ্নে একটা যবের লোক।
আর ঠিকই দিতে বলসিলাম, সেটা ভুলে খেয়েছেন। আমি নিশ্চিত।
লম্বা রোডট্রিপে বের হচ্ছি, গন্তব্য ক্যালিফোর্নিয়া। এরপরের ব্লগ চিত্রগল্প। দেখা হবে শীগগির
মজা পাইলাম। কাজের কারণে এরকম জায়গায় যেতে হয়। মিলিয়ে দেখলাম।
মিলসে, মাসুম ভাই?
ক্যাফেকথন ভাল লাগলো
ধন্যবাদ!
জট্টিল ক্যাফেকথন

ধন্যবাদ।
শর্মি যদি অসুস্থ হতে মানে Seeking Attention Disorder যদি থাকতো, তাহলে সব বিখ্যাত ব্যাক্তির গলায় ধরে একটা করে ছবি তুলে ফেসবুকে দিতে পারতা
প্রবাসী অনেকেরই এই সমস্যা আছে
আরে আপু, দারুন কথা মনে করায়ে দিলেন।
আমি একবার প্রবাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের (নিউ ইয়র্ক) ১লা বৈশাখ অনুষ্ঠানে গেসলাম মামা-মামীর পাল্লায় পড়ে। জ্যাকসান হাইটস'এ এক মিষ্টির দোকানের নিচের অন্ধকার বেসমেন্টে আয়োজন। বাচ্চাদের দৌড়াদোড়ি আর মহিলাদের শাড়ি-গয়নার ডিসপ্লে দেখে যখন আমি প্রায় আধমরা, তখন শুরু হইলো বক্তৃতা। স্টেজে ১৮ জন বক্তা, ঠ্যালাঠেলি করে দাঁড়ানো আছে। একেকজন আসেন আর সেই গলা কাঁপায়ে কাঁপায়ে "স্বাধীনতার ৩৮ বছর পরে"/ "বীর ভাইয়ের রক্ত আর মা-বোনের ইজ্জত"/ "দূর প্রবাসের এককোন থেকে" ইত্যাদি বলা শুরু করেন। সেটা একটা ব্যাপক কমেডি অভিজ্ঞতা। আমি হাসি চাপতে না পারার কারনে ২ বক্তার পরেই সাবওয়ে করে বাড়ি ফেরত চলে আসছি। মামা এখনো আমার উপ্রে রাগ। বলে আমি নাকি বেয়াদপ, সিরিয়াস হইতে শিখলাম না। কি বিপদ বলেন দেখি!
আমি ঠিকই হাসি চেপে পুরা ঘটনাটা দেখতাম। ঘটনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আমারে পিও থেকে নড়াইতে পারতো না। সাধারণত বিনোদন মিস্ করি না।
আপনের সাংঘাতিক ধৈর্য্য আছে তার মানে। বেশ বেশ।
আচ্ছা। থায়ঙ্কিউ!
লেখাটা খুব ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ, একলব্যের পুনর্জন্ম। অনেকদিন পরে দেখলাম।
তুই ফ্রি খাওয়া + বিনোদন ফেলাইয়া চইলা আইলি? এইটা একটা কথা? দেশে আয়, তোরে নিয়া এইসব জায়গায় যাইতে হবে, কোনায় বইসা বইসা ভাবওয়ালা মানুষদের নিয়া কুটনামী করার আনন্দের সাথে আর কোনকিছুর তুলনা চলেনা।
কেক সিঙ্গারা সহযোগে চা পান করার পরেই বাইর হইসি। তুই থাকলে কটনামি করতাম, একা ভ্যাবলাচন্দ্র হয়ে বসে থাকার কি মানে?
আড্ডার ভঙ্গীতে লেখাটা। ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ, জুলিয়ান।
ক্যাফেকথন ভালো পাইলাম।
মন্তব্য ও ভালো পাইলাম।
আপনের রোডট্রিপ শেষ হয় নাই? সাবধান কিন্তু, এই রোডট্রিপগুলাতেই ছেলে-মেয়েদের মূল সর্বনাশটা হয়

সব্বনাশ মানে সব্বনাশ? একদম সাড়ে সব্বনাশ ঘটে গ্যাছে বস।
ক্যালিফোর্নিয়া ছাড়া আর কোথাও মন টিকবে বলে মনে হচ্ছেনা।
এটা তো আমিও সন্দেহ করতেসি।
লোকটা কেমন? ভালু না খ্রাপ?
মজা পাইলাম।
কথন সিরিজ চালু করে দেন!
সিরিজ! একটা নিয়াই হিমসিম খাচ্ছি ভাইজান। আরেকটা শুরু করলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা আছে। তবে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কি রে দেশি বইন? হাতে জং ধরছে নি?

জ্বি না, এখনো ধরেনাই।
মন্তব্য করুন