শিশুরা মিথ্যা কথা বলে কেন?
"মিথ্যা বলা মহা পাপ" এই সত্যটা আমরা সবাই মানি। আমরা বড়রা কেন মিথ্যা বলছি সেটা আমরাই ভালো জানি। কিন্তু আমরা কি জানি আমাদের শিশু সন্তানরা কেন মিথ্যা কথা বলে? ওদেরতো মিথ্যা বলার দরকার নেই। আমরা বড়, আর তাই ছোটদের মিথ্যা কথা সহজে ধরে ফেলি। ধরে ফেলি বলে মনে করি আমরা না জানি কতো বড় মাইন্ড রিডার হয়ে গেছি। কিন্তু আসলে যে আমাদের জন্যই আমাদের শিশু সন্তানেরা মিথ্যা কথা বলে, সেটা কি আমরা জানি?
তো যা বলছিলাম। আমরা অনেকেই জানিনা যে আমাদের আচরনের কারনেই আমাদের শিশু সন্তানরা মিথ্যার আশ্রয় নিতে শুরু করে। শিশুরা ভুল করবেই (কোন বয়সে মানুষ ভুল করেনা বলেন?), একটু বেশীই ভুল করবে ওরা। কিন্তু আমরা বড়রা যখন ওদের ভুলের জন্য ওদেরকে শাস্তি দেই, ধমক দেই, হুংকার করি, চিৎকার করি ওরা ক্রমেক্রমে রপ্ত করতে শেখে যে ভিন্ন কোন পথের আশ্রয় নিতেই হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে ও মানুষের বাচ্চা। আর তাই জীবনের নানা পরিস্থিতি থেকে নতুন পথ বের করবেই।
যেমন শিশুটি কিছু একটা ভেংগে ফেললো আর অমনি আমি হুংকার দিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলাম। দেখবেন শিশুটি কেমন ভয় পেয়ে গেছে। আর ভয়ের চোটে সে মিথ্যার আশ্রয় নিতে শুরু করে দেয়। আরেক রকমের ঘটনাও ঘটে। শিশুটি হয়তো সত্য কথাই বললো কিন্তু তারপরও তাকে শাস্তি পেতে হলো। এখন আপনিই বলুন, সত্য বললে যদি শাস্তি পেতে হয় তবে কেন সে সত্য বলবে এরপর থেকে? দয়াকরে শিশুর ভুলে শিশুকে নির্মম শাসন করবেন না।
তাহলে দেখা যাচ্ছে আমরা বড়রাই ঘর থেকে একজন শিশুকে মিথ্যা কথা বলার অভ্যেস শুরু করিয়ে দিচ্ছি। আমরা বড়রাই দায়ী। বড়রা না বলে খুব স্পেসিফিক্ করে যদি বলি হয়তো আমরা মা-বাবারাই দায়ী।
ভুলে যাবেন না, আজ সে শিশু। তার সত্য কথাতে যদি তাকে শাস্তি পেতে হয় তবে যখন সে কৈশরে থাকবে, তখনও এমন অনেক ভুলই করবে যা আপনি জানতেও পারবেন না হয়তো। কিন্তু তখন আপনার মনে হতে পারে যে, ইস্ যদি আমার সন্তান সত্য শেয়ার বলতো তবে আমি সেই বিপদ থেকে বাঁচাতে পারতাম! আর যখন হয়তো সে তারুন্যে থাকবে তখন আরো কোন বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভুলে যান এই সব। আসুন আমরা আমাদের সন্তানের সাথে সত্য সম্পর্ক গড়ে তুলি। সে যেন পূর্ণ বিশ্বাস ও এই চর্চার মধ্য দিয়ে বড় হয় যে তার মা-বাবাকে সব সত্য বলা যায়। "পৃথিবীতে আর কেউ না বুঝুক আমার মা-বাবা আমার সত্য কথা বিশ্বাস করে" এটা যেন হয় তার চরম বিশ্বস। তবে এটা কিন্তু এক পাক্ষিক হবে না। আপনাকেও সত্যই বলতে হবে শিশুর সাথে। (এই বিষয়ে আরেকদিন আরো কথা বলবো। মানে যেখানে সত্য বললে আরো সমস্যা কিন্তু মিথ্যাও বলতে চাইছেন না।)
এই একই বিষয়ে এই পড্কাষ্টও শুনতে পারেন এখান থেকে।
আমার বাবা-মা আমাকে মিথ্যা বলা না-শিখিয়ে আমার বেশ ক্ষতিই করেছেন । এস এস সি পরীক্ষার ফর্ম পূরণের সময় আমার বয়স কমান নি, ছেলেকে মিখ্যা হতে রক্ষা করতে । ফলে আর সবার চেয়ে অন্তত দু'বছর আগে কর্মক্ষম আমাকে চাকরী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে । এ দু'বছরে আমি অবশ্যই আরও এক ধাপ উপরে উঠতাম । মিথ্যা না শেখাবার কারণে কতবার কত ভাবে বিপদ্গ্রস্থ হতে হয়েছে তা আর না-ই বললাম ! তা'ছাড়া, প্রয়োজনে মিথ্যা বলতে যেয়েও অনভ্যাসের কারণে ধরা পড়ে গেছি, হেনস্থা হতে হয়েছে ।
তারপরও আমি চাই সব মিথ্যার অবসান । সত্য-সুন্দর আলোয় ঝলমলে হয়ে উঠুক সমগ্র বিশ্ব, আলোকিত হোক সবার হৃদয় ।
ধন্যবাদ ।
নাজমুল ভাই, আমিও আমার মেয়ের ক্ষেত্রে এ কাজটা করিনি। অনেক বন্ধু-শুভানুধ্যায়ীর পরামর্শ সত্বেও আমি মিথ্যার আশ্রয় নেইনি। কারণ আমি চাইনি, আমার ফুলের মতো মেয়ের জীবন একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে শুরু হোক। আমি কি তবে বোকামি করেছি?
আমার ক্ষেত্রে ঘটনাটি ছিলো এমন। তখন জুন মাস। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী জানুয়ারী মাসের ১ তারিখে বাচ্চার বয়স ৩+ হলে বা চারে পা দিলে ভর্তীর অযোগ্য। কিন্তু আমার বাচ্চার বয়স আগষ্ট মাসেই ৩+ হয়ে যাবে। তারমানে জানুয়ারীতে ৩ বছর ৫ মাস চলবে। তারমানে সে স্কুলে ভর্তির অযোগ্য! তবে কি এই সামান্য কয়েক মাসের জন্য তার স্কুলে ভর্তিই বাতিল? বাধ্য হয়েছিলাম বয়স কমাতে। কেউ কেউ বলতে পারেন, "বাধ্য হবেন কেন? অলমোষ্ট সবাইতো কমায়।" আমিও কমিয়েছিলাম না। আমার বাচ্চাদের জন্ম নিবন্ধন করিয়েছিলাম একদম সঠিক তারিখেই। কিন্তু শুধুমাত্র স্কুলে ভর্তির অযোগ্যতা হয়ে যায় বলে আবার আরেকটা সার্টিফিকেট করতে হয়েছে। এই ক্ষেত্রে আমি মনে করেছি স্কুলে ভর্তির অধিকারটা বেশী প্রয়োজন ছিলো।
সত্য-মিথ্যা, চালাকী-বোকামী এগুলো এখন আমার কাছে বড্ড বেশী আপেক্ষিক মনে হয় ।
শিশুদের মিথ্যা বলার জন্য আমরা বড়রাই দায়ী।
ব্যক্তি এবং জাতীয় পর্যায়ে মিথ্যার অবসান হোক।
শিশুর অভ্যাসগঠন বিষয়ে আপনার সচেতনতামূলক প্রয়াস ভালো লাগলো
আপনার কি শিশু আছে? কতো যন্ত্রনা করে তার কোন আইডিয়া আছে?
আছেনা আবার, আল্লাহ্র কাছ থেকে জমজ আদায় করে নিয়েছি।
মাসুম ভাই আপনার কাছে টেকনিক শিখতে চাইবে।শিখায় দিয়েন।
আচ্ছা আপনার অডিও পার্টের পিচ্চিদের গলা কি আপনার মেয়েদের??
ওদের নিয়ে একটা পোস্ট দেন।দাবী জানায় গেলাম।
:\
জী, আমার মেয়েদের গলা। দেবো অবশ্যই।
চমৎকার! আপনার মেয়েদের ছবি সমত পোষ্ট চাই।
ওদের জন্য শুভ কামনা।
আসলে আমিও দিতেই চাইছিলাম। কিন্তু এখনো কনফিউজ্ড কে আবার কিভাবে নেয়। তাই একটু বুঝে নেই বন্ধুদের। হাজার হলেও নতুন এসেছি।
মন্তব্য করুন